ঢাকা ১২:১৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ০৪ জুন ২০২৫, ২১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
ব্রেকিং নিউজ
আজ হাজীপুর ইউনিয়ন বিএনপির সম্মেলন ও কাউন্সিল, চমক দেখাতে পারেন সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী রমেন চাচার হাতে দুই ভাতিজি খু ন মৌলভীবাজার রেড ক্রিসেন্ট কমিটিতে যারা রয়েছেন মৌলভীবাজারে কৃষকদের নিয়ে ‘পার্টনার কংগ্রেস’ মৌলভীবাজার রেড ক্রিসেন্ট ভাইসচেয়ারম্যান ময়ূন সেক্রেটারি মিসবাহ বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন কুলাউড়ার হাজীপুরে বিএনপির সম্মেলন নিয়ে উৎফুল্ল নেতাকর্মীরা! মৌলভীবাজারে অসহায় গরীব অসচ্ছল প্রতিবন্ধীদের মাঝে হুইল চেয়ার ও রিস্কা বিতরণ জুড়ীতে বন্যার পানিতে ডুবে স্কুল ছাত্রের মৃ ত্যু দুইশতাধিক পানিবন্দীকে শুকনো খাবার দিয়েছে রাজনগর উপজেলা প্রশাসন

কম সরবরাহে বাড়ছে দাম

নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ১১:২০:১৯ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪
  • / ২৭৩ বার পড়া হয়েছে

মৌলভীবাজার২৪ ডেস্কঃ কয়েক মাস বাগানগুলোর টানা কম সরবরাহে বাড়ছে চায়ের দাম। বিগত ২০২৩ সালের ৩১তম নিলামে বাগানগুলো ৪৩ লাখ ৬১ হাজার ৫৫৯ কেজি চা সরবরাহ করেছিল। আর অতিসমপ্রতি অনুষ্ঠিত নিলামে এর পরিমাণ ছিল প্রায় ৩২ লাখ ২৫ হাজার ৭৮৫ কেজি। দেশের প্রধান চা নিলাম কেন্দ্র চট্টগ্রাম। আন্তর্জাতিক এ নিলাম কেন্দ্রে টানা ১৪ সপ্তাহ ধরে চা সরবরাহ কমেছে। মূলত বৈরী আবহাওয়ায় উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় বাগান মালিকরা নিলামে কম চা পাঠাচ্ছে। চা বোর্ড ও ব্রোকার্স প্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।

সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, বাংলাদেশ গত বছর রেকর্ড ১০ কোটি ২৯ লাখ ১৮ হাজার কেজি চা উৎপাদন করে। যদিও ওই বছর লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১০ কোটি ২০ লাখ টন। আর চলতি বছরের অক্টোবর পর্যন্ত পণ্যটির উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় কমেছে অনেক। ১০ কোটি ৮০ লাখ কেজি লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে উৎপাদনের পরিমাণ ছিল সাত কোটি ৬৬ লাখ ৭৩ হাজার কেজি। অর্থাৎ লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে হলে ১৬৮টি চা বাগান ও ক্ষুদ্রায়তন বাগান মালিকদের অক্টোবর-ডিসেম্বর পর্যন্ত তিন কোটি ১৩ লাখ ২৭ হাজার কেজি চা উৎপাদন করতে হবে। গত সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত ১৮তম নিলামে চা সরবরাহ হয়েছিল ৭১ হাজার ২৯১ প্যাকেটে (প্রতি প্যাকেটে ৫০ কেজি) ৩৫ লাখ ৫৭ হাজার ৪২০ কেজি। আর আগের বছরের একই নিলামে ৬৯ হাজার ৪৫১ প্যাকেটে ৩৪ লাখ ৬৫ হাজার ৬০৫ কেজি চা সরবরাহ করা হয়েছিল। নিলাম বাজারে জুন থেকে বর্ষা মৌসুমে উৎপাদন ভালো হওয়ার প্রভাব পড়েছিল।

