ঢাকা ১২:৫২ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শ্রীমঙ্গল কাপড়ের দোকানে আগুন,পথে বসেছে ৪০ ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী

নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ১২:০৫:৫৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০২২
  • / ৩২৪ বার পড়া হয়েছে
বিশেষ প্রতিনিধি:  মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে শহরের পৌর এলাকার এম সাইফর রহমান মার্কেট সংলগ্ন কাপড়ের দোকানে আগুন লেগে ৪২ জন ক্ষুদ্র কাপড় ব্যবসায়ীর স্বপ্ন পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।
শনিবার (৩১ ডিসেম্বর)  ভোরে এ ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে।
খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের ৩টি ইউনিট গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। অল্পের জন্য ভয়াবহ এ অগ্নিকান্ডের কবল থেকে থেকে রক্ষা পেয়েছে পাশে থাকা একটি পেট্রোল পাম্প ও একটি পাইভেট ক্লিনিক। এসময় আগুনে পুড় ক্ষতিগ্রস্থ হয় একটি মিনি ট্রাক।
ব্যবসায়ী ও এলাকার নৈশপ্রহরী সূত্রে জানা যায়, শনিবার ভোর চারটার দিকে মার্কেটের পোস্ট অফিস রোডের পেট্রোল পাম্প অংশে থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। মুহূর্তে আগুন চারদিকে ছড়িয়ে পরে। এ সময় মার্কেটের পাশের পেট্রোল পাম্পে দাঁড়িয়ে থাকা একটি নতুন মিনি ট্রাকে আগুন ধরে যায়। আগুনের উত্তাপে আশেপাশের বহুতল ভবনের জানালার কাঁচ ভেঙে পড়ে। পাশের একটি প্রাইভেট ক্লিনিকে আবার অবস্থানরত রোগী ও রোগীর স্বজনরা আতঙ্কগ্রস্থ হয়ে পড়েন। ক্ষতিগ্রস্থ ব্যবসায়ীদের দাবি, আগুনে তাদের দেড় কোটি টাকারও বেশি ক্ষতি হয়েছে। প্রতিটি দোকানে কম করে হলেও ৫ লাখ টাকার কাপড় ছিলো।
ক্ষতিগ্রস্থ ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী মনিরুল ইসলাম জানান, তার দোকানে ১৫ লাখ টাকার উপরে মালামাল ছিল। সব মাল পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। তাঁর মতো আরো ৩৫টি দোকান ও মালামাল সম্পুর্ন পুড়ে গিয়ে ব্যবসায়ীদের স্বপ্ন পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। তিনি বলেন, ক্ষতিগ্রস্থ ব্যবসায়ীরা সবাই বিভিন্ন সংস্থা থেকে লোন নিয়ে শীতের পোষাক কিনে বিক্রির জন্য বসেছিলেন। এখন তারা সব হারিয়ে একেবারে নিস্ব হয়ে গেছেন। এসব ব্যবসায়ীরা সর্বস্ব হারিয়ে পথে বসেছেন। সাথে ভ্যান গাড়িতে থাকা আরো ৪টি ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীও ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন।
শ্রীমঙ্গল ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক হাজী মো: কামাল হোসেন জানান, আগুন লাগার খবর পেয়ে তিনি সাথে সাথে ঘটনাস্থলে এসেছেন, এবং আগুন নিভাতে এবং ক্লিনিকে অবস্থানরতদের সরাতে কাজ করেছেন। তার দাবি বৈদ্যুতিক শটসার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে। তবে প্রত্যক্ষদর্শীকে উদ্ধৃত করে পুড়ে যাওয়া দোকানের কয়েকজন ব্যবসায়ী জানান, ঘটনার সময় অজ্ঞাত দুজন লোককে আগুন আগুন বলে চিৎকার করতে দেখা গেছে। পরে আরও কয়েকজন অজ্ঞাত লোককে আগুন নেভানোর চেষ্টা করতে দেখা গেছে। এটি রহস্যজনক উল্লেখ করে ক্ষতিগ্রগ্রস্থ ব্যবসায়ীরা ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করেছেন। জানা যায়, ওই মার্কেটের জমির মালিকানা নিয়ে পাশ্ববর্তী পেট্রোল পাম্পের মালিকের সঙ্গে পৌরসভার বিরোধ রয়েছে। মালিকানার বিষয়টি আদালতে বিচারাধীন। বর্তমানে জমিটি পৌর কর্তৃপক্ষের দখলে রয়েছে। যদিও এর আগে জমিটি পেট্রোলপাম্প মালিক পক্ষের দখলে ছিল।
আগুন লাগার ব্যাপারে জানতে চাইলে শ্রীমঙ্গল ফায়ার সার্ভিস অফিসের ইনচার্জ মো: আবু তাহের জানান, আগুন লাগার সঠিক কারণ ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এই মুহূর্তে বলা যাবে না। আমরা তদন্ত করে পরে জানাবো।
আগুনের খবর পেয়ে সকালে স্থানীয় সংসদ সদস্য উপাধ্যক্ষ ড. আব্দুর শহীদ ঘটনাস্থল পরির্দশন করে ক্ষতিগ্রস্থ ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলেন, এসময় তিনি সরকারের পক্ষ থেকে ব্যবসায়ীদের সহযোগিতা করার আস্বাস দেন।
এছাড়াও শ্রীমঙ্গল পৌরসভার মেয়র মো: মহসিন মিয়া ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ভানুলাল রায়, উপজেলা নির্বাহী অফিসার আলী রাজিব মাহমুদ মিঠুন, শ্রীমঙ্গল থানার অফিসার ইনচার্জ মো: জাহাঙ্গীর হোসেন সর্দার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
Seen by Muslim Chowdhury at Friday 6:08pm
ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

