ঢাকা ০৯:২৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ অগাস্ট ২০২৫, ৬ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
ব্রেকিং নিউজ
অনলাইনে টিকেটের আড়ালে সিলেট-ঢাকা ও সিলেট চট্রগ্রামের ট্রেনের যাত্রীদের নানা দুর্ভোগ ফার্মগুলোতে অস্বাস্থ্যকর খাদ্য: স্বাস্থ্যঝুঁকিতে সাধারণ মানুষ মৌলভীবাজারে পূবালী ব্যাংকের বৃক্ষরোপণ,পণ্য প্রচারণা ও আলোচনা সভা ব্যর্থতার চাপ ও সমালোচনার মুখে সিলেট ছাড়লেন ডিসি মুরাদ শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় অকৃতকার্য হওয়ায় আ/ত্ম/হ/ত্যা আড়াই কোটি টাকার বিল বকেয়া ১২৪ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ষড়যন্ত্রে বিএনপি দমবে না, অবাধ নির্বাচনে জনগণের বিজয় হবেই: ফয়জুল করিম ময়ূন মৌলভীবাজারে শিক্ষকদের মানববন্ধন মানবিক সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিলেন মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক কুলাউড়ায় বিশেষ অভিযানে ইয়াবাসহ দুই মা/দ/ক ব্যবসায়ী গ্রে/ফ/তা/র

অনলাইনে টিকেটের আড়ালে সিলেট-ঢাকা ও সিলেট চট্রগ্রামের ট্রেনের যাত্রীদের নানা দুর্ভোগ

নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ০৯:২৪:৫১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ অগাস্ট ২০২৫
  • / ২ বার পড়া হয়েছে

অনলাইনে স্টেশন থেকে বা নিজ মুঠোফোনে নিজের নিবন্ধিত এনআইডি দিয়ে টিকেট করতে হয়। অনলাইনে টিকেটের আড়ালে সিলেঠ-ঢাকা ও সিলেট-চট্রগ্রামের ট্রেনের যাত্রীরা নানা দুর্ভোগে পড়ছেন। টিকেট না পেলে অনন্যের আগে করা টিকে নিয়ে ট্রেনে ভ্রমণ করলে আবার ট্রেনে টিটিসি(টিকেট চেকার)কে দিতে হয় বাড়তি টাকা। অথবা একটি টিকেট থাকার পরও টিটিসির কাছে নানা কটু কথা শুনে নাজেহাল হয়ে ট্রেনে নতুন করে টিকেট কিনতে হয় যাত্রীদের। আবার গন্তব্য স্টেশনে গেটে থাকা রেলের নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের কাছে নাজেহালের শিকার হয় হয় যাত্রীদের।

সিলেট-ঢাকা মহাসড়কে ৬ লেনে কাজ শুরু করেছিল বিগত আওয়ামীলীগ সরকার আমলে। গত বছর বৈষম্য বিরোধী ছাত্র জনতার আন্দোলনে ৫ আগস্ট ২০২৫ আওয়ামীগ সরকারের পতনের পর এ মহা সড়কের কাজ বন্ধ হয়ে যায়। ভারতীয় ঠিকাধারী সংস্থা কাজ ফেলে চলে গেলে এ উন্নয়ন কাজটি রীতিমত অনিশ্চয়তায় ছিল। এরপর ধারাবাহিকভঅবে কিছু কাজ শুরু হলেও এ বর্ষায় সিলেট -ঢাকা মহা সড়কে শুরু হয়েছে চরম ভোগান্তি। এ ৭/৮ ঘন্টার ভ্রমণে এখন সময় লাগছে কমপক্ষে ২০ ঘন্টা। এ ভোগান্তির কারণে সিলেট-ঢাকা রেলপথে যাত্রীর ভ্রমণ বেড়েছে অস্বাভাবিকভাবে। ফলে প্রতিটি স্টেশন থেকে আসনের চেয়ে ২ থেকে ৩ গুন যাত্রী ভ্রমণ করছেণ ট্রেনে করে। ফলে সিলেট ঢাকার ট্রেনের ও সাথে চট্রগ্রামের ট্রেনের টিকেট হয়ে গেছে অমাবস্যার চাঁদের মত।

