শ্রীমঙ্গলে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যবসায়ীর ওপর হামলা,আহত-৪,দোকান ভাংচুর,টাকা লুট

- আপডেট সময় ১০:৫৬:০৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫
- / ৪৬ বার পড়া হয়েছে

শ্রীমঙ্গল প্রতিনিধিঃ পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলার সিন্দুরখান ইউনিয়নের ষাড়েরগঞ্জ গ্রামে একক আধিপত্য ছিল উপজেলা কৃষক লীগের সদস্য সচিব হেলাল মিয়ার। আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক কৃষিমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠজন হওয়ার সুবাদে ওই সময় হেলাল মিয়া ও তার ভাই স্বজনরা দুর্নীতি ও সন্ত্রাসি কর্মকান্ড করলেও কেউ মুখ খুলতে পারেননি। এলাকার নিরীহ মানুষজন ছিলেন কোণঠাসা।
৫ আগস্ট জুলাই গণঅভুত্থ্যানে আওয়ামী লীগ ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পরপরই কৃষকলীগ নেতা হেলাল মিয়ার আপন ছোট ভাই সাদেক মিয়া ইউনিয়ন যুবদলের সিনিয়র সহ-সভাপতির পদ ভাগিয়ে নেন। অভিযোগ রয়েছে সাদেক মিয়া কয়েক বছর আগেও কৃষক লীগের নেতৃত্বে ছিলেন। বিএনপির অঙ্গ সংগঠন যুবদলের কমিটিতে তার পদ পাওয়া নিয়েও চলছে আলোচনা-সমালোচনা।
স্থানীয়দের অভিযোগ, কৃষকলীগ নেতা হেলাল মিয়ার ভাই সাদেক মিয়া যুবদলের পদ পাওয়ার পর কৃষকলীগ পরিবারের সদস্যরা আবারো এলাকায় আধিপত্য বিস্তার শুরু করছেন।
তুচ্ছ ঘটন কেন্দ্র করে কৃষকলীগ পরিবারের সদস্যরা এলাকার নিরীহ মানুষের ওপর নির্যাতন নিপীড়ন করছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সিন্দুরখান ইউয়িনের ৮নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ নেতা বিলাল মিয়া, সিন্দুরখান ইউনিয়ন যুবদলের সিনিয়র সহসভাপতি সাদেক মিয়া, মন্নান মিয়া, কাবুল মিয়া, হান্নান মিয়া, আব্দুল খালিকসহ দলবল নিয়ে ষাড়েগঞ্জ চৌমুহনা এলাকায় আল আমিন নামে এক ব্যক্তির দোকানে হামলা চালান। এসময় দোকানের প্রবেশ করে ভাংচুর এবং দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা করে গুরুতর আহত করেন রতন মিয়া বদরুল আলম, আল আমিন, আবদাল মিয়াসহ কয়েকজনকে।
এঘটনায় আওয়ামী লীগ নেতা বিলাল মিয়া এবং সিন্দুরখান ইউনিয়ন যুবদলের সিনিয়র সহসভাপতি সাদেক মিয়াসহ ৭জনের নাম উল্লেখ আরও অজ্ঞাত ৩/৪জন এর বিরুদ্ধে শ্রীমঙ্গল থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন আবদাল মিয়া।
অভিযোগে আবদাল মিয়া বলেন, সিন্দুরখান ইউনিয়নের ষাড়েরগজ এলাকায় আমার ভাতিজা মোঃ আলামিনের মুদির দোকান। বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) সকাল বেলা আমি ষাড়েরগজ বাজারে লিটন মিয়ার দোকানে খাওয়ার জন্য গেলে, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ নেতা বিলাল মিয়া বিনা কারণে আমাকে অপমানজনক কথাবার্তা বললে তার সাথে আমার বাকবিতন্ড হয়। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে কৃষকলীগ নেতার ভাই বিলাল মিয়া ও ওয়ার্ড যুবদলের সিনিয়র সহসভাপতি সাদেক মিয়াসহ কৃষকলীগ নেতার ভাই ভাতিজারা আমার ভাতিজা আলামিনের দোকানে এসে আমাকে খোঁজেন। তখন আমাকে না পেয়ে আমার ভাই রতন মিয়া ও আমার ভাতিজা বদরুল আলমকে খারাপ ভাষায় গালাগালি করলে তাদের সাথে বাকবিতন্ড হয়।
বাকবিতঅন্ডের এক পর্যায়ে তারা দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে আমার ভাতিজা আলামিনের দোকানে প্রবেশ তার দোকান ভাঙচুর করে প্রচুর টাকার ক্ষতি সাধন করেন। আমার ভাই রতন মিয়া ও ভাতিজা বদরুল আলম বিবাদীগণকে বাঁধা প্রদানের চেষ্টা করলে বিবাদীগণ আমার ভাই রতন মিয়াকে এলোপাথাড়িভাবে মারধর করিয়া শরীরের বিভিন্ন স্থানে নীলা-ফুলা জখম করে। বিলালের হাতে থাকা ধারালো দাঁ দিয়া প্রাণে উদ্দেশ্যে আমার ভাই রতন মিয়ার মাথায় ধারালো দা দিয়ে কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করে।
আমার ভাই রতন মিয়াকে বাঁচাতে আমার ভাতিজা বদরুল মিয়া এগিয়ে আসলে বিলাল, মন্নান, কাবুল মিয়া গংরা বদরুল আলমকে হত্যার উদ্দেশ্যে শরীরের বিভিন্ন স্থানে দেশীয় ধারালো অস্ত্র দিয়ে প্রাণে হত্যার উদ্দেশ্যে মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে। ঘটনার সময় সাদেক মিয়া আলামিনের দোকানের ক্যাশ ড্রয়ার থেকে নগদ অনুমান ১ লক্ষ টাকা নিয়ে যায়।
ঘটনার সময় আহতরা জখমীগণ শোর-চিৎকার করতে থাকলেআমিসহ কয়েকজন এগিয়ে আসলে হামলার শিকার হই। এরপর আশ-পাশের লোকজনসহ এগিয়ে কৃষকলীগের নেতারা আমার ভাই ভাতিজা ও আমাদেরেকে প্রাণে হত্যা কওে লাশ গুম করে ফেলার হুমকী দিয়ে চলে যায়।
অতঃপর আমি আহতদের দ্রæত উদ্ধার করে শ্রীমঙ্গল উপজেলা স্বাস্থ্য কপপ্লেক্সে ভতি করি। বর্তমানে তারা গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
এবিষয়ে সিন্দুরখান ইউনিয়নের যুবদলের সিনিয়র সহসভাপতি সাদেক মিয়া গণমাধ্যমকর্মীদের বলেন, আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা। ঘটনার সময় আমি একটি জরুরি কাজে রাজঘাট এলাকায় ছিলাম।
খবর পেয়ে সংঘর্ষ থামানোর জন্য পরে ঘটনাস্থলে আসি। আমি উভয় পক্ষকে থামানোর জন্য ভূমিকা রেখেছি।
শ্রীমঙ্গল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ আমিনুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় লিখিত অভিযোগ পেয়েছি, তদন্ত চলছে। মামলা রেকর্ড প্রক্রিয়াধীন।
