ঢাকা ০৪:২২ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৫, ৪ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
ব্রেকিং নিউজ
হেক্সাস এবং বিট্রিশ কাউন্সিলের যৌথ উদ্দোগে চালু হয়েছে কম্পিউটার বেইজ আইএল এক্সাম সেন্টার জুড়ী মানবিক সোসাইটির উদ্যোগে ছাদিছ জামাতে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থী সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত সময় ও সম্পদের কুরবানী দিতে রুকনদের অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে। -মাওলানা হাবিবুর রহমান দুর্গাপুরে ফেসবুকে মানহানিকর ভিডিও ছড়ানো নিয়ে সংবাদ সম্মেলন কোটচাঁদপুর সাংবাদিকদের সাথে  মতবিনিময় করেন ব্যারিস্টার কাজল মার্শাল আর্ট প্রতিযোগিতায় আবু ওবায়দা মো. মাসরুর খানের রৌপ্য ও ব্রোঞ্জ পদক অর্জন মানবতার গান-সুরের ভেলায় কমলগঞ্জে লালনকে স্মরণ শেরপুর ইয়াবাসহ এক যুবক গ্রে ফ তা র কোটচাঁদপুরে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী’র যুব সমাবেশ অনুষ্ঠিত  বাজারে বাজারে জনসংযোগে নাসের রহমান বিএনপির ৩১ দফার প্রচারপত্র বিলি,জনতার ঢল

ছেলের পিতৃ পরিচয়ের দাবিতে গ্রাম আদালতে মায়ের অভিযোগ

নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ০৪:৪৬:১১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৫ জুন ২০২৩
  • / ৫১৩ বার পড়া হয়েছে

কমলগঞ্জ প্রতিনিধি: কমলগঞ্জে এইচএসসি পরীক্ষার্থী ছেলের পিতৃ পরিচয়ের দাবিতে ইউনিয়ন পরিষদের গ্রাম আদালতে মায়ের অভিযোগ।

উপজেলার আদমপুর ইউনিয়নের ভানুবিল গ্রামের ব্যবসায়ী হারুন আর রশিদের বিরুদ্ধে বৃহস্পতিবার ১৫ জুন এমন অভিযোগ দায়ের করেন একই ছমেদ মিয়ার মেয়ে হামিদা বেগম।

গ্রাম আদালতে দায়েরকৃত লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ভানুবিল গ্র্রামের বাসিন্দা ব্যবসায়ী হারুন আর রশিদ একই গ্রামের ছমেদ মিয়ার মেয়ে হামিদা বেগমকে প্রাইভেট (টিউশন) পড়াতেন বাড়িতে এসে।

এক পর্যায়ে হামিদা বেগমের সাথে অবৈধভাবে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন হারুন আর রশিদ। পরবর্তীতে হামিদা বেগমের ঘরে একটি ছেলে সন্তান নাজমুল হাসান জন্মগ্রহণ করে। এতে করে পরিবারের সদস্যরা প্রতিবাদ করলে তিনি হামিদা বেগমকে বিয়ে করবেন না বলে জানিয়ে দেন।

পরে এ বিষয়ে মৌলভীবাজার আদালতে একটি মামলা দেওয়া হয়। মামলার রায়ে হামিদার মানহানি বাবদ ৫০ হাজার টাকা ও ছেলের বয়স ১২ বছর পর্যন্ত মায়ের নিকট অবস্থান করবে।

এরপর ছেলেটি বাবার কাছে থাকবে এবং তার ব্যয়ভার তিনি বহন করবেন। এখন ছেলের ১৮ বছর পূর্ণ হলেও তিনি কোনো খরচ বহন করছেন না এবং ছেলেটি হারুন আর রশিদের নয় বলে দাবি করেন।

সরেজমিনে ও স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, এবারের এইচএসসি পরীক্ষার্থী নাজমুল হাসানের জন্ম সনদ ও স্কুল সার্টিফিকেটে দেখা যায় তার বাবার নাম হারুন মিয়া ও মায়ের নাম হামিদা বেগম।

