ঢাকা ০৪:০১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শ্রীমঙ্গলে সবুজ আন্দোলনের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীতে মতবিনিময় সভা

নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ০১:১৯:৩৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২২
  • / ২৮৭ বার পড়া হয়েছে

বিশেষ প্রতিনিধিঃ সবুজ আন্দোলনের ৪র্থ প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষ্যে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে অনুষ্ঠিত হয়েছে জলবায়ু পরিবর্তন রোধে আমাদের করনীয় শীর্ষক মতবিনিময় সভা।

সবুজ আন্দোলন শ্রীমঙ্গল এর আহবায়ক রীনা সরকারের সভাপতিত্বে শ্রীমঙ্গল উপজেলা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শ্রীমঙ্গল উপজেলা নিবার্হী অফিসার আলী রাজিব মাহমুদ মিঠুন। অনুষ্ঠানে জলবায়ু পরিবর্তন রোধে মুল বক্তব্য উপস্থাপন করেন প্রবীণ শিক্ষক কবি দ্বীপেন্দ্র ভট্টাচার্য্য। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্যদেন অধ্যাপক রজত শুভ্র চক্রবর্তী।

শনিবার ১০ সেপ্টেম্বর দুপুরে শ্রীমঙ্গল উপজেলা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক বিকুল চক্রবতীর্র সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানের উদ্বোধক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সবুজ আন্দোলন মৌলভীবাজার এর আহব্বায়ক সালেহ আহমদ সেলিম। এ সময় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শ্রীমঙ্গল উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি সন্দ্বীপ তালুকদার, বিএমএ শ্রীমঙ্গল এর সভাপতি ডাঃ হরিপদ রায়, শ্রীমঙ্গল উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মিতালী দত্ত, শ্রীমঙ্গল থানা অফিসার ইনচার্জ মো: শামীম অর রশিদ তালুকদার, মৌলভীবাজার জেলা পরিষদের সদ্য সাবেক সদস্য মশিউর রহমান রিপন, শ্রীমঙ্গল পৌরসভার প্যানেল মেয়র মীর এ সালাম, উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা কর্ণ চন্দ্র মল্লিক, শ্রীমঙ্গল ট্রাফিক বিভাগের পুলিশ পরিদর্শক তপন তালুকদার, শ্রীমঙ্গল পাওয়ার গ্রীডের সিনিয়র সহকারী ব্যবস্থাপক প্রভাশু সরকার, ফারিয়া শ্রীমঙ্গল এর সভাপতি দেবব্রত দত্ত হাবুল, শ্রীমঙ্গল উপজেলা প্রেসক্লাবের সিনিয় সহ—সভাপতি শামীম আক্তার হোসেন মিন্টু, মাইটিভির মৌলভীবাজার জেলা প্রতিনিধি সঞ্জয় কুমার দে।

এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন, সফল কৃষক ও প্রকৃতি প্রেমী জলিল খান, ব্যবসায়ী হারুনুর রশিদ, সাংবাদিক কাউছার আহমদ রিয়ন, আল ইব্রাহীম, সুহেল আহমদ, রাসেল আহমদ, সবুজ আন্দোলনের নারী নেত্রী জেরিন খান, মিতালী দাশ, নুসরাত জাহান নিলা, মুন্নি আক্তার, মালা বেগম, এনা বেগম, মালা কৈরী, সবুজ আন্দোলন কমলগঞ্জ উপজেলার নেতা মবস্বির আলী ও আব্দুল কাদির।

অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে শ্রীমঙ্গল তথা মৌলভীবাজার জেলায় পরিবেশ রক্ষায় অনন্য ভূমিকা রাখায় শ্রীমঙ্গল বন্যপ্রাণী সেবা ফাউন্ডেশনের পরিচালক স্বপন দেব সজল, স্ট্যান্ড ফর আওয়ার এভেঞ্জার্স ওয়াইল্ডলাইফ এর খোকন সিংহ, সুহেল শ্যাম ও প্রকৃতি প্রেমী এস কে দাশ সুমনকে সম্মাননা দেয়া হয়।

