ঢাকা ০৯:৩৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নির্বাচনে অনিয়ম, কারচুপির অভিযোগ পরাজিত প্রার্থী ও বর্তমান চেয়ারম্যান বীরমুক্তিযোদ্ধা এম এ মোঈদ ফারুক

নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ১১:৪৪:২৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ২০ মে ২০২৪
  • / ১৯৮ বার পড়া হয়েছে

জুড়ী প্রতিনিধি:
মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলা পরিষদ নির্বাচন-২০২৪ পূর্বকালিন সময়ে একটি পত্রিকায় মিথ্যা সংবাদ প্রকাশের প্রতিবাদ ও নির্বাচনে অনিয়ম, কারচুপি ও টেকনিকালি ইন্জিনিয়ারিং এর মাধ্যমে ভোট জালিয়াতির অভিযোগ করছেন পরাজিত প্রার্থী ও বর্তমান চেয়ারম্যান বীরমুক্তিযোদ্ধা এম এ মোঈদ ফারুক।
আজ ২০ মে সোমবার দুপুরে নিজ কার্যালয়ে লিখিত বক্তব্যে তিনি এ অভিযোগ করেন। তিনি বলেন গত ৮ মে অনুষ্ঠিত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে একটি কুচক্রি মহলের যড়যন্ত্র, ব্যাপক অনিয়ম, কারচুপি ও ভোট জালিয়াতির কারণে আমাকে পরাজিত দেখানো হয়েছে। আমি জানি আমার মত ভোটাররাও এ নিয়ে অনেক মর্মাহত হয়েছেন।
নির্বাচনের ঠিক পূর্ব মুহূর্তে একটি পত্রিকায় “এবার মোঈদের আছে ৭০ লাখ টাকার প্রাডো গাড়ী” শিরোনামে সংবাদটি বানোয়াট ও উদ্দেশ্যপ্রনোদিত। এর মাধ্যমে ভোটারদের কাছে আমার সুনাম ক্ষুন্ন করা হয়েছে এবং নির্বাচনে এর প্রভাব পড়েছে। সংবাদে বুঝানো হয়েছে গত নির্বাচনের পর আমি এ প্রাডো গাড়ীর মালিক হয়েছি। নির্বাচন চলাকালিন সময়ে আমি নির্বাচনি কাজে ব্যস্ত থাকায় এ বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে পারিনি। পাশাপাশি পত্রিকায়ও আমি এর প্রতিবাদ জানাবো। মূল বিষয় হল ২০০৯ ইং সালে আমি এ গাড়িটি ক্রয় করি এবং ২০১৮ ইং সালের নভেম্বর মাসে আমি গাড়ীটি বিক্রির জন্য জনৈক ক্রেতার কাছে ২০ লক্ষ টাকা বায়নায় বিক্রি করি। পরবর্তিতে সেই ক্রেতা সম্পূর্ণ টাকা পরিশোধে অক্ষম হওয়ায় আমি বায়নার টাকা ফেরত নিয়ে গাড়ীর মালিকানা বুঝে পাই। যেহেতু ২০১৯ ইং সালের নির্বাচনের পূর্বে আমি গাড়ীর মালিকানায় ছিলাম না তাই তখনকার হলফনামায় আমি উল্লেখ করিনি। এবারের নির্বাচনে গাড়ীটি আমায় মালিকানায় থাকায় হলফনামায় উল্লেখ করেছি।এই হলফনামার তথ্য স্হানীয় এক সংবাদকর্মী পত্রিকা তুলে ধরে নির্বাচনে জনগনকে বিভ্রান্ত করেছে।আমি তার প্রতিবাদ জানাই।

