ঢাকা ১০:১৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
ব্রেকিং নিউজ
আইনজীবী হত্যার বিচার হবে, শান্ত থাকার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার স্বৈরাচার শেখ হাসিনা পালিয়ে গেলেও তার  লেজ রয়ে গেছে : সিলেটের কর্মশালায় তারেক রহমান জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে আহত ও শহিদদের স্মরণে স্মরণসভা ভারতীয় মদসহ আটক – ১ ব্যবসায়ী মনসুর আহমদ আর নেই ২১ ডিসেম্বর জামায়াতের কর্মী সম্মেলন,আসবেন আমীরে জামায়াত মৌলভীবাজারে বিক্ষোভ মিছিল শতভাগ জরায়ুমুখ ক্যান্সার প্রতিরোধ টিকা দিয়েছে মৌলভীবাজারে গ্রাম পুলিশ বাহিনীর সদস্যগণের মাসব্যাপী বুনিয়া প্রশিক্ষণ কোর্সের উদ্বোধন কমলগঞ্জের মুন্সীবাজারে ছায়াতরু সোস্যাল ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশন কর্তৃক দরিদ্রদের সহায়তা প্রদান

আমন ধানে পোকার আক্রমন

নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ১২:০৫:৩১ অপরাহ্ন, সোমবার, ৫ সেপ্টেম্বর ২০২২
  • / ২৫৭ বার পড়া হয়েছে

বিশেষ প্রতিনিধিঃ মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলায় আমন ধানে ব্যাপক হারে মাজরা পোকার আক্রমন শুরু হয়েছে। কীটনাশক স্প্রে করেও কোন সুফল পাচ্ছে না কৃষকেরা। ফলে আমন ধানের ভালো ফলন নিয়ে শঙ্কার পাশাপাশি পোকার আক্রমণ থেকে ধান নিয়ে বিপাকে পড়েছেন উপজেলার কৃষকেরা। এইসব এলাকায় কৃষি কর্মকর্তারা কৃষকদের ধান গাছে কীটনাশক ছিটানোর পরামর্শ দিচ্ছেন।

উপজেলা কৃষি সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরে উপজেলায় ১৫ হাজার ৩৩৬হেক্টর জমিতে আমন ধানের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

ইতিমধ্যে ১১ হাজার ২৫৭ হেক্টর জমিতে চারা রোপণ করা হয়েছে। মাজরা পোকার আক্রমনে রোপণকৃত আমন ধানের চারা অনুমানিক ১৫ হেক্টর জমির ক্ষতি হয়েছে।

এদিকে কৃষকরা বলছেন, চলতি আমন মৌসুমে ইউরিয়া সারের দাম ও ডিজেলের মূল্য বৃদ্ধি এবং আনুসাঙ্গিক যে ব্যয় হবে, তাতে উৎপাদন ব্যয় উঠবে কিনা-তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। বেশি সমস্যায় বর্গাচাষিরা। চলতি আমন মৌসুমে ধানের মূল্য না বাড়লে লোকসান মুখে পড়বেন কৃষকরা।

কৃষকরা আরও বলেন, আমন রোপনের পর ধান চারার রঙ কালচে হওয়ার সাথে সাথে বিভিন্ন ধরনের পোকায় আক্রমণ করে ধানের মাইন কেটে দিচ্ছে। ফসল রক্ষার জন্য কৃষকেরা এখন বিভিন্ন ধরনের কীটনাশক দিচ্ছিন।
উপজেলার সদর ইউনিয়ন, সিন্দুরখান ইউনিয়ন, আশীদ্রোন ইউনিয়ন, সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, আমন ধানের গাছে মাজরা পোকায় আক্রমন করেছে। পোকায় ধানের মাইন কেটে দিচ্ছে ও পাতা শুকিয়ে বাদামি রং ধারণ করছে। পোকা থেকে ধান রক্ষার জন্য কৃষকেরা বিভিন্ন ধরণের কীটনাশক প্রয়োগ করে কোন প্রতিকার পাচ্ছেনা।