সিলেট-আখাউড়া রেলপথ ব্রিটিশ আমলের। এই পথের অতিগুরুত্বপূর্ণ চারটি স্টেশন হলো শ্রীমঙ্গল, কুলাউড়া, ভানুগাছ ও শমশেরনগর। স্টেশনগুলো পর্যটনের অন্যতম জেলা মৌলভীবাজারে অবস্থিত। এ জেলায় বছরে লাখো পর্যটকের পা পড়ে। এ ছাড়া রেলপথে যাতায়াতকারী স্থানীয় বাসিন্দারা তো আছেনই। কিন্তু মৌলভীবাজারের রেল স্টেশনগুলোয় ট্রেনের টিকিট যেন অমাবস্যার চাঁদ। দীর্ঘদিন ধরেই চলছে এ সংকট। ফলে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে পর্যটক ও স্থানীয়দের।

আন্তনগর ট্রেন যাত্রী সিলেটের একটি বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রী নুঝাত রহমান অভিযোগ করে বলেন, হঠাৎ করে বাড়িতে আসার প্রয়োজনে বাবাকে বলে শমশেরনগর রেলওয়ে স্টেশন থেকে বাবার নিবন্ধিত ফোন নম্বর দিয়ে সিলেট থেকে শ্রীমঙ্গলের আন্তনগর পাহাড়িকা এক্সপ্রেস ট্রেনের এসির টিকে করে ভ্রমণ করেন। পথিমধ্যে টিটিসি এসে টিকেট চেক করে কেন বাবার নামের টিকেটে ভ্রমণ করছেন জানতে চায়। তিনি এনআইড কার্ড দেখিয়ে বাবার নাম দেখালেও টিটিসর কাছে তাকে নাজেহাল হতে হয়েছে। স্কুল শিক্ষিকা সাদিয়া আহমেদ বলেন, তিনি িবিশেষ প্রয়েঅজনে ছুটির দিয়ে ঢাকা গিয়ে ফেরার পথে টিকেট না পেয়ে অন্যের নামের টিকেট সংগ্রহ আন্তনগর পারাবত এক্সপ্রেস ট্রেনে ভ্রমণ করছিলেন। আন্তনগর পারাবতএক্সপ্রেস ট্রেনে জনৈক টিটিসি আব্দুর রহিম অন্যের নামের টিকেটে ভ্রমণ করায় নাজেচহাল করে জরিমানা করে নতুন একটি টিকেট দিয়ে টাকা গ্রহণ করেন। তিনি টিটিসিকে সমস্যঅর কথা বললেও তা শুনতে নারাজ। টিটিসি আব্দুর রহিম আবার টিকেট চেকের নামে প্রচুর পরিমাণে নগদ অর্থ গ্রহণ করেন। আর একাজে টিটিসিদের সার্বিক সহায়তা করেন রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী। এনিয়ে সম্প্রতি ঢাকাগামী আন্তনগর কালনি এক্সপ্রেস ট্রেনে শ্রীমঙ্গল স্টেশনে যাত্রীদের সাথে প্রচুর পরিমাণে বাকবিতন্ডার পর যাত্রীলা শ্রীমঙ্গর স্টেশনে টিটিসি আব্দুর রহিমের বিরুদ্ধে অভিযোগও করেছিলেন।

এ প্রসঙ্গে নাম প্রকাশ না করে শমশেরনগর ও শায়েস্তাগঞ্জের দুইজন স্টেশন মাস্টার বলেন, যাত্রীরা বিপদে পড়ে টিকেট চাইলে কোন যাত্রী রিফান্ড দিতে আসলে সে টিকে চাহিত যাত্রী কিনে নেন। আরও আন্তনগর পাহাড়িকা, আন্তনগর কালনি এক্সপ্রেস ট্রেন ও আন্তনগর পারাবত এক্সপ্রেস ট্রেনে ২/১ জন টিটিসি আছেন তারা যাত্রীদের বিপদ আপদ ও সমস্যা বুঝতে চান না। তাদের কাছে নাজেহাল হয়ে হয় কিছু টাকা দিতে হয় নতুবা নতুন করে টিকে কিনতে হয়।

