কুলাউড়ার আকাশ থেকে দুর্যোগের ঘনঘটা সরানোর জন্য এবং ঘুণেধরা সমাজ ব্যবস্থার আমুল পরিবর্তন করার জন্য আমি এই নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছি। কুলাউড়া পৌরসভা নির্বাচনে আমি নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করেছিলাম। কিন্তু আওয়ামীলীগ নেতৃবৃন্দের মধ্যে যারা চাটুকার তাদের বিরোধিতার কারণে অল্প ভোটের ব্যবধানে আমার ফল বিপর্যয় হয়েছিল। কিন্ত আমি দমে যাবার পাত্র নই। নির্বাচনের পরদিন থেকে উপজেলার আনাচে-কানাচে প্রত্যন্ত অঞ্চলে চষে বেড়িয়েছি। মানুষের সুখ-দুঃখের সাথী হয়েছি। তারপর ২০১৮ সালের স্মরণকালের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে কুলাউড়ার মানুষ আমাকে বিপুল ভোটে তাদের মূল্যেবান ভোট দিয়ে বিজয়ী করেছিলেন। আমি আপনাদের কাছে বিনীত অনুরোধ জানাই, আপনারা আমাকে দলমতের উর্দ্ধে উঠে সহযোগিতা করবেন। আপনাদের সহযোগিতাই হবে আলোকিত কুলাউড়া বিনির্মাণের প্রয়াস। আপনাদের সহযোগিতা নিয়ে কুলাউড়াকে দেশের অন্যতম শ্রেষ্ঠ একটি উন্নয়নের রোল মডেলের উপজেলা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই।
তিনি বলেন, দেশের আনাচে-কানাচে সরকারের যুগান্তকারী উন্নয়ন হয়েছে। কিন্ত এই কুলাউড়ায় দৃশ্যমান কোন উন্নয়ন হয়নি। ৫০ শয্যা বিশিষ্ট কুলাউড়া হাসপাতালটি ১০০ শয্যায় উন্নীত করা প্রয়োজন। কুলাউড়ার প্রাচীনতম রেলওয়ে জংশন স্টেশনে টিকেট কালোবাজারি বন্ধ করতে হবে। বন্ধ থাকা ৪টি রেলস্টেশনে কেন ট্রেন থামবেনা। গণমানুষের প্রয়োজনে এসব স্টেশন চালু করা প্রয়োজন। কিন্তু এটা নিয়ে কে কথা বলবে। কেউ কোন কথা বলছে না। আর এবারের নির্বাচনে সাবেক দুই এমপি ও আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নাদেল সাহেব প্রার্থী হয়েছেন। কিন্তু বিগত করোনা মহামারী ও বন্যার সময় উনারা কোথায় ছিলেন। আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নাদেল সাহেবের জন্ম-কর্ম সিলেটে। সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে তিনি আছেন ময়মনসিংহ বিভাগের দায়িত্বে। দুই বার সাংগঠনিক থেকেও তিনি কুলাউড়ায় একটি ইটও পর্যন্ত লাগাননি। কোন উন্নয়ন তিনি করতে পারেননি। অথচ তিনি এবার প্রার্থী হয়েছেন। কুলাউড়ার প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষ থাকে চিনেও না। বছরে দুই একবার কুলাউড়া আসেন মাত্র।
সফি আহমদ সলমান বলেন, এই নির্বাচন হবে অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ নির্বাচন। এই নির্বাচন হবে কুলাউড়ার গণমানুষের রায়ের নির্বাচন, কুলাউড়ার সকল মানুষের আশা-আকাঙ্খার বাস্তব প্রতিফলন ঘটানোর নির্বাচন। আমি বলতে চাই, কুলাউড়ার সকল দলমতের মানুষের ভাই-সন্তান হিসেবে আপনাদের পবিত্র মূল্যবান ভোট কামনা করছি একারণেই, কুলাউড়ার রাজনৈতিক অবস্থা স্থিতিশীল রাখার জন্য, কুলাউড়ার মানুষকে হয়রানি ও দালালদের হাত থেকে রক্ষার জন্য আমি এই নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছি।
সফি আহমদ সলমান আরো বলেন, আমাদের নেত্রী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা গণভবনে নির্বাচনে যারা মনোনয়ন সংগ্রহ করেছিলেন সবার সম্মুখে তিনি বলেছেন, আমার হাতে ৩০০ জনের নাম দেয়ার ব্যবস্থা আছে, বাকিটুকু আপনারা যারা দলের নিবেদিত প্রাণ, যাদের তৃণমূলে গ্রহণযোগ্যতা আছে তারা নির্বাচিত হয়ে আসেন। আমি উন্মুক্ত করে দিলাম এবং প্রত্যেক এলাকায় যেনো আওয়ামীলীগের প্রার্থীর সাথে একজন প্রতিদ্বন্ধী থাকে। এখানে দলীয় কোনো প্রতিবন্ধকতা নেই। প্রধানমন্ত্রীর সেই আশ^াসে উৎসাহিত হয়ে আমি আল্লাহর ওপর ভরসা ও আপনাদের ওপর আস্থা রেখে আগামী ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করছি। জয়ের ব্যাপারে আমি শতভাগ আশাবাদী।
বড়কাপন এলাকার বাসিন্দা মখলিছ মিয়ার সভাপতিত্বে ও শ্রমিক নেতা রুহেল আহমদের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত নির্বাচনী কর্মীসভায় বক্তব্য রাখেন চাতলগাঁও এলাকার বাসিন্দা ও সিনিয়র সাংবাদিক মো. মছব্বির আলী, বড়কাপন গ্রামের মানিক আহমদ, চাতলগাঁও গ্রামের সমাজসেবক সোহেল আহমদ এলাইছ, জগন্নাথপুরের বাসিন্দা রমজান আলী, চাতলগাঁও গ্রামের বাসিন্দা সোনাম আহমদ, সুফিয়ান আহমদ প্রমুখ।
উল্লেখ্য, সফি আহমদ সলমান ২০১৮ সালের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে নৌকার প্রার্থীকে বিপুল ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। এর আগে তিনি উপজেলার কাদিপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৩ বারের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন।