ঢাকা ০৫:২৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ঈদে সিলেটে যে ৯ দিন চলবে স্পেশাল ট্রেন

নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ০৩:৫১:২৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ৯ এপ্রিল ২০২৩
  • / ৪৪৪ বার পড়া হয়েছে

ঈদে ট্রেনের টিকিটের চাহিদা স্বাভাবিকের তুলনায় দুই থেকে তিন গুণ বেড়ে যায়। কিন্তু সে তুলনায় ট্রেনের সংখ্যা বাড়ে না। তাই অধিকাংশ মানুষকে নির্ভর করতে হয় সড়কপথের ওপর। এতে যাত্রীদের যেমন বাড়তি ভাড়া গুনতে হয়, তেমনি থাকে দুর্ঘটনার ঝুঁকি। এই দুর্ভোগ লাঘব করতে দেশের পূর্বাঞ্চলে এবার বিশেষ ট্রেন চালু করেছে রেলওয়ে বিভাগ।

পূর্বাঞ্চলের সাতটি বিশেষ ট্রেনের মধ্যে একটি ট্রেন চলবে চাঁদপুর-সিলেট রুটে। সিলেটে কর্মরত চাঁদপুর ও বৃহত্তর কুমিল্লা অঞ্চলের মানুষের যাতায়াতের সুবিধার্থে এ রুটে নতুন এক জোড়া আন্তঃনগর ট্রেন চালুর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। চাঁদপুর-সিলেট রুটে বিশেষ ট্রেনটি সিলেট থেকে বিকাল চারটা ৪০ মিনিটে ছেড়ে চাঁদপুরে পৌঁছাবে রাত সোয়া ১২টায়। আর চাঁদপুর থেকে বিকাল ৪টায় ছেড়ে সিলেটে পৌঁছাবে রাত ১২টায়। ট্রেনে আসন রয়েছে ৪৮৮টি।

রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনের পর রুটটিতে নতুন একটি ট্রেনের সম্ভাব্যতা যাচাই ও মতামত তৈরি করছে রেলওয়ে। ইন্দোনেশিয়া থেকে আসা নতুন রেক দিয়ে ট্রেনটি চলতি বছরের মধ্যে চালু করা হতে পারে। আর এ প্রক্রিয়া চূড়ান্তের লক্ষ্যেই এবার ঈদকে কেন্দ্র করে এ রুটে পরীক্ষামূলকভাবে ‘স্পেশাল ট্রেন’ চালু হচ্ছে। ঈদের আগে ৫ দিন এবং পরে ৪ দিন এ রুটে ১ জোড়া স্পেশাল ট্রেন চলবে। এটি হবে ১০ কোচের। ঈদযাত্রার সব টিকেটই করতে হচ্ছে অনলাইনে।

ব্রিটিশ আমলে তৎকালীন আসাম বেঙ্গল রেলওয়ের অধীনে সিলেট-চাঁদপুর রুটে একটি ট্রেন চলাচল করত। ‘মেঘনা’ নামের ওই ট্রেনটি দিয়ে আসাম থেকে চা ও অন্যান্য পণ্য যেত চাঁদপুরে। সেখান থেকে পণ্যগুলো নৌপথে কলকাতা বন্দর হয়ে পৌঁছত ব্রিটেনে। ব্রিটিশ শাসনের অবসানের পর কালের পরিক্রমায় রেলের ওই রুটটি বন্ধ হয়ে যায়। পরে ‘মেঘনা’ নামটি ঠিক রেখে ট্রেনটি চট্টগ্রাম-চাঁদপুর রুটে দেয়া হয়। তাছাড়াও ২০০০ সালে চাঁদপুর থেকে লাকসামগামী একটি কমিউটার ট্রেনে সিলেটগামী যাত্রীদের জন্য বেশ কয়েকটি বগি সংযুক্ত ছিল। লাকসাম জংশনে পৌঁছার পর এসব কোচ জালালাবাদ এক্সপ্রেস ট্রেনের সাথে লিংক করা হতো। এতে করে অনেক আরামে ও সাশ্রয়ী মূল্যে ঝামেলা ছাড়াই সিলেটে ভ্রমণ করতে পারতেন যাত্রীরা।