রেল সূত্র বলছে, ঢাকা ও চট্টগ্রাম থেকে সিলেট রুটে প্রতিদিন ছয়টি আন্তনগর ট্রেন চলে। এর মধ্যে চারটি ট্রেন সিলেট-ঢাকা এবং দুটি সিলেট-চট্টগ্রামে চলাচল করে। এই ছয়টি ট্রেনই মৌলভীবাজারের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্টেশন শ্রীমঙ্গলে থামে। এ ছাড়া শমশেরনগর, ভানুগাছ ও কুলাউড়ায়ও স্টপেজ রয়েছে। শ্রীমঙ্গল স্টেশন দিয়ে জেলার অধিকাংশ যাত্রী ও পর্যটক যাতায়াত করেন। কিন্তু স্টেশনগুলোয় চাহিদার তুলনায় টিকিটের বরাদ্দ অপ্রতুল। প্রতিদিন ৫ হাজার যাত্রীর বিপরীতে যাওয়া-আসা মিলে প্রায় ১ হাজার ৬০০টি টিকিট বরাদ্দ রয়েছে মৌলভীবাজারে।

স্থানীয় সূত্র বলেছে, মৌলভীবাজারের ওপর দিয়ে ছয়টি আন্তনগর ট্রেন চললেও স্থানীয়রা খুব একটা ট্রেনে যাতায়াত করতে পারেন না। স্টেশনে গেলেই শোনা যায়, টিকিট নেই। শ্রীমঙ্গল ও শমশেরনগর রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার বলেন, তাদের স্টেশনে যাত্রীর তুলনায় টেনের আসন সংখ্যঅ খুবই কম। নিয়ম অণুযায়ী কয়েকদিন আগে ট্রেনের টিকেট বিক্রি শুরু হলে সকাল ৮টায় কাউন্টার খোলঅর আগেই বাহিরে দীর্ঘ লাইন থাকে। আসন স্বল্পতায় লাইনের প্রথম দিকের যাত্রীরা টিকে পেলেও পিছনের যাত্রীরা টিকেট পান না।

শ্রীমঙ্গল, কুলাউড়া, ভানুগাছ ও শমশেরনগর স্টেশন ঘুরে জানা যায়, প্রায় ১১০ বছর আগে ব্রিটিশ শাসনামলে শ্রীমঙ্গল রেলস্টেশনটি চালু হয়। সে সময় ব্রিটিশরা এ অঞ্চলের চা ও অন্যান্য পণ্য দেশের বিভিন্ন স্থানে পরিবহন করত রেলপথে। ট্রেন ভ্রমণ আরামদায়ক হওয়ায় পরে যাত্রীর সংখ্যা বৃদ্ধি পায়।

শ্রীমঙ্গল ও কুলাউড়া রেলওয়ে স্টেশন সূত্র বলেছে, এ রুটে প্রতিদিন ৫ হাজারের বেশি যাত্রী যাতায়াত করে। সব কয়টি ট্রেন মিলে জেলার চারটি স্টেশনে ১ হাজার ৬০০ টিকিট বরাদ্দ আছে। এর মধ্যে শ্রীমঙ্গল ও কুলাউড়া স্টেশনে বরাদ্দ রয়েছে ১ হাজার ২৫০টি টিকিট। এ ছাড়া শমশেরনগর ও ভানুগাছ স্টেশনে বরাদ্দ রয়েছে ৩০০টি টিকিট।

শ্রীমঙ্গল স্টেশনের মাস্টার শাখাওয়াত হোসেন ও কুলাউড়া স্টেশনের মাস্টার রুমান আহমেদ বলেন, ‘আমরা কোনোভাবেই টিকিটের চাহিদা পূরণ করতে পারছি না। যাত্রীর তুলনায় অতি সামান্য টিকিট রয়েছে। এ ছাড়া মূল টিকিটের বাইরে ২৫ শতাংশ স্ট্যান্ডিং টিকিট দিয়েও চাহিদা পূরণ করা যাচ্ছে না।

এ বিষয়ে মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক মো. ইসরাইল হোসেন বলেন, ‘পর্যটক ও এই অঞ্চলের মানুষের কথা চিন্তা করে ট্রেনের টিকিট বৃদ্ধির জন্য আমরা সম্প্রতি প্রধান উপদেষ্টা বরাবর একটা চিঠি পাঠিয়েছি। আশা করি এ জেলায় ট্রেনের টিকিট বৃদ্ধি করা হবে।’