ছেলের ১৮মাস বয়স থাকা অবস্থায় মায়ের অন্য জায়গায় বিয়ে হয়ে যায়। ছেলেকে লালন পালন করেন খালা ও নানি। খালা ও নানির কাছে বড় হয়ে উঠে নাজমুল।

স্থানীরা জানান, হারুন প্রাইভেট পড়াতো হামিদা বেগমকে। সে সুযোগে সহজ সরল মেয়েটার তার প্রেমের জালে ফেলে দেন। এতে করে তিনি গর্ভবতী হয়ে যায়। পরে তাদের পরিবারের লোকজন আদালতে মামলা করেন। মামলায় সিদ্ধান্ত হয় ছেলের ভরণ পোষনের দায়িত্ব হারুন বহন করবে।

কিন্ত সামান্য টাকা দিয়ে আর কোনো খোঁজ খবর নেন না হারুন। কিন্ত এত বছর হয়ে গেলো আজ পর্যন্ত তার পিতৃ পরিচয় না পেয়ে ছেলেটা রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়াচ্ছে।

পিতৃ পরিচয়হীন ছেলে এবারের এইচএসসি পরীক্ষার্থী নাজমুল হাসান জানায়, আমি খুব কষ্টে বড় হয়েছি খালা ও নানির কাছে। নানি ও খালা বর্তমানে অক্ষম। আমি মানুষের কাজ করে নিজে পড়াশোনা করছি। এ বছর আমি এইচএসসি পরীক্ষার্থী।

আমার এ বয়সে আর কাজ করা সম্ভব হচ্ছে না। আমি ছোট থাকা অবস্থায় মাকে অন্য একটা যায়গায় বিয়ে দেন নানী। কিন্তু আমার বাবা আছেন। বাবার কাছে গেলে দুর দুর করে আমাকে তাড়িয়ে দেন। তিনি আমার বাবা নয় বলে পরিচয় দেন। আমি আমার বাবার পরিচয় ও আমার অধিকার পেতে চাই।

এ বিষয়ে গ্রাম আদালতে অভিযোগকারী নাজমুলের মা হামিদা বেগম জানান, আমার ছেলের পিতৃ পরিচয় ও তার যাবতীয় ভরণপোষনের খরচ বহন করার জন্য আমি ৭নং আদমপুর ইউনিয়নের গ্রাম আদালতে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি। তিনি আরও বলেন, আমার বাচ্চাটা যেন এতিম না হয় এজন্য তিনি ন্যায় বিচার কামনা করেন।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ব্যবসায়ী হারুন আর রশিদের সাথে মোবাইলফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

আদমপুর ইউপি চেয়ারম্যান মো. আবদাল হোসেন জানান, ইউনিয়নের গ্রাম আদালতে একটা লিখিত অভিযোগ এসেছে। তদন্তক্রমে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

ছেলের পিতৃ পরিচয়ের দাবিতে গ্রাম আদালতে মায়ের অভিযোগ

আপডেট সময় ০৪:৪৬:১১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৫ জুন ২০২৩

কমলগঞ্জ প্রতিনিধি: কমলগঞ্জে এইচএসসি পরীক্ষার্থী ছেলের পিতৃ পরিচয়ের দাবিতে ইউনিয়ন পরিষদের গ্রাম আদালতে মায়ের অভিযোগ।

উপজেলার আদমপুর ইউনিয়নের ভানুবিল গ্রামের ব্যবসায়ী হারুন আর রশিদের বিরুদ্ধে বৃহস্পতিবার ১৫ জুন এমন অভিযোগ দায়ের করেন একই ছমেদ মিয়ার মেয়ে হামিদা বেগম।

গ্রাম আদালতে দায়েরকৃত লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ভানুবিল গ্র্রামের বাসিন্দা ব্যবসায়ী হারুন আর রশিদ একই গ্রামের ছমেদ মিয়ার মেয়ে হামিদা বেগমকে প্রাইভেট (টিউশন) পড়াতেন বাড়িতে এসে।

