ঢাকা ০১:২৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আদিবাসী শিশু প্রীতি উরাংয়ের অস্বাভাবিক মৃত্যুতে সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ তদন্ত ও ন্যায়বিচার দাবি

নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ০৮:৪৭:৩৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪
  • / ২৪৩ বার পড়া হয়েছে

আদিবাসী শিশু প্রীতি উরাংয়ের অস্বাভাবিক মৃত্যুতে সচেতন নাগরিক সমাজের সরেজমিন পরিদর্শন শেষে মৌলভীবাজার প্রেসক্লাবের সংবাদ সম্মেলনে করেছে।

 

মঙ্গলবার (১৪মে) সন্ধ্যায় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে লিখিত সংবদ সম্মেলনে বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরেন।

 

লিখিত বক্তব্য তুলে ধরা হলো

এই বছরের ৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকার মোহাম্মদপুরে সৈয়দ আশফাকুল হকের বাসায় আদিবাসী এই শিশুটির অস্বাভাবিক মৃত্যু ঘটেছে। সে বিষয়ে সরেজমিন পর্যবেক্ষণের জন্য সচেতন নাগরিক সমাজের পক্ষ ১২ জনের একটি প্রতিনিধি দল গতকাল ১৩মে এবং আজ ১৪মে মৌলভীবাজারের মিরতিংগা এবং মুরইছড়া চা বাগান পরিদর্শন করেন। সেখানে আশফাকুল হকের বাসায় গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করা শিশুশ্রমিক খুশি উরাং ও দুর্গামনি বাউরির সঙ্গে কথা বলি। মৃত শিশুশ্রমিক প্রীতি উরাং এর মা-বাবা এবং অন্য শিশুদের পরিবারবর্গের সঙ্গে কথা বলেছি। মৌলভীবাজারের পুলিশ সুপার, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক এবং কমলগঞ্জের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সঙ্গে দেখা করে তাদের পর্যবেক্ষণ তুলে ধরেন।

সৈয়দ আশফাকুল হকের মোহাম্মদপুরের ওই ফ্ল্যাট থেকে ছয় মাসের ব্যবধানে দুটি শিশু পড়ে যায় বা লাফ দেয়। পরপর ঘটে যাওয়া একই রকমের দুটি ঘটনা আমাদেরকে উদ্বিগ্ন করে।

১. প্রীতির মা বাবার সঙ্গে কথা বলে আমাদের মনে হয়েছে, তারা অভাব এবং ভয়ভীতির মধ্যে রয়েছে।

২. মৃত্যুর সময়েও প্রীতির মাসিক শুরু হয়নি, ফলে তার বয়স ১৫ বছর হবার কোনো কারণ নেই। এজাহারে বেশি বয়স উল্লেখ করা হয়েছে।

৩. দুর্গামনির স্টেটমেন্টে এটা স্পষ্ট হয়েছে, যে তারা শারীরিক নির্যাতনের শিকার হতো নিয়মিত।

আমাদের দাবি

১. ক্ষতিগ্রস্ত শিশুদের কাজের পারিশ্রমিক, চিকিৎসা খরচ এবং পড়াশোনার খরচের ব্যবস্থা করতে হবে।

২. প্রীতির এবং অন্য শিশুদের ওপরে ঘটে যাওয়া ঘটনার সুষ্ঠু, প্রভাবমুক্ত ও দ্রুত তদন্তের মাধ্যমে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে হবে।

৩. প্রীতির এবং দুর্গামনির পরিবারকে যথোপযুক্ত আর্থিক ক্ষতিপূরণ প্রদান করতে হবে। সেইসাথে তার পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

৪. শিশুশ্রম বিষয়ক নীতিমালাকে আইনে পরিণত করার জোর দাবি করছি। শ্রমে নিয়োগের ক্ষেত্রে শিশুর বয়স ১৪ বছরের পরিবর্তে ১৮ বছর করার দাবি করছি সরকারের কাছে। সেই সাথে গৃহকর্মীদের সুরক্ষা ও কল্যাণ নীতিমালায় গৃহে নিয়োগের ক্ষেত্রে শিশুর বয়স ১৪ বছরের পরিবর্তে ১৮ বছর করার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানাচ্ছি।

