ঢাকা ০১:১২ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ০২ এপ্রিল ২০২৫, ১৮ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
ব্রেকিং নিউজ
শ্রীমঙ্গল পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় মামলা প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি মৌলভীবাজারে পর্যটকদের ঢল ২৪ বছর পর কথা বলার সুযোগ হয়েছে – কুলাউড়ায় জামায়াতে ইসলামীর আমির দীর্ঘ প্রায় আঠারো বছর পরে ঈদের জামাত পড়ার সুযোগ পেয়েছি -এম নাসের রহমান অতিরিক্ত পিপি হলেন এডভোকেট নিয়ামুল হক শাহ মোস্তফা পৌর ঈদগাহে হাজার মানুষের ঢল,তিনটি জামাত অনুষ্ঠিত গ্রেটার সিলেট ডেভেলপয়েন্ট এন্ড ওয়েলফেয়ার কাউন্সিল (জিএসসি) ইন ইউকে এর অর্থায়নে খাদ্য সামগ্রী ও নগদ অর্থ  বিতরণ সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের মাঝে ঊষার আলো সমাজকল্যাণ সংগঠনের ঈদের আনন্দ ৬০ ঘন্টা বন্ধ থাকবে গ্যাস সরবরাহ সোমবার পবিত্র ঈদুল ফিতর

প্রেমের টানে ভারতীয় তরুণী

নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ০৪:২৩:৫২ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৩ জুলাই ২০২৩
  • / ৫১৮ বার পড়া হয়েছে

প্রেমের কাছে বাধা মানেনি দুই দেশের মাঝখানে স্থাপন করা আন্তর্জাতিক সীমানার কাঁটাতার। ভালোবাসার টানে সুনামগঞ্জের প্রেমিকের বাড়িতে ছুটে এসেছেন ভারতীয় আব্দুল কাশিম শেখের কন্যা কারিশমা শেখ (১৯)। তিন বছর আগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পরিচয় হয় সুনামগঞ্জের ছেলে আশরাফুল আলমের (২৬) সঙ্গে। সেই পরিচয় থেকে প্রেম। প্রেমকে পরিণয়ে রুপ দিতে দুই দিনের পথ পাড়ি দিয়ে ভারতের আসাম রাজ্যের গোহাটির বালিডাঙ্গা গ্রাম থেকে সুনামগঞ্জে এসেছে কারিশমা।

 

প্রেমের শত বাধা কাটিয়ে অবেশেষে তিন বছরের প্রচেষ্টা সফল হয়েছে তার। বৈধভাবে বাংলাদেশ এসে আশরাফুল আলমকে ইসলামী শরিয়ত অনুযায়ী বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছেন দুজনে। এতো দূর পরিবার পরিজন ছেড়ে আশরাফুলের বাড়িতে আসায় মানবিক দিক বিবেচনা করে কারিশমাকে মেনে নিয়েছে শ্বশুর বাড়ির লোকজন। আশরাফুলের বাড়ি সুনামগঞ্জের বিশ্বম্ভপুর উপজেলার ধনপুর ইউনিয়নের চরাগাঁও। তিনি ডিগ্রি দ্বিতীয় বর্ষে অধ্যয়নরত। বিদেশি বউ গ্রামে আসায় খুশি গ্রামের মানুষ।

ভারতীয় তরুণী কারিশমা শেখ জানান, তিনি ভারতের আসাম প্রদেশের ডিকেরায় হায়ার সেকেন্ডারি স্কুল থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন। তার বাবা আব্দুল কাচিম শেখ এলাকার একটি জামে মসজিদে ইমামতি করেন। দুই ভাই এক বোনের মধ্যে কারিশমা শেখ সবার বড়। কাউকে না জানিয়েই বাংলাদেশে চলে আসেন তিনি। গোহাটি হয়ে কলকাতা যান। পরে কলকাতা থেকে বেনাপোল সীমান্তে আসতে দুই দিন সময় লেগেছে তার। বেনাপোল থেকে তাকে বাড়িতে নিয়ে আসে প্রেমিক আশরাফুল। ভালোবাসার জন্য সবকিছু করতে রাজি কারিশমা পাসপোর্ট, ভিসা করেছেন নিজে নিজেই। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে একা এতোদূর চলে আসেন এই তরুণী। এখন একটাই চাওয়া এদেশে আজীবনের জন্য থাকতে চান তিনি। সেই জন্য বৈবাহিক সূত্রে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব দিতে সরকারের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি।

