ঢাকা ১১:০২ অপরাহ্ন, বুধবার, ০১ অক্টোবর ২০২৫, ১৬ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
ব্রেকিং নিউজ
সিলেট বিভাগে “সাংবাদিক নির্যাতন প্রতিরোধ সেল বাংলাদেশ”এর সহকারী পরিচালক (সেবা) নির্বাচিত হলেন সাংবাদিক মশাহিদ আহমদ দেনার দায়ে নবজাতককে বিক্রি করলেন মা, ক্লিনিক মালিকের ৬ মাসের কারাদণ্ড ও সহযোগীতাকারী আটক জুড়ীতে সড়ক দুর্ঘটনায় ইমামের মৃ/ত্যু সড়ক দু/র্ঘ/ট/নায় ১ জন নি/হ/ত, গুরুতর আ/হ/ত -২ ১২ অক্টোবর থেকে মৌলভীবাজারে টাইফয়েড টিকাদান ক্যাম্পেইন শুরু মৌলভীবাজারে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময় করলেন এম. নাসের রহমান মৌলভীবাজার পূজা মন্ডপে মিষ্টি উপহার পাঠালেন পৌর বিএনপির সভাপতি সিলেট রেঞ্জ ডিআইজির মৌলভীবাজারের পূজা মণ্ডপ পরিদর্শন আন্তর্জাতিক মানবাধিকার ফাউন্ডেশনের মৌলভীবাজার জেলায় কমিটি গঠন মৌলভীবাজার সদর উপজেলা গেজেটভুক্ত আহত জুলাই যোদ্ধাদের সাথে মতবিনিময়

ডাক্তারদের চেম্বারে ওষুধ কোম্পানির দৌরাত্ম্য: ভুক্তভোগী রোগীরা

নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ০৪:২২:২০ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৭ অগাস্ট ২০২৫
  • / ৯৮ বার পড়া হয়েছে

বাংলাদেশের অনেক ডাক্তার সাহেবদের চেম্বারে প্রতিদিন ভিড় করেন ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধি বা মেডিকেল রিপ্রেজেন্টেটিভরা। তাদের লক্ষ্য একটাই, ডাক্তারের প্রেসক্রিপশনে নিজেদের কোম্পানির ওষুধ নিশ্চিত করা। এজন্য তারা নানা রকম উপহার, আর্থিক সুবিধা বা প্রলোভনের আশ্রয় নেন। অনেক সময় একজন ডাক্তারের সাথে দিনে ৫০-৬০ জন প্রতিনিধি সাক্ষাৎ করতে আসেন। এতে ডাক্তারদের মূল্যবান সময় নষ্ট হয়, আর অপেক্ষমাণ রোগীদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা কষ্ট সহ্য করতে হয়।

অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়, ডাক্তাররা প্রতিনিধিদের সঙ্গে দীর্ঘসময় আলাপচারিতায় ব্যস্ত থাকেন,যা ৩০-৪০ মিনিট অতিবাহিত হয়ে যায়। অথচ এসময় চেম্বারের বাইরে অসুস্থ রোগীরা ভোগান্তিতে পড়েন, উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় অপেক্ষা করতে থাকেন। চিকিৎসা নিতে এসে এমন পরিস্থিতি নিঃসন্দেহে রোগীদের জন্য অমানবিক।

সমস্যার আরও একটি দিক হলো,ডাক্তারদের অনেকেই এই প্রবণতাকে নিরুৎসাহিত করেন না, কারন এতে তাঁরা লাভবান হচ্ছেন । ওষুধ কোম্পানিগুলো প্রচারণা ও উপহারের পেছনে বিপুল অর্থ ব্যয় করে, যার প্রভাব পড়ে ওষুধের দামে। ফলে উৎপাদন খরচ কম হলেও ওষুধ বাজারে চড়া দামে বিক্রি হয়। শেষ পর্যন্ত এর বোঝা বইতে হয় সাধারণ রোগীদেরই।

বিশ্বের উন্নত দেশগুলোতে চিকিৎসকেরা নতুন ওষুধ সম্পর্কে জানতে গবেষণা প্রবন্ধ, বৈজ্ঞানিক কনফারেন্স বা অনলাইন রিসার্সের ওপর নির্ভর করেন। অথচ আমাদের দেশে অনেক সময় কোম্পানির দেওয়া তথ্যই প্রধান ভরসা হয়ে ওঠে। এর সুযোগে কখনো নিম্নমানের বা অকার্যকর ওষুধ রোগীদের প্রেসক্রাইব করা হয়, যার ফলে চিকিৎসা ব্যর্থ হয় এবং রোগীরা আরও ক্ষতিগ্রস্ত হন।

