ঢাকা ০২:৩০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

খেজুরের রস হারিয়ে যেতে বসেছে

নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ০১:৪১:৫১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৩
  • / ৪২৪ বার পড়া হয়েছে
কোটচাঁদপুর প্রতিনিধিঃ যশোর-কুষ্টিয়ার যশ,খেজুরের রস। এ প্রবাদ বাক্যটি যেমন হারিয়ে যেতে বসেছে। তেমনি মানুষও ভুলে যেতে বসেছে এ এলাকার শীতের প্রধান আকর্ষন শীতের রস ও গুড়ের স্বাদ। একারনে ওই ছবিটি মানুষকে মনে করিয়ে দিতে কোটচাঁদপুর কৃষি মেলায় স্টোল দিয়েছেন উপজেলার সিঙ্গিয়া গ্রামের কৃষি মৌচ্যার সদস্যরা। এ স্টোলে শোভা পাচ্ছে খেজুরের রস,গুড় ও পাঠালিও।

আগে এ জনপদের  মানুষ ধান,পাঠসহ অন্যান্য পণ্যের মত চাষ হিসেবে নিয়ে ছিলেন খেজুরের রস ও গুড়কেও। বর্তমানে ওই সব ফসলের দিকে মানুষ ঝুকে পড়ায় হারিয়ে যেতে বসেছে শীতের আকর্ষন রস ও গুড়।
এর আগে গ্রামঞ্চলে চোখে পড়তো বিকালে গাছিদের গাছ কাটা,পরের দিন ভোর বেলায় রস সংগ্রহ করা। এরপর তা জ্বালিয়ে গুড় ও পাঠালি বানানোর দৃশ্য।
এ সময় বাড়িতে বাড়তে রস দিয়ে  বানানো হত বিভিন্ন   ধরনের পিঠা । এছাড়া রসের পায়েসও ছিল গ্রাম বাংলার মানুষের অন্যতম খাবার।

কালের বিবর্তনে যা আজ হারিয়ে যেতে বসেছে।
এ কারনে মেলার স্টোলে ওই সব তুলে ধরে মানুষকে হারানো ঐতিহ্য মনে করিয়ে দিয়েছেন তারা।
আর স্টোলের এ সব দেখতে যেমন ভিড় করছেন উৎসুক মানুষ, তেমনি হারানো ঐতিহ্য চোখের সামনে দেখে খুশি ও হচ্ছেন অনেকে।

মেলায় আসা আনোয়ার হোসেন বলেন,আগের দিনের শীতের সকালের প্রধান আকর্ষন ছিল খেজুরের রস। প্রচন্ড শীত করলেও রস খাওয়ার মজায় ছিল আলাদা। বর্তমানে মানুষ তা ভুলতে বসেছে। এখন গ্রাম অঞ্চলে  এ দৃশ্য খুব কম চোখে পড়ে। মানুষ ভুলতে বসেছে রস আর গুড়ের স্বাদ।

এ কারনে আজ স্টোল দিয়ে তা মানুষকে মনে দিতে হচ্ছে। তবে এটা একটা ভাল উদ্যোগ নিয়েছেন তারা। কারন বর্তমান প্রজন্মের বাচ্চারা এটা দেখে অনেক খুশি হয়েছেন।

সিঙ্গিয়া কৃষি মৌর্চার মুকুল বিশ্বাস বলেন,হারানো ঐতিহ্যের সঙ্গে মানুষকে পরিচয় করিয়ে দিতেই আমাদের এ উদ্যোগ। বর্তমান প্রজন্মের বাচ্চারা এ সবের সঙ্গে অনেকে অপরিচিত ছিলেন। তারা এ সব দেখে খুশি হয়েছেন।

তিনি বলেন, এখনও মানুষ খেজুরে রস গুড়ের উৎপাদন করে স্বাবলম্বী হতে পারেন।
প্রতিদিন একজন চাষি ১০-১২ কেজি গুড় বিক্রি করতে পারেন। প্রতি কেজি গুড়ের দাম ২০০ থেকে ২২০ টাকা। এ ছাড়া সকালে অনেকেই খেজুরের রস খেতে আসে। যা বিক্রি করা হয় প্রতি গ্লাস ১০ টাকা। মুকুল বলেন,সব থেকে বড় কথা খেজুরের রস এ এলাকার মানুষের ঐতিহ্য। এটা টিকিয়ে রাখার দায়িত্বও আমাদের। এ কারনে এ কৃষি পণ্যটিকে টিকিয়ে রাখতে আমাদের সকলকে এগিয়ে আসার আহবান জানান ওই চাষি।
তিনদিন ব্যাপী কৃষি মেলার উদ্ভোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন,ঝিনাইদহের জেলা প্রশাসক মনিরা বেগম।

মেলায় সভাপতিত্ব করেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খান মাসুম বিল্লাহ।

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও চেয়ারম্যান মোছাঃ শরিফুননেসা মিকি,ভাইস চেয়ারম্যান রিয়াজ হোসেন, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পিংকি খাতুন,কোটচাঁদপুর পৌরসভার মেয়র সহিদুজ্জামান সেলিম, সাবেক মুক্তিযোদ্ধা তাজুল ইসলাম।