আশীদ্রোন ইউনিয়নের খোশবাস গ্রামের কৃষক রুমান মিয়া বলেন, আমি প্রায় ১০ কিয়ার এবার আমন ধান চাষ করেছি। আমার সব জমিতে মাজরা পোকা আক্রমণ করেছে। বিভিন্ন ধরনের কীটনাশক স্প্রে করেও পোকা দমন করা যাচ্ছে না। চলতি আমন মৌসুমে সার ও ডিজেল তেলের দাম বাড়ায় ও আনুষঙ্গিক খরছসহ আমন ধান ঘরে তুলা পর্যন্ত প্রতি কিয়ারে ৬ থেকে ৭ হাজার টাকা খরছ হবে।

পশ্চিম আশিদ্রোন গ্রামের কৃষক মো: আব্দুল জলিল বলেন, আমি ৪ কিয়ার জমিতে আমন ধান চাষ করি। আমার জমির ব্যাপক হারে মাজরাপোকায় আক্রমন করেছে। আমি কীটনাশকের দোকান থেকে বিভিন্ন ধরনে কীটনাশক প্রয়োগ করে ফল পাচ্ছি না।
উপজেলার সদর ইউনিয়নের ভাড়াউড়া গ্রামের কৃষক মো: মোস্তফা মিয়া বলেন, আমি ২ কিয়ার জমিতে আমন চাষ করি। আমার সব জমিতে মাজরাপোকায় আক্রমন করেছে। জমিতে কীটনাশক প্রয়োগ করে কোন প্রতিকার পাচ্ছেনা

সিন্দুরখান ইউনিয়নের কৃষক আব্দুল হাই বলেন, আমি ৩ একর আমন ধানে পোকায় ধরেছে। হঠাৎ করে পোকায় আক্রমণ করে ফসল নষ্ট করে ফেলছে। এখন কীটনাশক স্প্রে করেছি পোকার আক্রমণ থেকে ফসল রক্ষার জন্য।

এ বিষয়ে কৃষি কর্মকর্তা নিলুফা ইয়াসমিন মোনালিছা সুইটি বলেন, অন্যান্য বছরের তুলনায় এবছর মাজরা পোকার আক্রমন বেশি। যদি সকল কৃষক এক যুগে তাদের রোপনকৃত জমিতে খুঠা গেড়ে দেয়, জমিতে মাজরাপোকা আসুক না কেন, আমাদের বন্ধু ফেচকুন্দা পাখিটা একটা পোকা খেতে পারে। তাহলে আড়াইশত মাজরাপোকার লাভা থেকে আমাদের জমি বাঁচাতে পারে। মাজরাপোকার আক্রমন থেকে কৃষকরা জমিতে যে কীটনাশন প্রয়োগ করে, যাতে ধান গাছের পাতা ভিজে গোড়ায় যায় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

আমন ধানে পোকার আক্রমন

আপডেট সময় ১২:০৫:৩১ অপরাহ্ন, সোমবার, ৫ সেপ্টেম্বর ২০২২

বিশেষ প্রতিনিধিঃ মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলায় আমন ধানে ব্যাপক হারে মাজরা পোকার আক্রমন শুরু হয়েছে। কীটনাশক স্প্রে করেও কোন সুফল পাচ্ছে না কৃষকেরা। ফলে আমন ধানের ভালো ফলন নিয়ে শঙ্কার পাশাপাশি পোকার আক্রমণ থেকে ধান নিয়ে বিপাকে পড়েছেন উপজেলার কৃষকেরা। এইসব এলাকায় কৃষি কর্মকর্তারা কৃষকদের ধান গাছে কীটনাশক ছিটানোর পরামর্শ দিচ্ছেন।

উপজেলা কৃষি সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরে উপজেলায় ১৫ হাজার ৩৩৬হেক্টর জমিতে আমন ধানের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

ইতিমধ্যে ১১ হাজার ২৫৭ হেক্টর জমিতে চারা রোপণ করা হয়েছে। মাজরা পোকার আক্রমনে রোপণকৃত আমন ধানের চারা অনুমানিক ১৫ হেক্টর জমির ক্ষতি হয়েছে।

