মৌলভীবাজার টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ অধ্যক্ষের দুর্নীতি
- আপডেট সময় ০৯:০১:৪৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১১ নভেম্বর ২০২৩
- / ১৩৪৫ বার পড়া হয়েছে
ষ্টাফ রিপোর্টঃ মৌলভীবাজার সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ সুব্রত শংকর বড়ুয়ার দুর্নীতিতে ভেঙে পড়েছে এ জেলার সরকারের এ মহতি উদ্যোগ। কারিগরি শিক্ষা ব্যবস্থায় সুফল পাচ্ছে না শিক্ষার্থীরা। অধ্যক্ষের অনিয়মে বিদ্যালয়ের কয়েক স্টাফও সম্পৃক্ত। অধ্যক্ষ গড়ে তুলেছেন তার নিজ বলয়ে একটি সিন্ডিকেট। প্রতিষ্ঠানটি নামে কারিগরি হলেও বাস্তবে এখানে হাতেকলমে কিছুই শেখানো হয়নি। বছরে মাত্র ৮-১০ দিন ব্যবহারিক ক্লাস হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিদ্যালয়ের সদ্যবিদায়ী শিক্ষার্থীরা। ৩ বছরের বরাদ্দ ও ব্যয়ের খাতসহ বিদ্যালয়ের সার্বিক তথ্য জানতে ১৮ সেপ্টেম্বর তথ্য অধিকার আইনে আবেদন করলেও অধ্যক্ষ নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তথ্য সরবরাহ করেননি।
অনুসন্ধানে জানা যায়, কাঁচামাল ও খুচরা যন্ত্রাংশ কেনার টাকা আত্মসাৎ, ব্যক্তিগত কাজে সরকারি গাড়ি ব্যবহার, ভাড়া পরিশোধ না করে অধ্যক্ষের জন্য বরাদ্দকৃত বাসায় বসবাস, প্রতিষ্ঠানের টাকায় বাসার বিদ্যুৎ বিল, সরঞ্জামাদির অভাবে ব্যবহারিক ক্লাস না হওয়াসহ অনিয়মের শেষ নেই এই প্রতিষ্ঠানে। প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক রানু কুমার তালুকদার ও বিকাশ চন্দ্র সর্বাধিকারীসহ কয়েকজন শিক্ষক বাসায় নিয়মিত প্রাইভেট পড়ান। পরীক্ষার আগের শিক্ষার্থীদের কাছে প্রশ্ন সরবরাহেরও অভিযোগ রয়েছে ওই শিক্ষকদের বিরুদ্ধে। সূত্র বলছে, উচ্চমান সহকারী কামাল হোসেন ভুয়া বিল ভাউচার করে অধক্ষের অনিয়মে সহযোগিতা করেন।
১৮ সেপ্টেম্বর সকালে অধ্যক্ষের বাসায় গেলে সুব্রত শংকর বড়ুয়াকে পাওয়া যায়। দেখা যায়, প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী নমিতা অধ্যক্ষকে সকালের নাশতা রান্না করে দিচ্ছে। কর্মচারী কল্পনা ও নমিতাকে দিয়ে বাসার কাজ করান অধ্যক্ষ ও তার স্ত্রী। ৩ বছর যাবত অধ্যক্ষ বাসায় থাকলেও বেতন থেকে বাসা ভাড়া কাটাননি। বাসার বিদ্যুৎ বিলও প্রতিষ্ঠান থেকে দেওয়া হয়। স্কিলস ফর এমপ্লয়মেন্ট ইনভেস্টমেন্ট প্রোগ্রামের গাড়ি ব্যবহার করে ঢাকা ও চট্টগ্রাম যান। বিশেষ করে শুক্র ও শনিবার সস্ত্রীক জেলার বিভিন্ন পর্যটন স্পটে শিক্ষার্থীদের জন্য বরাদ্দকৃত প্রশিক্ষণের গাড়ি নিয়ে ঘুরতে যান। প্রায় সময় শহরের বিভিন্ন শপিংমলের সামনে ওই গাড়ি দেখা যায়। খণ্ডকালীন শিক্ষক হাবিবুল্লাহ ভাড়া পরিশোধ না করে সরকারি বাসায় থাকেন। বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণ কাজের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের ২ জন কোয়ার্টারে থাকেন। নির্মাণকর্মীরা কোয়ার্টারের ভাড়া বাবদ ২ হাজার ৮শ টাকা অধ্যক্ষের কাছে দেন। ওই টাকা বিদ্যালয়ের ফান্ডে জমা হয়নি। সদ্যবিদায়ী ও বর্তমান একাধিক শিক্ষার্থী বলেন, হাতেকলমে শিক্ষা হয়নি বললেই চলে। প্রতিদিন ২-১টা ক্লাস হয়। মাঝেমধ্যে ক্লাসই হয়নি। পুরো বছরে ৮-১০ দিন ট্রেডের ক্লাস হয়। অধ্যক্ষ বলেন, বরাদ্দের সব মালই কেনা হয়। জরুরি কাজে গাড়ি নিয়ে চট্টগ্রাম গিয়ে ছিলাম। এছাড়া আমার ব্যক্তিগত কাজে গাড়ি ব্যবহার করিনি। কর্মচারীরা মাঝেমধ্যে বাসায় এসে আমাকে সহযোগিতা করে। ধূমপানের বিষয়ে তিনি বলেন, অফিসের বাইরে সিগারেট খাই।