নির্দেশনার প্রথম দিনেই খোলা হয়নি মৌলভীবাজারের ১৯ অফিস অনুপস্থিত ২১ অফিস প্রধান
![](https://newssitedesign.com/newspaperpro/wp-content/themes/newspaper-pro/assets/images/reporter.jpg)
- আপডেট সময় ০৪:৩০:২৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ অগাস্ট ২০২২
- / ৪০১ বার পড়া হয়েছে
![](https://moulvibazar24.com/wp-content/uploads/2023/11/Rahat-rakib-tea.jpg)
বিশেষ প্রতিনিধিঃ জ্বালানি সাশ্রয়ে সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের অফিস সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত খোলার সিদ্ধান্ত নেয়া হয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে।
বুধবার থেকে এ নির্দেশনা কার্যকর হওয়ার কথা রয়েছে। কিন্তু নির্দেশনার প্রথম দিনেই মৌলভীবাজার ও রাজনগর উপজেলার ১৯টি অফিস নির্ধারিত সময়ে খোলা হয়নি। ২১টি অফিস খোলা হলেও চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী ব্যতীত কেউকে পাওয়া যায়নি। এমনও তথ্য রয়েছে সকাল ১০টা পর্যন্ত অনেক অফিস খোলা হয়নি। এভাবেই মৌলভীবাজারে শুরু হয় সরকারি নির্দেশনার প্রথম দিনের কার্যক্রম। সরকারি কর্মকর্তাদের এমন দায়িত্বহীনতায় জেলার সচেতন মহলে নানা প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে।
২২ আগষ্টের নির্দেশনার পূর্বে সকাল ৯টায় অফিসে এসে ৯টা ৪০ মিনিট পর্যন্ত আবশ্যকীয়ভাবে নিজ অফিস কক্ষে অবস্থান করার নিয়ম ছিল।
মন্ত্রিপরিষদের এক পরিপত্রে এমন নির্দেশনা দিয়ে বলা হয়, সেবা গ্রহণকারী নাগরিকদের সুবিধা এবং সরকারি কর্মকান্ডে গতিশীলতা ও সমন্বয় বৃদ্ধির লক্ষ্যে মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা জনস্বার্থে সকাল ৯টায় সরাসরি অফিসে আসবেন এবং আবশ্যকীয়ভাবে ৯টা ৪০ মিনিট পর্যন্ত অফিসে অবস্থান করে অফিসের কার্যক্রম পরিচালনা করবেন। ২০১৯ সালের ২৭ আগষ্টের মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম স্বাক্ষরিত ওই পরিপত্র এ নির্দেশনা জারি করা হয়ে ছিল।
তাই অফিস সময় আগানোয়ে সকাল ৮টায় অফিসে এসে ৮টা ৪০মিনিট পর্যন্ত অফিসে অবস্থান করার কথা। তবে সরকারের এই নির্দেশনাকে আমলে নেননি মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা।
সরেজমিন মৌলভীবাজার সদর উপজেলায় ৮টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত বন্ধ ছিল, উপজেলা পরিসংখ্যান, প্রাথমিক শিক্ষা অফিস, আমার বাড়ি আমার খামার প্রকল্প, বিএডিসি জেলা ও উপজেলা কার্যালয়, পল্লী দারিদ্র বিমোচন ফাউন্ডেশন, উপজেলা পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তার কার্যালয়, পৌর শহরের সেন্ট্রাল রোডে অবস্থিত বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ। এদিকে রাজনগর উপজেলায় ৮টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত বন্ধ ছিল সমাজ সেবা কার্যালয়, পিআইও অফিস, উপজেলা বঙ্গবন্ধু কর্ণার, উপজেলা হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তার কার্যালয়, আমার বাড়ি আমার খামার প্রকল্প, নির্বাচন অফিস, মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস, প্রাণী সম্পদ দপ্তর, মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয় ও উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তার কক্ষ তালাবদ্ধ ছিল।