 

আশরাফুল আলম বলেন, ৩ বছর আগে প্রথমে ফেসবুকে পরিচয় আমাদের। পরে তার মোবাইল নম্বর নিলাম। এরপর থেকে আমাদের মধ্যে একটা ভালোবাসার সম্পর্ক তৈরি হয়। এরপর থেকেই নিয়মিত যোগাযোগ ছিল। এখন সে বৈধভাবে বেনাপোল দিয়ে বাংলাদেশে এসেছে। সেখান থেকে আমার বাড়ি নিয়ে এলে প্রথমে পরিবার মানেনি। অনেক বোঝানোর পর সবাই মেনে নিছে। এখন তার বাংলাদেশের নাগরিকত্ব পাওয়াটাই আমাদের আশা।

 

জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দেশ, পরিবার ও আত্মীয়-স্বজনের মায়া ত্যাগ করে প্রেমের টানে বাংলাদেশে আসা ভারতীয় এই তরুণীকে নিজের সন্তানের মতো করে গ্রহণ করেছেন আশরাফুলের পরিবার। ভারতীয় তরুণীকে জীবনসঙ্গি হিসেবে পেয়ে আশরাফুল আলমও বেশ খুশি। আজীবন এক সঙ্গে থাকতে স্ত্রী কারিশমা শেখকে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব প্রদানে সরকার ও সংশ্লিষ্টদের প্রতি অনুরোধ এই প্রেমিক যুগলের।

 

এ বিষয়ে ধনপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. মিলন মিয়া বলেন, কয়েকদিন আগে আমার ইউনিয়নে এক ভারতীয় মেয়ে এসেছে শুনেছি। পরে পুলিশ সঙ্গে নিয়ে তার বৈধতা যাছাই করে দেখলাম তার সব কিছু বৈধ আছে। বৈধভাবে বাংলাদেশে এসে বিয়ে করেছে। তারা সুখে শান্তিতে স্থায়ীভাবে বসবাস করতে এবং নাগরিকত্ব পেতে আমাদের ইউনিয়ন পরিষদ থেকে যতটুকু সহযোগিতা করা দরকার আমরা করবো।

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

প্রেমের টানে ভারতীয় তরুণী

আপডেট সময় ০৪:২৩:৫২ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৩ জুলাই ২০২৩

প্রেমের কাছে বাধা মানেনি দুই দেশের মাঝখানে স্থাপন করা আন্তর্জাতিক সীমানার কাঁটাতার। ভালোবাসার টানে সুনামগঞ্জের প্রেমিকের বাড়িতে ছুটে এসেছেন ভারতীয় আব্দুল কাশিম শেখের কন্যা কারিশমা শেখ (১৯)। তিন বছর আগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পরিচয় হয় সুনামগঞ্জের ছেলে আশরাফুল আলমের (২৬) সঙ্গে। সেই পরিচয় থেকে প্রেম। প্রেমকে পরিণয়ে রুপ দিতে দুই দিনের পথ পাড়ি দিয়ে ভারতের আসাম রাজ্যের গোহাটির বালিডাঙ্গা গ্রাম থেকে সুনামগঞ্জে এসেছে কারিশমা।

 