৫. ২০১৭ সালে আদালেতের নির্দেশনা অনুযায়ী শ্রম মন্ত্রণালয়, জেলা প্রশাসক এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে নিযে গৃহকর্মীদের অধিকার রক্ষায় সারাদেশে মনিটরিং সেল গঠনের যে নির্দেশনা দেয়া হয়েছিল তা অবিলম্বে কার্যকরের জোর দাবি জানাচ্ছি। একই সাথে গৃহ শ্রমিকদের অধিকার সুরক্ষায় প্রতিটি বাড়ি পরিদর্শনের ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।

সচেতন নাগরিক সমাজের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন –

১. শামসুল হুদা, নির্বাহী পরিচালক, এএলআরডি
২. রফিক আহমেদ সিরাজী, ব্যবস্থাপক, এএলআরডি
৩. ফারহা তানজীম তিতিল, সহযোগী অধ্যাপক, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়
৪. আবুল হোসাইন, কেন্দ্রীয় নেতা, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি
৫. ঈশানী চক্রবর্তী, অধ্যাপক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
৬. জোবাইদা নাসরীন, অধ্যাপক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
৭. মুহাম্মদ হাবীব, অনুবাদক ও গবেষক
৮. বহ্নি ফারহানা, সাংবাদিক, প্রতিদিনের বাংলাদেশ
৯. সামিয়া রহমান প্রিমা, গবেষক, দৃক
১০. উজ্জ্বল আজিম, প্রোগ্রাম ম্যানেজার, কাপেং ফাউন্ডেশন
১১. অলিক মৃ, সভাপতি, বাংলাদেশ আদিবাসী ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ
১২. হরেন্দ্রনাথ সিংহ, সভাপতি, বাংলাদেশ আদিবাসী যুব পরিষদ

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

আদিবাসী শিশু প্রীতি উরাংয়ের অস্বাভাবিক মৃত্যুতে সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ তদন্ত ও ন্যায়বিচার দাবি

আপডেট সময় ০৮:৪৭:৩৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪

আদিবাসী শিশু প্রীতি উরাংয়ের অস্বাভাবিক মৃত্যুতে সচেতন নাগরিক সমাজের সরেজমিন পরিদর্শন শেষে মৌলভীবাজার প্রেসক্লাবের সংবাদ সম্মেলনে করেছে।

 

মঙ্গলবার (১৪মে) সন্ধ্যায় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে লিখিত সংবদ সম্মেলনে বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরেন।

 

লিখিত বক্তব্য তুলে ধরা হলো

এই বছরের ৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকার মোহাম্মদপুরে সৈয়দ আশফাকুল হকের বাসায় আদিবাসী এই শিশুটির অস্বাভাবিক মৃত্যু ঘটেছে। সে বিষয়ে সরেজমিন পর্যবেক্ষণের জন্য সচেতন নাগরিক সমাজের পক্ষ ১২ জনের একটি প্রতিনিধি দল গতকাল ১৩মে এবং আজ ১৪মে মৌলভীবাজারের মিরতিংগা এবং মুরইছড়া চা বাগান পরিদর্শন করেন। সেখানে আশফাকুল হকের বাসায় গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করা শিশুশ্রমিক খুশি উরাং ও দুর্গামনি বাউরির সঙ্গে কথা বলি। মৃত শিশুশ্রমিক প্রীতি উরাং এর মা-বাবা এবং অন্য শিশুদের পরিবারবর্গের সঙ্গে কথা বলেছি। মৌলভীবাজারের পুলিশ সুপার, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক এবং কমলগঞ্জের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সঙ্গে দেখা করে তাদের পর্যবেক্ষণ তুলে ধরেন।

