ঢাকা ০২:২৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৯ অক্টোবর ২০২৫, ১৪ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
ব্রেকিং নিউজ
বাই সাইকেলে ৬৪ জেলা ভ্রমণে মৌলভীবাজারের রুহিত মৌলভীবাজার শহরে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান জরিমানা ড্যাবের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মনোনীত হলেন ডা. শাকিল মৌলভীবাজার ডিবির অভিযানে ইয়াবাসহ আ/ট/ক – ১ গৌরব,ঐতিহ্য,সংগ্রাম ও সাফল্যের ৪৭ বছর উদযাপন মৌলভীবাজারে জেলা যুবদলের বর্ণাঢ্য র‍্যালি গণভোট আয়োজন সহ ছয় দফা দাবি খেলাফত মজলিসের বিক্ষোভ মিছিল মৌলভীবাজারের কারাতে চমকপ্রদ সাফল্য ৪ সোনাসহ মোট ২০ পদক মৌলভীবাজার জেলা জামায়াতের বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত কুলাউড়ায় সড়ক দু র্ঘ ট না য় মোটরসাইকেল আরোহীর মৃ ত্যু মৌলভীবাজারে বিএনপির সদস্য সংগ্রহ ও নবায়ন কার্যক্রম বেগবান করতে বিশেষ সভা

নয় মাসে লাউয়াছড়া ন্যাশনাল পার্কে ১০ বন্যপ্রাণীর মৃত্যু

নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ০৮:৩৩:৫৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৫ অক্টোবর ২০২২
  • / ৫৩৫ বার পড়া হয়েছে

মৌলভীবাজার২৪ ডেস্ক:  লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান হয়ে যাওয়া সড়ক রেলপথ ও বিদ্যুতের গ্রিড লাইন দিন দিন বন্যপ্রাণীর মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। অনেক বিরল প্রজাতির বানর হুনুমান অজগর উল্লুক বাঁদুর ট্রেনে কাটা পড়ে অথবা সড়কে মারা যাচ্ছে। বিদ্যুতের তারে জড়িয়েও মাঝেমধ্যে অনেক বন্যপ্রাণী মারা যায়। জাতীয় উদ্যান হয়ে যাওয়া রেলপথ, সড়ক ও বিদ্যুতের জাতীয় গ্রিড লাইন বাইরে নিয়ে যাওয়ার দীর্ঘদিনের দাবি বাস্থবায়নে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ উদাসীন।

বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ, মৌলভীবাজারের তথ্যমতে- গত জানুয়ারি থেকে নয় মাসে লাউয়াছড়ায় সড়কে ও বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে ১০টি বন্যপ্রাণী প্রাণ হারায়। বনের ভেতর দিয়ে রেলপথ ও সড়ক যাওয়ার কারণে বন্যপ্রাণীর অভয়াশ্রম লাউয়াছড়া এখন বন্যপ্রাণীর জন্য এমন ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে।

সচেতন পরিবেশবিদরা মনে করেন, লাউয়াছড়ায় হয়ে যাওয়া ৭ কিলোমিটার রেলপথ ও পাকা সড়কে যানবাহনের গতি নিয়ন্ত্রণ এখন জরুরি হয়ে পড়েছে। পাশাপাশি আঞ্চলিক সড়ক বনের বাইরে নিয়ে গেলে আরও কল্যাণকর। তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, বন্যপ্রাণী অধ্যাদেশ ১৯৭৪ এর ২ ও ৩ ধারা মতে ১৯৯৬ সালের ৭ জুলাই দেশের উত্তরপূর্বাঞ্চলের মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ ও শ্রীমঙ্গল উপজেলার মধ্যবর্তী পশ্চিম ভানুগাছ সংরক্ষিত বনাঞ্চলের ১ হাজার ২৫০ হেক্টর (৩০৮৮ একর) এলাকা জাতীয় উদ্যান তথা ন্যাশনাল পার্ক (প্রকৃতির জন্য সংরক্ষিত এলাকা) ঘোষণা করে তৎকালীন সরকার। সেখানের বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণে নেওয়া হয়েছিল সেই উদ্যোগ। কিন্তু ১৯৯৭ সালে মাগরছড়া গ্যাসকুপে ভয়াবহ বিস্ফোরণ ও অগ্নিকাণ্ডের কারণে বন ও বন্যপ্রাণীর সীমাহীন ক্ষতি হয়- যা এখনো পুষিয়ে ওঠা যায়নি এমন অভিমত বন গবেষকদের।

রাজধানী ঢাকা থেকে প্রায় ১৭১ কিলোমিটার দূরের এই বনে ফেব্রুয়ারি মাসে সর্বোচ্চ ২৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং জুনে ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা বিদ্যমান থাকে।

বনবিভাগ জানায়, লাউয়া ছড়ায় ৪৬০ প্রজাতির জীববৈচিত্র্য রয়েছে। ২৪৬ প্রজাতির পাখি, ৬ প্রজাতির শরীসৃপ ও ৪ প্রজাতির উভচর প্রাণীর বিচরণ এই বনে। এছাড়া এই ক’বছরে ১৬৭ প্রজাতির বন্যপ্রাণী অবমুক্ত করা হয়েছে।

বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) শ্যামল কুমার মিত্র জানান, গত ৮ মাসে এই বনের দুইটি বানর, একটি মুখপুড়া হনুমান, ১টি চশমাপরা হনুমান, একটি উল্টো লেজি বানর একটি গন্ধগোকুল, একটি বেজি ও একটি মেচোবাঘ দুর্ঘটনায় মারা যায়। এরমধ্যে মুখপুড়া হনুমান বিদ্যুতের গ্রিড লাইনে আর বাকি সবগুলো সড়কে প্রাণ হারায়।

