ব্রেকিং নিউজ
আলহাজ্ব মোহাম্মদ মাশুক : শিক্ষার্থীদের কাছে ছিলেন আদর্শের প্রতীক
নিজস্ব সংবাদ :
- আপডেট সময় ০৪:১২:০৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ১ অক্টোবর ২০২২
- / ৬৭০ বার পড়া হয়েছে
ফয়সল আহমদ রুহেল :
আলহাজ্ব মোহাম্মদ মাশুক। বহু গুণে গুণান্বিত এক কীর্তিমান মানুষ। শিক্ষকতা ও শিক্ষা বিস্তারে জীবনভর তাঁর নিমগ্নতা ছিল সবচেয়ে বেশি। স্কুল জীবনে দীর্ঘপথ পায়ে হেঁটে স্কুলে যেতেন। অনেকদিন উপস থেকে ক্লাসে যোগদান করতেন। শৈশব কৈশোর থেকে তিনি আদর্শ নিয়ে বড় হয়ে উঠেন। নিজেকে প্রস্তুত করে তোলেন। নিজ এলাকায় শিক্ষার আলো জ্বালিয়েছেন। কর্মজীবনে পেয়েছিলেন লোভনীয় পদে চাকরির সুযোগ। শিক্ষকতার মোহ অন্য কোন পেশায় তাঁকে টানতে পারেনি। নিজের আন্তরিকতা এবং ভালবাসায় গড়া বিদ্যালয়টিকে দাঁড় করাতে অক্লান্ত পরিশ্রম করেন এই শিক্ষক। ফলে তিনি একজন স্বনামধন্য শিক্ষক হিসেবে সকলের কাছে শ্রদ্ধার আসন গড়ে তুলেছিলেন। আলহ্বাজ মোহাম্মদ মাশুক মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া উপজেলার ভুকশিমইল স্কুল এন্ড কলেজের প্রাক্তন প্রতিষ্টাতা প্রধান শিক্ষক।
জন্ম : আলহাজ্ব মোহাম্মদ মাশুক ১৯৫১ সালের ৩০ জানুয়ারি মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া উপজেলার ভুকশিমইল ইউনিয়নের হাকালুকির প্রান্ত ঘেঁষা মদনগৌরী গ্রামের এক কৃষক পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা মরহুম আব্দুল হেকিম ও মাতা মরহুমা মোছা. আছকিরুন নেছা। চার ভাই ও পাঁচ বোনের মধ্যে তিনি ৬ষ্ঠ সন্তান। তিনি পরিবার-পরিজন নিয়ে মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া পৌরসভার ৩ নং ওয়ার্ডের ৩৩৭/২, ফরমুজাবাদ এলাকায় ফাতেমা মঞ্জিলে বসবাস করছেন।
শৈশব : হাকালুকির প্রান্ত ঘেষা একটি অজপাড়া গাঁও- মদনগৌরী। তখনকার সময় এলাকায় যোগাযোগ ব্যবস্থা অনুন্নত থাকায় এবং কোন হাইস্কুল না থাকায় দীর্ঘ ৬/৭ মাইল দূরে পায়ে হেঁটে বরমচাল স্কুলে যেতেন মোহাম্মদ মাশুক। অনেকদিন উপস থেকে ক্লাসে যোগদান করতেন। তাঁর এই কষ্ট দেখে বরমচাল হাইস্কুলের তৎকালীন সহকারী প্রধান শিক্ষক জনাব আলাউর রহমান চৌধুরী (যিনি যুগ্ম সচিব পদ হতে অবসর গ্রহণ করে বর্তমানে ঢাকা উত্তরায় বসবাস করছেন) তাঁর বাড়ীতে তাঁকে নিয়ে যান এবং লেখাপড়ার সুযোগ করে দেন।
শিক্ষা জীবন : মোহাম্মদ মাশুক মদনগৌরী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ১৯৫৬ ইং সনে প্রথম শ্রেণীতে ভর্তি হন। ১৯৬০ ইং সনে প্রাথমিক শিক্ষা সম্পন্ন করেন। গ্রামের মক্তবে ধর্মীয় শিক্ষা লাভ করেন। বরমচাল উচ্চ বিদ্যালয়ে ১৯৬১ইং সনে ৬ষ্ঠ শ্রেণীতে ভর্তি হন। তখন জুলাই মাস হতে শিক্ষা বর্ষ আরম্ভ হতো। একই বিদ্যালয় হতে ১৯৬৭ইং সনে কুমিল্লা বোর্ডের অধীনে মানবিক বিভাগে এস.এস.সি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে অংকে লেটার মার্কসহ ১ম বিভাগে উত্তীর্ণ হন। উল্লেখ্য, তিনি ৯ম শ্রেণী হতে বৃত্তি লাভ করে পরবর্তী শিক্ষা জীবন পর্যন্ত লেখাপড়া করেন।
