ঢাকা ১১:৫৬ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দেশ নিয়ে আর কাউকে ছিনিমিনি খেলতে দেবো না: শেখ হাসিনা

নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ১২:১৯:২৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ৭ জানুয়ারী ২০২৩
  • / ৪১০ বার পড়া হয়েছে

বাংলাদেশ নিয়ে আর কাউকে ছিনিমিনি খেলতে দেবেন না বলে সতর্ক করেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বলেন, ‘এই মাটিতে (টুঙ্গিপাড়া) বসে এই প্রতিজ্ঞা নিচ্ছি, বাংলাদেশের মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নতি কেউ যাতে গতিরোধ করতে না পারে। তার জন্য আওয়ামী লীগের তৃণমূল পর্যন্ত প্রতিটি নেতাকর্মী সজাগ থাকবে, দৃঢ় থাকবে।’

গোপালগঞ্জের টুঙ্গীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে শনিবার দুপুরে দলের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদ, উপদেষ্টা পরিষদ ও জাতীয় কমিটির এক যৌথসভায় তিনি এসব কথা বলেন।

গত ২৪ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগের ২২তম জাতীয় সম্মেলনে দলের নতুন নেতৃত্ব আসার পর এই প্রথম বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি বিজড়িত টুঙ্গীপাড়ায় যৌথ সভা অনুষ্ঠিত হলো।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশ নিয়ে আর কেউ ছিনিমিনি খেলতে পারবে না। আমরা কাউকে দেশ নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে দেবো না। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নিয়ে দেশ চলবে। যেকোনো অপকর্মের প্রতিরোধ করবে আমরা। এই প্রতিজ্ঞা নিয়ে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তুলবো।’

সভার মুলতবি বক্তব্যে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘এই বিএনপি-জামায়াত ২০১৩ থেকে ১৫ সাল পর্যন্ত অগ্নিসন্ত্রাস করেছিল। তাদেরকে ঘৃণা জানাতে হবে। তারা মানুষকে পুড়িয়ে পুড়িয়ে হত্যা করে মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে।’

‘হত্যা, খুন ও গুম জিয়াউর রহমান শুরু করেছিল। খালেদা জিয়া ও তার পুত্র (তারেক জিয়া) মিলে ২১ আগস্ট থেকে শুরু করে এত মানুষ হত্যা করেছে এবং অত্যাচার নির্যাতন করেছে।’

তিনি বলেন, ‘আগামীতে যদি একটা মানুষকেও তারা ক্ষতিগ্রস্ত করে তাহলে যে হাত দিয়ে আগুন দেবে ওই আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হবে। যে হাতে মানুষ খুন করবে তাদের উপযুক্ত শিক্ষা দেওয়া হবে। এই কথাটা যেন সকলের মনে থাকে।’

বিএনপির আন্দোলনে বাধা দেওয়া হয় না উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তারা (বিএনপি) আন্দোলন করতে চায় আমরা বাধা দিই না। কিন্তু আন্দোলনের নামে যদি আবারও কোনো রকমের নাশকতা করে তাহলে নেতাকর্মীরা প্রতিরোধ করবে।’

‘বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশ। উন্নয়নশীল দেশের ক্ষতি সাধন করতে চায়, আর্থসামজিক ক্ষতি সাধন করতে চায়, তাহলে তাদেরকে উপযুক্ত জবাব বাংলাদেশের জনগণ দেবে।’

২০০৮ সালের নির্বাচনের বিএনপি ৩০ আসনে বিজয়ী হয়েছিল উল্লেখ করে সরকারপ্রধান বলেন, ‘এটা বোধহয় আপনাদের মনে থাকে না। ওই নির্বাচনে বিএনপি মাত্র ২৯টি সিট পেয়েছিল। পরে উপনির্বাচনে পায় একটা। এটাই ছিলো তাদের শক্তি। সে জন্য তারা কোনো নির্বাচন চায় না বা ভিন্ন পথে ক্ষমতায় আসতে চায়।’

এসমসয় প্রধানমন্ত্রী তার সরকারের সময়ে মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা, চিকিৎসার ব্যবস্থা করা, বিনামূল্যে করোনাভাইরাসের টিকা দেওয়াসহ অবকাঠামো উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরেন।

আওয়ামী লীগ দেশের সর্বনাশ করেছে বলে যারা অভিযোগ করে তাদের সমালোচনার জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তারা বলে আওয়ামী লীগ নাকি দেশের সর্বনাশ করেছে। তাহলে মানুষের আর্থসামাজিক উন্নয়ন কী তাদের সর্বনাশ করা? এগুলো কী মানুষের ক্ষতি সাধন করা? তাদের জিজ্ঞেস করতে হবে ক্ষতিটা দেখলো কোথায়?’