এ ছাড়া নির্বাচনে ভোট ডাকাতির মাধ্যমে জনগনের রায়কে পরিবর্তন করা হয়েছে। নির্বাচনে ৪৪টি কেন্দ্রের মধ্যে কোনটাই দুর্গম এলাকা নয় যে,ব্যালট আগের দিন পাটাতে হবে। অথচ পূর্বের দিন কারচুপির উদ্দেশ্যে ৭ টি ভোটকেন্দ্রে নির্বাচনের ব্যালট পেপার পাঠানো হয়। সমমান অন্যান্য কেন্দ্রের ফলাফলের সাথে এগুলোর বেশ অমিল পাওয়া গিয়েছে। বিকাল চারটায় কন্ট্রোল রুমের প্রেরণ করা তথ্য অনুযায়ী গড়ে ভোট কাস্টিং হয়েছে ৩৯%।অথচ আগের দিন ব্যালট পেপার পাটানো উক্ত ৭টি কেন্দ্রের ফলাফলের সাথে বেশ তফাত রয়েছে।এগুলোতে পূর্বের রাতে ব্যালটে সীল মেরে বাক্সভর্তি করা হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রের অনেক ভোটারগন মনে করছেন।
নির্ভরযোগ্য সূত্রে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ি ভোট গ্রহণ শেষে বিকাল চারটায় সহকারি রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয় (কন্ট্রোল কম) থেকে রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়ে প্রেরিত ভোট গ্রহণ সম্পন্ন প্রতিবেদনে ভোটগ্রহণের শতকরা হার ৩৯% উল্লেখ করা হয়। কিন্তু পরে জালিয়াতি করে প্রাথমিক বেসরকারি ফলাফলে প্রায় ৪৭% ভোট প্রদান দেখানো হয়েছে। এ থেকে প্রমাণিত হয় যে, অতিরিক্ত ৮% ভোট ঘোষিত জয়ী প্রার্থীর পক্ষে দেখানো হয়েছে। ফলাফলে বাতিলকৃত মোট ভোটের সংখ্যায় মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ১৮৪৮টি ও ভাইস চেয়ারম্যান পদে ১৮৭৩টি ভোট বাতিল দেখানো হয়েছে। তবে চেয়ারম্যান পদে ১৪৭২ টি ভোট বাতিল দেখানো হয়েছে, যাহা গভীর সন্দেহের অবকাশ রাখে। আমিও আমার ভোটারগণ মনে করি প্রায় ৪শত বাতিল ভোট ঘোষিত জয়ী প্রার্থীর পক্ষে দেখানো হয়েছে।

চা-বাগান কেন্দ্রগুলোকে সহজ সরল চা-শ্রমিকদের চোখ ফাঁকি দিয়ে প্রায় প্রত্যেকটি কেন্দ্রে ভোট জালিয়াতি করা হয়েছে। আমাদের এজেন্ট ও গণমাধ্যমকর্মীদের কাছ থেকে নির্বাচন চলাকালীন শেষ মুহুর্তে এসব কেন্দ্রগুলোর কাস্টিং ভোট ও গণনার পরের কাস্টিং ভোটের মধ্যে বিস্তর ফারাক দেখা যায়।যা কোনোক্রমেই মানানসই নয়। নির্বাচন পর্যবেক্ষণে থাকা অনেক গণমাধ্যমকর্মী, নির্ভরযোগ্য সূত্র, আমাদের কর্মী ও এজেন্টদের থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী এরকম করে ৪৪ টি কেন্দ্রের মধ্যে ২৩ টি কেন্দ্রে ভোট কারচুপি ও জালিয়াতি হয়েছে বলে আমাদের কাছে প্রতিয়মান। যাতে ঘোষিত জয়ী প্রার্থীর লোকজন ও নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কিছু অসাধু কর্মকর্তা জড়িত ছিলেন।

৮ মে সন্ধ্যায় কন্ট্রোলরুম থেকে নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার সময় বেশ কিছু অমিল ও অনিয়ম দেখার পর আমি সেখানে গিয়ে আপত্তি জানাই এবং ফলাফল ঘোষণা স্থগিত রাখতে অনুরুধ করি। তখন সহকারি রিটার্নিং কর্মকর্তা এ বিষয়ে আমাকে রিটার্নিং কর্মকর্তার সাথে আলাপ করতে বলেন। তখনই আমি মৌখিকভাবে ও ই-মেইলের মাধ্যমে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ করলে তিনি আমলে নেননি। উপজেলা নির্বাচন নিয়ে এরকম ট্যাকনিক্যালি ইঞ্জিনিয়ারিং জুড়ীবাসী অতীতে কখনও প্রত্যক্ষ করেননি। এরকম ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে জুড়ীর সাধারণ ভোটারদের মতকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখানো হয়েছে।তিনি আরো বলেন, নির্বাচন কমিশনের কাছে জুড়ী উপজেলায় অবাধ ও সুষ্ঠ একটি পূণঃনির্বাচন আয়োজনের দাবী জানাচ্ছি।

