ঢাকা ০১:১৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

প্রেমের টানে আমেরিকা থেকে গাজীপুরে!

নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ০৮:৫৪:২৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৪ জুন ২০২২
  • / ৭৮৬ বার পড়া হয়েছে

প্রেমের টানে যুক্তরাষ্ট্র থেকে এক তরুণ গাজীপুরে এসে বাংলাদেশি তরুণীকে বিয়ে করেছেন। বর যুক্তরাষ্ট্রের মিসৌরি অঙ্গরাজ্যের ক্যানসাস সিটির নাগরিক রাইয়ান কফম্যান (২৭)। আর বউ গাজীপুর নগরীর বাসন থানার ভোগড়া মধ্যপাড়া এলাকার মোশারফ হোসেন মাস্টারের নাতনি সাইদা ইসলাম (২৬)।

রাইয়ান গত ২৯ মে বাংলাদেশে আসেন। পরিবারের সম্মতিতে গত বুধবার সাইদার সঙ্গে তার বিয়ে হয়। তাদের বিয়ে ঘিরে এলাকায় ব্যাপক কৌতূহল সৃষ্টি হয়। আমেরিকা থেকে আসা ‘সুদর্শন’ ও ৬ ফুট উচ্চতার যুবককে এক নজর দেখার জন্য বিয়ে বাড়িতে অনেকে ভিড় জমায়।

কনের নানা মোশারফ হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, তার মেয়ের বর ঢাকার দনিয়া এলাকার বাসিন্দা সিকন্দার আলী ২০১৯ সালে মারা যান। এরপর সাইদা ও তার ছোট বোন তাদের মায়ের সঙ্গে নানাবাড়িতে আছেন। সাইদা তার বাবা মারা যাওয়ার এক বছর পর ২০২০ সালে মানবিক বিভাগ থেকে স্নাতক পাস করেন।

রাইয়ানের সঙ্গে পরিচয় কীভাবে- এমন প্রশ্নের উত্তরে সাইদা বলেন, ২০২১ সালে এপ্রিলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে রাইয়ানের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। তারা নিজেদের ফোন নম্বর ও ফেসবুক আইডি বিনিময় করেন। এরপর থেকে তাদের নিয়মিত যোগাযোগ হতে শুরু করে। ফেইসবুক ও ফোনে ভিডিওকলে কথা বলতে বলতে নিজেরা আরও ঘনিষ্ঠ হন। এক পর্যায়ে দুজন দুজনকে ভালোবেসে ফেলেন এবং প্রায় এক বছর তারা এভাবেই চুটিয়ে প্রেম করেন। শেষে দুজনই বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নেন।

রাইয়ান বিয়ে করার জন্য তার দেশেই খ্রিস্টানধর্ম ত্যাগ করে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। পরে তার ও সাইদার পরিবারের সম্মতিতে বাংলাদেশে আসেন তিনি। ওইসময় প্রথমবার দুজনের দেখা হয়। তারপর সাইদার সঙ্গে গাজীপুরে তার নানার বাড়িতেই ওঠেন রাইয়ান। পরে সামাজিক ও ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী বিয়ের যাবতীয় আনুষ্ঠানিকতা শেষ করেন তারা।

বাংলাদেশে আসার আগেই বিয়ের গয়না ও কাপড় কেনার জন্য সাইদার কাছে অর্থ পাঠান রাইয়ান। তিনি বাংলাদেশে আসার আগেই ওই অর্থ দিয়ে বিয়ের প্রয়োজনীয় কেনাকাটা করেন সাইদা।

সাইদার স্বজন ও বাংলাদেশিদের আতিথেয়তার প্রশংসা করে রাইয়ান বলেন, আমেরিকায় অচেনাদের সঙ্গে কেউ খুব একটা কথা বলে না। কিন্তু বাংলাদেশে আসার পর দেখছি, আমার প্রতি সবাই খুবই আন্তরিক। আমার ক্ষুধা না লাগতেই লোকজন আমাকে খাওয়ানোর জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়েন। আমাকে আদর-আপ্যায়ন করতে সবসময় ব্যস্ত থাকেন তারা, যা আমেরিকায় বিরল।

সাইদাকে যুক্তরাষ্ট্রে নিয়ে যাওয়ার কথা জানিয়ে রাইয়ান বলেন, আনুষঙ্গিক কাগজপত্র ও ভিসা প্রসেসিং করতে কয়েক মাস সময় লাগতে পারে। এসব সম্পন্ন হলেই বউ নিয়ে আমেরিকা যাব।

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

প্রেমের টানে আমেরিকা থেকে গাজীপুরে!