বরমচাল উচ্চ বিদ্যালয়ের তৎকালীন প্রধান শিক্ষক মরহুম জনাব ইরশাদ আলী সাহেবের অনুপ্রেরণায় একই বৎসর সিলেট সরকারি কলেজে (এমসি কলেজ) বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হন। ১৯৬৮ইং সনে পাকিস্তান বিমান বাহিনীতে নির্বাচিত হওয়ার ফলে তৎকালীন পশ্চিম পাকিস্তানের কাকুল এয়ার সেন্টারে প্রশিক্ষণে যোগদানের জন্য লেখাপড়া ছেড়ে দেন। কিন্তু স্নেহময়ী মায়ের নির্দেশে চাকুরীতে যোগদান না করে পুনরায় ক্লাসে যোগ দেন। ফলে লেখাপড়ায় অসুবিধার সৃষ্টি হয়। ১৯৬৯ইং সনে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় কুমিল্লা বোর্ডের অধীনে বিজ্ঞান শাখায় ২য় বিভাগে উত্তীর্ণ হন। ১৯৭১ইং সনে (যাহা ১৯৭২ সনে অনুষ্ঠিত হয়) বিজ্ঞান বিভাগে একই কলেজ হতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে স্নাতক পাশ পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে অংকে লেটার মার্কসহ ১৪তম স্থান অর্জন করেন। ১৯৭২ইং সনে একই কলেজে গণিত বিষয়ে স্নাতকোত্তর শ্রেণীতে ভর্তি হয়ে ১ম পর্ব পরীক্ষায় অংশ নেন। কিন্তু নতুন স্কুলে (ভূকশিমইল মাধ্যমকি বিদ্যালয়ে) যোগদান করার ফলে শেষ পর্ব পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারেননি। এরপর চট্টগ্রাম ইউনিভার্সিটি থেকে ১৯৭৪ সালে মাস্টার ডিগ্রি অর্জন করেন। পরবর্তীতে বিএড করেন ১৯৮৪ সালে উচ্চতর ২য় বিভাগে।
কর্মজীবন : শ্রদ্ধেয় আলহাজ্ব মোহাম্মদ মাশুক স্যার কর্মজীবন শুরু করেন ১৯৬৯ সালে হিঙ্গাজিয়া উচ্চ বিদ্যালয় থেকে। তিনি যখন হিঙ্গাজিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে অনারারি হিসেবে চাকুরি করেন তখন ঐ বিদ্যালয়ে চাকুরি করতেন সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও বর্তমান এমপি আব্দুল মতিন। পরবর্তীতে মোহাম্মদ মাশুক ১৯৭২ সালের ২ ফেব্রয়ারি ভুকশিমইল নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্টা করিয়া নিজে পরিচালনার ভার বহন করেন তিনি প্রতিষ্ঠাতা প্রধান শিক্ষক। যা পরবর্তীতে মাধ্যমিক আর এখন ভুকশিমইল স্কুল কলেজে রূপান্তরিত হয়েছে। দীর্ঘ ৪০ বৎসর একই প্রতিষ্ঠানে দায়িত্ব পালন করে ২০১১ ইং সনের ২৯ জানুয়ারি তারিখে বয়স ৬০ বৎসর পূর্ণ হলে অধ্যক্ষের দায়িত্ব থেকে অবসর গ্রহণ করেন। চাকুরীকালীন অবস্থায় বিদ্যালয়ের সাফল্যের কথা দেশের বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় প্রকাশিত হয় এবং দু/একটি স্থানীয় ম্যাগাজিনে স্যারের জীবন বৃত্তান্ত প্রকাশিত হয়।
