সাবেক অর্থ মন্ত্রীর ৬৯ বছর বয়সী ভাই নাশকতার মামলা! বাহারমর্দান এখন বিএনপি নেতাকর্মী শুন্য
- আপডেট সময় ০৫:৩১:২৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৩
- / ৪০৭ বার পড়া হয়েছে
সাবেক অর্থ ও পরিকল্পনা মন্ত্রীর ৬৯বয়সী ভাই বদরুল আলম এর বাহারমর্দানের বাড়ীতে সাদা পোশাকধারী পুলিশ অভিযান চালিয়েছে। মন্ত্রীর আত্মীয় স্বজনসহ দলীয় নেতাকর্মীদের ও তাঁকে ধরতে পুলিশ ব্যাপক তৎপরতা চালাচ্ছে। ফলে সাবেক অর্থ মন্ত্রীর গ্রাম বাহারমর্দান এখন বিএনপির সমর্থক ও নেতা কর্মী শুন্য। এমনকি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযান ও গ্রেফতারের ভয়ে বিএনপি সমমনারাও বাসা বাড়ী ছাড়া।
গত বুধবার ও বৃহস্পতিবার রাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিপুল সংখ্যক সদস্যরা এ অভিযান চালিয়েছে। মন্ত্রীর মামাতো ভাইয়ের বাড়ীতে অভিযান শেষে বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির অন্যতম সদস্য মরহুম এম সাইফুর রহমান এর বাড়িতে তাঁর জ্যেষ্ঠ পুত্র সাবেক এমপি ও মৌলভীবাজার জেলা বিএনপির সভাপতি এম নাসের রহমান এর খুঁজে ব্যাপক তল্লাশি চালায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা । এদিন রাতে বিএনপি ছাত্রদল,যুবদল,স্বেচ্ছাসেবকদলসহ অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মীর বাড়িতেও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা অভিযান পরিচালনা করে।
শুধু তাই নয়, সাবেক অর্থ ও পরিকল্পনা মন্ত্রীর ছোট ভাই ৬৯ বছর বয়সী মৌলভীবাজার জেলা বিএনপির সহ সভাপতি বদরুল আলম কে সাজানো নাশকতার মামলায় আসামি করা হয়েছে বলে দাবি করেছে স্থানীয় গ্রামবাসী ও বিএনপি নেতারা। এ নিয়ে এলাকায় দলমত নির্বিশেষে সাধারণ মানুষের মাঝে বিরুপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
এলাকাবাসী জানান, গ্রেফতার আতঙ্কে বাহারমর্দানের বিএনপির অনেক নেতাকর্মী ও সমর্থকরাও ঘরবাড়ি ছাড়া। রাত দিন সমান তালে গোয়েন্দা সংস্থার লোকজনের নজরদারি ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা এলাকায় ঘুরপাক করে। বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের বাসা বাড়ীতে অভিযান পরিচালনা করে।
গত ৯ নভেম্বর মৌলভীবাজার সদর মডেল থানার উপ- পুলিশ পরিদর্শক মো.মুখলেছুর রহমান লস্কর বাদী হয়ে সরকারি সম্পত্তি ক্ষতি সাধন ও জনসাধারণ চলাচলের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি সহ বিভিন্ন প্রকার সরকার বিরোধী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়ে অন্তর্ঘাত মূলক কর্মকান্ড সৃষ্টির অপরাধে প্রয়াত মন্ত্রীর ভাই বদরুল আলম কে বিশেষ ক্ষমতা আইনে রজু কৃত মামলায় ৫ নম্বর আসামী করা হয়েছে। ঐ মামলায় তাকে ৫৫ বছর বয়স দেখানো হয়। অথচ তাঁর বয়স ৬৯। এ মামলায় উদ্ধার দেখানো হয়, দুটি সিএনজি অটোরিকশা, একটি মটর সাইকেল,তিন লিটার কেরোসিন তৈল,৩৪ টি বাঁশ ও টিনের কোটা দ্বারা তৈরি কৃত মশাল। এবং একটি ব্যানার যাহার মধ্যে খালেদা জিয়া, জিয়াউর রহমান,তারেক জিয়া ও এম নাসের রহমানের ছবি এবং বড় অক্ষরে অবরোধ ও যাহার নীচে মৌলভীবাজার জেলা বিএনপি লেখা রয়েছে ।
মামলায় উল্লেখ করা হয়, ৮ নভেম্বর সদর উপজেলার হিলালপুরসহ নতুন ব্রীজ আশপাশ এলাকায় বিএনপি ঘোষিত অবরোধের সমর্থনে বাহারমর্দ্দন টু সম্পাসী রাস্তার উপর রাত পৌণে আটটারদিকে সদর উপজেলা সহ বিভিন্ন উপজেলার বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মী গণ আগুন মশাল জ্বালিয়ে রাস্তার যানবাহন ও জনসাধারণের চলাচলের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি সহ জনমনে আতঙ্ক ও ভীতির সঞ্চার সৃষ্টি করে। এসময় পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হাই পিপলুকে আটক করে। এবং পুলিশ দেখে অন্যান্যরা পালিয়ে যায়। এ মামলার পলাতক প্রধান আসামি করা হয়েছে, মৌলভীবাজার সরকারি কলেজ ছাত্রদলের আহবায়ক জনি আহমদকে। এছাড়াও আসামি করা হয় , জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আকিদুর রহমান সোহান, সদর উপজেলা যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক আমীর মোহাম্মদ, সদর উপজেলা বিএনপির সহ সাংগঠনিক সম্পাদক শামীম আহমেদ মেম্বার, জেলা যুবদলের সহ গ্রাম বিষয়ক সম্পাদক মঞ্জু হক মেম্বার, স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা আনোয়ার আহমেদ,পাপ্পুসহ অজ্ঞাত নামা আরও ১৫/২০ জনকে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা বিএনপি’র সহ-সভাপতি ও এম সাইফুর রহমান স্মৃতি পরিষদের সহ-সভাপতি বদরুল আলম বলেন,’আমি দেশ, জাতি ও মানুষের কল্যাণের স্বার্থে গণতন্ত্রের জন্য রাজনীতি করি। আগুন দেয়া জনমনে ভীতি সৃষ্টি করা কিংবা সড়ক বন্ধ করা ৬৯ বছর বয়সে তা কী সম্ভব। এই মিথ্যা মামলার বিচারের ভার আমি জনগণের কাছেই দিলাম’।