ঢাকা ১০:১০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মামলা-গ্রেফতারে বাড়তি সতর্কতা প্রাথমিকভাবে সম্পৃক্ততা না পেলে নাম প্রত্যাহার

নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ০৯:৪৩:১৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • / ৪৪২ বার পড়া হয়েছে

CREATOR: gd-jpeg v1.0 (using IJG JPEG v80), quality = 80?

ছাত্র-জনতার আন্দোলনকেন্দ্রিক মামলায় অভিযুক্তদের নাম নিয়ে দ্বিধায় আছে পুলিশ। গণহারে গ্রেফতার ও অভিযুক্ত করার বিষয়ে বাড়তি সতর্ক বার্তা দিয়েছে পুলিশ সদর দপ্তর। এতে আন্দোলনকে কেন্দ্র করে দায়ের হত্যা ও অন্য মামলায় প্রাথমিক তদন্তে কোনো আসামির সম্পৃক্ততা না পাওয়া গেলে তার নাম প্রত্যাহারের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও সঠিক তথ্যপ্রমাণ ছাড়া এসব মামলায় কোনো সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারীকে গ্রেফতার না করতে বলা হয়েছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছে, হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধেই অভিযোগপত্র দেওয়া হয়। এতে যাদের সম্পৃক্ততা পাওয়া যায় না তাদের নাম বাদ দেওয়া হয়। সাম্প্রতিক ঘটনায় প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত নয় এমন অনেক ব্যক্তির নাম আসায় সঠিক বিচার পাওয়া নিয়ে সংশয় প্রকাশ করা হয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে সমালোচনায় পড়েছে পুলিশ। ফলে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের সম্পৃক্ততা নিয়ে যথাযথ যাচাইয়ে গুরুত্ব দিতেই এই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও নতুন করে মামলা নেওয়া ও গ্রেফতারের ক্ষেত্রেও প্রভাবিত না হয়ে প্রাথমিক প্রমাণে জোর দেওয়া হচ্ছে।

জানা গেছে, আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির প্রথম সভায় সিদ্ধান্তের পর গত ৮ সেপ্টেম্বর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে একটি চিঠি পুলিশ সদর দপ্তরে পাঠানো হয়। পরে ১০ সেপ্টেম্বর পুলিশ সদর দপ্তর থেকে সব ইউনিটকে চিঠি দেওয়া হয়েছে।

পুলিশ সদর দপ্তরের ডিআইজি (কনফিডেন্সিয়াল) মো. কামরুল আহসান সই করা ওই চিঠিটি বলা হয়েছে, আইনশৃঙ্খলাসংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির প্রথম সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে শাহাদাতবরণকারী পরিবার বা সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি বিভিন্ন আদালত বা থানায় দায়ের করা মামলায় সঠিক তথ্য প্রমাণ ছাড়া সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারীকে গ্রেফতার করা যাবে না।

এছাড়াও জুলাই-আগস্ট ২০২৪ গণঅভ্যুত্থানকেন্দ্রিক দায়ের হত্যাকাণ্ড ও অন্যান্য মামলায় তদন্তের পূর্বে কোনো কর্মকর্তা বা ব্যক্তির সম্পৃক্ততার প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া না গেলে তাদের নাম প্রত্যাহারে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। একই সঙ্গে এই সংক্রান্ত আপডেট তথ্য আগামী ২২ সেপ্টেম্বরের মধ্যে পুলিশ সদর দপ্তরে প্রতিবেদন আকারে পাঠানোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে পুলিশ সদর দপ্তরের ডিআইজি (কনফিডেন্সিয়াল) মো. কামরুল আহসান বলেন, পুলিশ আগে যেভাবে কাজ করেছে ভবিষ্যতে যেন সেভাবে কাজ না করে। আমরা একটি প্রফেশনাল পুলিশিং চাই, যাতে কোনো ত্রুটি না থাকে। এজন্য আইনে এ সংক্রন্ত বিষয় থাকার পরও যথাযথ গুরুত্ব দিতে নির্দেশনা পাঠানো হয়েছে।

অনেক মামলায় গণহারে বিভিন্ন ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে সারা দেশে সমালোচনা শুরু হয়। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, এরই ধারাবাহিকতায় উপদেষ্টাদের পক্ষ থেকে গণহারে মামলার বিষয়ে কাউকে হয়রানি করা হবে না বলে আশ্বাসও দেওয়া হয়। আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদের প্রথম বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। পরে বৈঠকে দুটি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে জানা গেছে। এর একটি হলো ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে শাহাদাতবরণকারী পরিবার বা সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি বিভিন্ন আদালত বা থানায় দায়েরকৃত মামলায় সঠিক তথ্য প্রমাণ ছাড়া সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীকে গ্রেফতার করা যাবে না। আরেকটি সিদ্ধান্ত হলো- জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থান কেন্দ্র করে হত্যাকাণ্ড ও অন্যান্য মামলায় তদন্তপূর্বক কোনো কর্মকর্তা-ব্যক্তির সম্পৃক্ততার প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া না গেলে তাদের নাম প্রত্যাহারের ব্যবস্থা নিতে হবে।

