ঢাকা ০২:২২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫, ৬ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

কিস্তির টাকা পরিশোধ না হতেই বাস দু*র্ঘ*ট*না*য়  মা-রা গেলেন চৈতন্য পাল

নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ০৮:১২:২৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৫
  • / ২৯ বার পড়া হয়েছে
কোটচাঁদপুর প্রতিনিধিঃ
কিস্তির টাকা পরিশোধ না হতেই বাসে দুমড়ে মুচড়ে দিয়েছে ইঞ্জিন চালিত ভ্যানটি। সেই সাথে মারা গেছেন সংসারের একমাত্র আয়-রোজগারের মানুষ চৈতন্য পাল। গেল রবিবার (১৩-০৪-২৫ ) সকালে ঘটে ওই দূর্ঘটনা। এখন শ্বাশুড়ি আর দুই সন্তানকে নিয়ে মহাবিপাকে পড়েছেন রেখা রানী। এখন এনজিওর কিস্তি আর সংসার এ  দুই নিয়ে চিন্তার ভাজ কপালে তাঁর।
ভুক্তভোগী পরিবার সুত্রে জানা যায়,চৈতন্য পাল (৩৫)। তিনি ছিলেন কোটচাঁদপুর উপজেলার ফাজিলপুর গ্রামের মৃত কার্তিক দাসের একমাত্র  ছেলে। পৈত্রিক সুত্রে পেয়েছিল বসত বাড়ির ৫ শ জমি। তাঁর উপরই ছিল বসত ঘর। মাটির জিনিসপত্র তৈরী করা  ছিল চৈতন্যের পেশা। তবে সেটা ছেড়ে ছিল বেশ আগে। কারন মাটির কাজ করতে প্রয়োজন ছিল বেশ জায়গা। যা তাঁর ছিল না। এ কারনে জীবিকার তাগিতে বেঁচে নিয়েছিল ইঞ্জিন চালিত ভ্যান। যা তিনি এনজিও থেকে টাকা তুলে কিনে ছিল। রবিবার (১৩-০৪-২৫) তারিখ সকালে সেই ভ্যানটি নিয়ে কলার ভাড়া নিয়ে যাচ্ছিল কোটচাঁদপুর শহরে। পথিমধ্যে এলাঙ্গী মাঠের সামনের সড়কে ঘটে দূর্ঘটনা। এতে করে দুমড়ে মুচড়ে যায় চৈতন্য পালে। আর গুরুতর আঘাত পেয়ে মারা যান তিনি।
চৈতন্য পাল সংসার জীবনে ছিলেন দুই পুত্র সন্তানের জনক। যার মধ্যে বড় ছেলে তাপস পাল (১৫)। সে ৮ ম শ্রেনীর ছাত্র আর ছোট ছেলে শ্রীবাস পাল। যার বয়স ১ বছর। এ ছাড়া সংসারে রয়েছে  মা পুষ্প রানী। যিনি বার্ধক্য জনিত কারনে রোগাক্রান্ত হয়ে পড়ে আছেন।
এদের নিয়ে মহাবিপাকে পড়েছেন চৈতন্য পালের স্ত্রী রেখা রানী। কারন সংসারে আয়-রোজগারের একমাত্র মানুষ ছিলেন তাঁর স্বামী। তিনি যা আয় রোজগার করতেন তাই দিয়ে সংসার আর ছেলেদের লেখা পড়া চলত। চলত এনজিওর কিস্তি। যে টাকা দিয়ে কেনা হয়েছিল ভ্যানটি। এ প্রতিবেদকের কাছে এমনটাই বলছিল রেখা রানী। আর বার বার কান্নায় জ্ঞান হারাচ্ছিল।
প্রতিবেশী বাদল পাল বলেন,চৈতন্য পাল ছিলেন ওই সংসারের একমাত্র উপার্জনক্ষম মানুষ। তাঁর মৃত্যুতে এখন অসহায় পরিবারটি। শ্বাশুড়ি, দুই ছেলে ও সংসার নিয়ে বিপাকে রেখা রানি। মানুষের সহযোগিতা ছাড়া তাদের চলার কোন উপায় নাই।
এলাঙ্গী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত)  জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন,দূর্ঘটনার খবর জানতাম। তবে অবস্থা খারাপ সেটা জানতাম না। এখন জানতে পারলাম। সাধ্যমত সহযোগিতা নিয়ে তাদের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।
কোটচাঁদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কবির হোসেন মাতুব্বর বলেন,ওই ঘটনায় মৃতের স্ত্রী রেখা রানী বাদি
হয়ে থানায় মামলা করেছেন।
বিষয়টি নিয়ে কোটচাঁদপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাজী আনিসুল ইসলামের সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করা হয়। তবে রিসিভ না করায় কথা বলা সম্ভব হয়নি।
ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

