ঢাকা ০৩:৪৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
ব্রেকিং নিউজ

জুড়ীতে কৃষি জমির ‘টপ সয়েল’ বিক্রির মহোৎসব; উৎপাদন হ্রাসের শঙ্কা

নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ০৫:৪২:৫০ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৩
  • / ২৫০ বার পড়া হয়েছে

সিরাজুল ইসলাম: মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ফসলি জমির টপ সয়েল (মাটির উপরের উর্বর অংশ) বিক্রির ধুম পড়েছে। আর্থিকভাবে সাময়িক লাভবান হওয়ার আশায় অনেক কৃষক তাদের জমির মাটি বিক্রি করে দিচ্ছেন। এতে জমির উর্বরতা হারানোর সঙ্গে হারাচ্ছে উৎপাদন ক্ষমতা, কমে যাচ্ছে ফলনের পরিমাণ। জমির শ্রেণীর পরিবর্তন ঘটছে প্রতিনিয়ত। যা সম্পুর্ন বেআইনি।

শনিবার সরেজমিনে গিয়ে উপজেলার পশ্চিমজুড়ী, জায়ফরনগর, পূর্বজুড়ী ও সাগরনাল ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, কৃষি জমি থেকে মাটি কেটে নিয়ে ট্রাকে করে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় মাটি পরিবহন করা হচ্ছে। সড়কে কিছুক্ষণ পর পর চোখে পড়ে মাটি বোঝাই ট্রাকের আসা যাওয়া। এতে করে বাড়তি ওজনের গাড়ী চলাচলে সড়কেরও বেশ ক্ষতি হচ্ছে। উপজেলার বিভিন্ন সড়ক দিয়ে মাটিবাহী যাবাহন চলাচলের কারণে সড়কে মাটি পড়ে অল্প বৃষ্টিতে কাদার সৃষ্টি হয়ে নানা ধরণের দূর্ঘটনা প্রায়ই ঘটছে। আলাপকালে জানা যায়, অনেকে বাড়তি টাকার লোভে পড়ে মাটি ব্যবসায়ীদের কাছে মাটি বিক্রি করছেন। আবার অনেকে নিজের ভিটা ভরাটের জন্য ফসলি জমি থেকে মাটি নিচ্ছেন। মাটি ব্যবসায়ীরা এসব মাটি বিভিন্ন ইটভাটায়, ভিটা ও নিচু জমি ভরাটের জন্য চুক্তি করে চড়া দামে মাটি বিক্রি করছেন। কৃষি জমির মাটি কাটার ফলে জমি উর্বরতা হারাচ্ছে। পাশাপাশি জমি নিচু হয়ে যাচ্ছে। এতে ফসল কম হবার সম্ভাবনা রয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কৃষক বলেন, দুই তিন বছর জমির ফসল হবে না সেটা আমরা জানি, কিন্তু এই মাটি দিয়ে বাড়িতে নিচু জায়গা ভরাট করতে হবে। সবকিছু জেনে মাটি বিক্রি করি বা নিজের কাজে ব্যবহার করে থাকি।
কয়েকজন কৃষক অভিযোগ করে বলেন, আমাদের জমির পাশ থেকে মাটি কেটে নিয়ে যাচ্ছে এতে করে তাদের জমিতে যেমন ফসল কম হবে তেমনি আমাদের জমিতেও ফসল কম হবে। এছাড়াও আমাদের জমির পানি সম্পূর্ণ নেমে যাবে নিচের জমিতে। আমরা মাটি খননে তাদেরকে বাঁধা দিলে শোনে না।
জুড়ী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. জসিম উদ্দিন বলেন, জমির টপ সয়েল বা জমির উর্বর অংশ কেটে নিলে সেই জমিতে তুলনামূল ফসল কম হয়। কৃষকদের ‘টপ সয়েল’ বিক্রিতে নিরুৎসাহিত করি।

জুড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রঞ্জন চন্দ্র দে বলেন, টপ সয়েল হলো জমির প্রাণ। টপ সয়েল বিক্রি করলে জমির উর্বরতা কমে যায়। এটা বিক্রি আইনে নিষিদ্ধ। কৃষকরা টপ সয়েল বিক্রি করে নিজেদের ক্ষতি করছে। এরকম কাজে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