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

নির্বাচনে অনিয়ম, কারচুপির অভিযোগ পরাজিত প্রার্থী ও বর্তমান চেয়ারম্যান বীরমুক্তিযোদ্ধা এম এ মোঈদ ফারুক

আপডেট সময় ১১:৪৪:২৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ২০ মে ২০২৪

জুড়ী প্রতিনিধি:
মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলা পরিষদ নির্বাচন-২০২৪ পূর্বকালিন সময়ে একটি পত্রিকায় মিথ্যা সংবাদ প্রকাশের প্রতিবাদ ও নির্বাচনে অনিয়ম, কারচুপি ও টেকনিকালি ইন্জিনিয়ারিং এর মাধ্যমে ভোট জালিয়াতির অভিযোগ করছেন পরাজিত প্রার্থী ও বর্তমান চেয়ারম্যান বীরমুক্তিযোদ্ধা এম এ মোঈদ ফারুক।
আজ ২০ মে সোমবার দুপুরে নিজ কার্যালয়ে লিখিত বক্তব্যে তিনি এ অভিযোগ করেন। তিনি বলেন গত ৮ মে অনুষ্ঠিত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে একটি কুচক্রি মহলের যড়যন্ত্র, ব্যাপক অনিয়ম, কারচুপি ও ভোট জালিয়াতির কারণে আমাকে পরাজিত দেখানো হয়েছে। আমি জানি আমার মত ভোটাররাও এ নিয়ে অনেক মর্মাহত হয়েছেন।
নির্বাচনের ঠিক পূর্ব মুহূর্তে একটি পত্রিকায় “এবার মোঈদের আছে ৭০ লাখ টাকার প্রাডো গাড়ী” শিরোনামে সংবাদটি বানোয়াট ও উদ্দেশ্যপ্রনোদিত। এর মাধ্যমে ভোটারদের কাছে আমার সুনাম ক্ষুন্ন করা হয়েছে এবং নির্বাচনে এর প্রভাব পড়েছে। সংবাদে বুঝানো হয়েছে গত নির্বাচনের পর আমি এ প্রাডো গাড়ীর মালিক হয়েছি। নির্বাচন চলাকালিন সময়ে আমি নির্বাচনি কাজে ব্যস্ত থাকায় এ বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে পারিনি। পাশাপাশি পত্রিকায়ও আমি এর প্রতিবাদ জানাবো। মূল বিষয় হল ২০০৯ ইং সালে আমি এ গাড়িটি ক্রয় করি এবং ২০১৮ ইং সালের নভেম্বর মাসে আমি গাড়ীটি বিক্রির জন্য জনৈক ক্রেতার কাছে ২০ লক্ষ টাকা বায়নায় বিক্রি করি। পরবর্তিতে সেই ক্রেতা সম্পূর্ণ টাকা পরিশোধে অক্ষম হওয়ায় আমি বায়নার টাকা ফেরত নিয়ে গাড়ীর মালিকানা বুঝে পাই। যেহেতু ২০১৯ ইং সালের নির্বাচনের পূর্বে আমি গাড়ীর মালিকানায় ছিলাম না তাই তখনকার হলফনামায় আমি উল্লেখ করিনি। এবারের নির্বাচনে গাড়ীটি আমায় মালিকানায় থাকায় হলফনামায় উল্লেখ করেছি।এই হলফনামার তথ্য স্হানীয় এক সংবাদকর্মী পত্রিকা তুলে ধরে নির্বাচনে জনগনকে বিভ্রান্ত করেছে।আমি তার প্রতিবাদ জানাই।

