ঢাকা ০৯:৫৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৯ জুন ২০২৫, ১৫ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
ব্রেকিং নিউজ
চা-বাগানের মেধাবী ছাত্রী ইতি গৌড়কে জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে সংবর্ধনা ও আর্থিক পুরস্কার শ্রীমঙ্গল ও কমলগঞ্জে কলেজের পরীক্ষার্থীদের মধ্যে তারেক রহমানের পক্ষ থেকে পানি,স্যালাইন ও মাস্ক বিতরণ ঢাকা ব্যাংক পিএলসি,মৌলভীবাজার শাখার উদ্যোগে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে স্কুল ব্যাংকিং ক্যাম্পেইন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে অবমাননাকর মন্তব্য করার অভিযোগে নারী আইনজীবী আটক  রাজনগর উপজেলা বিএনপির নির্বাচন সম্পন্ন সভাপতি সেলুন সাধারণ সম্পাদক আব্বাস বড়লেখায় মন্দিরে চুরির রহস্য উদঘাটন মৌলভীবাজার শহরের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী এস আর প্লাজার মালিক আব্দুর রকিব আর নেই হযরত শাহ্ আজম রহ. দরগাহ্ শরীফের পীর ছাহেবের ৪তম মৃ ত্যু বার্ষিকী বাংলাদেশ আনজুমানে তালামীযে ইসলামিয়ার অভিষেক অনুষ্ঠান পালিত রাজনগর উপজেলা বিএনপির সম্মেলন ও কাউন্সিল পরিদর্শনে এম নাসের রহমান

সিলেট বোর্ডে ফলাফল বিপর্যয়

নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ০৮:৫১:০৫ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৩
  • / ৬৮৮ বার পড়া হয়েছে

মৌলভীবাজার২৪ ডেস্ক: একলাফে পাসের হার কমেছে ১৩.৪০ ভাগ! এবারের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় (এইচএসসি) সিলেট শিক্ষা বোর্ডে ফলাফল বিপর্যয়ের চিত্র তুলে ধরতে এই একটি তথ্যই যেন যথেষ্ট।

ফলাফলের পরিসংখ্যান বলছে, দেশের ৯টি শিক্ষা বোর্ডের মধ্যে ফলাফলে এবার ৬ষষ্ঠ স্থানে অবস্থান করছে সিলেট বোর্ড।

সংশ্লিষ্টদের মতে, ফলাফল বিপর্যয়ের অন্যতম কারণ বন্যা। সঙ্গে মানবিক ও ব্যবসা প্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থীদের ফলাফলে অবনতি ঘটায় এর নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে মোট পাসের হারে। এ দুই বিভাগের শিক্ষার্থীরা আবার বেশিরভাগই খারাপ করেছেন ইংরেজি বিষয়ে।

ফলাফল পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, সিলেট শিক্ষা বোর্ডে সর্বশেষ পাঁচ বছর ধরে এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফল ওঠা-নামার মধ্যে রয়েছে। ২০১৮ সালে বোর্ডে পাসের হার ছিল ৬২.১১ ভাগ। ২০১৯ সালে কিছুটা বেড়ে পাসের হার দাঁড়ায় ৬৭.০৫ ভাগে।

এরপর ২০২০ সালে করোনাভাইরাসের প্রকোপে এইচএসসি পরীক্ষা গ্রহণ করা হয়নি। তখন শিক্ষার্থীদের ‘অটোপাস’ দেওয়া হয়। ফলে পাসের হার ছিল শতভাগ।

করোনার প্রকোপ কমায় ২০২১ সালে সীমিত সিলেবাসে এইচএসসি পরীক্ষা গ্রহণ করা হয়। তখন সিলেট বোর্ডে পাসের হার ছিল ৯৪.৮০ ভাগ।

সর্বশেষ ২০২২ সালে যে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়, সেটির ফলাফল প্রকাশিত হলো আজ বুধবার। এবার পাসের হার ৮১.৪০ ভাগ।

অর্থাৎ, ২০২১ সালের চেয়ে পাসের হার কমেছে ১৩.৪০ ভাগ।

এবার ৬৬ হাজার ৪৯১ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষা দিয়ে পাস করেছে ৫৪ হাজার ১২২ জন। অর্থাৎ, ফেল করেছে ১২ হাজার ৩৬৯ জন। অথচ এর আগের বছর (২০২১) ৬৬ হাজার ৬৬১ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়ে ফেল করেছিল ৩ হাজার ৪৬৮ জন।

সিলেট শিক্ষা বোর্ডের দায়িত্বশীলদের মতে, এবার পাসের হার কমে যাওয়ার পেছনে গত বছরের বন্যা দায়ী। এ ছাড়া মানবিক এবং ব্যবসা প্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থীদের ফলাফলের অবনতি অনেকাংশে দায়ী। ইংরেজি বিষয়ে এ দুই বিভাগের শিক্ষার্থীদের ফলাফল ভালো হয়নি। এ দুই বিভাগের শিক্ষার্থীরা ফলাফলে পিছিয়ে পড়ায় নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে মোট পাসের হারে।