এদিকে মৌলভীবাজার সদর উপজেলায় ৮টা ১০ মিনিটে সমবায় অফিস খোলা থাকলেও অফিস প্রধান জিতেন্দ্র সরকারকে পাওয়া যায়নি। পরিদর্শক দিপতেন্দ্র কুমার গোপ বলেন “স্যার এখনও আসেননি”। ৮টা ১৩ মিনিটে কৃষি অফিসার সুব্রত কান্তি দত্ত’র কক্ষ খোলা থাকলেও তাকে পাওয়া যায়নি। হাসনা বেগম বলেন আমি ব্যতিত আর কেউ আসেননি। ৮টা ১৫ মিনিটে এলজিইডি অফিস খোলা থাকলেও উপ-সহকারী প্রকৌশলী মোঃ আলমগীর চৌধুরীকে পাওয়া যায়নি। ৮টা ১৬ মিনিটে প্রশাসনিক কর্মকর্তা দক্ষিণা কুমার দেব’কে পাওয়া যায়নি। ৮টা ১৭ মিনিটে মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস খোলা থাকলেও অফিস প্রধান আব্দুস সামাদ মিয়াকে পাওয়া যায়নি। অফিস স্টাফ বাবু সোনা সিংহ বলেন এখনও স্যার আসেননি। ৮টা ১৯ মিনিটে মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয় খোলা থাকলেও অফিস প্রধান মোঃ মারজান সরকারকে পাওয়া যায়নি।
এসময় মৎস্য অফিসের কৃঞ্চপাল বলেন আমি ব্যতিত আর কেউ আসেননি। ৮টা ২০ মিনিটে উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা অফিস খোলা থাকলেও অফিস প্রধান রিপন চন্দ্র দাশ’কে পাওয়া যায়নি। সদর উপজেলা নির্বাচন অফিসে ২ কর্মচারী উপস্থিত থাকলেও অনুপস্থিত ছিলেন ৩জন। ৮টা ৩০ মিনিটে গণপূর্ত কর্মকর্তার কার্যালয়ে গেলে নির্বাহী প্রকৌশলী মাহমুদুল হাসান’কে পাওয়া যায়নি। অফিস সহায়ক অঞ্জন অফিস খোলে বসেছেন। ৮টা ৩৭ মিনিটে জেলা হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তার কার্যালয় খোলা থাকলেও অফিস প্রধান বিলকু তরপদারকে পাওয়া যায়নি। ওই কার্যালয়ে ১৩ জন স্টাফের মধ্যে এসেছেন মাত্র ২জন। ৮টা ৪০ মিনিটে উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তার কার্যালয় খোলা থাকলেও অফিস প্রধান বিনয় কুমার দেবকে পাওয়া যায়নি। ৯টা ১০ মিনিটে পরিবেশ অধিদপ্তরে গেলে অফিস প্রধান মোঃ মাঈদুল ইসলামকে পাওয়া যায়নি। ইন্সপেক্টর নুরুল আমিন বলেন, “স্যার আজ প্রথম মৌলভীবাজার এসে যোগদান করবেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত আসেননি। ৯টা ২০ মিনিটে উপ-কর কমিশনার এনামুল হাসান নোমান’কে পাওয়া যায়নি। ৯টা ২৫ মিনিটে জেলা পরিবার পরিকল্পনা অফিসে গেলে মাত্র ৩জন স্টাফকে পাওয়া যায়। ৯টা ৪০ মিনিটে বীজ উৎপাদন কেন্দ্রে গেলে অফিস প্রধান মোশাররফ হোসেন’কে পাওয়া যায়নি।
এদিকে ৮টা বাজার সাথে সাথে রাজনগর উপজেলার ভুমি, কৃষি, ডাক অফিস, এলজিইডি ও জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলীর অফিস খোলা থাকলেও চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী ব্যতিত আর কাউকে পাওয়া যায়নি।
এবিষয়ে জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান বলেন, মন্ত্রী পরিষদের এই সিদ্ধান্ত নিয়ে একাধিকবার বিভিন্ন দপ্তরের প্রধানদের সাথে কথা হয়েছে। কিন্তু কেন তারা এই নির্দেশনা সঠিকভাবে পালন করেনি আমি দেখতেছি। আগামী দিন থেকে যথাযথাভাবে দায়িত্ব পালনের জন্য ব্যবস্থা নিচ্ছি।
![](https://moulvibazar24.com/wp-content/uploads/2022/12/Untitled-6-×-4-in.gif)