 

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

মামলা-গ্রেফতারে বাড়তি সতর্কতা প্রাথমিকভাবে সম্পৃক্ততা না পেলে নাম প্রত্যাহার

আপডেট সময় ০৯:৪৩:১৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪

ছাত্র-জনতার আন্দোলনকেন্দ্রিক মামলায় অভিযুক্তদের নাম নিয়ে দ্বিধায় আছে পুলিশ। গণহারে গ্রেফতার ও অভিযুক্ত করার বিষয়ে বাড়তি সতর্ক বার্তা দিয়েছে পুলিশ সদর দপ্তর। এতে আন্দোলনকে কেন্দ্র করে দায়ের হত্যা ও অন্য মামলায় প্রাথমিক তদন্তে কোনো আসামির সম্পৃক্ততা না পাওয়া গেলে তার নাম প্রত্যাহারের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও সঠিক তথ্যপ্রমাণ ছাড়া এসব মামলায় কোনো সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারীকে গ্রেফতার না করতে বলা হয়েছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছে, হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধেই অভিযোগপত্র দেওয়া হয়। এতে যাদের সম্পৃক্ততা পাওয়া যায় না তাদের নাম বাদ দেওয়া হয়। সাম্প্রতিক ঘটনায় প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত নয় এমন অনেক ব্যক্তির নাম আসায় সঠিক বিচার পাওয়া নিয়ে সংশয় প্রকাশ করা হয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে সমালোচনায় পড়েছে পুলিশ। ফলে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের সম্পৃক্ততা নিয়ে যথাযথ যাচাইয়ে গুরুত্ব দিতেই এই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও নতুন করে মামলা নেওয়া ও গ্রেফতারের ক্ষেত্রেও প্রভাবিত না হয়ে প্রাথমিক প্রমাণে জোর দেওয়া হচ্ছে।

জানা গেছে, আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির প্রথম সভায় সিদ্ধান্তের পর গত ৮ সেপ্টেম্বর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে একটি চিঠি পুলিশ সদর দপ্তরে পাঠানো হয়। পরে ১০ সেপ্টেম্বর পুলিশ সদর দপ্তর থেকে সব ইউনিটকে চিঠি দেওয়া হয়েছে।

পুলিশ সদর দপ্তরের ডিআইজি (কনফিডেন্সিয়াল) মো. কামরুল আহসান সই করা ওই চিঠিটি বলা হয়েছে, আইনশৃঙ্খলাসংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির প্রথম সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে শাহাদাতবরণকারী পরিবার বা সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি বিভিন্ন আদালত বা থানায় দায়ের করা মামলায় সঠিক তথ্য প্রমাণ ছাড়া সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারীকে গ্রেফতার করা যাবে না।

এছাড়াও জুলাই-আগস্ট ২০২৪ গণঅভ্যুত্থানকেন্দ্রিক দায়ের হত্যাকাণ্ড ও অন্যান্য মামলায় তদন্তের পূর্বে কোনো কর্মকর্তা বা ব্যক্তির সম্পৃক্ততার প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া না গেলে তাদের নাম প্রত্যাহারে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। একই সঙ্গে এই সংক্রান্ত আপডেট তথ্য আগামী ২২ সেপ্টেম্বরের মধ্যে পুলিশ সদর দপ্তরে প্রতিবেদন আকারে পাঠানোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে পুলিশ সদর দপ্তরের ডিআইজি (কনফিডেন্সিয়াল) মো. কামরুল আহসান বলেন, পুলিশ আগে যেভাবে কাজ করেছে ভবিষ্যতে যেন সেভাবে কাজ না করে। আমরা একটি প্রফেশনাল পুলিশিং চাই, যাতে কোনো ত্রুটি না থাকে। এজন্য আইনে এ সংক্রন্ত বিষয় থাকার পরও যথাযথ গুরুত্ব দিতে নির্দেশনা পাঠানো হয়েছে।

অনেক মামলায় গণহারে বিভিন্ন ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে সারা দেশে সমালোচনা শুরু হয়। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, এরই ধারাবাহিকতায় উপদেষ্টাদের পক্ষ থেকে গণহারে মামলার বিষয়ে কাউকে হয়রানি করা হবে না বলে আশ্বাসও দেওয়া হয়। আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদের প্রথম বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। পরে বৈঠকে দুটি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে জানা গেছে। এর একটি হলো ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে শাহাদাতবরণকারী পরিবার বা সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি বিভিন্ন আদালত বা থানায় দায়েরকৃত মামলায় সঠিক তথ্য প্রমাণ ছাড়া সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীকে গ্রেফতার করা যাবে না। আরেকটি সিদ্ধান্ত হলো- জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থান কেন্দ্র করে হত্যাকাণ্ড ও অন্যান্য মামলায় তদন্তপূর্বক কোনো কর্মকর্তা-ব্যক্তির সম্পৃক্ততার প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া না গেলে তাদের নাম প্রত্যাহারের ব্যবস্থা নিতে হবে।