এ ছাড়া নির্বাচনে ভোট ডাকাতির মাধ্যমে জনগনের রায়কে পরিবর্তন করা হয়েছে। নির্বাচনে ৪৪টি কেন্দ্রের মধ্যে কোনটাই দুর্গম এলাকা নয় যে,ব্যালট আগের দিন পাটাতে হবে। অথচ পূর্বের দিন কারচুপির উদ্দেশ্যে ৭ টি ভোটকেন্দ্রে নির্বাচনের ব্যালট পেপার পাঠানো হয়। সমমান অন্যান্য কেন্দ্রের ফলাফলের সাথে এগুলোর বেশ অমিল পাওয়া গিয়েছে। বিকাল চারটায় কন্ট্রোল রুমের প্রেরণ করা তথ্য অনুযায়ী গড়ে ভোট কাস্টিং হয়েছে ৩৯%।অথচ আগের দিন ব্যালট পেপার পাটানো উক্ত ৭টি কেন্দ্রের ফলাফলের সাথে বেশ তফাত রয়েছে।এগুলোতে পূর্বের রাতে ব্যালটে সীল মেরে বাক্সভর্তি করা হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রের অনেক ভোটারগন মনে করছেন।
নির্ভরযোগ্য সূত্রে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ি ভোট গ্রহণ শেষে বিকাল চারটায় সহকারি রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয় (কন্ট্রোল কম) থেকে রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়ে প্রেরিত ভোট গ্রহণ সম্পন্ন প্রতিবেদনে ভোটগ্রহণের শতকরা হার ৩৯% উল্লেখ করা হয়। কিন্তু পরে জালিয়াতি করে প্রাথমিক বেসরকারি ফলাফলে প্রায় ৪৭% ভোট প্রদান দেখানো হয়েছে। এ থেকে প্রমাণিত হয় যে, অতিরিক্ত ৮% ভোট ঘোষিত জয়ী প্রার্থীর পক্ষে দেখানো হয়েছে। ফলাফলে বাতিলকৃত মোট ভোটের সংখ্যায় মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ১৮৪৮টি ও ভাইস চেয়ারম্যান পদে ১৮৭৩টি ভোট বাতিল দেখানো হয়েছে। তবে চেয়ারম্যান পদে ১৪৭২ টি ভোট বাতিল দেখানো হয়েছে, যাহা গভীর সন্দেহের অবকাশ রাখে। আমিও আমার ভোটারগণ মনে করি প্রায় ৪শত বাতিল ভোট ঘোষিত জয়ী প্রার্থীর পক্ষে দেখানো হয়েছে।

চা-বাগান কেন্দ্রগুলোকে সহজ সরল চা-শ্রমিকদের চোখ ফাঁকি দিয়ে প্রায় প্রত্যেকটি কেন্দ্রে ভোট জালিয়াতি করা হয়েছে। আমাদের এজেন্ট ও গণমাধ্যমকর্মীদের কাছ থেকে নির্বাচন চলাকালীন শেষ মুহুর্তে এসব কেন্দ্রগুলোর কাস্টিং ভোট ও গণনার পরের কাস্টিং ভোটের মধ্যে বিস্তর ফারাক দেখা যায়।যা কোনোক্রমেই মানানসই নয়। নির্বাচন পর্যবেক্ষণে থাকা অনেক গণমাধ্যমকর্মী, নির্ভরযোগ্য সূত্র, আমাদের কর্মী ও এজেন্টদের থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী এরকম করে ৪৪ টি কেন্দ্রের মধ্যে ২৩ টি কেন্দ্রে ভোট কারচুপি ও জালিয়াতি হয়েছে বলে আমাদের কাছে প্রতিয়মান। যাতে ঘোষিত জয়ী প্রার্থীর লোকজন ও নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কিছু অসাধু কর্মকর্তা জড়িত ছিলেন।

৮ মে সন্ধ্যায় কন্ট্রোলরুম থেকে নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার সময় বেশ কিছু অমিল ও অনিয়ম দেখার পর আমি সেখানে গিয়ে আপত্তি জানাই এবং ফলাফল ঘোষণা স্থগিত রাখতে অনুরুধ করি। তখন সহকারি রিটার্নিং কর্মকর্তা এ বিষয়ে আমাকে রিটার্নিং কর্মকর্তার সাথে আলাপ করতে বলেন। তখনই আমি মৌখিকভাবে ও ই-মেইলের মাধ্যমে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ করলে তিনি আমলে নেননি। উপজেলা নির্বাচন নিয়ে এরকম ট্যাকনিক্যালি ইঞ্জিনিয়ারিং জুড়ীবাসী অতীতে কখনও প্রত্যক্ষ করেননি। এরকম ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে জুড়ীর সাধারণ ভোটারদের মতকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখানো হয়েছে।তিনি আরো বলেন, নির্বাচন কমিশনের কাছে জুড়ী উপজেলায় অবাধ ও সুষ্ঠ একটি পূণঃনির্বাচন আয়োজনের দাবী জানাচ্ছি।