এক পর্যায়ে হামিদা বেগমের সাথে অবৈধভাবে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন হারুন আর রশিদ। পরবর্তীতে হামিদা বেগমের ঘরে একটি ছেলে সন্তান নাজমুল হাসান জন্মগ্রহণ করে। এতে করে পরিবারের সদস্যরা প্রতিবাদ করলে তিনি হামিদা বেগমকে বিয়ে করবেন না বলে জানিয়ে দেন।

পরে এ বিষয়ে মৌলভীবাজার আদালতে একটি মামলা দেওয়া হয়। মামলার রায়ে হামিদার মানহানি বাবদ ৫০ হাজার টাকা ও ছেলের বয়স ১২ বছর পর্যন্ত মায়ের নিকট অবস্থান করবে।

এরপর ছেলেটি বাবার কাছে থাকবে এবং তার ব্যয়ভার তিনি বহন করবেন। এখন ছেলের ১৮ বছর পূর্ণ হলেও তিনি কোনো খরচ বহন করছেন না এবং ছেলেটি হারুন আর রশিদের নয় বলে দাবি করেন।

সরেজমিনে ও স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, এবারের এইচএসসি পরীক্ষার্থী নাজমুল হাসানের জন্ম সনদ ও স্কুল সার্টিফিকেটে দেখা যায় তার বাবার নাম হারুন মিয়া ও মায়ের নাম হামিদা বেগম।

ছেলের ১৮মাস বয়স থাকা অবস্থায় মায়ের অন্য জায়গায় বিয়ে হয়ে যায়। ছেলেকে লালন পালন করেন খালা ও নানি। খালা ও নানির কাছে বড় হয়ে উঠে নাজমুল।

স্থানীরা জানান, হারুন প্রাইভেট পড়াতো হামিদা বেগমকে। সে সুযোগে সহজ সরল মেয়েটার তার প্রেমের জালে ফেলে দেন। এতে করে তিনি গর্ভবতী হয়ে যায়। পরে তাদের পরিবারের লোকজন আদালতে মামলা করেন। মামলায় সিদ্ধান্ত হয় ছেলের ভরণ পোষনের দায়িত্ব হারুন বহন করবে।

কিন্ত সামান্য টাকা দিয়ে আর কোনো খোঁজ খবর নেন না হারুন। কিন্ত এত বছর হয়ে গেলো আজ পর্যন্ত তার পিতৃ পরিচয় না পেয়ে ছেলেটা রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়াচ্ছে।

পিতৃ পরিচয়হীন ছেলে এবারের এইচএসসি পরীক্ষার্থী নাজমুল হাসান জানায়, আমি খুব কষ্টে বড় হয়েছি খালা ও নানির কাছে। নানি ও খালা বর্তমানে অক্ষম। আমি মানুষের কাজ করে নিজে পড়াশোনা করছি। এ বছর আমি এইচএসসি পরীক্ষার্থী।

আমার এ বয়সে আর কাজ করা সম্ভব হচ্ছে না। আমি ছোট থাকা অবস্থায় মাকে অন্য একটা যায়গায় বিয়ে দেন নানী। কিন্তু আমার বাবা আছেন। বাবার কাছে গেলে দুর দুর করে আমাকে তাড়িয়ে দেন। তিনি আমার বাবা নয় বলে পরিচয় দেন। আমি আমার বাবার পরিচয় ও আমার অধিকার পেতে চাই।

এ বিষয়ে গ্রাম আদালতে অভিযোগকারী নাজমুলের মা হামিদা বেগম জানান, আমার ছেলের পিতৃ পরিচয় ও তার যাবতীয় ভরণপোষনের খরচ বহন করার জন্য আমি ৭নং আদমপুর ইউনিয়নের গ্রাম আদালতে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি। তিনি আরও বলেন, আমার বাচ্চাটা যেন এতিম না হয় এজন্য তিনি ন্যায় বিচার কামনা করেন।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ব্যবসায়ী হারুন আর রশিদের সাথে মোবাইলফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

আদমপুর ইউপি চেয়ারম্যান মো. আবদাল হোসেন জানান, ইউনিয়নের গ্রাম আদালতে একটা লিখিত অভিযোগ এসেছে। তদন্তক্রমে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।