হাজার হাজার লোকের সমাগমে জানাযা শেষে অশ্রুশিক্ত বিদায়
- আপডেট সময় ১২:৫৬:১৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩
- / ৭৫৫ বার পড়া হয়েছে
বড়লেখা প্রতিনিধি: মৌলভীবাজারের বড়লেখার কিংবদন্তি সাবেক প্রতিমন্ত্রী, আইনজীবী ও কেন্দ্রীয় বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য, মৌলভীবাজার জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি এবাদুর রহমান চৌধুরী (৭৮) বুধবার বিকেল তিনটায় ঢাকায় ইবনে সিনা হাসপাতালে ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহি…রাজিউন)। দীর্ঘদিন ধরে তিনি বিভিন্ন জটিল রোগে ভুগছিলেন।
বৃহস্পতিবার সকাল ১১ টায় পিসি উচ্চ বিদ্যায়ল মাঠে হাজার হাজার লোকের সমাগমে জানাযা শেষে অশ্রুশিক্ত বিদায় জানান শুভাকাঙ্ক্ষীরা।
বর্ষিয়ান সাবেক পার্লামেন্টারিয়ান অ্যাডভোকেট এবাদুর রহমান চৌধুরী মৌলভীবাজার জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, মৌলভীবাজার-১ আসনের চার বারের সাবেক সংসদ সদস্য, সাবেক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী এবং পরবর্তীতে তথ্য মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি হিসেবে তৎকালীন সরকারের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন।
তিনি সংসদ সদস্য ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী থাকাকালীন তার নির্বাচনী এলাকা মৌলভীবাজার-১ (বড়লেখা ও জুড়ী) আসনে অভূতপূর্ণ উন্নয়ন করেন। শিক্ষা ও যোগাযোগ ক্ষেত্রের তার অবদান আজও জনমনে অম্লান।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, বুধবার বাদ মাগরিব ঢাকার লালমাটিয়া ‘সি’ ব্লক জামে মসজিদে মরহুম অ্যাডভোকেট এবাদুর রহমান চৌধুরীর প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকা থেকে গ্রামের বাড়ি নেওয়ার পথে মৌলভীবাজার শহরে দ্বিতীয় জানাজা ও সকাল এগারোটায় তার নির্বাচনী এলাকা বড়লেখার পাথারিয়া মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে তৃতীয় জানাজা শেষে নিজ গ্রাম দক্ষিণভাগ দক্ষিণ ইউনিয়নের গাংকুলে দাফন সম্পন্ন করা হয়েছে।
অ্যাডভোকেট এবাদুর রহমান চৌধুরী ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান থেকে সক্রিয় রাজনীতি শুরু করেন। মৌলভীবাজার জেলা বারে তিনি আইন পেশা শুরু করলেও পরবর্তীতে তিনি সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী হিসেবে প্র্যাক্টিস শুরু করেন। তিনি ১৯৮৮ সালে চতুর্থ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মৌলভীবাজার-১ আসন থেকে জাতীয় পার্টির প্রার্থী হিসেবে প্রথমবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
একই আসন থেকে তিনি পুনরায় জাতীয় পার্টির প্রার্থী হিসেবে ১৯৯১ সালের পঞ্চম, ১৯৯৬ ও ২০০১ সালে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের প্রার্থী হিসেবে ষষ্ঠ ও সপ্তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পুনরায় বিএনপির প্রার্থী হিসেবে জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি চারদলীয় জোট সরকারের আমলে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী এবং তথ্য মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন।
এ সময় তিনি এলাকার সর্বক্ষেত্রে ব্যাপক উন্নয়ন করেন। ২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি মনোনিত প্রার্থী অ্যাডভোকেট এবাদুর রহমান চৌধুরী আওয়ামী লীগ মনোনিত প্রার্থী শাহাব উদ্দিনের নিকট পরাজিত হন। ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির দলীয় মনোয়ন পেলেও অসুস্থতা জনিত কারণে তিনি তার মনোয়ন প্রত্যাহার করে নেন। এরপর থেকে ক্রমশঃ তার শারিরিক অবস্থার অবনতি ঘটতে থাকে।
শোক প্রকাশ:
বর্ষিয়ান পার্লামেন্টারিয়ান জাতীয়তাবাদী দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য, প্রবীণ রাজনীতিবিদ ও শিক্ষানুরাগী অ্যাডভোকেট এবাদুর রহমান চৌধুরীর মৃত্যুতে তার রুহের মাগফেরাত ও শোক সন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়েছেন সরকারের বন পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী আলহাজ্ব শাহাব উদ্দিন সাবেক সংসদ সদস্য নবাব আলী আব্বাস খান, সিলেট সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, মৌলভীবাজার জেলা বিএনপির সভাপতি সাবেক সংসদ সদস্য এম. নাসের রহমান, বাংলাদেশ আলোকিত পাটির চেয়ারম্যান মুন্সি শরীফুল ইসলাম, সাধারন সম্পাদক মিজানুর রহমান মিজান জেলা বিএনপির জেলা জাপা সভাপতি হাজী কামাল হোসেন, মৌলভীবাজার জেলা বিএনপির সহসভাপতি নাসির উদ্দিন আহমেদ মিঠু, বাংলাদেশ হিউম্যান রাইটস ফাউন্ডেশন বড়লেখা ও জুড়ি উপজেলা শাখার সভাপতি ও বড়লেখা সরকারী কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ জায়েদ আহমেদ উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম সুন্দর, উপজেলা চেয়ারম্যান সোয়েব আহমদ কাতার বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শরীফুল হক সাজু, বড়লেখা উপজেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল হাফিজ, সাধারন সম্পাদক মুজিবুর রহমান খসরু, জাপা আহবায়ক এডভোকেট আফজল হোসেন জুড়ি সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাছুম রেজা এছাড়া জাতীয় সাংবাদিক সংস্থা বড়লেখা উপজেলার সভাপতি এম এম আতিকুর রহমান সাধারন সম্পাদক মো. রুয়েল কামালসহ জন প্রতিনিধি ও রাজনৈতিক দলের নেতারা।