রেলওয়ের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন) মোহাম্মদ নাজমুল ইসলাম বলেন, ‘বিভিন্ন ছুটিতে বা অতিরিক্ত পর্যটক হলে তাদের চাহিদা অনুযায়ী আমরা ১-২টা কোচ বৃদ্ধি করি। এ ছাড়া অতিরিক্ত যাত্রী থাকলেও কোচ বৃদ্ধি করা হয়। কোচের একটা সীমাবদ্ধতা আছে, আমরা চাইলেই বৃদ্ধি করতে পারব না।’

ছবি- সম্প্রতি সিলেট-ঢাকা রেলপথের সকালে আন্তনগর কালনি এক্সপ্রেস ট্রেনে টিটিসি আব্দুর রহিম( মাস্ক পরা) টিকেট বিহীন যাত্রীদের কাছ থেকে নগদ অর্থ গ্রহন করছেন।

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

অনলাইনে টিকেটের আড়ালে সিলেট-ঢাকা ও সিলেট চট্রগ্রামের ট্রেনের যাত্রীদের নানা দুর্ভোগ

আপডেট সময় ০৯:২৪:৫১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ অগাস্ট ২০২৫

অনলাইনে স্টেশন থেকে বা নিজ মুঠোফোনে নিজের নিবন্ধিত এনআইডি দিয়ে টিকেট করতে হয়। অনলাইনে টিকেটের আড়ালে সিলেঠ-ঢাকা ও সিলেট-চট্রগ্রামের ট্রেনের যাত্রীরা নানা দুর্ভোগে পড়ছেন। টিকেট না পেলে অনন্যের আগে করা টিকে নিয়ে ট্রেনে ভ্রমণ করলে আবার ট্রেনে টিটিসি(টিকেট চেকার)কে দিতে হয় বাড়তি টাকা। অথবা একটি টিকেট থাকার পরও টিটিসির কাছে নানা কটু কথা শুনে নাজেহাল হয়ে ট্রেনে নতুন করে টিকেট কিনতে হয় যাত্রীদের। আবার গন্তব্য স্টেশনে গেটে থাকা রেলের নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের কাছে নাজেহালের শিকার হয় হয় যাত্রীদের।

সিলেট-ঢাকা মহাসড়কে ৬ লেনে কাজ শুরু করেছিল বিগত আওয়ামীলীগ সরকার আমলে। গত বছর বৈষম্য বিরোধী ছাত্র জনতার আন্দোলনে ৫ আগস্ট ২০২৫ আওয়ামীগ সরকারের পতনের পর এ মহা সড়কের কাজ বন্ধ হয়ে যায়। ভারতীয় ঠিকাধারী সংস্থা কাজ ফেলে চলে গেলে এ উন্নয়ন কাজটি রীতিমত অনিশ্চয়তায় ছিল। এরপর ধারাবাহিকভঅবে কিছু কাজ শুরু হলেও এ বর্ষায় সিলেট -ঢাকা মহা সড়কে শুরু হয়েছে চরম ভোগান্তি। এ ৭/৮ ঘন্টার ভ্রমণে এখন সময় লাগছে কমপক্ষে ২০ ঘন্টা। এ ভোগান্তির কারণে সিলেট-ঢাকা রেলপথে যাত্রীর ভ্রমণ বেড়েছে অস্বাভাবিকভাবে। ফলে প্রতিটি স্টেশন থেকে আসনের চেয়ে ২ থেকে ৩ গুন যাত্রী ভ্রমণ করছেণ ট্রেনে করে। ফলে সিলেট ঢাকার ট্রেনের ও সাথে চট্রগ্রামের ট্রেনের টিকেট হয়ে গেছে অমাবস্যার চাঁদের মত।

সিলেট-আখাউড়া রেলপথ ব্রিটিশ আমলের। এই পথের অতিগুরুত্বপূর্ণ চারটি স্টেশন হলো শ্রীমঙ্গল, কুলাউড়া, ভানুগাছ ও শমশেরনগর। স্টেশনগুলো পর্যটনের অন্যতম জেলা মৌলভীবাজারে অবস্থিত। এ জেলায় বছরে লাখো পর্যটকের পা পড়ে। এ ছাড়া রেলপথে যাতায়াতকারী স্থানীয় বাসিন্দারা তো আছেনই। কিন্তু মৌলভীবাজারের রেল স্টেশনগুলোয় ট্রেনের টিকিট যেন অমাবস্যার চাঁদ। দীর্ঘদিন ধরেই চলছে এ সংকট। ফলে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে পর্যটক ও স্থানীয়দের।