ফলাফল পর্যালোচনায় দেখা যাচ্ছে, ২০২১ সালে বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীদের পাসের হার ছিল ৯২.৯৭ ভাগ। এবার সামান্য কমে দাঁড়িয়েছে ৯০.৫০ ভাগে।

ওই বছর মানবিক বিভাগের ৯৬.১৩ ভাগ শিক্ষার্থীই পাস করেছিল। কিন্তু এবার পাস করেছে ৭৯.১৮ ভাগ শিক্ষার্থী। অর্থাৎ, এ বিভাগে পাসের হার কমেছে ১৬.৯৫ ভাগ! ২০২১-এ ব্যবসা প্রশাসনের শিক্ষার্থীদের গড় পাসের হার ছিল ৯০.৯৫ ভাগ। কিন্তু এবার ১০.৭২ ভাগ কমে পাসের হার হয়েছে ৮০.২৩ ভাগ।

ফলাফল বিপর্যয়ের কারণ হিসেবে সিলেট শিক্ষা বোর্ডের সদস্যসচিব কবির আহমদ বলেন, গত বছর ভয়াবহ বন্যার পানি অনেকেরই বই-খাতা ভাসিয়ে নিয়ে গিয়েছিল। অনেকে ঠিকমতো প্রস্তুতিও নিতে পারেনি। যে কারণে ফলাফল কিছুটা খারাপ হয়েছে।

তবে ফলাফল নিয়ে অসন্তুষ্ট নয় বলেও মন্তব্য তাঁর, ‘যে ভয়াবহ বন্যার বিপর্যয় কাটিয়ে শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা দিয়েছে. তাতে অসন্তোষের কিছু নেই।’

সিলেট বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক অরুণ চন্দ্র পাল বলেন, ‘বেশিরভাগ শিক্ষার্থীই ইংরেজিতে খারাপ করেছে। এ বিষয়টিতে একটু খেয়াল করলেই আগামীতে ফলাফল বিপর্যয় কাটিয়ে ওঠা সম্ভব।

শিক্ষার্থীরা যাতে ইংরেজিতে ভালো করতে পারে, সে ব্যাপারে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

অবশ্য গেল বছরের ফলাফলের সাথে এবারের ফলাফলের তুলনা করতে খানিকটা আপত্তি আছে দায়িত্বশীলদের। যেমনটি বলছিলেন বোর্ডের সদস্যসচিব কবির আহমদ, ‘গত বছর সীমিত পরিসরে কয়েকটি বিষয়ে পরীক্ষা হয়। এর আগের বছর অটোপাস দেওয়া হয়। তাই এবারের ফলাফলের তুলনা করতে হবে ২০১৯ সালের সাথে। ওই বছর পাসের হার ৬৭.০৫ ভাগ ছিল।

এদিকে, পাসের হারে পিছিয়ে পড়লেও সিলেট বোর্ডে গেলবারের চেয়ে এবার জিপিএ ৫ প্রাপ্তদের সংখ্যা বেড়েছে। ২০২১ সালে জিপিএ ৫ পেয়েছিল ৪ হাজার ৭৩১ জন, এবার এ সংখ্যা ৪ হাজার ৮৭১ জন।

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

সিলেট বোর্ডে ফলাফল বিপর্যয়

আপডেট সময় ০৮:৫১:০৫ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৩

মৌলভীবাজার২৪ ডেস্ক: একলাফে পাসের হার কমেছে ১৩.৪০ ভাগ! এবারের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় (এইচএসসি) সিলেট শিক্ষা বোর্ডে ফলাফল বিপর্যয়ের চিত্র তুলে ধরতে এই একটি তথ্যই যেন যথেষ্ট।

ফলাফলের পরিসংখ্যান বলছে, দেশের ৯টি শিক্ষা বোর্ডের মধ্যে ফলাফলে এবার ৬ষষ্ঠ স্থানে অবস্থান করছে সিলেট বোর্ড।

সংশ্লিষ্টদের মতে, ফলাফল বিপর্যয়ের অন্যতম কারণ বন্যা। সঙ্গে মানবিক ও ব্যবসা প্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থীদের ফলাফলে অবনতি ঘটায় এর নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে মোট পাসের হারে। এ দুই বিভাগের শিক্ষার্থীরা আবার বেশিরভাগই খারাপ করেছেন ইংরেজি বিষয়ে।

ফলাফল পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, সিলেট শিক্ষা বোর্ডে সর্বশেষ পাঁচ বছর ধরে এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফল ওঠা-নামার মধ্যে রয়েছে। ২০১৮ সালে বোর্ডে পাসের হার ছিল ৬২.১১ ভাগ। ২০১৯ সালে কিছুটা বেড়ে পাসের হার দাঁড়ায় ৬৭.০৫ ভাগে।

