ঢাকা ০৮:৫৭ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
ব্রেকিং নিউজ

ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে প্রমাণ দিতে হলো আমি বেঁচে আছি: হানিফ সংকেত

নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ০২:৩৩:১৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৫ মে ২০২২
  • / ৩৯১ বার পড়া হয়েছে

দেশের নন্দিত উপস্থাপক, লেখক ও নাট্যকার হানিফ সংকেতের মৃত্যুর গুজব ছড়িয়েছে। মঙ্গলবার (২৪ মে) রাত থেকেই ফেসবুকে অনেকে তার মৃত্যু নিয়ে পোস্ট দিচ্ছেন। তবে খবরটির কোনো ভিত্তি নেই।

বিষয়টি নিশ্চিত করতে হানিফ সংকেট নিজেই জানিয়েছেন, সম্পূর্ণ সুস্থ-স্বাভাবিক আছেন। গুজব থেকে সাবধান থাকতেও আহ্বান জানিয়েছেন এই খ্যাতিমান ব্যক্তিত্ব।

এদিকে বুধবার (২৫ মে) দুপুরে নিজের ফেসবুক পেজে বিষয়টি নিয়ে স্টেটমেন্ট দিয়েছেন হানিফ সংকেত। সেখানে তিনি লিখেছেন, ‘আমার ভাবতে কষ্ট হচ্ছে আমাকে স্ট্যাটাস দিয়ে প্রমাণ দিতে হলো, আমি বেঁচে আছি। আমার মৃত্যু নিয়ে এ ধরণের স্ট্যাটাস কখনও দিতে হবে ভাবিনি।’

তিনি লিখেছেন, ‘সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারকারী এক শ্রেণির বিকৃত মানসিকতার মানুষ তাদের ভিউ ব্যবসা ও ফলোয়ার বাড়াবার প্রত্যাশায় মানুষের মৃত্যু নিয়ে মিথ্যে ও বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়িয়ে অসামাজিক কাজ করছে। ছড়িয়েছে আমার মৃত্যু সংবাদ। একজন সুস্থ মানুষকে মেরে ফেলার পেছনে এদের কি ধরণের মানসিকতা কাজ করে আমার বোধগম্য নয়। তারা কী একবারও চিন্তা করে না আমাদেরও পরিবার আছে, আত্মীয়-স্বজন আছে, শুভাকাঙ্ক্ষী আছে? এ ধরণের সংবাদে তাদের মানসিক অবস্থা কি হতে পারে?’

নন্দিত এ উপস্থাপক লেখেন, ‘আমি আপনাদের সবার দোয়া ও ভালোবাসায় সুস্থ আছি। ভালো আছি। আমার কোনরকম কোন দুর্ঘটনাও ঘটেনি। গত দু’দিন ধরে আমি ও আমার পরিবার এই মৃত্যু গুজবের কারণে নিদারুণ মানসিক কষ্টে আছি। শত শত মানুষ যোগাযোগ করেছেন, এখনও করছেন। সুস্থতা কামনা করছেন। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে শুধুমাত্র ভিউ, লাইক, শেয়ার পাবার জন্য একজন মানুষকে এরা মেরে ফেলবে? এ কি ধরণের মানসিকতা? নাকি এদের অন্য কোন উদ্দেশ্য আছে?’

এর আগেও কয়েকজন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বের মৃত্যুর গুজব ছড়ানোর বিষয়টিও তিনি তার পোস্টে তুলে ধরেন, ‘এর আগেও বেশ কয়েকজন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বের মৃত্যুর আগেই মৃত্যুর গুজব ছড়িয়েছে একটি মহল। সময় এসেছে এদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হবার। যেসব মাধ্যম এবং পেজ থেকে এ ধরণের সংবাদ আপলোড হচ্ছে, শেয়ার হচ্ছে তাদের আপনারা বুঝিয়ে দিন, না জেনে না শুনে নিশ্চিত না হয়ে কোন কিছু শেয়ার করা শুধু অন্যায় নয়, অপরাধও। দেশ বিদেশ থেকে আমার অনেক শুভাকাঙ্ক্ষী, আত্মীয়-স্বজন ও ভালোবাসার মানুষরা আমাকে সমবেদনা জানিয়েছেন। ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।’