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

খেজুরের রস হারিয়ে যেতে বসেছে

আপডেট সময় ০১:৪১:৫১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৩
কোটচাঁদপুর প্রতিনিধিঃ যশোর-কুষ্টিয়ার যশ,খেজুরের রস। এ প্রবাদ বাক্যটি যেমন হারিয়ে যেতে বসেছে। তেমনি মানুষও ভুলে যেতে বসেছে এ এলাকার শীতের প্রধান আকর্ষন শীতের রস ও গুড়ের স্বাদ। একারনে ওই ছবিটি মানুষকে মনে করিয়ে দিতে কোটচাঁদপুর কৃষি মেলায় স্টোল দিয়েছেন উপজেলার সিঙ্গিয়া গ্রামের কৃষি মৌচ্যার সদস্যরা। এ স্টোলে শোভা পাচ্ছে খেজুরের রস,গুড় ও পাঠালিও।

আগে এ জনপদের  মানুষ ধান,পাঠসহ অন্যান্য পণ্যের মত চাষ হিসেবে নিয়ে ছিলেন খেজুরের রস ও গুড়কেও। বর্তমানে ওই সব ফসলের দিকে মানুষ ঝুকে পড়ায় হারিয়ে যেতে বসেছে শীতের আকর্ষন রস ও গুড়।
এর আগে গ্রামঞ্চলে চোখে পড়তো বিকালে গাছিদের গাছ কাটা,পরের দিন ভোর বেলায় রস সংগ্রহ করা। এরপর তা জ্বালিয়ে গুড় ও পাঠালি বানানোর দৃশ্য।
এ সময় বাড়িতে বাড়তে রস দিয়ে  বানানো হত বিভিন্ন   ধরনের পিঠা । এছাড়া রসের পায়েসও ছিল গ্রাম বাংলার মানুষের অন্যতম খাবার।

কালের বিবর্তনে যা আজ হারিয়ে যেতে বসেছে।
এ কারনে মেলার স্টোলে ওই সব তুলে ধরে মানুষকে হারানো ঐতিহ্য মনে করিয়ে দিয়েছেন তারা।
আর স্টোলের এ সব দেখতে যেমন ভিড় করছেন উৎসুক মানুষ, তেমনি হারানো ঐতিহ্য চোখের সামনে দেখে খুশি ও হচ্ছেন অনেকে।

মেলায় আসা আনোয়ার হোসেন বলেন,আগের দিনের শীতের সকালের প্রধান আকর্ষন ছিল খেজুরের রস। প্রচন্ড শীত করলেও রস খাওয়ার মজায় ছিল আলাদা। বর্তমানে মানুষ তা ভুলতে বসেছে। এখন গ্রাম অঞ্চলে  এ দৃশ্য খুব কম চোখে পড়ে। মানুষ ভুলতে বসেছে রস আর গুড়ের স্বাদ।

এ কারনে আজ স্টোল দিয়ে তা মানুষকে মনে দিতে হচ্ছে। তবে এটা একটা ভাল উদ্যোগ নিয়েছেন তারা। কারন বর্তমান প্রজন্মের বাচ্চারা এটা দেখে অনেক খুশি হয়েছেন।

সিঙ্গিয়া কৃষি মৌর্চার মুকুল বিশ্বাস বলেন,হারানো ঐতিহ্যের সঙ্গে মানুষকে পরিচয় করিয়ে দিতেই আমাদের এ উদ্যোগ। বর্তমান প্রজন্মের বাচ্চারা এ সবের সঙ্গে অনেকে অপরিচিত ছিলেন। তারা এ সব দেখে খুশি হয়েছেন।

তিনি বলেন, এখনও মানুষ খেজুরে রস গুড়ের উৎপাদন করে স্বাবলম্বী হতে পারেন।
প্রতিদিন একজন চাষি ১০-১২ কেজি গুড় বিক্রি করতে পারেন। প্রতি কেজি গুড়ের দাম ২০০ থেকে ২২০ টাকা। এ ছাড়া সকালে অনেকেই খেজুরের রস খেতে আসে। যা বিক্রি করা হয় প্রতি গ্লাস ১০ টাকা। মুকুল বলেন,সব থেকে বড় কথা খেজুরের রস এ এলাকার মানুষের ঐতিহ্য। এটা টিকিয়ে রাখার দায়িত্বও আমাদের। এ কারনে এ কৃষি পণ্যটিকে টিকিয়ে রাখতে আমাদের সকলকে এগিয়ে আসার আহবান জানান ওই চাষি।
তিনদিন ব্যাপী কৃষি মেলার উদ্ভোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন,ঝিনাইদহের জেলা প্রশাসক মনিরা বেগম।

মেলায় সভাপতিত্ব করেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খান মাসুম বিল্লাহ।

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও চেয়ারম্যান মোছাঃ শরিফুননেসা মিকি,ভাইস চেয়ারম্যান রিয়াজ হোসেন, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পিংকি খাতুন,কোটচাঁদপুর পৌরসভার মেয়র সহিদুজ্জামান সেলিম, সাবেক মুক্তিযোদ্ধা তাজুল ইসলাম।