প্রেমের শত বাধা কাটিয়ে অবেশেষে তিন বছরের প্রচেষ্টা সফল হয়েছে তার। বৈধভাবে বাংলাদেশ এসে আশরাফুল আলমকে ইসলামী শরিয়ত অনুযায়ী বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছেন দুজনে। এতো দূর পরিবার পরিজন ছেড়ে আশরাফুলের বাড়িতে আসায় মানবিক দিক বিবেচনা করে কারিশমাকে মেনে নিয়েছে শ্বশুর বাড়ির লোকজন। আশরাফুলের বাড়ি সুনামগঞ্জের বিশ্বম্ভপুর উপজেলার ধনপুর ইউনিয়নের চরাগাঁও। তিনি ডিগ্রি দ্বিতীয় বর্ষে অধ্যয়নরত। বিদেশি বউ গ্রামে আসায় খুশি গ্রামের মানুষ।

ভারতীয় তরুণী কারিশমা শেখ জানান, তিনি ভারতের আসাম প্রদেশের ডিকেরায় হায়ার সেকেন্ডারি স্কুল থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন। তার বাবা আব্দুল কাচিম শেখ এলাকার একটি জামে মসজিদে ইমামতি করেন। দুই ভাই এক বোনের মধ্যে কারিশমা শেখ সবার বড়। কাউকে না জানিয়েই বাংলাদেশে চলে আসেন তিনি। গোহাটি হয়ে কলকাতা যান। পরে কলকাতা থেকে বেনাপোল সীমান্তে আসতে দুই দিন সময় লেগেছে তার। বেনাপোল থেকে তাকে বাড়িতে নিয়ে আসে প্রেমিক আশরাফুল। ভালোবাসার জন্য সবকিছু করতে রাজি কারিশমা পাসপোর্ট, ভিসা করেছেন নিজে নিজেই। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে একা এতোদূর চলে আসেন এই তরুণী। এখন একটাই চাওয়া এদেশে আজীবনের জন্য থাকতে চান তিনি। সেই জন্য বৈবাহিক সূত্রে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব দিতে সরকারের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি।

 

আশরাফুল আলম বলেন, ৩ বছর আগে প্রথমে ফেসবুকে পরিচয় আমাদের। পরে তার মোবাইল নম্বর নিলাম। এরপর থেকে আমাদের মধ্যে একটা ভালোবাসার সম্পর্ক তৈরি হয়। এরপর থেকেই নিয়মিত যোগাযোগ ছিল। এখন সে বৈধভাবে বেনাপোল দিয়ে বাংলাদেশে এসেছে। সেখান থেকে আমার বাড়ি নিয়ে এলে প্রথমে পরিবার মানেনি। অনেক বোঝানোর পর সবাই মেনে নিছে। এখন তার বাংলাদেশের নাগরিকত্ব পাওয়াটাই আমাদের আশা।

 

জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দেশ, পরিবার ও আত্মীয়-স্বজনের মায়া ত্যাগ করে প্রেমের টানে বাংলাদেশে আসা ভারতীয় এই তরুণীকে নিজের সন্তানের মতো করে গ্রহণ করেছেন আশরাফুলের পরিবার। ভারতীয় তরুণীকে জীবনসঙ্গি হিসেবে পেয়ে আশরাফুল আলমও বেশ খুশি। আজীবন এক সঙ্গে থাকতে স্ত্রী কারিশমা শেখকে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব প্রদানে সরকার ও সংশ্লিষ্টদের প্রতি অনুরোধ এই প্রেমিক যুগলের।

 

এ বিষয়ে ধনপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. মিলন মিয়া বলেন, কয়েকদিন আগে আমার ইউনিয়নে এক ভারতীয় মেয়ে এসেছে শুনেছি। পরে পুলিশ সঙ্গে নিয়ে তার বৈধতা যাছাই করে দেখলাম তার সব কিছু বৈধ আছে। বৈধভাবে বাংলাদেশে এসে বিয়ে করেছে। তারা সুখে শান্তিতে স্থায়ীভাবে বসবাস করতে এবং নাগরিকত্ব পেতে আমাদের ইউনিয়ন পরিষদ থেকে যতটুকু সহযোগিতা করা দরকার আমরা করবো।