ঢাকা ১২:৫৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আমারে জানে মারি ফালাই দিব

নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ০৯:৩১:২৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২ সেপ্টেম্বর ২০২২
  • / ৩৩৮ বার পড়া হয়েছে

মৌলভীবাজার২৪ ডেস্ক: আট দিন আগে ২৪ আগস্ট বুধবার বাবার বাড়ি অনুষ্ঠিত সালিশে গৃহবধূ মিনা বেগম (৪০) বলেছিলেন- আমারে জামাইর (স্বামীর) বাড়ি দিও না, নাইলে আমারে জানে (প্রাণে) মারি ফালাই দিব। মিনার সেই কথাই হাছা (সত্যি) অইলো। তবে এমন নৃশংসভাবে হত্যা করা হবে বুঝতে পারলে আমার পুড়িরে (মেয়েকে) জামাইর বাড়ি দিতাম না। আমার পুড়িরে তারা মারিয়া পুকরিত (পুকুরে) ভাসাই দিছে।’

বৃহস্পতিবার (১ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টায় কুলাউড়া উপজেলা হাজীপুর ইউনিয়নের পীরের বাজার ঈদগাহ মাঠে জানাজার পূর্বে নিহত মিনা বেগমের ৪ সন্তান, মা ও ভাইবোনের কান্নায় এলাকার বাতাস ভারি হয়ে উঠে।

নিহতের বড়ভাই আব্দুল জলিল জানান, লাশ উদ্ধারের সময় এক পা একটি কলসির মধ্যে ঢুকানো, অপর পায়ে একটি ড্রাম বাঁধা, গলা ও কোমরের সঙ্গে রশি বাঁধা ছিল। পরিবারের লোকজন পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে আমার বোনের লাশ পুকুরে ফেলে দেয়। ঘটনার সঙ্গে মিনা বেগমের স্বামী ও পরিবারের লোকজন জড়িত। নিহত মিনা বেগমের ৩ ছেলে ও এক কন্যা সন্তান রয়েছেন। তারা হলো- কাওছার (১৮) হুমায়ুন (১২) হুসাইন (৭)  ও বুশরা (৪)।

লাশ উদ্ধারের সময় নিহত মিনা বেগমের স্বামী লেচু মিয়া ওরফে লেইচ মিয়াকে আটক করে পুলিশ। বৃহস্পতিবার তাকে ৫ দিনের রিমান্ড চেয়ে মৌলভীবাজার জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়।

জানা যায়, মৌলভীবাজার জেলার রাজনগর উপজেলার কামারচাক ইউনিয়নের মৌলভীচক গ্রামে বুধবার (৩১ আগস্ট) সকালে নিহত মিনা বেগমের ২য় ছেলে হুমায়ূন ঘুম থেকে উঠে মাকে না পেয়ে পুরো বাড়িতে খোঁজ করে। কোথাও না পেয়ে পুকুর ঘাটে গিয়ে দেখে মায়ের লাশ ভাসছে। তার চিৎকারে বাড়ির লোকজন জড়ো হন। বিষয়টি রাজনগর থানার পুলিশকে অবহিত করলে তারা গিয়ে পুকুর থেকে লাশ উদ্ধার করে। লাশ উদ্ধার করার সময় স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আতাউর রহমান ও ইউপি সদস্য মো. মাহবুবুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।

ইউপি সদস্য মো. মাহবুবুর রহমান জানান, মিনা বেগম ও তার স্বামীর মধ্যে পারিবারিক কলহ ছিল। আমিসহ স্থানীয় মুরব্বিরা মিলে তাদের সমস্যাটি মীমাংসা করে দেই। মিনা বেগম স্বামীর বাড়িও চলে আসেন। সকালে খবর পেয়ে গিয়ে দেখি তার লাশ পুকুরে ভাসছে।

রাজনগর থানার অফিসার ইনচার্জ বিনয় ভূষণ রায় জানান, গৃহবধূ মিনা বেগমের মৃত্যুর ঘটনায় তার ভাই আব্দুল জলিল বাদী হয়ে ৬ জনের নাম উল্লেখ ও আরও অজ্ঞাতনামা ২-৩ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। নিহতের স্বামী লেচু মিয়াকে ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার দায়ে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৫ দিনের রিমান্ড চেয়ে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