সভায় বক্তারা বলেন, পৃথিবীতে মানুষকে বেঁচে থাকতে হলে এই মূহুর্তে আমাদের অন্যতম কাজ হলো পরিবেশ রক্ষায় মনোনিবেশ করা। এ সময় কবি দ্বীপেন্দ্র ভট্টাচার্য্য বলেন, ৬০ বছর আগে শ্রীমঙ্গলের প্রকৃতি ছিলো এমন যে, ঘন জঙ্গলের কারনে দিনের বেলা অন্ধকার থাকতো। চৌমুহনী থেকে ভিক্টোরিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে যেতে হলে জঙ্গল পাড়ি দিয়ে যেতে হতো। এক সময় শ্রীমঙ্গলের একটা অংশ সাদা বালিতে হিরার মতো চিকচিক করতো। যে কারনে ওই এলাকার নামকরণ হয় বালিশিরা। যা বর্তমানে বালিশিরা নামে পরিচিত। তিনি বলেন, শ্রীমঙ্গলের হাইল হাওরের বিস্তৃতি ছিলো তৎকালীন ঢাকা—সিলেট বর্তমান মৌলভীবাজার—ঢাকা সড়কের পাশ পর্যন্ত। অধিক জনসংখ্যার কারনে হাওর ভরাট হয়ে তা এখন কয়েক কিলোমিটার দুরে চলে যাচ্ছে। ভরাট হয়ে গেছে অসংখ্য বিল। যেখানে প্রতিনিয়তই গড়ে উঠছে বাড়িঘর। শ্রীমঙ্গলের প্রত্যেকটি ছড়ার পাড় জুড়েই ছিল ঘন জঙ্গল এখন যার অবশিষ্টও নেই।
ডা: হরিপদ রায় তার বক্তব্যে বলেন, ৩০ বছর আগেও লাউয়াছড়া বনে বৃষ্টি লেগেই থাকতো। বনের ভিতর দিয়ে গেলে ঠান্ডা অনুভুত হতো। কিন্তু আজ আর সেই অবস্থা নেই। আমাদের বেঁচে থাকতে হলে পরিবেশের প্রতি বিবেক জাগ্রত করতে হবে।

প্রধান অতিথির বক্ত্যবে উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা আলী রজিব মাহমুদ মিঠুন বলেন, দ্বীপেন্দ ভট্টাচার্য স্যারের কাছ থেকে শ্রীমঙ্গলের যে প্রকৃতির ইতিহাস শুনলেন এভাবে আগামী ৩০/৪০ বছর পর এখন যে লাউয়াছড়া আছে, বিটিআরআই এর পাশে যে কাশবন আছে তা ছিল বলতে হবে। এখন তা ঘনবসতি এলাকা। তিনি বলেন, সম্মিলিত প্রয়াসে এমন গন্তব্য আমরা রুখে দিতে পারি। আর আমরা যদি না করি তাহলে হয়তো মানুষকে নি:শেষ করে প্রকৃতি তার বেঁচে থাকার কাজ করবে। এ সময় তিনি এই মাসেই শ্রীমঙ্গল উপজেলায় ৫শত বৃক্ষ চারা রোপন করার ইচ্ছা পোষন করেন।

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

শ্রীমঙ্গলে সবুজ আন্দোলনের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীতে মতবিনিময় সভা

আপডেট সময় ০১:১৯:৩৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২২

বিশেষ প্রতিনিধিঃ সবুজ আন্দোলনের ৪র্থ প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষ্যে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে অনুষ্ঠিত হয়েছে জলবায়ু পরিবর্তন রোধে আমাদের করনীয় শীর্ষক মতবিনিময় সভা।

সবুজ আন্দোলন শ্রীমঙ্গল এর আহবায়ক রীনা সরকারের সভাপতিত্বে শ্রীমঙ্গল উপজেলা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শ্রীমঙ্গল উপজেলা নিবার্হী অফিসার আলী রাজিব মাহমুদ মিঠুন। অনুষ্ঠানে জলবায়ু পরিবর্তন রোধে মুল বক্তব্য উপস্থাপন করেন প্রবীণ শিক্ষক কবি দ্বীপেন্দ্র ভট্টাচার্য্য। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্যদেন অধ্যাপক রজত শুভ্র চক্রবর্তী।

শনিবার ১০ সেপ্টেম্বর দুপুরে শ্রীমঙ্গল উপজেলা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক বিকুল চক্রবতীর্র সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানের উদ্বোধক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সবুজ আন্দোলন মৌলভীবাজার এর আহব্বায়ক সালেহ আহমদ সেলিম। এ সময় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শ্রীমঙ্গল উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি সন্দ্বীপ তালুকদার, বিএমএ শ্রীমঙ্গল এর সভাপতি ডাঃ হরিপদ রায়, শ্রীমঙ্গল উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মিতালী দত্ত, শ্রীমঙ্গল থানা অফিসার ইনচার্জ মো: শামীম অর রশিদ তালুকদার, মৌলভীবাজার জেলা পরিষদের সদ্য সাবেক সদস্য মশিউর রহমান রিপন, শ্রীমঙ্গল পৌরসভার প্যানেল মেয়র মীর এ সালাম, উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা কর্ণ চন্দ্র মল্লিক, শ্রীমঙ্গল ট্রাফিক বিভাগের পুলিশ পরিদর্শক তপন তালুকদার, শ্রীমঙ্গল পাওয়ার গ্রীডের সিনিয়র সহকারী ব্যবস্থাপক প্রভাশু সরকার, ফারিয়া শ্রীমঙ্গল এর সভাপতি দেবব্রত দত্ত হাবুল, শ্রীমঙ্গল উপজেলা প্রেসক্লাবের সিনিয় সহ—সভাপতি শামীম আক্তার হোসেন মিন্টু, মাইটিভির মৌলভীবাজার জেলা প্রতিনিধি সঞ্জয় কুমার দে।

এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন, সফল কৃষক ও প্রকৃতি প্রেমী জলিল খান, ব্যবসায়ী হারুনুর রশিদ, সাংবাদিক কাউছার আহমদ রিয়ন, আল ইব্রাহীম, সুহেল আহমদ, রাসেল আহমদ, সবুজ আন্দোলনের নারী নেত্রী জেরিন খান, মিতালী দাশ, নুসরাত জাহান নিলা, মুন্নি আক্তার, মালা বেগম, এনা বেগম, মালা কৈরী, সবুজ আন্দোলন কমলগঞ্জ উপজেলার নেতা মবস্বির আলী ও আব্দুল কাদির।

অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে শ্রীমঙ্গল তথা মৌলভীবাজার জেলায় পরিবেশ রক্ষায় অনন্য ভূমিকা রাখায় শ্রীমঙ্গল বন্যপ্রাণী সেবা ফাউন্ডেশনের পরিচালক স্বপন দেব সজল, স্ট্যান্ড ফর আওয়ার এভেঞ্জার্স ওয়াইল্ডলাইফ এর খোকন সিংহ, সুহেল শ্যাম ও প্রকৃতি প্রেমী এস কে দাশ সুমনকে সম্মাননা দেয়া হয়।

সভায় বক্তারা বলেন, পৃথিবীতে মানুষকে বেঁচে থাকতে হলে এই মূহুর্তে আমাদের অন্যতম কাজ হলো পরিবেশ রক্ষায় মনোনিবেশ করা। এ সময় কবি দ্বীপেন্দ্র ভট্টাচার্য্য বলেন, ৬০ বছর আগে শ্রীমঙ্গলের প্রকৃতি ছিলো এমন যে, ঘন জঙ্গলের কারনে দিনের বেলা অন্ধকার থাকতো। চৌমুহনী থেকে ভিক্টোরিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে যেতে হলে জঙ্গল পাড়ি দিয়ে যেতে হতো। এক সময় শ্রীমঙ্গলের একটা অংশ সাদা বালিতে হিরার মতো চিকচিক করতো। যে কারনে ওই এলাকার নামকরণ হয় বালিশিরা। যা বর্তমানে বালিশিরা নামে পরিচিত। তিনি বলেন, শ্রীমঙ্গলের হাইল হাওরের বিস্তৃতি ছিলো তৎকালীন ঢাকা—সিলেট বর্তমান মৌলভীবাজার—ঢাকা সড়কের পাশ পর্যন্ত। অধিক জনসংখ্যার কারনে হাওর ভরাট হয়ে তা এখন কয়েক কিলোমিটার দুরে চলে যাচ্ছে। ভরাট হয়ে গেছে অসংখ্য বিল। যেখানে প্রতিনিয়তই গড়ে উঠছে বাড়িঘর। শ্রীমঙ্গলের প্রত্যেকটি ছড়ার পাড় জুড়েই ছিল ঘন জঙ্গল এখন যার অবশিষ্টও নেই।
ডা: হরিপদ রায় তার বক্তব্যে বলেন, ৩০ বছর আগেও লাউয়াছড়া বনে বৃষ্টি লেগেই থাকতো। বনের ভিতর দিয়ে গেলে ঠান্ডা অনুভুত হতো। কিন্তু আজ আর সেই অবস্থা নেই। আমাদের বেঁচে থাকতে হলে পরিবেশের প্রতি বিবেক জাগ্রত করতে হবে।

প্রধান অতিথির বক্ত্যবে উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা আলী রজিব মাহমুদ মিঠুন বলেন, দ্বীপেন্দ ভট্টাচার্য স্যারের কাছ থেকে শ্রীমঙ্গলের যে প্রকৃতির ইতিহাস শুনলেন এভাবে আগামী ৩০/৪০ বছর পর এখন যে লাউয়াছড়া আছে, বিটিআরআই এর পাশে যে কাশবন আছে তা ছিল বলতে হবে। এখন তা ঘনবসতি এলাকা। তিনি বলেন, সম্মিলিত প্রয়াসে এমন গন্তব্য আমরা রুখে দিতে পারি। আর আমরা যদি না করি তাহলে হয়তো মানুষকে নি:শেষ করে প্রকৃতি তার বেঁচে থাকার কাজ করবে। এ সময় তিনি এই মাসেই শ্রীমঙ্গল উপজেলায় ৫শত বৃক্ষ চারা রোপন করার ইচ্ছা পোষন করেন।