কিস্তির টাকা পরিশোধ না হতেই বাস দু*র্ঘ*ট*না*য়  মা-রা গেলেন চৈতন্য পাল

আপডেট সময় ০৮:১২:২৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৫
কোটচাঁদপুর প্রতিনিধিঃ
কিস্তির টাকা পরিশোধ না হতেই বাসে দুমড়ে মুচড়ে দিয়েছে ইঞ্জিন চালিত ভ্যানটি। সেই সাথে মারা গেছেন সংসারের একমাত্র আয়-রোজগারের মানুষ চৈতন্য পাল। গেল রবিবার (১৩-০৪-২৫ ) সকালে ঘটে ওই দূর্ঘটনা। এখন শ্বাশুড়ি আর দুই সন্তানকে নিয়ে মহাবিপাকে পড়েছেন রেখা রানী। এখন এনজিওর কিস্তি আর সংসার এ  দুই নিয়ে চিন্তার ভাজ কপালে তাঁর।
ভুক্তভোগী পরিবার সুত্রে জানা যায়,চৈতন্য পাল (৩৫)। তিনি ছিলেন কোটচাঁদপুর উপজেলার ফাজিলপুর গ্রামের মৃত কার্তিক দাসের একমাত্র  ছেলে। পৈত্রিক সুত্রে পেয়েছিল বসত বাড়ির ৫ শ জমি। তাঁর উপরই ছিল বসত ঘর। মাটির জিনিসপত্র তৈরী করা  ছিল চৈতন্যের পেশা। তবে সেটা ছেড়ে ছিল বেশ আগে। কারন মাটির কাজ করতে প্রয়োজন ছিল বেশ জায়গা। যা তাঁর ছিল না। এ কারনে জীবিকার তাগিতে বেঁচে নিয়েছিল ইঞ্জিন চালিত ভ্যান। যা তিনি এনজিও থেকে টাকা তুলে কিনে ছিল। রবিবার (১৩-০৪-২৫) তারিখ সকালে সেই ভ্যানটি নিয়ে কলার ভাড়া নিয়ে যাচ্ছিল কোটচাঁদপুর শহরে। পথিমধ্যে এলাঙ্গী মাঠের সামনের সড়কে ঘটে দূর্ঘটনা। এতে করে দুমড়ে মুচড়ে যায় চৈতন্য পালে। আর গুরুতর আঘাত পেয়ে মারা যান তিনি।
চৈতন্য পাল সংসার জীবনে ছিলেন দুই পুত্র সন্তানের জনক। যার মধ্যে বড় ছেলে তাপস পাল (১৫)। সে ৮ ম শ্রেনীর ছাত্র আর ছোট ছেলে শ্রীবাস পাল। যার বয়স ১ বছর। এ ছাড়া সংসারে রয়েছে  মা পুষ্প রানী। যিনি বার্ধক্য জনিত কারনে রোগাক্রান্ত হয়ে পড়ে আছেন।
এদের নিয়ে মহাবিপাকে পড়েছেন চৈতন্য পালের স্ত্রী রেখা রানী। কারন সংসারে আয়-রোজগারের একমাত্র মানুষ ছিলেন তাঁর স্বামী। তিনি যা আয় রোজগার করতেন তাই দিয়ে সংসার আর ছেলেদের লেখা পড়া চলত। চলত এনজিওর কিস্তি। যে টাকা দিয়ে কেনা হয়েছিল ভ্যানটি। এ প্রতিবেদকের কাছে এমনটাই বলছিল রেখা রানী। আর বার বার কান্নায় জ্ঞান হারাচ্ছিল।
প্রতিবেশী বাদল পাল বলেন,চৈতন্য পাল ছিলেন ওই সংসারের একমাত্র উপার্জনক্ষম মানুষ। তাঁর মৃত্যুতে এখন অসহায় পরিবারটি। শ্বাশুড়ি, দুই ছেলে ও সংসার নিয়ে বিপাকে রেখা রানি। মানুষের সহযোগিতা ছাড়া তাদের চলার কোন উপায় নাই।
এলাঙ্গী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত)  জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন,দূর্ঘটনার খবর জানতাম। তবে অবস্থা খারাপ সেটা জানতাম না। এখন জানতে পারলাম। সাধ্যমত সহযোগিতা নিয়ে তাদের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।
কোটচাঁদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কবির হোসেন মাতুব্বর বলেন,ওই ঘটনায় মৃতের স্ত্রী রেখা রানী বাদি
হয়ে থানায় মামলা করেছেন।
বিষয়টি নিয়ে কোটচাঁদপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাজী আনিসুল ইসলামের সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করা হয়। তবে রিসিভ না করায় কথা বলা সম্ভব হয়নি।