গলায় ওড়না প্যাঁচানো অবস্থায় কুলাউড়ায় কিশোরীর মৃতদেহ উদ্ধার
- আপডেট সময় ০৯:১৭:০৯ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২২
- / ৩৭৯ বার পড়া হয়েছে
মৌলভীবাজার২৪ ডেস্ক: কুলাউড়ার পৃথিমপাশায় ১২ বছরের এক কিশোরীর গলায় ওড়না দিয়ে ফাঁস লাগানো অবস্থায় লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার ২৭ সেপ্টেম্বর সকাল ১১টায় লাশটি উদ্ধার করে কুলাউড়া থানা পুলিশ।
প্রত্যক্ষদর্র্শী ও কিশোররীর মা-বাবা বলেন, সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখেন মেয়েটি ঘরে নেই। খোঁজাখুজির এক পর্যায়ে তাদের ছোট আরেকটি মেয়ে বাড়ির পাশে গাছ বাগানের এক পাশে লাশ পড়ে থাকতে দেখে। বাবা-মা মেয়েটির কাছে গিয়ে সবাইকে খবর দিলে লোকজন এসে লাশ দেখতে পান। এসময় তার গলায় ওড়না পেছানো অবস্থায় মাটিতে পড়া ছিল। ওড়নাটি মেয়ের চাচা নিকুঞ্জ সরকার গলা থেকে খুলেন। এসময় মেয়েটির চিহ্বায় কামড় দেয়া ও মুখ দিয়ে রক্ত বের হচ্ছিল।মেয়ের বাবা সুলতানপুর এলাকার সাবেক প্রাইমারী স্কুল প্রধান শিক্ষক কামাল হোসেন চৌধুরীর বাড়ির বাহিরের একটি ঘরে বসবাস করতো। গরীবলোক হিসেবে তাকে থাকতে দিয়েছিলেন তিনি। দীগেন্দ্র সরকারের বাড়ি হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জ উপজেলার ৭নং করগাঁও ইউনিয়নের গুমগুমিয়া গ্রামে। সে পেশায় একজন কুচিয়া মাছ ব্যবসায়ী।
স্থানীয় ইউপি সদস্য ও এলাকাবাসী পুলিশে খবর দিলে পুলিশ এসে ছুরতহাল তৈরী করে লাশ ময়না তদন্তের জন্য মৌলভীবাজার সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে।
স্থাণীয় এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে জানা যায়, মেয়েটির পিতা মাদকাসক্ত। প্রায় সময়ই ছোট ছোট বাচ্ছা ও তার স্ত্রীকে মারধোর করতো। মেয়েটি মৃগী রোগী ছিল বলেও জানা যায়। অনেকে ধারণা করছেন মেয়েটির বাবা অন্যদের ফাঁসাতে মেয়েটিকে মেরে ফেলতে পারে।
মেয়েটির বাবা দীগেন্দ্র সরকার মেয়েটি মৃগী রোগী জানিয়ে বলেন, এখন মেয়েটি অনেকটা সুস্থ্য আছে, তবে উপরী বা জিনের ধরা আছে বলে জানান তিনি। সকালে তার মেয়েকে ঘরে না পেয়ে খুঁজতে থাকলে বাহিরে মেয়ের লাশ পান তিনি। তিনি বলেন, এর আগেও তার মেয়ের সাথে ধর্ষণ চেষ্ঠার একটি ঘটনা ঘটেছিল, সেটা স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্দুল মতিন তার ও তার স্ত্রীকে ভয় দেখিয়ে ১০ হাজার টাকা দিয়ে শেষ করেছেন।তিনি বলেন, প্রায় সময় একই গ্রামের কাজল নামে এক লোক তার মেয়েকে দেখলেই উত্যক্ত ও হুমকি দিত। তিনি আরও বলেন, কাজল তার মেয়েকে দেখলেই মেরে ফেলবে বলতো। এছাড়াও কয়েকজন এমন হুমকি দিত। তিনি ও তার স্ত্রী কাজলকেই দায়ী করছেন। একই কথা পুলিশের কাছেও বলেন তারা।
এবিষয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্দুল মতিন তার উপর আণীত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, তিনি ধর্ষণ চেষ্ঠার বিষয়ে কিছু করেননি বা হুমকি-ধামকি দেননি। তিনি আজকের ঘটনার বিষয়ে বলেন, তিনি ঘটনাস্থলে এসে এসআই হারুনকে খবর দিলে পুলিশ গটনাস্থলে এসে ছুরতহাল তৈরী করে লাশ নিয়ে গেছে।
কুলাউড়া থানার সহকারী পুলিশ পরিদর্শক (এসআই) হারুন উর রশিদ জানান, ছুরতহাল রিপোর্টে গায়ে কোনও আঘাতের চিহৃ পাওয়া যায়নি। তবে মেয়েটি গলায় ফাঁস লাগানো ছিল এবং উপুড় হয়ে থাকায় নাকে-মুখে রক্ত বেরিয়েছে। তিনি বলেন, এবিষয়ে অনেক সন্ধেহ দেখা দিয়েছে, নিজ পরিবারের লোকজন জড়িত থাকতে পারে। তবে তিনি বলেন, ময়না তদন্তের পর প্রকৃত ঘটনা জানা যাবে। এবিষয়ে আইনী প্রক্রিয়া অব্যাহত আছে বলেও জানান তিনি।