আমারে জানে মারি ফালাই দিব

আপডেট সময় ০৯:৩১:২৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২ সেপ্টেম্বর ২০২২

মৌলভীবাজার২৪ ডেস্ক: আট দিন আগে ২৪ আগস্ট বুধবার বাবার বাড়ি অনুষ্ঠিত সালিশে গৃহবধূ মিনা বেগম (৪০) বলেছিলেন- আমারে জামাইর (স্বামীর) বাড়ি দিও না, নাইলে আমারে জানে (প্রাণে) মারি ফালাই দিব। মিনার সেই কথাই হাছা (সত্যি) অইলো। তবে এমন নৃশংসভাবে হত্যা করা হবে বুঝতে পারলে আমার পুড়িরে (মেয়েকে) জামাইর বাড়ি দিতাম না। আমার পুড়িরে তারা মারিয়া পুকরিত (পুকুরে) ভাসাই দিছে।’

বৃহস্পতিবার (১ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টায় কুলাউড়া উপজেলা হাজীপুর ইউনিয়নের পীরের বাজার ঈদগাহ মাঠে জানাজার পূর্বে নিহত মিনা বেগমের ৪ সন্তান, মা ও ভাইবোনের কান্নায় এলাকার বাতাস ভারি হয়ে উঠে।

নিহতের বড়ভাই আব্দুল জলিল জানান, লাশ উদ্ধারের সময় এক পা একটি কলসির মধ্যে ঢুকানো, অপর পায়ে একটি ড্রাম বাঁধা, গলা ও কোমরের সঙ্গে রশি বাঁধা ছিল। পরিবারের লোকজন পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে আমার বোনের লাশ পুকুরে ফেলে দেয়। ঘটনার সঙ্গে মিনা বেগমের স্বামী ও পরিবারের লোকজন জড়িত। নিহত মিনা বেগমের ৩ ছেলে ও এক কন্যা সন্তান রয়েছেন। তারা হলো- কাওছার (১৮) হুমায়ুন (১২) হুসাইন (৭)  ও বুশরা (৪)।

লাশ উদ্ধারের সময় নিহত মিনা বেগমের স্বামী লেচু মিয়া ওরফে লেইচ মিয়াকে আটক করে পুলিশ। বৃহস্পতিবার তাকে ৫ দিনের রিমান্ড চেয়ে মৌলভীবাজার জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়।

জানা যায়, মৌলভীবাজার জেলার রাজনগর উপজেলার কামারচাক ইউনিয়নের মৌলভীচক গ্রামে বুধবার (৩১ আগস্ট) সকালে নিহত মিনা বেগমের ২য় ছেলে হুমায়ূন ঘুম থেকে উঠে মাকে না পেয়ে পুরো বাড়িতে খোঁজ করে। কোথাও না পেয়ে পুকুর ঘাটে গিয়ে দেখে মায়ের লাশ ভাসছে। তার চিৎকারে বাড়ির লোকজন জড়ো হন। বিষয়টি রাজনগর থানার পুলিশকে অবহিত করলে তারা গিয়ে পুকুর থেকে লাশ উদ্ধার করে। লাশ উদ্ধার করার সময় স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আতাউর রহমান ও ইউপি সদস্য মো. মাহবুবুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।

ইউপি সদস্য মো. মাহবুবুর রহমান জানান, মিনা বেগম ও তার স্বামীর মধ্যে পারিবারিক কলহ ছিল। আমিসহ স্থানীয় মুরব্বিরা মিলে তাদের সমস্যাটি মীমাংসা করে দেই। মিনা বেগম স্বামীর বাড়িও চলে আসেন। সকালে খবর পেয়ে গিয়ে দেখি তার লাশ পুকুরে ভাসছে।

রাজনগর থানার অফিসার ইনচার্জ বিনয় ভূষণ রায় জানান, গৃহবধূ মিনা বেগমের মৃত্যুর ঘটনায় তার ভাই আব্দুল জলিল বাদী হয়ে ৬ জনের নাম উল্লেখ ও আরও অজ্ঞাতনামা ২-৩ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। নিহতের স্বামী লেচু মিয়াকে ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার দায়ে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৫ দিনের রিমান্ড চেয়ে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।