হানিফ সংকেত লেখেন, “আমার আকস্মিক মৃত্যু গুজবে যারা কষ্ট পেয়েছেন, সমবেদনা জানিয়েছেন সবার প্রতি আমার আন্তরিক কৃতজ্ঞতা। আর যারা এ ধরণের গুজব ছড়িয়েছে তাদের প্রতি অন্তর থেকে ঘৃণা প্রকাশ করছি। ইতোমধ্যে আমি সাইবার ক্রাইম কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। তারা শিগগিরই ব্যবস্থা নেবেন বলে আমাকে আশ্বস্ত করেছেন। আর একটি অনুরোধ, ‘গুজবে কখনও কান দিবেন না’। আপনারা আমার জন্য দোয়া করবেন। আপনাদের দোয়া ও ভালোবাসাই আমার পাথেয়।”

উপস্থাপক হিসেবে হানিফ সংকেত অসামান্য খ্যাতি লাভ করেছেন। তার সঞ্চালিত ‘ইত্যাদি’ দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে জনপ্রিয় ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান। এছাড়া তিনি বহু নাটক নির্মাণ করেছেন। তাকে দেখা গেছে সিনেমায় অভিনেতা হিসেবেও।

লেখক হিসেবে হানিফ সংকেতের পরিচিতি মোটা দাগে উল্লেখযোগ্য। ১৯৯৫ সাল থেকে তিনি বই প্রকাশ করে আসছেন। তার রচিত গ্রন্গুথের সংখ্যা এক ডজনের বেশি।

সামাজিক কার্যক্রমের জন্য হানিফ সংকেত ২০১০ সালে সম্মানজনক রাষ্ট্রীয় মর্যাদা একুশে পদকে ভূষিত হন। এছাড়া ২০১৪ সালে তিনি জাতীয় পরিবেশ পদক লাভ করেন।

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে প্রমাণ দিতে হলো আমি বেঁচে আছি: হানিফ সংকেত

আপডেট সময় ০২:৩৩:১৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৫ মে ২০২২

দেশের নন্দিত উপস্থাপক, লেখক ও নাট্যকার হানিফ সংকেতের মৃত্যুর গুজব ছড়িয়েছে। মঙ্গলবার (২৪ মে) রাত থেকেই ফেসবুকে অনেকে তার মৃত্যু নিয়ে পোস্ট দিচ্ছেন। তবে খবরটির কোনো ভিত্তি নেই।

বিষয়টি নিশ্চিত করতে হানিফ সংকেট নিজেই জানিয়েছেন, সম্পূর্ণ সুস্থ-স্বাভাবিক আছেন। গুজব থেকে সাবধান থাকতেও আহ্বান জানিয়েছেন এই খ্যাতিমান ব্যক্তিত্ব।

এদিকে বুধবার (২৫ মে) দুপুরে নিজের ফেসবুক পেজে বিষয়টি নিয়ে স্টেটমেন্ট দিয়েছেন হানিফ সংকেত। সেখানে তিনি লিখেছেন, ‘আমার ভাবতে কষ্ট হচ্ছে আমাকে স্ট্যাটাস দিয়ে প্রমাণ দিতে হলো, আমি বেঁচে আছি। আমার মৃত্যু নিয়ে এ ধরণের স্ট্যাটাস কখনও দিতে হবে ভাবিনি।’

তিনি লিখেছেন, ‘সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারকারী এক শ্রেণির বিকৃত মানসিকতার মানুষ তাদের ভিউ ব্যবসা ও ফলোয়ার বাড়াবার প্রত্যাশায় মানুষের মৃত্যু নিয়ে মিথ্যে ও বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়িয়ে অসামাজিক কাজ করছে। ছড়িয়েছে আমার মৃত্যু সংবাদ। একজন সুস্থ মানুষকে মেরে ফেলার পেছনে এদের কি ধরণের মানসিকতা কাজ করে আমার বোধগম্য নয়। তারা কী একবারও চিন্তা করে না আমাদেরও পরিবার আছে, আত্মীয়-স্বজন আছে, শুভাকাঙ্ক্ষী আছে? এ ধরণের সংবাদে তাদের মানসিক অবস্থা কি হতে পারে?’