শ্রীমঙ্গল কাপড়ের দোকানে আগুন,পথে বসেছে ৪০ ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী

আপডেট সময় ১২:০৫:৫৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০২২
বিশেষ প্রতিনিধি:  মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে শহরের পৌর এলাকার এম সাইফর রহমান মার্কেট সংলগ্ন কাপড়ের দোকানে আগুন লেগে ৪২ জন ক্ষুদ্র কাপড় ব্যবসায়ীর স্বপ্ন পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।
শনিবার (৩১ ডিসেম্বর)  ভোরে এ ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে।
খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের ৩টি ইউনিট গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। অল্পের জন্য ভয়াবহ এ অগ্নিকান্ডের কবল থেকে থেকে রক্ষা পেয়েছে পাশে থাকা একটি পেট্রোল পাম্প ও একটি পাইভেট ক্লিনিক। এসময় আগুনে পুড় ক্ষতিগ্রস্থ হয় একটি মিনি ট্রাক।
ব্যবসায়ী ও এলাকার নৈশপ্রহরী সূত্রে জানা যায়, শনিবার ভোর চারটার দিকে মার্কেটের পোস্ট অফিস রোডের পেট্রোল পাম্প অংশে থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। মুহূর্তে আগুন চারদিকে ছড়িয়ে পরে। এ সময় মার্কেটের পাশের পেট্রোল পাম্পে দাঁড়িয়ে থাকা একটি নতুন মিনি ট্রাকে আগুন ধরে যায়। আগুনের উত্তাপে আশেপাশের বহুতল ভবনের জানালার কাঁচ ভেঙে পড়ে। পাশের একটি প্রাইভেট ক্লিনিকে আবার অবস্থানরত রোগী ও রোগীর স্বজনরা আতঙ্কগ্রস্থ হয়ে পড়েন। ক্ষতিগ্রস্থ ব্যবসায়ীদের দাবি, আগুনে তাদের দেড় কোটি টাকারও বেশি ক্ষতি হয়েছে। প্রতিটি দোকানে কম করে হলেও ৫ লাখ টাকার কাপড় ছিলো।
ক্ষতিগ্রস্থ ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী মনিরুল ইসলাম জানান, তার দোকানে ১৫ লাখ টাকার উপরে মালামাল ছিল। সব মাল পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। তাঁর মতো আরো ৩৫টি দোকান ও মালামাল সম্পুর্ন পুড়ে গিয়ে ব্যবসায়ীদের স্বপ্ন পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। তিনি বলেন, ক্ষতিগ্রস্থ ব্যবসায়ীরা সবাই বিভিন্ন সংস্থা থেকে লোন নিয়ে শীতের পোষাক কিনে বিক্রির জন্য বসেছিলেন। এখন তারা সব হারিয়ে একেবারে নিস্ব হয়ে গেছেন। এসব ব্যবসায়ীরা সর্বস্ব হারিয়ে পথে বসেছেন। সাথে ভ্যান গাড়িতে থাকা আরো ৪টি ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীও ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন।
শ্রীমঙ্গল ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক হাজী মো: কামাল হোসেন জানান, আগুন লাগার খবর পেয়ে তিনি সাথে সাথে ঘটনাস্থলে এসেছেন, এবং আগুন নিভাতে এবং ক্লিনিকে অবস্থানরতদের সরাতে কাজ করেছেন। তার দাবি বৈদ্যুতিক শটসার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে। তবে প্রত্যক্ষদর্শীকে উদ্ধৃত করে পুড়ে যাওয়া দোকানের কয়েকজন ব্যবসায়ী জানান, ঘটনার সময় অজ্ঞাত দুজন লোককে আগুন আগুন বলে চিৎকার করতে দেখা গেছে। পরে আরও কয়েকজন অজ্ঞাত লোককে আগুন নেভানোর চেষ্টা করতে দেখা গেছে। এটি রহস্যজনক উল্লেখ করে ক্ষতিগ্রগ্রস্থ ব্যবসায়ীরা ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করেছেন। জানা যায়, ওই মার্কেটের জমির মালিকানা নিয়ে পাশ্ববর্তী পেট্রোল পাম্পের মালিকের সঙ্গে পৌরসভার বিরোধ রয়েছে। মালিকানার বিষয়টি আদালতে বিচারাধীন। বর্তমানে জমিটি পৌর কর্তৃপক্ষের দখলে রয়েছে। যদিও এর আগে জমিটি পেট্রোলপাম্প মালিক পক্ষের দখলে ছিল।
আগুন লাগার ব্যাপারে জানতে চাইলে শ্রীমঙ্গল ফায়ার সার্ভিস অফিসের ইনচার্জ মো: আবু তাহের জানান, আগুন লাগার সঠিক কারণ ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এই মুহূর্তে বলা যাবে না। আমরা তদন্ত করে পরে জানাবো।
আগুনের খবর পেয়ে সকালে স্থানীয় সংসদ সদস্য উপাধ্যক্ষ ড. আব্দুর শহীদ ঘটনাস্থল পরির্দশন করে ক্ষতিগ্রস্থ ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলেন, এসময় তিনি সরকারের পক্ষ থেকে ব্যবসায়ীদের সহযোগিতা করার আস্বাস দেন।
এছাড়াও শ্রীমঙ্গল পৌরসভার মেয়র মো: মহসিন মিয়া ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ভানুলাল রায়, উপজেলা নির্বাহী অফিসার আলী রাজিব মাহমুদ মিঠুন, শ্রীমঙ্গল থানার অফিসার ইনচার্জ মো: জাহাঙ্গীর হোসেন সর্দার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
Seen by Muslim Chowdhury at Friday 6:08pm