কৃতিত্ব : মোহাম্মদ মাশুক ১৯৬৫ইং সনে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের সময় অন্যান্য ছাত্রদের সাথে সেনাবাহিনীর অধীনে মুজাহিদ প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন এবং যুদ্ধে অংশ নেন। যুদ্ধ শেষ হওয়ার পর আবার ক্লাসে যোগদান করেন। তিনি নিজ এলাকায় একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার অভাব অনুভব করেন এবং এলাকাবাসীর সহযোগিতায় ১৯৭২ সালের ২ ফেব্রুয়ারি ভূকশিমইল নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় স্থাপন করে প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক হিসাবে পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
১৯৮৪ইং সনে উচ্চতর পড়াশুনার জন্য ভারত সরকার কর্তৃক মনোনীত হন। কিন্তু স্কুলের ক্ষতি হবে ভেবে তা গ্রহণ করেননি। অত্যন্ত মেধাবী এই শিক্ষক ১৯৮২ ও ১৯৮৩ সালে বাংলাদেশ আনবিক শক্তি কমিশন এগ্রিমেন্ট করেছিল চাকুরির জন্য কিন্তু তিনি যাননি। ১৯৬৮ সালে পাকিস্তান বিমান বাহিনীতে চাকুরিতে চাকুরি হয়েছিল, কিন্তু তিনি চাকুরিতে যোগদান করনেন। এছাড়া বিভিন্ন সময়ে সরকারি ও বেসরকারি অনেক চাকরিতে মনোনীত হন। কিন্তু স্কুল ছেড়ে যাননি। ১৯৯৮ইং ও ২০০০ইং সনে বিদ্যালয়টি কুলাউড়া উপজেলার মধ্যে শ্রেষ্ঠ বিদ্যালয় হিসাবে মনোনীত হন এবং ১৯৯৯ইং ও ২০০৩ইং সনে শ্রেষ্ঠ প্রতিষ্ঠান প্রধান হিসাবে স্বীকৃতি লাভ করেন। ২০০৪ ইং হতে উক্ত প্রতিষ্ঠানে উচ্চ মাধ্যমিক শ্রেণী চালু করা হয়। ২০০৮ইং হতে ২০১১ইং পর্যন্ত তিনি কুলাউড়া উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। বাংলাদেশ স্কাউটস কুলাউড়া শাখার সহসভাপতি হিসাবে ২০০৮-২০১১ মেয়াদে উক্ত দায়িত্ব পালন করেন। ২০০৮ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি স্কাউট আন্দোলনের স্বীকৃতি স্বরূপ তাঁকে ন্যাশনাল স্কাউটস্ এওয়ার্ড প্রদান করা হয়।
শিক্ষার আলো : সরকারী ও বেসরকারী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে লোভনীয় পদে চাকরির সুযোগ পাওয়ার পরও তিনি চাকরি করেননি। চলে আসেন নিজ এলাকায় ভূকশিমইলে। উদ্দেশ্য এই পিছিয়ে পড়া ও বছরের প্রায় ৬ মাস পানিবন্দি অবস্থায় জীবনাতিপাত করা ভুকশিমইল ইউনিয়নের জনগণকে শিক্ষিত করে গড়ে তোলা। এমন মহান চিন্তা নিয়ে তিনি এলাকাবাসীর সহযোগিতায় ১৯৭২ সালে প্রতিষ্ঠা করেন ভুকশিমইল নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়। তিনি হন প্রতিষ্ঠাতা প্রধান শিক্ষক। এরপর ধাপে ধাপে এক সময় উচ্চ বিদ্যালয় ও ২০০৪ সালে এ প্রতিষ্ঠানটিকে কলেজে উন্নীত করেন এবং তিনি অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করেন। নিরক্ষর ও পিছিয়ে পড়া ভুকশিমইল ইউনিয়নের মানুষের মাঝে শিক্ষার দায়িত্ব পালন করেন। নিরক্ষর ও পিছিয়ে পড়া ভুকশিমইল ইউনিয়নের মানুষের মাঝে শিক্ষার আলো জ্বালিয়ে দিতে গিয়ে ভুলে যান তিনি নিজের কথা। তিনি ১৯৮৪ সালে Nuclear Physics-এ Phd করার জন্য বাংলাদেশের মোট তিনজনের মধ্যে একজন হয়ে ভারত সরকার কর্তৃক স্কলারশিপ পেয়েছিলেন। কিন্তু এলাকার শিক্ষার কথা চিন্তা করে বহু কাঙ্খিত ও সুযোগ বিসর্জন দিয়েছিলেন শিক্ষা জীবনের প্রতিটি ধাপে সরকারি বৃত্তি পাওয়া এ অদম্য মেধাবী।