আন্তনগর ট্রেন যাত্রী সিলেটের একটি বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রী নুঝাত রহমান অভিযোগ করে বলেন, হঠাৎ করে বাড়িতে আসার প্রয়োজনে বাবাকে বলে শমশেরনগর রেলওয়ে স্টেশন থেকে বাবার নিবন্ধিত ফোন নম্বর দিয়ে সিলেট থেকে শ্রীমঙ্গলের আন্তনগর পাহাড়িকা এক্সপ্রেস ট্রেনের এসির টিকে করে ভ্রমণ করেন। পথিমধ্যে টিটিসি এসে টিকেট চেক করে কেন বাবার নামের টিকেটে ভ্রমণ করছেন জানতে চায়। তিনি এনআইড কার্ড দেখিয়ে বাবার নাম দেখালেও টিটিসর কাছে তাকে নাজেহাল হতে হয়েছে। স্কুল শিক্ষিকা সাদিয়া আহমেদ বলেন, তিনি িবিশেষ প্রয়েঅজনে ছুটির দিয়ে ঢাকা গিয়ে ফেরার পথে টিকেট না পেয়ে অন্যের নামের টিকেট সংগ্রহ আন্তনগর পারাবত এক্সপ্রেস ট্রেনে ভ্রমণ করছিলেন। আন্তনগর পারাবতএক্সপ্রেস ট্রেনে জনৈক টিটিসি আব্দুর রহিম অন্যের নামের টিকেটে ভ্রমণ করায় নাজেচহাল করে জরিমানা করে নতুন একটি টিকেট দিয়ে টাকা গ্রহণ করেন। তিনি টিটিসিকে সমস্যঅর কথা বললেও তা শুনতে নারাজ। টিটিসি আব্দুর রহিম আবার টিকেট চেকের নামে প্রচুর পরিমাণে নগদ অর্থ গ্রহণ করেন। আর একাজে টিটিসিদের সার্বিক সহায়তা করেন রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী। এনিয়ে সম্প্রতি ঢাকাগামী আন্তনগর কালনি এক্সপ্রেস ট্রেনে শ্রীমঙ্গল স্টেশনে যাত্রীদের সাথে প্রচুর পরিমাণে বাকবিতন্ডার পর যাত্রীলা শ্রীমঙ্গর স্টেশনে টিটিসি আব্দুর রহিমের বিরুদ্ধে অভিযোগও করেছিলেন।

এ প্রসঙ্গে নাম প্রকাশ না করে শমশেরনগর ও শায়েস্তাগঞ্জের দুইজন স্টেশন মাস্টার বলেন, যাত্রীরা বিপদে পড়ে টিকেট চাইলে কোন যাত্রী রিফান্ড দিতে আসলে সে টিকে চাহিত যাত্রী কিনে নেন। আরও আন্তনগর পাহাড়িকা, আন্তনগর কালনি এক্সপ্রেস ট্রেন ও আন্তনগর পারাবত এক্সপ্রেস ট্রেনে ২/১ জন টিটিসি আছেন তারা যাত্রীদের বিপদ আপদ ও সমস্যা বুঝতে চান না। তাদের কাছে নাজেহাল হয়ে হয় কিছু টাকা দিতে হয় নতুবা নতুন করে টিকে কিনতে হয়।

রেল সূত্র বলছে, ঢাকা ও চট্টগ্রাম থেকে সিলেট রুটে প্রতিদিন ছয়টি আন্তনগর ট্রেন চলে। এর মধ্যে চারটি ট্রেন সিলেট-ঢাকা এবং দুটি সিলেট-চট্টগ্রামে চলাচল করে। এই ছয়টি ট্রেনই মৌলভীবাজারের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্টেশন শ্রীমঙ্গলে থামে। এ ছাড়া শমশেরনগর, ভানুগাছ ও কুলাউড়ায়ও স্টপেজ রয়েছে। শ্রীমঙ্গল স্টেশন দিয়ে জেলার অধিকাংশ যাত্রী ও পর্যটক যাতায়াত করেন। কিন্তু স্টেশনগুলোয় চাহিদার তুলনায় টিকিটের বরাদ্দ অপ্রতুল। প্রতিদিন ৫ হাজার যাত্রীর বিপরীতে যাওয়া-আসা মিলে প্রায় ১ হাজার ৬০০টি টিকিট বরাদ্দ রয়েছে মৌলভীবাজারে।