নন্দিত এ উপস্থাপক লেখেন, ‘আমি আপনাদের সবার দোয়া ও ভালোবাসায় সুস্থ আছি। ভালো আছি। আমার কোনরকম কোন দুর্ঘটনাও ঘটেনি। গত দু’দিন ধরে আমি ও আমার পরিবার এই মৃত্যু গুজবের কারণে নিদারুণ মানসিক কষ্টে আছি। শত শত মানুষ যোগাযোগ করেছেন, এখনও করছেন। সুস্থতা কামনা করছেন। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে শুধুমাত্র ভিউ, লাইক, শেয়ার পাবার জন্য একজন মানুষকে এরা মেরে ফেলবে? এ কি ধরণের মানসিকতা? নাকি এদের অন্য কোন উদ্দেশ্য আছে?’

এর আগেও কয়েকজন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বের মৃত্যুর গুজব ছড়ানোর বিষয়টিও তিনি তার পোস্টে তুলে ধরেন, ‘এর আগেও বেশ কয়েকজন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বের মৃত্যুর আগেই মৃত্যুর গুজব ছড়িয়েছে একটি মহল। সময় এসেছে এদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হবার। যেসব মাধ্যম এবং পেজ থেকে এ ধরণের সংবাদ আপলোড হচ্ছে, শেয়ার হচ্ছে তাদের আপনারা বুঝিয়ে দিন, না জেনে না শুনে নিশ্চিত না হয়ে কোন কিছু শেয়ার করা শুধু অন্যায় নয়, অপরাধও। দেশ বিদেশ থেকে আমার অনেক শুভাকাঙ্ক্ষী, আত্মীয়-স্বজন ও ভালোবাসার মানুষরা আমাকে সমবেদনা জানিয়েছেন। ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।’

হানিফ সংকেত লেখেন, “আমার আকস্মিক মৃত্যু গুজবে যারা কষ্ট পেয়েছেন, সমবেদনা জানিয়েছেন সবার প্রতি আমার আন্তরিক কৃতজ্ঞতা। আর যারা এ ধরণের গুজব ছড়িয়েছে তাদের প্রতি অন্তর থেকে ঘৃণা প্রকাশ করছি। ইতোমধ্যে আমি সাইবার ক্রাইম কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। তারা শিগগিরই ব্যবস্থা নেবেন বলে আমাকে আশ্বস্ত করেছেন। আর একটি অনুরোধ, ‘গুজবে কখনও কান দিবেন না’। আপনারা আমার জন্য দোয়া করবেন। আপনাদের দোয়া ও ভালোবাসাই আমার পাথেয়।”

উপস্থাপক হিসেবে হানিফ সংকেত অসামান্য খ্যাতি লাভ করেছেন। তার সঞ্চালিত ‘ইত্যাদি’ দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে জনপ্রিয় ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান। এছাড়া তিনি বহু নাটক নির্মাণ করেছেন। তাকে দেখা গেছে সিনেমায় অভিনেতা হিসেবেও।

লেখক হিসেবে হানিফ সংকেতের পরিচিতি মোটা দাগে উল্লেখযোগ্য। ১৯৯৫ সাল থেকে তিনি বই প্রকাশ করে আসছেন। তার রচিত গ্রন্গুথের সংখ্যা এক ডজনের বেশি।

সামাজিক কার্যক্রমের জন্য হানিফ সংকেত ২০১০ সালে সম্মানজনক রাষ্ট্রীয় মর্যাদা একুশে পদকে ভূষিত হন। এছাড়া ২০১৪ সালে তিনি জাতীয় পরিবেশ পদক লাভ করেন।