বন্যপ্রাণীর নিরাপত্তার জন্য আমরা বনের ভেতর গাড়ির গতি নিয়ন্ত্রণে নানা কর্মসূচি শুরু করেছি। আমরা চাই লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে এলাকায় বাস ট্রেনের গতি কোন অবস্থায় ২০ কিলোমিটারের বেশি হবে না এবং আমরা তা নিশ্চিত করতে চাই।

বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) রেজাউল করিম চৌধুরী লাউয়াছড়া থেকে সড়কপথ সরানোর জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগকে চিঠি দেওয়া হয়েছে।

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

নয় মাসে লাউয়াছড়া ন্যাশনাল পার্কে ১০ বন্যপ্রাণীর মৃত্যু

আপডেট সময় ০৮:৩৩:৫৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৫ অক্টোবর ২০২২

মৌলভীবাজার২৪ ডেস্ক:  লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান হয়ে যাওয়া সড়ক রেলপথ ও বিদ্যুতের গ্রিড লাইন দিন দিন বন্যপ্রাণীর মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। অনেক বিরল প্রজাতির বানর হুনুমান অজগর উল্লুক বাঁদুর ট্রেনে কাটা পড়ে অথবা সড়কে মারা যাচ্ছে। বিদ্যুতের তারে জড়িয়েও মাঝেমধ্যে অনেক বন্যপ্রাণী মারা যায়। জাতীয় উদ্যান হয়ে যাওয়া রেলপথ, সড়ক ও বিদ্যুতের জাতীয় গ্রিড লাইন বাইরে নিয়ে যাওয়ার দীর্ঘদিনের দাবি বাস্থবায়নে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ উদাসীন।

বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ, মৌলভীবাজারের তথ্যমতে- গত জানুয়ারি থেকে নয় মাসে লাউয়াছড়ায় সড়কে ও বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে ১০টি বন্যপ্রাণী প্রাণ হারায়। বনের ভেতর দিয়ে রেলপথ ও সড়ক যাওয়ার কারণে বন্যপ্রাণীর অভয়াশ্রম লাউয়াছড়া এখন বন্যপ্রাণীর জন্য এমন ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে।

সচেতন পরিবেশবিদরা মনে করেন, লাউয়াছড়ায় হয়ে যাওয়া ৭ কিলোমিটার রেলপথ ও পাকা সড়কে যানবাহনের গতি নিয়ন্ত্রণ এখন জরুরি হয়ে পড়েছে। পাশাপাশি আঞ্চলিক সড়ক বনের বাইরে নিয়ে গেলে আরও কল্যাণকর। তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, বন্যপ্রাণী অধ্যাদেশ ১৯৭৪ এর ২ ও ৩ ধারা মতে ১৯৯৬ সালের ৭ জুলাই দেশের উত্তরপূর্বাঞ্চলের মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ ও শ্রীমঙ্গল উপজেলার মধ্যবর্তী পশ্চিম ভানুগাছ সংরক্ষিত বনাঞ্চলের ১ হাজার ২৫০ হেক্টর (৩০৮৮ একর) এলাকা জাতীয় উদ্যান তথা ন্যাশনাল পার্ক (প্রকৃতির জন্য সংরক্ষিত এলাকা) ঘোষণা করে তৎকালীন সরকার। সেখানের বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণে নেওয়া হয়েছিল সেই উদ্যোগ। কিন্তু ১৯৯৭ সালে মাগরছড়া গ্যাসকুপে ভয়াবহ বিস্ফোরণ ও অগ্নিকাণ্ডের কারণে বন ও বন্যপ্রাণীর সীমাহীন ক্ষতি হয়- যা এখনো পুষিয়ে ওঠা যায়নি এমন অভিমত বন গবেষকদের।

রাজধানী ঢাকা থেকে প্রায় ১৭১ কিলোমিটার দূরের এই বনে ফেব্রুয়ারি মাসে সর্বোচ্চ ২৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং জুনে ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা বিদ্যমান থাকে।

বনবিভাগ জানায়, লাউয়া ছড়ায় ৪৬০ প্রজাতির জীববৈচিত্র্য রয়েছে। ২৪৬ প্রজাতির পাখি, ৬ প্রজাতির শরীসৃপ ও ৪ প্রজাতির উভচর প্রাণীর বিচরণ এই বনে। এছাড়া এই ক’বছরে ১৬৭ প্রজাতির বন্যপ্রাণী অবমুক্ত করা হয়েছে।

বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) শ্যামল কুমার মিত্র জানান, গত ৮ মাসে এই বনের দুইটি বানর, একটি মুখপুড়া হনুমান, ১টি চশমাপরা হনুমান, একটি উল্টো লেজি বানর একটি গন্ধগোকুল, একটি বেজি ও একটি মেচোবাঘ দুর্ঘটনায় মারা যায়। এরমধ্যে মুখপুড়া হনুমান বিদ্যুতের গ্রিড লাইনে আর বাকি সবগুলো সড়কে প্রাণ হারায়।

বন্যপ্রাণীর নিরাপত্তার জন্য আমরা বনের ভেতর গাড়ির গতি নিয়ন্ত্রণে নানা কর্মসূচি শুরু করেছি। আমরা চাই লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে এলাকায় বাস ট্রেনের গতি কোন অবস্থায় ২০ কিলোমিটারের বেশি হবে না এবং আমরা তা নিশ্চিত করতে চাই।

বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) রেজাউল করিম চৌধুরী লাউয়াছড়া থেকে সড়কপথ সরানোর জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগকে চিঠি দেওয়া হয়েছে।