ঢাকা ০৯:৪৫ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মৌলভীবাজারে ১ কোটি ৪০ লাখ টাকার জাল চালান দাখিল

নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ০৮:০৪:৩৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৩ জুলাই ২০২৩
  • / ১৩১৫ বার পড়া হয়েছে

চেক প্রত্যাখ্যান মামলায় এক কোটি ৪০ লাখ টাকার জাল চালান দাখিল করে আপিল আবেদন করার ঘটনা তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন হাই কোর্ট। হাই কোর্ট বিভাগের রেজিস্ট্রারকে এ বিষয়ে তদন্ত করতে বলা হয়েছে। তদন্ত শেষে আপিলকারীসহ জড়িত চক্রের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা করতেও নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

মৌলভীবাজারে ২ কোটি ৮১ লাখ ৩৫ হাজার ৯০৬ টাকার চেক প্রত্যাখ্যাত হওয়ার মামলায় দণ্ডিত আসামির আপিল খারিজ করে এ নির্দেশ দেন হাই কোর্টের বিচারপতি মো. আশরাফুল কামালের একক বেঞ্চ। গত ৫ এপ্রিল দেওয়া ওই রায়ের পূর্ণাঙ্গ কপি সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে।

দুই কোটি ৮১ লাখ ৩৫ হাজার ৯০৬ টাকার চেক প্রত্যাখ্যাত হওয়ায় মো. ফজলুর রহমান সোয়েবের বিরুদ্ধে ২০১৭ সালে মামলা করে ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক লিমিটেড (ইউসিবিএল)। ওই মামলায় দ্য নেগোশিয়েবল ইন্সট্রুমেন্ট অ্যাক্টের ১৩৮ ধারায় আসামিকে ২০২১ সালের ২০ জানুয়ারি ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও চেকে উল্লেখিত দুই কোটি ৮১ লাখ ৩৫ হাজার ৯০৬ টাকা জরিমানা করেন মৌলভীবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালত। পরে ওই রায়ের বিরুদ্ধে হাই কোর্টে আপিল করেন সোয়েব।

সেই আপিলের রায়ে নিম্ন আদালতের আদেশ থেকে উদ্ধৃত করে হাই কোর্ট বলেন, দণ্ডের পর ২০২১ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারির আপিল দায়েরের শর্তে আসামিকে জামিন দেওয়া হয়। এরপর আসামি হাই কোর্টে আপিল করেন। কিন্তু বাদীপক্ষ মৌলভীবাজার আদালতে জানায়, রায় অনুসারে আপিল করার জন্য অর্ধেক টাকা জমা না দিয়ে এক কোটি ৪০ লাখ ৬৭ হাজার ৯৫৩ হাজার টাকার জাল চালান হাইকোর্টে দাখিল করেছেন।

আসামি ২০২১ সালের ৮ নভেম্বর মৌলভীবাজার সোনালী ব্যাংকের শাখায় এক কোটি ৪০ লাখ ৬৭ হাজার ৯৫৩ হাজার টাকার জমা দেওয়া হয়েছে বলে আদালতে চালানের সত্যায়িত অনুলিপি দাখিল করেন। এরপর বাদীপক্ষ সোনালী ব্যাংককে চিঠি দেয়। ওই চিঠির প্রেক্ষিতে সোনালী ব্যাংক জানায়, যে চালানের সত্যায়িত ফটোকপি পাঠানো হয়েছে, তা জমা হয়নি। চালানটি সঠিক নয়।

পরে মৌলভীবাজার আদালত বাদীপক্ষকে বিষয়টি উচ্চ আদালতে অবহিত করতে বলেন। সে অনুসারে ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের আইনজীবী আপিল শুনানিতে হাইকোর্টে জানান, আপিলকারী মো. ফজলুর রহমান সোয়েব জাল চালান দাখিল করে আপিল করেন। এরপর আপিলকারীর আইনজীবী বিষয়টি জানতে তাকে ফোন দিলে মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

হাই কোর্ট বলেছেন, নথি পর্যালোচনায় এটি কাচের মতো স্পষ্ট যে, আপিলকারী ফজলুর রহমান সোয়েব ভুয়া চালান জমা দিয়ে আপিলটি করেছেন। আপিলকারী বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালতে জাল চালান দাখিল করে যে দুঃসাহস দেখিয়েছেন, তার দৃষ্টান্তমূলক সাজা হওয়া আবশ্যক।

‘আপিলকারী এমন দুঃসাহসিক কাজ একা করেনি। এটা নিশ্চিত যে, তাকে একটি দুষ্ট চক্র তাকে সহায়তা করেছে। এই চক্রের মুখোশ উন্মোচন করা জরুরি। যে কোনো মূল্যে জনগণের শেষ আশ্রয়স্থল এই সুপ্রিম কোর্টের কর্তৃত্ব ও সম্মান অক্ষুণ্ণ রাখতে হবে।’

তদন্তের বিষয়ে হাই কোর্ট বলেন, হাই কোর্ট বিভাগের রেজিস্ট্রার তদন্ত করে প্রকৃত অপরাধী শনাক্ত করে প্রতারক চক্রের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা করবেন। আর এ তদন্ত কাজে সহায়তা করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

 