সৈয়দ আশফাকুল হকের মোহাম্মদপুরের ওই ফ্ল্যাট থেকে ছয় মাসের ব্যবধানে দুটি শিশু পড়ে যায় বা লাফ দেয়। পরপর ঘটে যাওয়া একই রকমের দুটি ঘটনা আমাদেরকে উদ্বিগ্ন করে।

১. প্রীতির মা বাবার সঙ্গে কথা বলে আমাদের মনে হয়েছে, তারা অভাব এবং ভয়ভীতির মধ্যে রয়েছে।

২. মৃত্যুর সময়েও প্রীতির মাসিক শুরু হয়নি, ফলে তার বয়স ১৫ বছর হবার কোনো কারণ নেই। এজাহারে বেশি বয়স উল্লেখ করা হয়েছে।

৩. দুর্গামনির স্টেটমেন্টে এটা স্পষ্ট হয়েছে, যে তারা শারীরিক নির্যাতনের শিকার হতো নিয়মিত।

আমাদের দাবি

১. ক্ষতিগ্রস্ত শিশুদের কাজের পারিশ্রমিক, চিকিৎসা খরচ এবং পড়াশোনার খরচের ব্যবস্থা করতে হবে।

২. প্রীতির এবং অন্য শিশুদের ওপরে ঘটে যাওয়া ঘটনার সুষ্ঠু, প্রভাবমুক্ত ও দ্রুত তদন্তের মাধ্যমে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে হবে।

৩. প্রীতির এবং দুর্গামনির পরিবারকে যথোপযুক্ত আর্থিক ক্ষতিপূরণ প্রদান করতে হবে। সেইসাথে তার পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

৪. শিশুশ্রম বিষয়ক নীতিমালাকে আইনে পরিণত করার জোর দাবি করছি। শ্রমে নিয়োগের ক্ষেত্রে শিশুর বয়স ১৪ বছরের পরিবর্তে ১৮ বছর করার দাবি করছি সরকারের কাছে। সেই সাথে গৃহকর্মীদের সুরক্ষা ও কল্যাণ নীতিমালায় গৃহে নিয়োগের ক্ষেত্রে শিশুর বয়স ১৪ বছরের পরিবর্তে ১৮ বছর করার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানাচ্ছি।

৫. ২০১৭ সালে আদালেতের নির্দেশনা অনুযায়ী শ্রম মন্ত্রণালয়, জেলা প্রশাসক এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে নিযে গৃহকর্মীদের অধিকার রক্ষায় সারাদেশে মনিটরিং সেল গঠনের যে নির্দেশনা দেয়া হয়েছিল তা অবিলম্বে কার্যকরের জোর দাবি জানাচ্ছি। একই সাথে গৃহ শ্রমিকদের অধিকার সুরক্ষায় প্রতিটি বাড়ি পরিদর্শনের ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।

সচেতন নাগরিক সমাজের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন –

১. শামসুল হুদা, নির্বাহী পরিচালক, এএলআরডি
২. রফিক আহমেদ সিরাজী, ব্যবস্থাপক, এএলআরডি
৩. ফারহা তানজীম তিতিল, সহযোগী অধ্যাপক, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়
৪. আবুল হোসাইন, কেন্দ্রীয় নেতা, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি
৫. ঈশানী চক্রবর্তী, অধ্যাপক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
৬. জোবাইদা নাসরীন, অধ্যাপক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
৭. মুহাম্মদ হাবীব, অনুবাদক ও গবেষক
৮. বহ্নি ফারহানা, সাংবাদিক, প্রতিদিনের বাংলাদেশ
৯. সামিয়া রহমান প্রিমা, গবেষক, দৃক
১০. উজ্জ্বল আজিম, প্রোগ্রাম ম্যানেজার, কাপেং ফাউন্ডেশন
১১. অলিক মৃ, সভাপতি, বাংলাদেশ আদিবাসী ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ
১২. হরেন্দ্রনাথ সিংহ, সভাপতি, বাংলাদেশ আদিবাসী যুব পরিষদ