আপডেট সময় ০৮:৫৪:২৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৪ জুন ২০২২

প্রেমের টানে যুক্তরাষ্ট্র থেকে এক তরুণ গাজীপুরে এসে বাংলাদেশি তরুণীকে বিয়ে করেছেন। বর যুক্তরাষ্ট্রের মিসৌরি অঙ্গরাজ্যের ক্যানসাস সিটির নাগরিক রাইয়ান কফম্যান (২৭)। আর বউ গাজীপুর নগরীর বাসন থানার ভোগড়া মধ্যপাড়া এলাকার মোশারফ হোসেন মাস্টারের নাতনি সাইদা ইসলাম (২৬)।

রাইয়ান গত ২৯ মে বাংলাদেশে আসেন। পরিবারের সম্মতিতে গত বুধবার সাইদার সঙ্গে তার বিয়ে হয়। তাদের বিয়ে ঘিরে এলাকায় ব্যাপক কৌতূহল সৃষ্টি হয়। আমেরিকা থেকে আসা ‘সুদর্শন’ ও ৬ ফুট উচ্চতার যুবককে এক নজর দেখার জন্য বিয়ে বাড়িতে অনেকে ভিড় জমায়।

কনের নানা মোশারফ হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, তার মেয়ের বর ঢাকার দনিয়া এলাকার বাসিন্দা সিকন্দার আলী ২০১৯ সালে মারা যান। এরপর সাইদা ও তার ছোট বোন তাদের মায়ের সঙ্গে নানাবাড়িতে আছেন। সাইদা তার বাবা মারা যাওয়ার এক বছর পর ২০২০ সালে মানবিক বিভাগ থেকে স্নাতক পাস করেন।

রাইয়ানের সঙ্গে পরিচয় কীভাবে- এমন প্রশ্নের উত্তরে সাইদা বলেন, ২০২১ সালে এপ্রিলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে রাইয়ানের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। তারা নিজেদের ফোন নম্বর ও ফেসবুক আইডি বিনিময় করেন। এরপর থেকে তাদের নিয়মিত যোগাযোগ হতে শুরু করে। ফেইসবুক ও ফোনে ভিডিওকলে কথা বলতে বলতে নিজেরা আরও ঘনিষ্ঠ হন। এক পর্যায়ে দুজন দুজনকে ভালোবেসে ফেলেন এবং প্রায় এক বছর তারা এভাবেই চুটিয়ে প্রেম করেন। শেষে দুজনই বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নেন।

রাইয়ান বিয়ে করার জন্য তার দেশেই খ্রিস্টানধর্ম ত্যাগ করে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। পরে তার ও সাইদার পরিবারের সম্মতিতে বাংলাদেশে আসেন তিনি। ওইসময় প্রথমবার দুজনের দেখা হয়। তারপর সাইদার সঙ্গে গাজীপুরে তার নানার বাড়িতেই ওঠেন রাইয়ান। পরে সামাজিক ও ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী বিয়ের যাবতীয় আনুষ্ঠানিকতা শেষ করেন তারা।

বাংলাদেশে আসার আগেই বিয়ের গয়না ও কাপড় কেনার জন্য সাইদার কাছে অর্থ পাঠান রাইয়ান। তিনি বাংলাদেশে আসার আগেই ওই অর্থ দিয়ে বিয়ের প্রয়োজনীয় কেনাকাটা করেন সাইদা।

সাইদার স্বজন ও বাংলাদেশিদের আতিথেয়তার প্রশংসা করে রাইয়ান বলেন, আমেরিকায় অচেনাদের সঙ্গে কেউ খুব একটা কথা বলে না। কিন্তু বাংলাদেশে আসার পর দেখছি, আমার প্রতি সবাই খুবই আন্তরিক। আমার ক্ষুধা না লাগতেই লোকজন আমাকে খাওয়ানোর জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়েন। আমাকে আদর-আপ্যায়ন করতে সবসময় ব্যস্ত থাকেন তারা, যা আমেরিকায় বিরল।

সাইদাকে যুক্তরাষ্ট্রে নিয়ে যাওয়ার কথা জানিয়ে রাইয়ান বলেন, আনুষঙ্গিক কাগজপত্র ও ভিসা প্রসেসিং করতে কয়েক মাস সময় লাগতে পারে। এসব সম্পন্ন হলেই বউ নিয়ে আমেরিকা যাব।