এরপর ২০২০ সালে করোনাভাইরাসের প্রকোপে এইচএসসি পরীক্ষা গ্রহণ করা হয়নি। তখন শিক্ষার্থীদের ‘অটোপাস’ দেওয়া হয়। ফলে পাসের হার ছিল শতভাগ।

করোনার প্রকোপ কমায় ২০২১ সালে সীমিত সিলেবাসে এইচএসসি পরীক্ষা গ্রহণ করা হয়। তখন সিলেট বোর্ডে পাসের হার ছিল ৯৪.৮০ ভাগ।

সর্বশেষ ২০২২ সালে যে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়, সেটির ফলাফল প্রকাশিত হলো আজ বুধবার। এবার পাসের হার ৮১.৪০ ভাগ।

অর্থাৎ, ২০২১ সালের চেয়ে পাসের হার কমেছে ১৩.৪০ ভাগ।

এবার ৬৬ হাজার ৪৯১ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষা দিয়ে পাস করেছে ৫৪ হাজার ১২২ জন। অর্থাৎ, ফেল করেছে ১২ হাজার ৩৬৯ জন। অথচ এর আগের বছর (২০২১) ৬৬ হাজার ৬৬১ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়ে ফেল করেছিল ৩ হাজার ৪৬৮ জন।

সিলেট শিক্ষা বোর্ডের দায়িত্বশীলদের মতে, এবার পাসের হার কমে যাওয়ার পেছনে গত বছরের বন্যা দায়ী। এ ছাড়া মানবিক এবং ব্যবসা প্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থীদের ফলাফলের অবনতি অনেকাংশে দায়ী। ইংরেজি বিষয়ে এ দুই বিভাগের শিক্ষার্থীদের ফলাফল ভালো হয়নি। এ দুই বিভাগের শিক্ষার্থীরা ফলাফলে পিছিয়ে পড়ায় নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে মোট পাসের হারে।

ফলাফল পর্যালোচনায় দেখা যাচ্ছে, ২০২১ সালে বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীদের পাসের হার ছিল ৯২.৯৭ ভাগ। এবার সামান্য কমে দাঁড়িয়েছে ৯০.৫০ ভাগে।

ওই বছর মানবিক বিভাগের ৯৬.১৩ ভাগ শিক্ষার্থীই পাস করেছিল। কিন্তু এবার পাস করেছে ৭৯.১৮ ভাগ শিক্ষার্থী। অর্থাৎ, এ বিভাগে পাসের হার কমেছে ১৬.৯৫ ভাগ! ২০২১-এ ব্যবসা প্রশাসনের শিক্ষার্থীদের গড় পাসের হার ছিল ৯০.৯৫ ভাগ। কিন্তু এবার ১০.৭২ ভাগ কমে পাসের হার হয়েছে ৮০.২৩ ভাগ।

ফলাফল বিপর্যয়ের কারণ হিসেবে সিলেট শিক্ষা বোর্ডের সদস্যসচিব কবির আহমদ বলেন, গত বছর ভয়াবহ বন্যার পানি অনেকেরই বই-খাতা ভাসিয়ে নিয়ে গিয়েছিল। অনেকে ঠিকমতো প্রস্তুতিও নিতে পারেনি। যে কারণে ফলাফল কিছুটা খারাপ হয়েছে।

তবে ফলাফল নিয়ে অসন্তুষ্ট নয় বলেও মন্তব্য তাঁর, ‘যে ভয়াবহ বন্যার বিপর্যয় কাটিয়ে শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা দিয়েছে. তাতে অসন্তোষের কিছু নেই।’

সিলেট বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক অরুণ চন্দ্র পাল বলেন, ‘বেশিরভাগ শিক্ষার্থীই ইংরেজিতে খারাপ করেছে। এ বিষয়টিতে একটু খেয়াল করলেই আগামীতে ফলাফল বিপর্যয় কাটিয়ে ওঠা সম্ভব।

শিক্ষার্থীরা যাতে ইংরেজিতে ভালো করতে পারে, সে ব্যাপারে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

অবশ্য গেল বছরের ফলাফলের সাথে এবারের ফলাফলের তুলনা করতে খানিকটা আপত্তি আছে দায়িত্বশীলদের। যেমনটি বলছিলেন বোর্ডের সদস্যসচিব কবির আহমদ, ‘গত বছর সীমিত পরিসরে কয়েকটি বিষয়ে পরীক্ষা হয়। এর আগের বছর অটোপাস দেওয়া হয়। তাই এবারের ফলাফলের তুলনা করতে হবে ২০১৯ সালের সাথে। ওই বছর পাসের হার ৬৭.০৫ ভাগ ছিল।

এদিকে, পাসের হারে পিছিয়ে পড়লেও সিলেট বোর্ডে গেলবারের চেয়ে এবার জিপিএ ৫ প্রাপ্তদের সংখ্যা বেড়েছে। ২০২১ সালে জিপিএ ৫ পেয়েছিল ৪ হাজার ৭৩১ জন, এবার এ সংখ্যা ৪ হাজার ৮৭১ জন।