শ্রীমঙ্গল শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্রীকে যৌন হয়রানি অভিযোগ গ্রেফতার – ১
- আপডেট সময় ০১:৫৮:৪৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩
- / ৬৭৯ বার পড়া হয়েছে
শ্রীমঙ্গল প্রতিনিধিঃ মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে এক শিক্ষককে স্কুলের ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগে গ্রেফতার করেছে শ্রীমঙ্গল থানা পুলিশ।
উপজেলার রাজঘাট ইউনিয়নের খেজুরীছড়া চা বাগানের র্যানার স্কুল অ্যান্ড কলেজের খন্ডকালিন শিক্ষক শয়ন তাঁতী উক্ত স্কুলের সপ্তম শ্রেণীর এক ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ ওঠেছে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে।
সোমবার (৪ সেপ্টেম্বর) অভিযুক্ত শিক্ষক শয়ন তাঁতী ( ৩৫ ) কে গ্রেফতার করে শ্রীমঙ্গল থানা পুলিশ।
অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে এর আগেও অনেকে ছাত্রীদের হয়রানির অভিযোগ করেন এলাকাবাসী অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে শ্রীমঙ্গল থানায় ভুক্তভোগীর মা অভিযোগ দায়ের করেন। শিক্ষক শয়ন তাঁতী রাজঘাট চা বাগানের গোপাল তাঁতির ছেলে।
ঘটনার বিবরণে এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে জানা যায় শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির ঘটনাটি ২৭ শে আগস্ট সকাল ৯ টার দিকে স্কুলের সপ্তম শ্রেণীর ক্লাস রুমে ঘটে বলে জানা গেছে। ঘটনার খবর জানতে পেয়ে সোমবার সকালে অভিযুক্ত শিক্ষকের বিচারের দাবিতে স্কুল প্রাঙ্গণে বিক্ষোভ আন্দোলন করেছেন স্কুলের শিক্ষার্থীরা।
ভুক্তভোগী ছাত্রী মঙ্গলবার (০৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে জানায়, ‘স্যার গত ৩ মাস যাবত আমাকে নানা ভাবে হয়রানি করে চলেছেন। বিভিন্ন ইঙ্গিতে কুপ্রস্তাব দিয়েছেন। আমি রাজি হইনি। গত ২৭ শে আগস্ট সকালে স্কুলে ক্লাস শুরুর আগে শিক্ষক শয়ন তাঁতি তাকে সপ্তম শ্রেণীর সি- সেকশন ক্লাস রুমের ভিতর ডেকে নিয়ে যায়। তখন তার সাথে বান্ধবী ছিল, ওই শিক্ষক বান্ধবীকে খাওয়ার জন্য পানি আনতে পাঠিয়ে দেয়। সে সময় ছাত্রীকে বলতে থাকে তোমাকে প্রেমের প্রস্তাব দিয়েছিলাম, তুমি তো কিছু জানালে না আমাকে। এখন বলো তুমি আমার সাথে প্রেম করবা কি-না, ভালোবাসবে কি-না। তখন ছাত্রী বলে স্যার আমি বাসায় মা-বাবার সাথে আলাপ করে আপনাকে জানাবো। এখন কিছু বলতে পারবো না। ঠিক সে মুহুর্তে শিক্ষক শয়ন তাঁতি রুমের ভিতর একা পেয়ে ছাত্রীর হাত ধরে ফেলেন। এক পর্যায়ে বান্ধবী পানি নিয়ে চলে আসলে শিক্ষক ছাত্রীর হাত ছেড়ে দেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক খেজুরীছড়া চা বাগানের এক নারী মুঠোফোনে জানান, অভিযুক্ত ওই শিক্ষক শয়ন তাঁতি পূর্বে তার কোচিং সেন্টারে আরো কয়েকজন মেয়ের সাথে এমন যৌন হয়রানির মতো ঘটনা ঘটিয়েছেন। ৩ থেকে ৪ জন স্কুল পড়ুয়া মেয়েদেরকে কুপ্রস্তাব দিয়েছিলেন। যাকে কোচিং করাতেন তার সাথেই প্রেম করতো। কিন্তু ভয়ে তারা কাউকে কিছু বলেনি। শিক্ষকের ব্যবহার ভালো না। ছোট- বড় সবার সাথে উনি এরকম আচরণ করতেন। এই ঘটনাকে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে একটি মহল। আমি এর সঠিক বিচার দাবি করছি।
র্যানার স্কুল উচ্চ অ্যান্ড কলেজের প্রধান শিক্ষক মো. নুরুল হক বলেন, ‘যৌন হয়রানির ঘটনায় আমার বিদ্যালয়ের খন্ডকালীন শিক্ষক শয়ন তাঁতির উপর একটা অভিযোগ উঠেছে। বিদ্যালয়ের সভাপতি বরাবর ছাত্রীর পরিবার অভিযোগ দিয়েছে। যেহেতু অস্থায়ীভাবে সে চাকুরীরত ছিল, তাই আমরা তাকে বহিষ্কার করেছি। শিক্ষক প্যানেল থেকে বাদ দিয়ে দিছি। কিন্তু পুরাতন ছাত্ররা এই বিচারে সন্তুষ্ট নয়, তাই তারা সবাই মিলে স্কুলে আন্দোলন করেছে। আমি একজন নিয়োগকারী কর্মকর্তা হিসেবে তাকে চাকুরী থেকে বাদ দিতে পারি। কিন্তু তাকে শাস্তি দেওয়াটা তো আমাদের নিয়মের মধ্যে পরে না।
ঘটনার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই দূর্জয় সরকার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, সোমবার সকালে ভুক্তভোগী ছাত্রীর মা থানায় যৌন হয়রানির বিষয়ে অভিযোগ দায়ের কারেন, অভিযোগ দায়েরের পরই অভিযুক্ত ওই শিক্ষককে গ্রেফতার করা হয়। তার বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা হয়েছে।
শ্রীমঙ্গল থানা পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘অভিযোগ দেওয়ার পর শিক্ষককে গ্রেফতার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। মামলার পরিপ্রেক্ষিতে আসামীকে কোর্টে প্রেরণ করা হয়েছে।