নৈতিক মূল্যবোধের অভাব : আলহাজ্ব মোহাম্মদ মাশুক বাংলাদেশের শিক্ষার্থী প্রসঙ্গে বলেন, অধিক সংখ্যক ছাত্রছাত্রী পাশ হচ্ছে। কিন্তু প্রকৃত মেধা বের হচ্ছে না সমাজে। বর্তমান সমাজ ব্যবস্থা সমন্ধে তিনি মন্তব্য প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, এখন সমাজে নৈতিক মূল্যবোধের অভাব খুব বেশি। ছড়িয়ে আছে সমাজের আনাচে কানাচে অহরহ সুবিধাবাদী।
দায়িত্ব পালন ও প্রশিক্ষণ : কর্ম জীবনের শুরু থেকে শিক্ষকতা নামক মানুষ গড়ার এ মহান পেশা তিনি নিষ্ঠার সহিত পালন করেন। এ জন্য পরপর তিনবার উপজেলা পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ প্রতিষ্ঠান প্রধানের স্বীকৃতি অর্জন করেছিলেন। এছাড়া ১৯৮৮ইং হতে কুমিল্লা বোর্ডের গণিত বিষয়ের পরীক্ষক, ১৯৯৬ সাল থেকে ১৯৯৯ সাল পর্যন্ত এসএসসি পরীক্ষার কুমিল্লা বোর্ড এবং ২০০০ সাল থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত উক্ত পরীক্ষার সিলেট বোর্ডের গণিত ও জে এস সি পরীক্ষার গনিত বিষয়ের প্রধান পরীক্ষকের দায়িত্ব পালন করেন। প্রায় ১১ বছর বাংলাদেশ স্কাউটস কুলাউড়া উপজেলা শাখার সহ সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন এবং ২০০৯ সালে স্কাউটস এর প্রেসিডেন্ট পদক লাভ করেন। কুলাউড়া উপজেলার মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন ২০০৮ সাল থেকে ২০১১ সাল অবসর গ্রহণ পর্যন্ত। প্রশাসনিক দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে চাকরীকালীন সময়ে বি.এড প্রশিক্ষণ ছাড়াও বিভিন্ন ১৪টি বিষয়ে প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণ করেন। মাননীয় আদালত কর্তৃক কয়েকটি মামলার তদন্তভার তাঁর উপর অর্পন করা হয় এবং প্রতিবেদনের ভিত্তিতে মামলার চুড়ান্ত নিষ্পত্তি করা হয়। ২০১৪-২০২০ইং পর্যন্ত সময়ে তিনি কুলাউড়াস্থ আল-হেরা ক্যাডেট স্কুল ও কলেজের অধ্যক্ষ ছিলেন। ২০২১ সালে কুলাউড়ায় আদর্শ বিদ্যা নিকেতন নামে একটি শিক্ষা প্রতিষ্টান তিনি ও অন্যান্যরা স্থাপন করিয়া প্রতিষ্ঠানের প্রধান হিসাবে পরিচালনার দায়িত্ব পালন করছেন। মদনগৌরী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দাতা সদস্য এবং ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি, ভুকশিমইল স্কুল এন্ড কলেজের গভর্ণিং বডির সভাপতি ও সপ্তগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি , সপ্তগ্রাম ঈদগাহের এডহক কমিটিরও সভাপতি, মদনগৌরী পশ্চিম জামে মসজিদেরও কমিটির সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন, ২০১৩ ইং সনে মোহাম্মদ মাসুক পবিত্র হজ্বব্রত পালন করেছেন।