‘একই দিন ১০০ সেতু ও ব্রীজ এবং ১০০টি সড়ক উন্নত ও উদ্বোধন করা কী সর্বনাশ? এগুলো জনগণের কাছে তুলে ধরা উচিত। আমরা আছি জনগণের পাশে আর তারা আছে ধ্বংস করতে।’

আগামীতে গোপালগঞ্জে এলে আগে কোটালিপাড়ায় যাবেন বলে নেতাকর্মীদের জানান আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। এসময় আওয়ামী লীগের জাতীয় কমিটি, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদ এবং উপদেষ্টা পরিষদের নেতাদের টুঙ্গিপাড়া সফরের অনুরোধ জানান দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনা।

এর আগে দুপুরে বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদনের পর টুঙ্গিপাড়া ও কোটালিপারায় ২৮টি উন্নয়ন প্রকল্প উদ্বোধন এবং একটি প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী।

প্রায় ১০০ কোটি টাকা ব্যয়ের ২৮ প্রকল্পের মধ্যে ১৯টি প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)। বাকি ৯টি প্রকল্প শিক্ষা ও গণপূর্ত বিভাগ এবং টুঙ্গিপাড়া পৌরসভা বাস্তবায়ন করেছে।

প্রসঙ্গত, প্রসঙ্গত, গত ২৪ ডিসেম্বর দলের ২২তম জাতীয় কাউন্সিলে শেখ হাসিনা টানা দশম মেয়াদে উপমহাদেশের বৃহত্তম রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হন। আর তৃতীয়বারের মতো ওবায়দুল কাদের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে পুনঃনির্বাচিত হন।

নতুন বছরের দলীয় কর্মসূচি নির্ধারণ

যৌথ সভায় নতুন বছরের দলীয় কর্মসূচি নির্ধারণ করা হয়। এর মধ্যে রয়েছে— ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস, ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস, ৭ মার্চ ঐতিহাসিক ভাষণ, ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস, ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবস এবং ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসসহ নানা কর্মসূচি।

 

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

দেশ নিয়ে আর কাউকে ছিনিমিনি খেলতে দেবো না: শেখ হাসিনা

আপডেট সময় ১২:১৯:২৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ৭ জানুয়ারী ২০২৩

বাংলাদেশ নিয়ে আর কাউকে ছিনিমিনি খেলতে দেবেন না বলে সতর্ক করেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বলেন, ‘এই মাটিতে (টুঙ্গিপাড়া) বসে এই প্রতিজ্ঞা নিচ্ছি, বাংলাদেশের মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নতি কেউ যাতে গতিরোধ করতে না পারে। তার জন্য আওয়ামী লীগের তৃণমূল পর্যন্ত প্রতিটি নেতাকর্মী সজাগ থাকবে, দৃঢ় থাকবে।’

গোপালগঞ্জের টুঙ্গীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে শনিবার দুপুরে দলের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদ, উপদেষ্টা পরিষদ ও জাতীয় কমিটির এক যৌথসভায় তিনি এসব কথা বলেন।

গত ২৪ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগের ২২তম জাতীয় সম্মেলনে দলের নতুন নেতৃত্ব আসার পর এই প্রথম বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি বিজড়িত টুঙ্গীপাড়ায় যৌথ সভা অনুষ্ঠিত হলো।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশ নিয়ে আর কেউ ছিনিমিনি খেলতে পারবে না। আমরা কাউকে দেশ নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে দেবো না। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নিয়ে দেশ চলবে। যেকোনো অপকর্মের প্রতিরোধ করবে আমরা। এই প্রতিজ্ঞা নিয়ে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তুলবো।’

সভার মুলতবি বক্তব্যে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘এই বিএনপি-জামায়াত ২০১৩ থেকে ১৫ সাল পর্যন্ত অগ্নিসন্ত্রাস করেছিল। তাদেরকে ঘৃণা জানাতে হবে। তারা মানুষকে পুড়িয়ে পুড়িয়ে হত্যা করে মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে।’

‘হত্যা, খুন ও গুম জিয়াউর রহমান শুরু করেছিল। খালেদা জিয়া ও তার পুত্র (তারেক জিয়া) মিলে ২১ আগস্ট থেকে শুরু করে এত মানুষ হত্যা করেছে এবং অত্যাচার নির্যাতন করেছে।’