খবর: জাগোনিউজ২৪

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

মৌলভীবাজারে ১ কোটি ৪০ লাখ টাকার জাল চালান দাখিল

আপডেট সময় ০৮:০৪:৩৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৩ জুলাই ২০২৩

চেক প্রত্যাখ্যান মামলায় এক কোটি ৪০ লাখ টাকার জাল চালান দাখিল করে আপিল আবেদন করার ঘটনা তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন হাই কোর্ট। হাই কোর্ট বিভাগের রেজিস্ট্রারকে এ বিষয়ে তদন্ত করতে বলা হয়েছে। তদন্ত শেষে আপিলকারীসহ জড়িত চক্রের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা করতেও নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

মৌলভীবাজারে ২ কোটি ৮১ লাখ ৩৫ হাজার ৯০৬ টাকার চেক প্রত্যাখ্যাত হওয়ার মামলায় দণ্ডিত আসামির আপিল খারিজ করে এ নির্দেশ দেন হাই কোর্টের বিচারপতি মো. আশরাফুল কামালের একক বেঞ্চ। গত ৫ এপ্রিল দেওয়া ওই রায়ের পূর্ণাঙ্গ কপি সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে।

দুই কোটি ৮১ লাখ ৩৫ হাজার ৯০৬ টাকার চেক প্রত্যাখ্যাত হওয়ায় মো. ফজলুর রহমান সোয়েবের বিরুদ্ধে ২০১৭ সালে মামলা করে ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক লিমিটেড (ইউসিবিএল)। ওই মামলায় দ্য নেগোশিয়েবল ইন্সট্রুমেন্ট অ্যাক্টের ১৩৮ ধারায় আসামিকে ২০২১ সালের ২০ জানুয়ারি ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও চেকে উল্লেখিত দুই কোটি ৮১ লাখ ৩৫ হাজার ৯০৬ টাকা জরিমানা করেন মৌলভীবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালত। পরে ওই রায়ের বিরুদ্ধে হাই কোর্টে আপিল করেন সোয়েব।

সেই আপিলের রায়ে নিম্ন আদালতের আদেশ থেকে উদ্ধৃত করে হাই কোর্ট বলেন, দণ্ডের পর ২০২১ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারির আপিল দায়েরের শর্তে আসামিকে জামিন দেওয়া হয়। এরপর আসামি হাই কোর্টে আপিল করেন। কিন্তু বাদীপক্ষ মৌলভীবাজার আদালতে জানায়, রায় অনুসারে আপিল করার জন্য অর্ধেক টাকা জমা না দিয়ে এক কোটি ৪০ লাখ ৬৭ হাজার ৯৫৩ হাজার টাকার জাল চালান হাইকোর্টে দাখিল করেছেন।

আসামি ২০২১ সালের ৮ নভেম্বর মৌলভীবাজার সোনালী ব্যাংকের শাখায় এক কোটি ৪০ লাখ ৬৭ হাজার ৯৫৩ হাজার টাকার জমা দেওয়া হয়েছে বলে আদালতে চালানের সত্যায়িত অনুলিপি দাখিল করেন। এরপর বাদীপক্ষ সোনালী ব্যাংককে চিঠি দেয়। ওই চিঠির প্রেক্ষিতে সোনালী ব্যাংক জানায়, যে চালানের সত্যায়িত ফটোকপি পাঠানো হয়েছে, তা জমা হয়নি। চালানটি সঠিক নয়।

পরে মৌলভীবাজার আদালত বাদীপক্ষকে বিষয়টি উচ্চ আদালতে অবহিত করতে বলেন। সে অনুসারে ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের আইনজীবী আপিল শুনানিতে হাইকোর্টে জানান, আপিলকারী মো. ফজলুর রহমান সোয়েব জাল চালান দাখিল করে আপিল করেন। এরপর আপিলকারীর আইনজীবী বিষয়টি জানতে তাকে ফোন দিলে মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

হাই কোর্ট বলেছেন, নথি পর্যালোচনায় এটি কাচের মতো স্পষ্ট যে, আপিলকারী ফজলুর রহমান সোয়েব ভুয়া চালান জমা দিয়ে আপিলটি করেছেন। আপিলকারী বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালতে জাল চালান দাখিল করে যে দুঃসাহস দেখিয়েছেন, তার দৃষ্টান্তমূলক সাজা হওয়া আবশ্যক।

‘আপিলকারী এমন দুঃসাহসিক কাজ একা করেনি। এটা নিশ্চিত যে, তাকে একটি দুষ্ট চক্র তাকে সহায়তা করেছে। এই চক্রের মুখোশ উন্মোচন করা জরুরি। যে কোনো মূল্যে জনগণের শেষ আশ্রয়স্থল এই সুপ্রিম কোর্টের কর্তৃত্ব ও সম্মান অক্ষুণ্ণ রাখতে হবে।’

তদন্তের বিষয়ে হাই কোর্ট বলেন, হাই কোর্ট বিভাগের রেজিস্ট্রার তদন্ত করে প্রকৃত অপরাধী শনাক্ত করে প্রতারক চক্রের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা করবেন। আর এ তদন্ত কাজে সহায়তা করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

 

খবর: জাগোনিউজ২৪