জন্মস্থলে জন্মগ্রহণ মানেই নাগরিকত্ব

- আপডেট সময় ০৫:৪৩:৩৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ১২ জুলাই ২০২৫
- / ১৯ বার পড়া হয়েছে

জন্মস্থলে জন্মগ্রহণ মানেই নাগরিকত্ব”-এই নিয়মের সুযোগ নিতে প্রতিবছর বহু বিদেশি, বিশেষ করে বাংলাদেশি দম্পতিরা সন্তান জন্মদানের উদ্দেশ্যে যুক্তরাষ্ট্রে যাচ্ছেন। যদিও ট্রাম্প প্রশাসন জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব (Birthright Citizenship) বাতিলের প্রক্রিয়া শুরু করেছে, তবে তা এখনো চূড়ান্তভাবে কার্যকর হয়নি। ফলে এখনো অনেকেই মনে করছেন-আদালতের সিদ্ধান্ত না হওয়া পর্যন্ত নিয়মের সুযোগ নেওয়া সম্ভব।
বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের প্রচলিত আইন অনুযায়ী, দেশটির ভূখণ্ডে জন্ম নিলে একজন শিশু মার্কিন নাগরিক হিসেবে স্বীকৃত হয়, যদিও তার বাবা-মায়ের বৈধ অভিবাসন স্ট্যাটাস না-ও থাকতে পারে। ট্রাম্প প্রশাসন এই আইন পরিবর্তনের প্রস্তাব এনেছে-যেখানে বলা হয়েছে, বাবা-মায়ের অন্তত একজন যদি সিটিজেন বা গ্রিনকার্ডধারী না হন, তাহলে সেই দম্পতির সন্তানের জন্য মার্কিন নাগরিকত্ব প্রযোজ্য হবে না।
আদালতের রায়ে আটকে আছে সিদ্ধান্ত
যদিও এই প্রস্তাব এখনো বাস্তবায়নের পর্যায়ে যায়নি এবং বিষয়টি আদালতে বিচারাধীন অবস্থায় রয়েছে, তবুও অনেক বাংলাদেশি পরিবার সন্তানকে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্ব দিতে এখনো এই সুযোগ নেওয়ার চেষ্টা করছেন। অনেকেই বিশ্বাস করছেন, শিশুটি জন্মের সময় নিয়মটি পুরোপুরি বাতিল না হলে ভবিষ্যতে সে নাগরিকত্ব পাবে।
একাধিক সূত্র জানায়, আইন পরিবর্তনের সম্ভাবনা জেনেও কিছু দম্পতি যুক্তরাষ্ট্রে গিয়েই সন্তান জন্ম দেওয়ার পরিকল্পনা করেন, এবং দ্রুত জন্মসনদ, সোশ্যাল সিকিউরিটি নম্বর ও পাসপোর্ট সংগ্রহ করে দেশে ফিরে আসেন। সন্তান বড় হলে আবার তাকে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে ফেরত যান।
বিতর্ক বাড়ছে, অভিযোগও রয়েছে
যুক্তরাষ্ট্রের অনেক নাগরিক এই প্রবণতা ভালোভাবে দেখছেন না। তারা মনে করেন, এই পদ্ধতিতে বিদেশিরা আমেরিকান নাগরিকত্বের সুযোগ নিচ্ছেন, যা দেশের অর্থনৈতিক ও সামাজিক কাঠামোর ওপর চাপ সৃষ্টি করছে।
একজন দেশপ্রেমিক মার্কিন নাগরিক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “ভিনদেশ থেকে এসে এখানে সন্তান জন্ম দিয়ে নাগরিকত্ব নেওয়া অনৈতিক। এতে আমাদের করদাতা নাগরিকদের অধিকার ক্ষুণ্ণ হয়।”
তিনি আরও অভিযোগ করেন, অনেক অভিবাসী দম্পতি সন্তান জন্মের পর হাসপাতালের বিলও পরিশোধ না করে দেশে ফিরে যান। কারণ, যুক্তরাষ্ট্রের নিয়ম অনুযায়ী, চিকিৎসা শেষে বিল ডাকযোগে প্রেরণ করা হয়। ততদিনে তারা ঠিকানা পরিবর্তন করে দেশে ফিরে যান, ফলে বিল আদায় করা সম্ভব হয় না।
অ্যাটর্নির মতামত
এ বিষয়ে একজন অভিজ্ঞ ইমিগ্রেশন অ্যাটর্নি বলেন, “বর্তমানে জন্ম নিলে কেউ নাগরিকত্ব পাবে কি না, তা নিশ্চিতভাবে বলা সম্ভব নয়। সবকিছু নির্ভর করে জন্মের পর সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র-জন্মসনদ, সোশ্যাল সিকিউরিটি নম্বর ও পাসপোর্ট-দেওয়া হচ্ছে কি না তার ওপর। এখনো বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।”
এই বাস্তবতায় মার্কিন সরকারের অবস্থান যতই কঠোর হোক না কেন, বাংলাদেশসহ উন্নয়নশীল বিশ্বের অনেক দম্পতির কাছে এখনো মার্কিন মুলুকেই সন্তান জন্ম দেওয়ার স্বপ্ন নিরাপদ ভবিষ্যতের প্রতীক হিসেবে রয়ে গেছে।