২০০০ সালে ২০ সেপ্টেম্বর মেঘনা নদীর ভয়াবহ ভাঙনে চাঁদপুর বড় রেল স্টেশনের বেশ কিছু অংশও নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। পরে বিলীন হওয়া স্থানটি বালু দিয়ে ভরাট করা হলেও লাকসাম হয়ে সিলেটে ট্রেন চলাচল পুনরায় চালু করেনি রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ।

সিলেট বিভাগীয় শহরে কুমিল্লা জেলার প্রায় ৫০ হাজার ও চাঁদপুর জেলার প্রায় ৪০ হাজার মানুষ বিভিন্ন পেশায় কর্মরত। সিলেট অঞ্চলের কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়েও চাঁদপুর-কুমিল্লার অনেক শিক্ষার্থী পড়াশোনা করছেন। সিলেট থেকে কুমিল্লা ও চাঁদপুর জেলায় প্রতিদিন মোট ৩০টি বাস চলাচল করে। এ বাসগুলোর সেবার মান খুবই নিম্ন। সিলেট-চট্টগ্রাম রুটে চলাচলরত দুটি আন্তঃনগর ট্রেনে বৃহত্তর কুমিল্লার অধিবাসীদের জন্য স্বল্পসংখ্যক সিট বরাদ্দ রয়েছে, যা সিলেট বিভাগে বসবাসরত জনসংখ্যার তুলনায় খুবই কম।

সিলেট রেলওয়ের স্টেশন ম্যানেজার মো. নুরুল ইসলাম বলেন, আগামী ১৮ তারিখ থেকে সিলেট-চট্টগ্রাম রুটে  ট্রেন চলাচল শুরু হবে। ঈদের আগে ৫ দিন এবং পরে ৪ দিন এ রুটে ১ জোড়া স্পেশাল ট্রেন চলবে। অনলাইনে টিকেট বিক্রি হচ্ছে। সিলেট ও চাঁদপুরের মধ্যে নির্বিঘ্নে যাতায়াতের জন্য আন্ত:নগর ট্রেন চালু করা খুবই প্রয়োজন ছিল। স্পেশাল ট্রেন চালু হওয়ায় এই রুটে নিয়মিত ট্রেন চালু নিয়ে আমরা অনেকটাই আশাবাদী।

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

ঈদে সিলেটে যে ৯ দিন চলবে স্পেশাল ট্রেন

আপডেট সময় ০৩:৫১:২৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ৯ এপ্রিল ২০২৩

ঈদে ট্রেনের টিকিটের চাহিদা স্বাভাবিকের তুলনায় দুই থেকে তিন গুণ বেড়ে যায়। কিন্তু সে তুলনায় ট্রেনের সংখ্যা বাড়ে না। তাই অধিকাংশ মানুষকে নির্ভর করতে হয় সড়কপথের ওপর। এতে যাত্রীদের যেমন বাড়তি ভাড়া গুনতে হয়, তেমনি থাকে দুর্ঘটনার ঝুঁকি। এই দুর্ভোগ লাঘব করতে দেশের পূর্বাঞ্চলে এবার বিশেষ ট্রেন চালু করেছে রেলওয়ে বিভাগ।

পূর্বাঞ্চলের সাতটি বিশেষ ট্রেনের মধ্যে একটি ট্রেন চলবে চাঁদপুর-সিলেট রুটে। সিলেটে কর্মরত চাঁদপুর ও বৃহত্তর কুমিল্লা অঞ্চলের মানুষের যাতায়াতের সুবিধার্থে এ রুটে নতুন এক জোড়া আন্তঃনগর ট্রেন চালুর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। চাঁদপুর-সিলেট রুটে বিশেষ ট্রেনটি সিলেট থেকে বিকাল চারটা ৪০ মিনিটে ছেড়ে চাঁদপুরে পৌঁছাবে রাত সোয়া ১২টায়। আর চাঁদপুর থেকে বিকাল ৪টায় ছেড়ে সিলেটে পৌঁছাবে রাত ১২টায়। ট্রেনে আসন রয়েছে ৪৮৮টি।

রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনের পর রুটটিতে নতুন একটি ট্রেনের সম্ভাব্যতা যাচাই ও মতামত তৈরি করছে রেলওয়ে। ইন্দোনেশিয়া থেকে আসা নতুন রেক দিয়ে ট্রেনটি চলতি বছরের মধ্যে চালু করা হতে পারে। আর এ প্রক্রিয়া চূড়ান্তের লক্ষ্যেই এবার ঈদকে কেন্দ্র করে এ রুটে পরীক্ষামূলকভাবে ‘স্পেশাল ট্রেন’ চালু হচ্ছে। ঈদের আগে ৫ দিন এবং পরে ৪ দিন এ রুটে ১ জোড়া স্পেশাল ট্রেন চলবে। এটি হবে ১০ কোচের। ঈদযাত্রার সব টিকেটই করতে হচ্ছে অনলাইনে।

ব্রিটিশ আমলে তৎকালীন আসাম বেঙ্গল রেলওয়ের অধীনে সিলেট-চাঁদপুর রুটে একটি ট্রেন চলাচল করত। ‘মেঘনা’ নামের ওই ট্রেনটি দিয়ে আসাম থেকে চা ও অন্যান্য পণ্য যেত চাঁদপুরে। সেখান থেকে পণ্যগুলো নৌপথে কলকাতা বন্দর হয়ে পৌঁছত ব্রিটেনে। ব্রিটিশ শাসনের অবসানের পর কালের পরিক্রমায় রেলের ওই রুটটি বন্ধ হয়ে যায়। পরে ‘মেঘনা’ নামটি ঠিক রেখে ট্রেনটি চট্টগ্রাম-চাঁদপুর রুটে দেয়া হয়। তাছাড়াও ২০০০ সালে চাঁদপুর থেকে লাকসামগামী একটি কমিউটার ট্রেনে সিলেটগামী যাত্রীদের জন্য বেশ কয়েকটি বগি সংযুক্ত ছিল। লাকসাম জংশনে পৌঁছার পর এসব কোচ জালালাবাদ এক্সপ্রেস ট্রেনের সাথে লিংক করা হতো। এতে করে অনেক আরামে ও সাশ্রয়ী মূল্যে ঝামেলা ছাড়াই সিলেটে ভ্রমণ করতে পারতেন যাত্রীরা।

২০০০ সালে ২০ সেপ্টেম্বর মেঘনা নদীর ভয়াবহ ভাঙনে চাঁদপুর বড় রেল স্টেশনের বেশ কিছু অংশও নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। পরে বিলীন হওয়া স্থানটি বালু দিয়ে ভরাট করা হলেও লাকসাম হয়ে সিলেটে ট্রেন চলাচল পুনরায় চালু করেনি রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ।

সিলেট বিভাগীয় শহরে কুমিল্লা জেলার প্রায় ৫০ হাজার ও চাঁদপুর জেলার প্রায় ৪০ হাজার মানুষ বিভিন্ন পেশায় কর্মরত। সিলেট অঞ্চলের কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়েও চাঁদপুর-কুমিল্লার অনেক শিক্ষার্থী পড়াশোনা করছেন। সিলেট থেকে কুমিল্লা ও চাঁদপুর জেলায় প্রতিদিন মোট ৩০টি বাস চলাচল করে। এ বাসগুলোর সেবার মান খুবই নিম্ন। সিলেট-চট্টগ্রাম রুটে চলাচলরত দুটি আন্তঃনগর ট্রেনে বৃহত্তর কুমিল্লার অধিবাসীদের জন্য স্বল্পসংখ্যক সিট বরাদ্দ রয়েছে, যা সিলেট বিভাগে বসবাসরত জনসংখ্যার তুলনায় খুবই কম।

সিলেট রেলওয়ের স্টেশন ম্যানেজার মো. নুরুল ইসলাম বলেন, আগামী ১৮ তারিখ থেকে সিলেট-চট্টগ্রাম রুটে  ট্রেন চলাচল শুরু হবে। ঈদের আগে ৫ দিন এবং পরে ৪ দিন এ রুটে ১ জোড়া স্পেশাল ট্রেন চলবে। অনলাইনে টিকেট বিক্রি হচ্ছে। সিলেট ও চাঁদপুরের মধ্যে নির্বিঘ্নে যাতায়াতের জন্য আন্ত:নগর ট্রেন চালু করা খুবই প্রয়োজন ছিল। স্পেশাল ট্রেন চালু হওয়ায় এই রুটে নিয়মিত ট্রেন চালু নিয়ে আমরা অনেকটাই আশাবাদী।