স্কুলছাত্রী মুক্তির ঘাড়ে-মাথায় ৩ কোপ,কাউসার গ্রেপ্তার
- আপডেট সময় ০৩:৪৩:১৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩ মে ২০২৩
- / ৪৯০ বার পড়া হয়েছে
স্কুলছাত্রী মুক্তি বর্মণকে দীর্ঘদিন ধরে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে আসছিল বখাটে কাউসার (১৮)। এতে মুক্তি সাড়া না দেয়ায় এবং পরিবারে বিচার দেয়ায় তার ওপর ক্ষেপেছিল সে। এই ক্ষোভ থেকে মুক্তিকে হত্যা করতে তিন দিন আগে নতুন দা কিনে জঙ্গলে লুকিয়ে রাখে। মুক্তি স্কুল থেকে সহপাঠীদের সঙ্গে ফেরার পথে তার ঘাড়ে ও মাথায় কয়েক কোপ দিয়ে পালিয়ে যায় কাউসার। পরে মুক্তিকে হাসপাতালে নেয়া হলেও বাঁচানো যায়নি।
নেত্রকোণার বারহাট্টায় স্কুলছাত্রী মুক্তি রানি বর্মণকে হত্যায় অভিযুক্ত কাউসারকে গ্রেপ্তারের পর বুধবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করে এ তথ্য জানান জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) হারুন অর রশীদ।
বারহাট্টার বাউসী ইউনিয়নের প্রেমনগর ছালিপুরা উচ্চবিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী ও ওই গ্রামের নিখিল চন্দ্র বর্মণের মেয়ে মুক্তি মঙ্গলবার দুপুরে স্কুল থেকে ফেরার পথে হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়।
তার সহপাঠীরা জানায়, মুক্তিসহ তারা একসঙ্গে বাড়ি ফিরছিল। পথে কাউসার এসে দা দিয়ে মুক্তিকে কোপাতে শুরু করে। তারা ভয় পেয়ে চিৎকার করতে থাকলে লোকজন এসে মুক্তিকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। কিন্তু সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
বুধবার দুপুরে পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) কনস্টেবল মতিউর রহমান ও কনস্টেবল চাঁন মিয়া গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ছদ্মবেশে প্রেমনগর ছালিপুরা গ্রামের এক জঙ্গলে অভিযান চালিয়ে কাউসারকে গ্রেপ্তার করেন।
জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে হারুন অর রশীদ জানান, আসামি কাউসার মানুষের বাড়িতে কাজ করতো। পাঁচ বছর আগে মুক্তিকে প্রেমের প্রস্তাব দিয়েছিল কাউসার। সম্প্রতি প্রায়ই মুক্তিকে উত্ত্যক্ত করতো সে। প্রেমের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় সে (কাউসার) এই হত্যাকাণ্ড চালায়। অতর্কিতভাবে মুক্তি বর্মণকে ধারালো দা দিয়ে আঘাত করে, মাথায় ও ঘাড়ে গুরুতর মারাত্মক রক্তাক্ত জখম করে। প্রাথমিকভাবে জানা যায়, মুক্তিকে তিনটা কোপ দেয় কাউসার।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জানান, তিন দিন আগে কাউসার বারহাট্টা হাট থেকে নতুন দা কিনে এনে বাড়ির পাশে জঙ্গলে লুকিয়ে রাখে। প্রাথমিক তদন্তে এবং কাউসারের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এ হত্যাকাণ্ডে আর কারও সম্পৃক্ততা নেই। মুক্তি বর্মণ কাউসারের প্রেমের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় এবং কাউসারের পরিবারের কাছে বিচার দেয়ায় সে ক্ষিপ্ত হয়। ক্ষিপ্ত হয়ে সে এই অপরাধ করে।
এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন উল্লেখ করে পুলিশ কর্মকর্তা হারুন অর রশীদ জানান, মুক্তি বর্মণের মরদেহের ময়নাতদন্ত শেষে এবং সৎকার শেষে পারিবারিকভাবে মামলা হবে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) সাহেব আলী পাঠান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিবি) লুৎফুর রহমানসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।