এদিকে কৃষকরা বলছেন, চলতি আমন মৌসুমে ইউরিয়া সারের দাম ও ডিজেলের মূল্য বৃদ্ধি এবং আনুসাঙ্গিক যে ব্যয় হবে, তাতে উৎপাদন ব্যয় উঠবে কিনা-তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। বেশি সমস্যায় বর্গাচাষিরা। চলতি আমন মৌসুমে ধানের মূল্য না বাড়লে লোকসান মুখে পড়বেন কৃষকরা।

কৃষকরা আরও বলেন, আমন রোপনের পর ধান চারার রঙ কালচে হওয়ার সাথে সাথে বিভিন্ন ধরনের পোকায় আক্রমণ করে ধানের মাইন কেটে দিচ্ছে। ফসল রক্ষার জন্য কৃষকেরা এখন বিভিন্ন ধরনের কীটনাশক দিচ্ছিন।
উপজেলার সদর ইউনিয়ন, সিন্দুরখান ইউনিয়ন, আশীদ্রোন ইউনিয়ন, সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, আমন ধানের গাছে মাজরা পোকায় আক্রমন করেছে। পোকায় ধানের মাইন কেটে দিচ্ছে ও পাতা শুকিয়ে বাদামি রং ধারণ করছে। পোকা থেকে ধান রক্ষার জন্য কৃষকেরা বিভিন্ন ধরণের কীটনাশক প্রয়োগ করে কোন প্রতিকার পাচ্ছেনা।

আশীদ্রোন ইউনিয়নের খোশবাস গ্রামের কৃষক রুমান মিয়া বলেন, আমি প্রায় ১০ কিয়ার এবার আমন ধান চাষ করেছি। আমার সব জমিতে মাজরা পোকা আক্রমণ করেছে। বিভিন্ন ধরনের কীটনাশক স্প্রে করেও পোকা দমন করা যাচ্ছে না। চলতি আমন মৌসুমে সার ও ডিজেল তেলের দাম বাড়ায় ও আনুষঙ্গিক খরছসহ আমন ধান ঘরে তুলা পর্যন্ত প্রতি কিয়ারে ৬ থেকে ৭ হাজার টাকা খরছ হবে।

পশ্চিম আশিদ্রোন গ্রামের কৃষক মো: আব্দুল জলিল বলেন, আমি ৪ কিয়ার জমিতে আমন ধান চাষ করি। আমার জমির ব্যাপক হারে মাজরাপোকায় আক্রমন করেছে। আমি কীটনাশকের দোকান থেকে বিভিন্ন ধরনে কীটনাশক প্রয়োগ করে ফল পাচ্ছি না।
উপজেলার সদর ইউনিয়নের ভাড়াউড়া গ্রামের কৃষক মো: মোস্তফা মিয়া বলেন, আমি ২ কিয়ার জমিতে আমন চাষ করি। আমার সব জমিতে মাজরাপোকায় আক্রমন করেছে। জমিতে কীটনাশক প্রয়োগ করে কোন প্রতিকার পাচ্ছেনা

সিন্দুরখান ইউনিয়নের কৃষক আব্দুল হাই বলেন, আমি ৩ একর আমন ধানে পোকায় ধরেছে। হঠাৎ করে পোকায় আক্রমণ করে ফসল নষ্ট করে ফেলছে। এখন কীটনাশক স্প্রে করেছি পোকার আক্রমণ থেকে ফসল রক্ষার জন্য।

এ বিষয়ে কৃষি কর্মকর্তা নিলুফা ইয়াসমিন মোনালিছা সুইটি বলেন, অন্যান্য বছরের তুলনায় এবছর মাজরা পোকার আক্রমন বেশি। যদি সকল কৃষক এক যুগে তাদের রোপনকৃত জমিতে খুঠা গেড়ে দেয়, জমিতে মাজরাপোকা আসুক না কেন, আমাদের বন্ধু ফেচকুন্দা পাখিটা একটা পোকা খেতে পারে। তাহলে আড়াইশত মাজরাপোকার লাভা থেকে আমাদের জমি বাঁচাতে পারে। মাজরাপোকার আক্রমন থেকে কৃষকরা জমিতে যে কীটনাশন প্রয়োগ করে, যাতে ধান গাছের পাতা ভিজে গোড়ায় যায় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।