হযরত শাহ্ আজম রহ. দরগাহ্ শরীফের পীর ছাহেবের ৪তম মৃ ত্যু বার্ষিকী

- আপডেট সময় ১১:০০:৪৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ জুন ২০২৫
- / ১ বার পড়া হয়েছে
কমলগঞ্জে হযরত হযরত শাহ আজম রহ দরগাহ্ শরীফের পীর ছাহেব ও হযরত শাহ আজম রহ হিফজুল কুরআন দরগাহ মডেল মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা, ভানুগাছ সফাত আলী সিনিয়র ফাজিল ডিগ্রি মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাকালীন উস্তাদ হযরত মাওলানা শাহ্ মোহাম্মদ মোশাররফ আলী ছাহেব (রহ.) এর আজ ৪র্থ মৃত্যু বার্ষিকী।
তিনি ২০২১ সালের ২২ জুন আমাদের সবাইকে শোক সাগরে ভাসিয়ে মহান রাব্বুল আলামিনের ডাকে সাঁড়া দেন। আমাদের কাছে এই দিনটি অত্যন্ত দুঃখের ও বেদনাদায়ক। তিনি ছিলেন হাজার হাজার আলেমদের ছাত্র-ছাত্রীদের প্রাণপ্রিয় উস্তাদ। আলিম গড়বার কারিগর ছিলেন।
তিনি সব সময় তাঁর ছাত্রদেরকে বাবা বলে সম্বোধন করতেন। বাবা ডাকতেন। কোন দিন তিনি ছাত্রদেরকে নাম ধরে ডাকতেন না। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে শুরু করে একাধারে দীর্ঘ প্রায় ৪০ বছর কমলগঞ্জের ভানুগাছের ঐতিহ্যবাহী সফাত আলী সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসায় প্রতিষ্ঠাকালীন সময় থেকে তিনি ইলমে ওহির খেদমত চালিয়ে যান।
এই মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাকাল থেকে তাঁহার শিক্ষকতা শুরু। জীবনের বেশির ভাগ সময়ই তিনি এই মাদ্রাসার খেদমতে অতিবাহিত করেন।
পরিবার ও দ্বীনি শিক্ষাদানের পাশাপাশি নিজ এলাকায় খুবই পরিশ্রমের বিনিময়ে তিনি সহ এলাকার সম্মানিত মুরুব্বিদেরকে নিয়ে একটি মসজিদ নির্মাণ করেন। সকলের মতামতের ভিত্তিতে মসজিদের নামকরণ করা হয় কুমড়াকাপন হযরত শাহ্ আজম (রহ.) দরগাহ জামে মসজিদ।
তিনি ঐ মসজিদে একাধারে ২৫ বছর ইমাম, খতিব ও প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব আনজাম দেন। কিন্তু মসজিদের খেদমতের কোন বিনিময় বা হাদিয়া গ্রহণ করেন না। তাঁর সব সময় চিন্তা ছিল মসজিদটি কিভাবে পূর্ণ নির্মাণ করা যায়। ১ তলা, দুই তলা কিভাবে হবে। আলহামদুলিল্লাহ বর্তমানে দেশ ও প্রবাসীদের সার্বিক সহযোগিতায় ৩ তলা বিশিষ্ট বিশাল মসজিদর ১ম তলার কাজ প্রায় শেষের দিকে। অসম্পূর্ণ কাজ ও সকলের সহযোগিতায় ইনশাআল্লাহ সম্পূর্ণ হবে। আল্লাহ তাআলা যেন সাহায্যগারদেরকে দুনিয়া ও আখেরাতে পুরস্কার ও কল্যাণ দান করেন। তাঁর বাবার দরগাহ্ শরীফ সংলগ্ন হযরত শাহ আজম (রহ.) হিফজুল কোরআন দরগাহ মডেল মাদ্রাসা নামে একটি হাফিজি মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করেন। এবং আদমপুরের ভানুবিল গ্রামে হযরত শাহ আজম রহ. এর নামানুসারে একটি সড়কের নামকরণ করেন। তিনি হযরত শাহ আজম রহ দরগাহ ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ছিলেন। তিনি হযরত আজম শাহ (রহ.) দরগাহ্ শরীফের গদ্দিনীশিন হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি রাস্তার পাশে বিভিন্ন ধরনের গাছ (ফলগাছ) রোপন করতেন, যাতে পথচারী লোকেরা গাছের নিছে বসে গাছের ছায়ায় আরাম করতে পারে। এবং ফলের সময় ফল ও খেতে পারে। তাঁর একটি আমল ছিল তিনি সবসময়ই মানুষদেরকে আগে সালাম দিতেন তাঁর আগে কেউ তাকে সালাম দিতে পারতো না। তিনি জীবনের বেশির ভাগ সময় মসজিদ, মাদ্রাসা, এতিমখানা,খানকাহ এ সময় ব্যয় করেছেন। তিনি আরবী-উর্দু-ফারসী ভাষায় খুবই দক্ষ একজন আলেম ছিলেন। এবং উনার আরবী, উর্দু, ফারসী, বাংলা, ইংরেজী হাতের লিখা খুবই চমৎকার ছিল। অসংখ্য দেশ ও প্রবাসে অসংখ্য মুরিদিন-মুহিব্বিন ভক্তবৃন্দ, গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। নিঃসন্দেহে তিনি আল্লাহ তাআলার নেক বান্দা (ওলি ছিলেন) খোদাভিরু, মুত্তাকী পরহেজগার, দ্বীনদার,সৎ নিষ্ঠাবান কথা বললে মুচকি হাসতেন উত্তম ব্যবহারের অধিকারী, আশেকে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও একজন পরোপকারী বান্দাহ ছিলেন।
উল্লেখ্য যে, আজ ২৪-০৬-২০২৫ ইংরেজী রোজ মঙ্গলবার তাঁর ইন্তেকাল বার্ষিকী উপলক্ষে উনার প্রতিষ্ঠিত হযরত শাহ আজম রহ. হিফজুল কুরআন দরগাহ মডেল মাদ্রাসায় পবিত্র কুরআন শরীফের খতম, খতমে খাজেগান, দোয়া ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।
তিনি তাঁহার বাবার দরগাহ্ শরীফ সংলগ্ন কবরে চিরনিন্দ্রায় শায়িত । রাব্বে কারিম যেন আমাদের প্রাণপ্রিয় রাহবারকে জান্নাতের সুউচ্চ মাকাম দান করেন।