এরপর সর্বশেষ ৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত ১৪টি সাপ্তাহিক নিলাম অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রতিটি নিলামেই আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় কম চা সরবরাহ হয়েছে। সূত্র জানায়, চট্টগ্রাম নিলাম কেন্দ্রে বাগানগুলো দেশের ৯০-৯৫ শতাংশ চা সরবরাহ করে। কিন্তু এবারই প্রথম টানা ১৪টি নিলামে চা সরবরাহ নিম্নমুখী হওয়ার নজির সৃষ্টি হয়েছে। চা চাষের জন্য পরিমিত বৃষ্টিপাত প্রয়োজন। চলতি বছর বর্ষায় নিয়মিত বৃষ্টিপাতের পরিবর্তে বেশি ভারী বৃষ্টিপাত হয়েছে। এ কারণে উৎপাদন কমে যাওয়ায় নিলাম ও খুচরা-পাইকারি বাজারে চায়ের সরবরাহ কমেছে। ফলে সামনের দিনগুলোয় পণ্যটির দাম বাড়তে পারে। এদিকে এ বিষয়ে দেশের শীর্ষস্থানীয় চা ব্রোকার্স প্রতিষ্ঠান ন্যাশনাল ব্রোকার্সের জ্যেষ্ঠ ব্যবস্থাপক অঞ্জন দেব বর্মণ জানান, ‘চলতি বছর আবহাওয়া চা চাষের উপযোগী ছিল না। যা পণ্যটির নিলাম বাজারেও প্রভাব ফেলেছে। কয়েক মাস ধরে প্রতিটি নিলামেই আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় বাগানগুলো কম চা সরবরাহ করছে। ফলে দামও কিছুটা বেশি।

অন্যদিকে এ বিষয়ে বাংলাদেশের চা সংসদের সভাপতি কামরান তানভিরুল ইসলাম জানান, এদেশে চা উৎপাদন প্রকৃতিনির্ভর। এ বছর আশানুরূপ বৃষ্টি না হওয়ায় উৎপাদনে পিছিয়ে পড়েছে বাগানগুলো। তবে গত কয়েক বছরের বাড়তি চা থাকায় দশে সংকট তৈরি হওয়ার আশঙ্কা কম। কোনো বছর উৎপাদন কম হলেও অন্য বছরগুলোয় বাড়তি উৎপাদনের মাধ্যমে ওই ঘাটতি পুষিয়ে নেয়া যায়। আর দেশের বাগানগুলো দীর্ঘদিন ধরে উৎপাদন খরচের তুলনায় কম দামে চা বিক্রি করে লোকসানের মুখে পড়ছে। তবে চলতি বছর সরবরাহ কম থাকায় তা পুষিয়ে নিতে পারবে।

 

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

কম সরবরাহে বাড়ছে দাম

আপডেট সময় ১১:২০:১৯ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪

মৌলভীবাজার২৪ ডেস্কঃ কয়েক মাস বাগানগুলোর টানা কম সরবরাহে বাড়ছে চায়ের দাম। বিগত ২০২৩ সালের ৩১তম নিলামে বাগানগুলো ৪৩ লাখ ৬১ হাজার ৫৫৯ কেজি চা সরবরাহ করেছিল। আর অতিসমপ্রতি অনুষ্ঠিত নিলামে এর পরিমাণ ছিল প্রায় ৩২ লাখ ২৫ হাজার ৭৮৫ কেজি। দেশের প্রধান চা নিলাম কেন্দ্র চট্টগ্রাম। আন্তর্জাতিক এ নিলাম কেন্দ্রে টানা ১৪ সপ্তাহ ধরে চা সরবরাহ কমেছে। মূলত বৈরী আবহাওয়ায় উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় বাগান মালিকরা নিলামে কম চা পাঠাচ্ছে। চা বোর্ড ও ব্রোকার্স প্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।

সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, বাংলাদেশ গত বছর রেকর্ড ১০ কোটি ২৯ লাখ ১৮ হাজার কেজি চা উৎপাদন করে। যদিও ওই বছর লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১০ কোটি ২০ লাখ টন। আর চলতি বছরের অক্টোবর পর্যন্ত পণ্যটির উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় কমেছে অনেক। ১০ কোটি ৮০ লাখ কেজি লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে উৎপাদনের পরিমাণ ছিল সাত কোটি ৬৬ লাখ ৭৩ হাজার কেজি। অর্থাৎ লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে হলে ১৬৮টি চা বাগান ও ক্ষুদ্রায়তন বাগান মালিকদের অক্টোবর-ডিসেম্বর পর্যন্ত তিন কোটি ১৩ লাখ ২৭ হাজার কেজি চা উৎপাদন করতে হবে। গত সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত ১৮তম নিলামে চা সরবরাহ হয়েছিল ৭১ হাজার ২৯১ প্যাকেটে (প্রতি প্যাকেটে ৫০ কেজি) ৩৫ লাখ ৫৭ হাজার ৪২০ কেজি। আর আগের বছরের একই নিলামে ৬৯ হাজার ৪৫১ প্যাকেটে ৩৪ লাখ ৬৫ হাজার ৬০৫ কেজি চা সরবরাহ করা হয়েছিল। নিলাম বাজারে জুন থেকে বর্ষা মৌসুমে উৎপাদন ভালো হওয়ার প্রভাব পড়েছিল।

এরপর সর্বশেষ ৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত ১৪টি সাপ্তাহিক নিলাম অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রতিটি নিলামেই আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় কম চা সরবরাহ হয়েছে। সূত্র জানায়, চট্টগ্রাম নিলাম কেন্দ্রে বাগানগুলো দেশের ৯০-৯৫ শতাংশ চা সরবরাহ করে। কিন্তু এবারই প্রথম টানা ১৪টি নিলামে চা সরবরাহ নিম্নমুখী হওয়ার নজির সৃষ্টি হয়েছে। চা চাষের জন্য পরিমিত বৃষ্টিপাত প্রয়োজন। চলতি বছর বর্ষায় নিয়মিত বৃষ্টিপাতের পরিবর্তে বেশি ভারী বৃষ্টিপাত হয়েছে। এ কারণে উৎপাদন কমে যাওয়ায় নিলাম ও খুচরা-পাইকারি বাজারে চায়ের সরবরাহ কমেছে। ফলে সামনের দিনগুলোয় পণ্যটির দাম বাড়তে পারে। এদিকে এ বিষয়ে দেশের শীর্ষস্থানীয় চা ব্রোকার্স প্রতিষ্ঠান ন্যাশনাল ব্রোকার্সের জ্যেষ্ঠ ব্যবস্থাপক অঞ্জন দেব বর্মণ জানান, ‘চলতি বছর আবহাওয়া চা চাষের উপযোগী ছিল না। যা পণ্যটির নিলাম বাজারেও প্রভাব ফেলেছে। কয়েক মাস ধরে প্রতিটি নিলামেই আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় বাগানগুলো কম চা সরবরাহ করছে। ফলে দামও কিছুটা বেশি।

অন্যদিকে এ বিষয়ে বাংলাদেশের চা সংসদের সভাপতি কামরান তানভিরুল ইসলাম জানান, এদেশে চা উৎপাদন প্রকৃতিনির্ভর। এ বছর আশানুরূপ বৃষ্টি না হওয়ায় উৎপাদনে পিছিয়ে পড়েছে বাগানগুলো। তবে গত কয়েক বছরের বাড়তি চা থাকায় দশে সংকট তৈরি হওয়ার আশঙ্কা কম। কোনো বছর উৎপাদন কম হলেও অন্য বছরগুলোয় বাড়তি উৎপাদনের মাধ্যমে ওই ঘাটতি পুষিয়ে নেয়া যায়। আর দেশের বাগানগুলো দীর্ঘদিন ধরে উৎপাদন খরচের তুলনায় কম দামে চা বিক্রি করে লোকসানের মুখে পড়ছে। তবে চলতি বছর সরবরাহ কম থাকায় তা পুষিয়ে নিতে পারবে।