ঢাকা ০৪:৩১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

১৯৭১ সালের ৩ এপ্রিল মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলায় ৫৮ চা শ্রমিককে হত্যা

নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ০৪:০৬:৫৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩ এপ্রিল ২০২২
  • / ৫০৫ বার পড়া হয়েছে

বিশেষ প্রতিনিধি: মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার রহিমপুর ইউনিয়নের দেওড়াছড়া চা বাগানে একসঙ্গে ৫৮ জন নিরীহ শ্রমিককে হত্যা করা হয়। ১৯৭১ সালের ৩ এপ্রিল এই গণহত্যা চালানো হয়।

জানা যায়, দেওড়াছড়া চা বাগানের ম্যানেজার ছিলেন একজন বিহারী। ২৫ মার্চের কিছু আগে ম্যানেজার বাগান ছেড়ে চলে যান। ২৫ মার্চের পর অনেক কর্মচারীও বাগান ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যান। বাগানে শুধু রয়ে যান অনাহারে অর্ধাহারে নির্জীব দেহের শ্রমিকরা। ১৯৭০ সালের নির্বাচনে ভোট না দেওয়ায় মৌলভীবাজারের তখনকার মুসলিম লীগ নেতা এসে তাদের তখন নিয়মিত ভয় দেখাতেন। পরে একসঙ্গে ৫৮ জন চা শ্রমিককে হত্যা করে পাকবাহিনী।

৩ এপ্রিল চা বাগানে প্রবেশ করে পাক হানাদার বাহিনী ৭০ জন চা শ্রমিককে ধরে ভাইয়ের সামনে ভাই, পুত্রের সামনে পিতা, পিতার সামনে পুত্রকে বিবস্ত্র করে তাদের পরনের কাপড় দিয়ে প্রত্যেকের হাত বেঁধে এক সারিতে দাঁড় করিয়ে গুলি করে হত্যা করে। ৭০ জনের মধ্যে ১২ জন চা শ্রমিক মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে ভাগ্যক্রমে বেঁচে যান।

২০১৪ সালের ডিসেম্বর মাসে রহিমপুর ইউপি চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা ইফতেখার আহমেদ বদরুলের হস্তক্ষেপে ও দেওড়াছড়া চা বাগান কর্তৃপক্ষের সহযোগীতায় দেওড়াছড়া চা বাগানের বধ্যভূমির স্থান চিহ্নিত করা হয়।  ইউনিয়নের নিজস্ব অর্থায়নে এখানে একটি বধ্যভূমি নির্মাণ করা হয়।  জায়গাটিতে একটি স্থাপনা তৈরি হলেও সেটা রয়েছে অনেকটা অরক্ষিত।

কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার আশেকুল হক বলেন, বর্তমান সরকার মুক্তিযুদ্ধের গৌরবগাঁথা স্মৃতিগুলো সংরক্ষণে খুবই আন্তরিক। ২০১৫-১৬ অর্থবছরে দেওড়াছড়া চা বাগানে গণহত্যার স্থানকে যথাযথ সংরক্ষণের মাধ্যমে একটি স্মৃতিসৌধ নির্মাণে স্থানীয় সংসদ সদস্য ও সাবেক চিফ হুইপ উপাধ্যক্ষ ড. মো. আব্দুস শহীদের সহায়তায় মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে একটি প্রকল্প প্রেরণ করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত প্রস্তাবটি অনুমোদন হয়নি।

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

১৯৭১ সালের ৩ এপ্রিল মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলায় ৫৮ চা শ্রমিককে হত্যা

আপডেট সময় ০৪:০৬:৫৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩ এপ্রিল ২০২২

বিশেষ প্রতিনিধি: মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার রহিমপুর ইউনিয়নের দেওড়াছড়া চা বাগানে একসঙ্গে ৫৮ জন নিরীহ শ্রমিককে হত্যা করা হয়। ১৯৭১ সালের ৩ এপ্রিল এই গণহত্যা চালানো হয়।

জানা যায়, দেওড়াছড়া চা বাগানের ম্যানেজার ছিলেন একজন বিহারী। ২৫ মার্চের কিছু আগে ম্যানেজার বাগান ছেড়ে চলে যান। ২৫ মার্চের পর অনেক কর্মচারীও বাগান ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যান। বাগানে শুধু রয়ে যান অনাহারে অর্ধাহারে নির্জীব দেহের শ্রমিকরা। ১৯৭০ সালের নির্বাচনে ভোট না দেওয়ায় মৌলভীবাজারের তখনকার মুসলিম লীগ নেতা এসে তাদের তখন নিয়মিত ভয় দেখাতেন। পরে একসঙ্গে ৫৮ জন চা শ্রমিককে হত্যা করে পাকবাহিনী।

৩ এপ্রিল চা বাগানে প্রবেশ করে পাক হানাদার বাহিনী ৭০ জন চা শ্রমিককে ধরে ভাইয়ের সামনে ভাই, পুত্রের সামনে পিতা, পিতার সামনে পুত্রকে বিবস্ত্র করে তাদের পরনের কাপড় দিয়ে প্রত্যেকের হাত বেঁধে এক সারিতে দাঁড় করিয়ে গুলি করে হত্যা করে। ৭০ জনের মধ্যে ১২ জন চা শ্রমিক মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে ভাগ্যক্রমে বেঁচে যান।

২০১৪ সালের ডিসেম্বর মাসে রহিমপুর ইউপি চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা ইফতেখার আহমেদ বদরুলের হস্তক্ষেপে ও দেওড়াছড়া চা বাগান কর্তৃপক্ষের সহযোগীতায় দেওড়াছড়া চা বাগানের বধ্যভূমির স্থান চিহ্নিত করা হয়।  ইউনিয়নের নিজস্ব অর্থায়নে এখানে একটি বধ্যভূমি নির্মাণ করা হয়।  জায়গাটিতে একটি স্থাপনা তৈরি হলেও সেটা রয়েছে অনেকটা অরক্ষিত।

কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার আশেকুল হক বলেন, বর্তমান সরকার মুক্তিযুদ্ধের গৌরবগাঁথা স্মৃতিগুলো সংরক্ষণে খুবই আন্তরিক। ২০১৫-১৬ অর্থবছরে দেওড়াছড়া চা বাগানে গণহত্যার স্থানকে যথাযথ সংরক্ষণের মাধ্যমে একটি স্মৃতিসৌধ নির্মাণে স্থানীয় সংসদ সদস্য ও সাবেক চিফ হুইপ উপাধ্যক্ষ ড. মো. আব্দুস শহীদের সহায়তায় মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে একটি প্রকল্প প্রেরণ করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত প্রস্তাবটি অনুমোদন হয়নি।