জুড়ীতে কৃষি জমির ‘টপ সয়েল’ বিক্রির মহোৎসব; উৎপাদন হ্রাসের শঙ্কা

আপডেট সময় ০৫:৪২:৫০ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৩

সিরাজুল ইসলাম: মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ফসলি জমির টপ সয়েল (মাটির উপরের উর্বর অংশ) বিক্রির ধুম পড়েছে। আর্থিকভাবে সাময়িক লাভবান হওয়ার আশায় অনেক কৃষক তাদের জমির মাটি বিক্রি করে দিচ্ছেন। এতে জমির উর্বরতা হারানোর সঙ্গে হারাচ্ছে উৎপাদন ক্ষমতা, কমে যাচ্ছে ফলনের পরিমাণ। জমির শ্রেণীর পরিবর্তন ঘটছে প্রতিনিয়ত। যা সম্পুর্ন বেআইনি।

শনিবার সরেজমিনে গিয়ে উপজেলার পশ্চিমজুড়ী, জায়ফরনগর, পূর্বজুড়ী ও সাগরনাল ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, কৃষি জমি থেকে মাটি কেটে নিয়ে ট্রাকে করে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় মাটি পরিবহন করা হচ্ছে। সড়কে কিছুক্ষণ পর পর চোখে পড়ে মাটি বোঝাই ট্রাকের আসা যাওয়া। এতে করে বাড়তি ওজনের গাড়ী চলাচলে সড়কেরও বেশ ক্ষতি হচ্ছে। উপজেলার বিভিন্ন সড়ক দিয়ে মাটিবাহী যাবাহন চলাচলের কারণে সড়কে মাটি পড়ে অল্প বৃষ্টিতে কাদার সৃষ্টি হয়ে নানা ধরণের দূর্ঘটনা প্রায়ই ঘটছে। আলাপকালে জানা যায়, অনেকে বাড়তি টাকার লোভে পড়ে মাটি ব্যবসায়ীদের কাছে মাটি বিক্রি করছেন। আবার অনেকে নিজের ভিটা ভরাটের জন্য ফসলি জমি থেকে মাটি নিচ্ছেন। মাটি ব্যবসায়ীরা এসব মাটি বিভিন্ন ইটভাটায়, ভিটা ও নিচু জমি ভরাটের জন্য চুক্তি করে চড়া দামে মাটি বিক্রি করছেন। কৃষি জমির মাটি কাটার ফলে জমি উর্বরতা হারাচ্ছে। পাশাপাশি জমি নিচু হয়ে যাচ্ছে। এতে ফসল কম হবার সম্ভাবনা রয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কৃষক বলেন, দুই তিন বছর জমির ফসল হবে না সেটা আমরা জানি, কিন্তু এই মাটি দিয়ে বাড়িতে নিচু জায়গা ভরাট করতে হবে। সবকিছু জেনে মাটি বিক্রি করি বা নিজের কাজে ব্যবহার করে থাকি।
কয়েকজন কৃষক অভিযোগ করে বলেন, আমাদের জমির পাশ থেকে মাটি কেটে নিয়ে যাচ্ছে এতে করে তাদের জমিতে যেমন ফসল কম হবে তেমনি আমাদের জমিতেও ফসল কম হবে। এছাড়াও আমাদের জমির পানি সম্পূর্ণ নেমে যাবে নিচের জমিতে। আমরা মাটি খননে তাদেরকে বাঁধা দিলে শোনে না।
জুড়ী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. জসিম উদ্দিন বলেন, জমির টপ সয়েল বা জমির উর্বর অংশ কেটে নিলে সেই জমিতে তুলনামূল ফসল কম হয়। কৃষকদের ‘টপ সয়েল’ বিক্রিতে নিরুৎসাহিত করি।

জুড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রঞ্জন চন্দ্র দে বলেন, টপ সয়েল হলো জমির প্রাণ। টপ সয়েল বিক্রি করলে জমির উর্বরতা কমে যায়। এটা বিক্রি আইনে নিষিদ্ধ। কৃষকরা টপ সয়েল বিক্রি করে নিজেদের ক্ষতি করছে। এরকম কাজে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।