ঢাকা ১০:৪৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
ব্রেকিং নিউজ
মৌলভীবাজারে আন্তর্জাতিক ও জাতীয় প্রতিবন্ধী দিবস পালিত মৌলভীবাজারে আন্ত: কলেজ ফুটবল টূর্ণামেন্ট শুরু আল্লাহকে নিয়ে কটুক্তি ও কুরআন অবমাননার প্রতিবাদে মৌলভীবাজারে মানববন্ধন ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা এখন সময়ের দাবি কমলগঞ্জে এক যাতায়াতের রাস্তায় চলাচলে প্রতিবন্ধিকতা, প্রশাসনের হস্তক্ষেপ তারুণ্যের উৎসব-২০২৫” শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত তারেক রহমান দেশে ফিরছেন সংবাদ প্রকাশের পর দুর্গাপুরে আ.লীগ নেতার নেতৃত্বে কথিত মানববন্ধন বেগম খালেদা জিয়ার রোগমুক্তির কামনায় সদর হাসপাতালের পক্ষ থেকে দোয়া মাহফিল জাতীয় প্রাণিসম্পদ সপ্তাহ উপলক্ষে স্কুল ফিডিং কর্মসূচি,আলোচনা সভা ও পুরষ্কার

মৌলভীবাজার জেলার ট্রানজিট পয়েন্ট মনু রেলওয়ে স্টেশন এখন নীরব নিস্তব্ধ

নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ১২:০০:০৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৮ মে ২০২২
  • / ১৮৯২ বার পড়া হয়েছে

মৌলভীবাজার২৪ ডেস্ক:  ট্রেন আসার ঘণ্টা এখন আর বাজে না। নদীতে ভাসে না সারি সারি পণ্যবাহী নৌকা। নেই কুলি মজুর যাত্রীদের হাল্লা চিৎকার। জেলার ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রাণকেন্দ্র তথা ট্রানজিট পয়েন্ট মনু রেলওয়ে স্টেশন এখন নীরব নিস্তব্ধ। কালের সাক্ষী পরিত্যক্ত এই রেলওয়ে স্টেশনটি এখন বিলুপ্তির পথে।

বাংলাদেশ রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলীয় জোনের সিলেট- আখাউড়া সেকশনে কুলাউড়া উপজেলার হাজীপুর ইউনিয়নে মনু রেলওয়ে স্টেশনের অবস্থান। পাশ দিয়ে বয়ে গেছে খরস্রোতা মনু নদী।দুই পাশে বৃহত্তর সিলেটের কি পয়েন্ট মনু ও পলক নদীর রেলওয়ে ব্রিজ। রেলওয়ে স্টেশনকে ঘিরে গড়ে ওঠা শতাব্দীর প্রাচীন মনুবাজার

জানা যায়, পাশে শমসেরনগর ও টিলাগাও রেলওয়ে স্টেশন থাকার পরও শুধু নৌপথে পণ্যপরিবহনের জন্য স্থাপিত হয় মনু রেলওয়ে স্টেশন। শতাব্দীর প্রাচীন এই রেলওয়ে স্টেশনটি এখন রেলওয়ের পরিত্যক্ত সম্পত্তি । স্টেশন মাস্টার,বুকিং ক্লার্ক পাইটম্যানের বসার ঘর এবং যাত্রী বিশ্রামাগারটি তালাবদ্ধ।দীর্ঘদিন জনমানবের পদচিহ্ন না পড়ার চিত্র স্পষ্ট। পাশেই রেলওয়ের বিশাল গুদামঘর।এই গুদামঘরে মালের ওয়াগন নিয়ে যাওয়ার জন্য নির্মিত প্রায় এক কিলোমিটার আলাদা রেললাইনও এখন পরিত্যক্ত।

মনু বাজারের প্রবীণ বেকারি ব্যবসায়ী জানালেন, এই রেলওয়ে স্টেশনকে ঘিরে আমার ব্যবসার বয়স ৪০-৪৫ বছর হয়ে গেছে । ১৯৮২-৮৩ সালেও মালামাল নিয়ে যাওয়ার জন্য স্টেশন লাগুয়া নদীর ঘাটে প্রতিদিন শতাধিক নৌকা দাঁড়ানো থাকতো। একসময় ঢাকা ভৈরব চাঁদপুর চট্টগ্রাম থেকে তেল চিনি পেয়াজ রসুন বাসনকোসনসহ বিভিন্ন পণ্যদ্রব্য এখানে নামানো হতো। পরে এসব পন্যদ্রব্য মনু ও কুশিয়ারা নদী হয়ে মৌলভীবাজার শেরপুর, সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর ও হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ আজমিরীগঞ্জ এলাকায় নিয়ে যাওয়া হতো। যে কারণে এই রেলওয়ে স্টেশনে আসতেন শত শত যাত্রী ব্যবসায়ী।

স্টেশনের নিকটবর্তী মাথাবপুর গ্রামের প্রবীণ নাগরিক হাজী আকবর আলী জানান, এমন এক সময় ছিলো এই স্টেশনে কাজ করে শত শত শ্রমিক দিন মজুর পরিবার জীবিকা নির্বাহ করতেন। কিন্তু ২০১৬ সালে আকস্মিকভাবে রেলওয়ে স্টেশনটি বন্ধ ঘোষণা করা হয়। এখন ঢাকাগামী সুরমা মেইল চট্টগ্রামগামী জালালাবাদ এক্সপ্রেস ট্রেনসহ অনেক লোকাল ট্রেন এখানে যাত্রাবিরতি করে।যাত্রীরাও উঠানামা করেন। কিন্তু স্টেশনঘর বন্ধ থাকায় টিকেট কাটা যায় না। এতে একদিকে রেলওয়ে বিভাগ যেমন লাখ লাখ টাকার রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে,ঠিক তেমনি যাত্রীরাও বিনা টিকেটে ট্রেনে উঠে নানা বিড়ম্বনার শিকার হন। এমনকি স্টেশন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় শতাব্দীর প্রাচীন মনু বাজারটিও এখন বিলুপ্তির পথে।