এ অবস্থায় জরুরি ভিত্তিতে কর্তৃপক্ষের উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন। ডাক্তারদের চেম্বারে ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের সীমাহীন প্রবেশাধিকার নিয়ন্ত্রণ করা উচিত। একই সঙ্গে চিকিৎসকদেরও নৈতিকতার প্রতি অটল থেকে রোগীর স্বার্থকে সর্বাগ্রে গুরুত্ব দেয়া একান্ত প্রয়োজন।
কারণ চিকিৎসা কোনো ব্যবসা নয়—এটি মানবসেবার মহৎ দায়িত্ব।

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

ডাক্তারদের চেম্বারে ওষুধ কোম্পানির দৌরাত্ম্য: ভুক্তভোগী রোগীরা

আপডেট সময় ০৪:২২:২০ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৭ অগাস্ট ২০২৫

বাংলাদেশের অনেক ডাক্তার সাহেবদের চেম্বারে প্রতিদিন ভিড় করেন ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধি বা মেডিকেল রিপ্রেজেন্টেটিভরা। তাদের লক্ষ্য একটাই, ডাক্তারের প্রেসক্রিপশনে নিজেদের কোম্পানির ওষুধ নিশ্চিত করা। এজন্য তারা নানা রকম উপহার, আর্থিক সুবিধা বা প্রলোভনের আশ্রয় নেন। অনেক সময় একজন ডাক্তারের সাথে দিনে ৫০-৬০ জন প্রতিনিধি সাক্ষাৎ করতে আসেন। এতে ডাক্তারদের মূল্যবান সময় নষ্ট হয়, আর অপেক্ষমাণ রোগীদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা কষ্ট সহ্য করতে হয়।

অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়, ডাক্তাররা প্রতিনিধিদের সঙ্গে দীর্ঘসময় আলাপচারিতায় ব্যস্ত থাকেন,যা ৩০-৪০ মিনিট অতিবাহিত হয়ে যায়। অথচ এসময় চেম্বারের বাইরে অসুস্থ রোগীরা ভোগান্তিতে পড়েন, উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় অপেক্ষা করতে থাকেন। চিকিৎসা নিতে এসে এমন পরিস্থিতি নিঃসন্দেহে রোগীদের জন্য অমানবিক।

সমস্যার আরও একটি দিক হলো,ডাক্তারদের অনেকেই এই প্রবণতাকে নিরুৎসাহিত করেন না, কারন এতে তাঁরা লাভবান হচ্ছেন । ওষুধ কোম্পানিগুলো প্রচারণা ও উপহারের পেছনে বিপুল অর্থ ব্যয় করে, যার প্রভাব পড়ে ওষুধের দামে। ফলে উৎপাদন খরচ কম হলেও ওষুধ বাজারে চড়া দামে বিক্রি হয়। শেষ পর্যন্ত এর বোঝা বইতে হয় সাধারণ রোগীদেরই।

বিশ্বের উন্নত দেশগুলোতে চিকিৎসকেরা নতুন ওষুধ সম্পর্কে জানতে গবেষণা প্রবন্ধ, বৈজ্ঞানিক কনফারেন্স বা অনলাইন রিসার্সের ওপর নির্ভর করেন। অথচ আমাদের দেশে অনেক সময় কোম্পানির দেওয়া তথ্যই প্রধান ভরসা হয়ে ওঠে। এর সুযোগে কখনো নিম্নমানের বা অকার্যকর ওষুধ রোগীদের প্রেসক্রাইব করা হয়, যার ফলে চিকিৎসা ব্যর্থ হয় এবং রোগীরা আরও ক্ষতিগ্রস্ত হন।

এ অবস্থায় জরুরি ভিত্তিতে কর্তৃপক্ষের উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন। ডাক্তারদের চেম্বারে ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের সীমাহীন প্রবেশাধিকার নিয়ন্ত্রণ করা উচিত। একই সঙ্গে চিকিৎসকদেরও নৈতিকতার প্রতি অটল থেকে রোগীর স্বার্থকে সর্বাগ্রে গুরুত্ব দেয়া একান্ত প্রয়োজন।
কারণ চিকিৎসা কোনো ব্যবসা নয়—এটি মানবসেবার মহৎ দায়িত্ব।