তিনি বলেন, ‘আগামীতে যদি একটা মানুষকেও তারা ক্ষতিগ্রস্ত করে তাহলে যে হাত দিয়ে আগুন দেবে ওই আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হবে। যে হাতে মানুষ খুন করবে তাদের উপযুক্ত শিক্ষা দেওয়া হবে। এই কথাটা যেন সকলের মনে থাকে।’

বিএনপির আন্দোলনে বাধা দেওয়া হয় না উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তারা (বিএনপি) আন্দোলন করতে চায় আমরা বাধা দিই না। কিন্তু আন্দোলনের নামে যদি আবারও কোনো রকমের নাশকতা করে তাহলে নেতাকর্মীরা প্রতিরোধ করবে।’

‘বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশ। উন্নয়নশীল দেশের ক্ষতি সাধন করতে চায়, আর্থসামজিক ক্ষতি সাধন করতে চায়, তাহলে তাদেরকে উপযুক্ত জবাব বাংলাদেশের জনগণ দেবে।’

২০০৮ সালের নির্বাচনের বিএনপি ৩০ আসনে বিজয়ী হয়েছিল উল্লেখ করে সরকারপ্রধান বলেন, ‘এটা বোধহয় আপনাদের মনে থাকে না। ওই নির্বাচনে বিএনপি মাত্র ২৯টি সিট পেয়েছিল। পরে উপনির্বাচনে পায় একটা। এটাই ছিলো তাদের শক্তি। সে জন্য তারা কোনো নির্বাচন চায় না বা ভিন্ন পথে ক্ষমতায় আসতে চায়।’

এসমসয় প্রধানমন্ত্রী তার সরকারের সময়ে মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা, চিকিৎসার ব্যবস্থা করা, বিনামূল্যে করোনাভাইরাসের টিকা দেওয়াসহ অবকাঠামো উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরেন।

আওয়ামী লীগ দেশের সর্বনাশ করেছে বলে যারা অভিযোগ করে তাদের সমালোচনার জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তারা বলে আওয়ামী লীগ নাকি দেশের সর্বনাশ করেছে। তাহলে মানুষের আর্থসামাজিক উন্নয়ন কী তাদের সর্বনাশ করা? এগুলো কী মানুষের ক্ষতি সাধন করা? তাদের জিজ্ঞেস করতে হবে ক্ষতিটা দেখলো কোথায়?’

‘একই দিন ১০০ সেতু ও ব্রীজ এবং ১০০টি সড়ক উন্নত ও উদ্বোধন করা কী সর্বনাশ? এগুলো জনগণের কাছে তুলে ধরা উচিত। আমরা আছি জনগণের পাশে আর তারা আছে ধ্বংস করতে।’

আগামীতে গোপালগঞ্জে এলে আগে কোটালিপাড়ায় যাবেন বলে নেতাকর্মীদের জানান আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। এসময় আওয়ামী লীগের জাতীয় কমিটি, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদ এবং উপদেষ্টা পরিষদের নেতাদের টুঙ্গিপাড়া সফরের অনুরোধ জানান দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনা।

এর আগে দুপুরে বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদনের পর টুঙ্গিপাড়া ও কোটালিপারায় ২৮টি উন্নয়ন প্রকল্প উদ্বোধন এবং একটি প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী।

প্রায় ১০০ কোটি টাকা ব্যয়ের ২৮ প্রকল্পের মধ্যে ১৯টি প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)। বাকি ৯টি প্রকল্প শিক্ষা ও গণপূর্ত বিভাগ এবং টুঙ্গিপাড়া পৌরসভা বাস্তবায়ন করেছে।

প্রসঙ্গত, প্রসঙ্গত, গত ২৪ ডিসেম্বর দলের ২২তম জাতীয় কাউন্সিলে শেখ হাসিনা টানা দশম মেয়াদে উপমহাদেশের বৃহত্তম রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হন। আর তৃতীয়বারের মতো ওবায়দুল কাদের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে পুনঃনির্বাচিত হন।

নতুন বছরের দলীয় কর্মসূচি নির্ধারণ

যৌথ সভায় নতুন বছরের দলীয় কর্মসূচি নির্ধারণ করা হয়। এর মধ্যে রয়েছে— ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস, ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস, ৭ মার্চ ঐতিহাসিক ভাষণ, ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস, ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবস এবং ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসসহ নানা কর্মসূচি।