এলাকাবাসী জানান,স্টেশনটি চালু করার দাবিতে আমরা ২০১৭ -২০ সাল পর্যন্ত কয়েকবার বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেছি। রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ একজন স্টেশন মাস্টার দেওয়ার আশ্বাস দিলেও এখনো তা চালু করেনি।

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

মৌলভীবাজার জেলার ট্রানজিট পয়েন্ট মনু রেলওয়ে স্টেশন এখন নীরব নিস্তব্ধ

আপডেট সময় ১২:০০:০৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৮ মে ২০২২

মৌলভীবাজার২৪ ডেস্ক:  ট্রেন আসার ঘণ্টা এখন আর বাজে না। নদীতে ভাসে না সারি সারি পণ্যবাহী নৌকা। নেই কুলি মজুর যাত্রীদের হাল্লা চিৎকার। জেলার ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রাণকেন্দ্র তথা ট্রানজিট পয়েন্ট মনু রেলওয়ে স্টেশন এখন নীরব নিস্তব্ধ। কালের সাক্ষী পরিত্যক্ত এই রেলওয়ে স্টেশনটি এখন বিলুপ্তির পথে।

বাংলাদেশ রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলীয় জোনের সিলেট- আখাউড়া সেকশনে কুলাউড়া উপজেলার হাজীপুর ইউনিয়নে মনু রেলওয়ে স্টেশনের অবস্থান। পাশ দিয়ে বয়ে গেছে খরস্রোতা মনু নদী।দুই পাশে বৃহত্তর সিলেটের কি পয়েন্ট মনু ও পলক নদীর রেলওয়ে ব্রিজ। রেলওয়ে স্টেশনকে ঘিরে গড়ে ওঠা শতাব্দীর প্রাচীন মনুবাজার

জানা যায়, পাশে শমসেরনগর ও টিলাগাও রেলওয়ে স্টেশন থাকার পরও শুধু নৌপথে পণ্যপরিবহনের জন্য স্থাপিত হয় মনু রেলওয়ে স্টেশন। শতাব্দীর প্রাচীন এই রেলওয়ে স্টেশনটি এখন রেলওয়ের পরিত্যক্ত সম্পত্তি । স্টেশন মাস্টার,বুকিং ক্লার্ক পাইটম্যানের বসার ঘর এবং যাত্রী বিশ্রামাগারটি তালাবদ্ধ।দীর্ঘদিন জনমানবের পদচিহ্ন না পড়ার চিত্র স্পষ্ট। পাশেই রেলওয়ের বিশাল গুদামঘর।এই গুদামঘরে মালের ওয়াগন নিয়ে যাওয়ার জন্য নির্মিত প্রায় এক কিলোমিটার আলাদা রেললাইনও এখন পরিত্যক্ত।

মনু বাজারের প্রবীণ বেকারি ব্যবসায়ী জানালেন, এই রেলওয়ে স্টেশনকে ঘিরে আমার ব্যবসার বয়স ৪০-৪৫ বছর হয়ে গেছে । ১৯৮২-৮৩ সালেও মালামাল নিয়ে যাওয়ার জন্য স্টেশন লাগুয়া নদীর ঘাটে প্রতিদিন শতাধিক নৌকা দাঁড়ানো থাকতো। একসময় ঢাকা ভৈরব চাঁদপুর চট্টগ্রাম থেকে তেল চিনি পেয়াজ রসুন বাসনকোসনসহ বিভিন্ন পণ্যদ্রব্য এখানে নামানো হতো। পরে এসব পন্যদ্রব্য মনু ও কুশিয়ারা নদী হয়ে মৌলভীবাজার শেরপুর, সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর ও হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ আজমিরীগঞ্জ এলাকায় নিয়ে যাওয়া হতো। যে কারণে এই রেলওয়ে স্টেশনে আসতেন শত শত যাত্রী ব্যবসায়ী।

স্টেশনের নিকটবর্তী মাথাবপুর গ্রামের প্রবীণ নাগরিক হাজী আকবর আলী জানান, এমন এক সময় ছিলো এই স্টেশনে কাজ করে শত শত শ্রমিক দিন মজুর পরিবার জীবিকা নির্বাহ করতেন। কিন্তু ২০১৬ সালে আকস্মিকভাবে রেলওয়ে স্টেশনটি বন্ধ ঘোষণা করা হয়। এখন ঢাকাগামী সুরমা মেইল চট্টগ্রামগামী জালালাবাদ এক্সপ্রেস ট্রেনসহ অনেক লোকাল ট্রেন এখানে যাত্রাবিরতি করে।যাত্রীরাও উঠানামা করেন। কিন্তু স্টেশনঘর বন্ধ থাকায় টিকেট কাটা যায় না। এতে একদিকে রেলওয়ে বিভাগ যেমন লাখ লাখ টাকার রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে,ঠিক তেমনি যাত্রীরাও বিনা টিকেটে ট্রেনে উঠে নানা বিড়ম্বনার শিকার হন। এমনকি স্টেশন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় শতাব্দীর প্রাচীন মনু বাজারটিও এখন বিলুপ্তির পথে।

এলাকাবাসী জানান,স্টেশনটি চালু করার দাবিতে আমরা ২০১৭ -২০ সাল পর্যন্ত কয়েকবার বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেছি। রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ একজন স্টেশন মাস্টার দেওয়ার আশ্বাস দিলেও এখনো তা চালু করেনি।