পারিবারিক : আলহাজ্ব মো. মাশুক ব্যক্তিগত জীবনে ২ ছেলে ও ৫ কন্যা সন্তানের জনক। মেয়ে মোছা. ফরিদা আক্তার-অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষিকা। মোছা. রাশেদা আক্তার (এম.এ, বি,এড) সহকারী শিক্ষক, সাদত আলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কুলাউড়া। মোছা. খোরশেদা আক্তার (এম.এ, বি.এড), সিলাম দাখিল মাদ্রাসা, সিলেট। মোছা: সাজেদা আক্তার (এম.এ) প্রভাষক, ইডেন গার্ডেন কলেজ, মিরাবাজার, সিলেট। সাকেরা আক্তার গৃহিনী। ছেলে মোস্তাক আহমদ এম.কম (সম্মান), ব্যবস্থাপনা ফ্রান্সে বসবাসরত ও মাহবুব আহমদ এম.কম হিসাব বিজ্ঞান, চাকরী প্রত্যাশী।
নতুন প্রজন্মের প্রতি : শ্রদ্ধেয় শিক্ষক আলহাজ¦ মোহাম্মদ মাসুকের নতুন প্রজন্মের প্রতি তাঁর উপদেশ ‘নতুন প্রজন্ম একটি দেশের ভবিষ্যৎ কান্ডারী; তাই অন্তরে দেশপ্রেম নিয়ে সৎভাবে জীবনযাপন করে যাও তবেই জীবনে সফল হতে পারবে, কারণ মানুষের চেষ্টার কাছে কোন কিছুই অসম্ভব নয়। শিক্ষাকে অবলম্বন করে জীবনের বাকি সময়টুকু সমাজ ও দেশের সেবায় কাটিয়ে দিতে চান এ গুণী ব্যক্তিত্ব।
২০২২ সালে অবসরপ্রাপ্ত গুনী শিক্ষকদের নিয়ে কাজ করা হবিগঞ্জ সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ের স্বনামধন্য শিক্ষক সিলেট জেলার বিয়ানীবাজার উপজেলার কৃতি সন্তান জনাব টি, আলী স্যারের নামে প্রতিষ্ঠিত যুক্তরাজ্য ভিত্তিক চ্যারেটি সংস্থা টি,আলী স্যার ফাউন্ডেশন মৌলভীবাজার জেলার প্রত্যেক উপজেলায় অবসরপ্রাপ্ত দুইজন আদর্শ শিক্ষককে সম্মাননা পদকে মনোনয়নে জরিপ চালিয়ে যাচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় কুলাউড়া উপজেলার অবসরপ্রাপ্ত আদর্শ শিক্ষকের সম্মাননার স্বীকৃতি হিসেবে টি, আলী স্যার ফাউন্ডেশন সম্মাননা পদকের মনোনয়ন পেয়েছেন তিনি।
মৌলভীবাজার জেলার সাত উপজেলার ১৪ জন মনোনয়নপ্রাপ্ত শিক্ষকদের জীবনী ধারাবাহিকভাবে লিখছেন ফাউন্ডেশনের সভাপতি টি, আলী স্যারের পুত্র বৃটেনের জনপ্রিয় চ্যানেল এস টেলিভিশনের সাংবাদিক ফয়সল আহমদ (রুহেল)।
উল্লেখ্য, ১৪ জন মনোনয়নপ্রাপ্ত অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকদের মধ্যে থেকে আর্থিক দিক থেকে পিছিয়ে থাকা ৫ জনকে আর্থিক সহযোগিতা এবং জেলার আদর্শ শিক্ষকের স্বীকৃতি হিসেবে ৫ জন শিক্ষককে টি আলী স্যার ফাউন্ডেশন সম্মাননা পদকে ভুষিত করবে সংস্থাটি।
অদম্য মেধাবী আলহাজ¦ মোহাম্মদ মাশুক একটি প্রতিষ্ঠানকে তিল তিল করে গড়ে তুলতে গিয়ে চোখের সামনেই পুরোটা জীবন কাটিয়ে দেন। শিক্ষকতায় তিনি ছিলেন শিক্ষার্থীদের কাছে একজন আদর্শের প্রতীক। কেননা তিনি অসংখ্য প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে নিজকে একজন দক্ষ শিক্ষক হিসেবে স্কুলের উন্নয়নে নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। শিক্ষকতা জীবনে পেশাগত প্রশিক্ষণ নিয়েছেন তিনি। তাই মনের মাধুরী দিয়ে বিদ্যালয়টিকে সাজাতে ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে জ্ঞানের আলো ছড়িয়ে দিতে চেষ্টার কমতি ছিল না তাঁর। সকলের দোয়ায় ও ভালোবাসায় আপনার আগামীর বাকী দিনগুলো হাসি- খুশিতে কাটুক সেই প্রত্যাশা করি।আমরা একজন সফল মানুষ গড়ার কারিগর মোহাম্মদ মাশুক স্যারের দীর্ঘায়ূ কামনা করি।
ট্যাগস :