স্থানীয় সূত্র বলেছে, মৌলভীবাজারের ওপর দিয়ে ছয়টি আন্তনগর ট্রেন চললেও স্থানীয়রা খুব একটা ট্রেনে যাতায়াত করতে পারেন না। স্টেশনে গেলেই শোনা যায়, টিকিট নেই। শ্রীমঙ্গল ও শমশেরনগর রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার বলেন, তাদের স্টেশনে যাত্রীর তুলনায় টেনের আসন সংখ্যঅ খুবই কম। নিয়ম অণুযায়ী কয়েকদিন আগে ট্রেনের টিকেট বিক্রি শুরু হলে সকাল ৮টায় কাউন্টার খোলঅর আগেই বাহিরে দীর্ঘ লাইন থাকে। আসন স্বল্পতায় লাইনের প্রথম দিকের যাত্রীরা টিকে পেলেও পিছনের যাত্রীরা টিকেট পান না।

শ্রীমঙ্গল, কুলাউড়া, ভানুগাছ ও শমশেরনগর স্টেশন ঘুরে জানা যায়, প্রায় ১১০ বছর আগে ব্রিটিশ শাসনামলে শ্রীমঙ্গল রেলস্টেশনটি চালু হয়। সে সময় ব্রিটিশরা এ অঞ্চলের চা ও অন্যান্য পণ্য দেশের বিভিন্ন স্থানে পরিবহন করত রেলপথে। ট্রেন ভ্রমণ আরামদায়ক হওয়ায় পরে যাত্রীর সংখ্যা বৃদ্ধি পায়।

শ্রীমঙ্গল ও কুলাউড়া রেলওয়ে স্টেশন সূত্র বলেছে, এ রুটে প্রতিদিন ৫ হাজারের বেশি যাত্রী যাতায়াত করে। সব কয়টি ট্রেন মিলে জেলার চারটি স্টেশনে ১ হাজার ৬০০ টিকিট বরাদ্দ আছে। এর মধ্যে শ্রীমঙ্গল ও কুলাউড়া স্টেশনে বরাদ্দ রয়েছে ১ হাজার ২৫০টি টিকিট। এ ছাড়া শমশেরনগর ও ভানুগাছ স্টেশনে বরাদ্দ রয়েছে ৩০০টি টিকিট।

শ্রীমঙ্গল স্টেশনের মাস্টার শাখাওয়াত হোসেন ও কুলাউড়া স্টেশনের মাস্টার রুমান আহমেদ বলেন, ‘আমরা কোনোভাবেই টিকিটের চাহিদা পূরণ করতে পারছি না। যাত্রীর তুলনায় অতি সামান্য টিকিট রয়েছে। এ ছাড়া মূল টিকিটের বাইরে ২৫ শতাংশ স্ট্যান্ডিং টিকিট দিয়েও চাহিদা পূরণ করা যাচ্ছে না।

এ বিষয়ে মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক মো. ইসরাইল হোসেন বলেন, ‘পর্যটক ও এই অঞ্চলের মানুষের কথা চিন্তা করে ট্রেনের টিকিট বৃদ্ধির জন্য আমরা সম্প্রতি প্রধান উপদেষ্টা বরাবর একটা চিঠি পাঠিয়েছি। আশা করি এ জেলায় ট্রেনের টিকিট বৃদ্ধি করা হবে।’

রেলওয়ের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন) মোহাম্মদ নাজমুল ইসলাম বলেন, ‘বিভিন্ন ছুটিতে বা অতিরিক্ত পর্যটক হলে তাদের চাহিদা অনুযায়ী আমরা ১-২টা কোচ বৃদ্ধি করি। এ ছাড়া অতিরিক্ত যাত্রী থাকলেও কোচ বৃদ্ধি করা হয়। কোচের একটা সীমাবদ্ধতা আছে, আমরা চাইলেই বৃদ্ধি করতে পারব না।’

ছবি- সম্প্রতি সিলেট-ঢাকা রেলপথের সকালে আন্তনগর কালনি এক্সপ্রেস ট্রেনে টিটিসি আব্দুর রহিম( মাস্ক পরা) টিকেট বিহীন যাত্রীদের কাছ থেকে নগদ অর্থ গ্রহন করছেন।