বিএনপি যদি রাস্ট্র ক্ষমতায় যায় তাহলে আমরা এই পুলিশ কে বিএনপির পুলিশ বানাবো না – জি কে গউছ

- আপডেট সময় ০৭:২৯:৪৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৭ অগাস্ট ২০২৫
- / ৪৬ বার পড়া হয়েছে

বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক আলহাজ জি কে গউছ বলেছেন- আওয়ামী লীগ যেখানে ব্যর্থ হয়েছে বিএনপি সেখানেই সফল হয়েছে। আর আওয়ামী লীগ ভোটের অধিকার আর গনতন্ত্র হত্যা করে বিএনপির লক্ষ লক্ষ নেতাকর্মীর ওপরে গায়েবি মামলা,ভুতুড়ে মামলা, মিথ্যা মামলা, ঘটনা ছাড়া ভিত্তিহীন মামলা দিয়ে কোনঠাসা করার চেষ্টা করেছে। পাশাপাশি ঘুম করেছে,খুন করেছে।
এতোকিছুর করেও বিএনপি কোন নেতাকর্মীদের আওয়ামী লীগে ভিড়াতে পারেনি। এটাই হচ্ছে, বিএনপির বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের রাজনীতি।
ররিবার দুপুরে স্থানীয় মক্তদির বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে অনুষ্ঠিত মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলা বিএনপির দ্বি- বার্ষিক সম্মেলন ও কাউন্সিল অধিবেশনে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেতে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
জি কে গউছ বলেন -গনতন্ত্রের সৌন্দর্য হচ্ছে, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা। ভিন্ন ভিন্ন মত থাকবে। এই পুলিশ আজকে রাস্ট্রের পুলিশ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছে। অথচ এক বছর আগের কথা একবার চিন্তা করুন এই পুলিশ সাক্ষাৎ জমের ভুমিকায় ছিল। কিভাবে বিএনপির মিছিলে নির্বিচারে গুলি করেছে। টিয়ার শেল নিক্ষেপ করেছে। ব্যানার কেড়ে নিয়েছে। এটা কোন দিন ভুলে যাওয়া যাবে না। পুলিশ আমাদের প্রতিপক্ষ নয়। আমরা পুলিশকে রাস্ট্রের পুলিশ হিসেবে দেখতে চাই। আগামীতে যদি বিএনপি রাস্ট্র ক্ষমতায় যায় তাহলে বিএনপির পুলিশ আমরা এই পুলিশ কে বানাবো না। পুলিশ জনগণের বন্ধু,জনগণের সেবক। পুলিশ একটি দলের কর্মী হতে পারে না।
গউছ বলেন – শেখ হাসিনা যখন এক কাপড়ে পালিয়ে যায় তার আগেই অনেক থানা থেকে হাসিনার পুলিশ হাসিনাকে রেখে পালিয়ে গেছে। খেয়াল রাখবেন, এগুলো ইতিহাস।তিনি আরও বলেন- বাংলাদেশের মানুষ যখনই নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পেরেছে, কোনো ষড়যন্ত্র চক্রান্ত বিএনপি কে দমিয়ে রাখতে পারে নাই।
গউছ বলেন – বিএনপি ধৈর্য ধরছে,এটা দুর্বলতা নয়। মুরব্বিদের প্রতিশ্রদ্ধাশীল না থাকলে, দেশের প্রতি ভালবাসা না থাকলে এর রেজাল্ট ভালো হয় না।
তিনি বলেন – আওয়ামী লীগ পালিয়ে গিয়েছে,কিন্তু সব আওয়ামী লীগ বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে যায়নি। ওরা খোলস পাল্টিয়েছে। ওরা নিজেরা বাঁচার জন্য এখন একটু থেমে আগাচ্ছে। এদের দিকে আমাদের বিশেষ খেয়াল রাখতে হবে।
তিনি বলেন- আগামী ফেব্রুয়ারী মাসে যদি জাতীয় নির্বাচন না হয়,তাহলে সব চেয়ে বেশি সুবিধা ভোগ করবে আওয়ামী লীগ ও তার দোসরা। প্রশাসনে ঘাপটি মেরে যারা বিগত ১৬টি বছর মানুষের জান মাল ইজ্জত আব্রু কেড়ে নিয়েছিল, তারা চায় না এদেশে গনতন্ত্র ফিরে আসুক। জনগণের ভোটের নির্বাচিত একটা গনতান্ত্রিক সরকার রাস্ট্রীয় দায়িত্ব পালন করুক, তারা অনেকই চায় না।
জি কে গউছ বলেন-পুলিশের বাধা,তথা কথিত আইন শৃঙ্খলা বাহিনী বাড়াবাড়ি ব্যাতীত হাতুড়ি লীগ,চাপাতি লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ,পান্ডালীগ, কোনো লীগের বাধা ছাড়া মুক্ত আকাশে ১৬ বছর বিএনপি সম্মেলন করতে পারছে ।
গউছ বলেন- সীমা লংঘন কারী কে আল্লাহ কখনো ছাড় দেন নি। হাসিনা কে আমরা বার বার বলার চেষ্টা করেছি। কে শুনে কার কথা। হাসিনা একেক সময় একেক কথা বলেছে। কোনো সময় বলেছে,২০২১ সাল,কোনো সময় বলেছে ২০৪১ সাল। মানুষের জীবন যেখানে ক্ষণস্থায়ী ক্ষমতা চিরস্থায়ী হতে পারে না। এই কথাটা আওয়ামী লীগ বুঝে নাই। পুলিশ সহ সেই সময় যারা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দায়িত্বে ছিলেন, প্রশাসনের দায়িত্বে ছিলেন তাদেরকেও বুঝতে দেয়া হয়নি। এতোটা বেপরোয়া তারা হয়েছিল। আমরা একটা দলীয় নেতার জন্য যদি আল্লাহর মাগফেরাত কামনা করে একটা দোয়ার আয়োজন করেছি সেখানেও তারা হামলে পড়েছে। সেই জায়গায় বাধা দিয়েছে। মানববন্ধন থেকে শুরু করে দোয়া দুরুদ পর্যন্ত বন্ধ করে দিয়েছিল। সবার চোখ ফাঁকি দেয়া যাবে আল্লাহর চোখ ফাঁকি দেয়া যায় না। যেমন কর্ম তেমন ফল। এই পতিত আওয়ামী লীগ এতটা দম্ভ করেছিল। বলেছিল হাসিনা পালায় না। এমন পালানি পালিয়েছে কোলের বাচ্চা থেকে শুরু করে বয়োজ্যেষ্ঠ নেতা আওয়ামী লীগের শেখ হাসিনার পরিবারের একজন মানুষও এদেশের মাটিতে নেই। চৌদ্দ গোষ্ঠী সহ পুরো প্যাকেজ পালিয়ে আত্ম রক্ষার জন্য ভারত সহ অন্যান্য দেশে আশ্রয় নিয়েছে। এটাই হচ্ছে আওয়ামী লীগ।
জুড়ী উপজেলা বিএনপি আহবায়ক ডা: মোস্তাকিম হোসেন বাবুলের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য সাবেক এম পি এম নাসের রহমান, জেলা বিএনপির আহবায়ক ফয়জুল করিম ময়ুন, সদস্য সচিব আব্দুর রহিম রিপন।
অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান মিজান,জেলা বিএনপির সাবেক সহ সভাপতি এড. আবেদ রাজা,জেলা বিএনপির সাবেক সহ সভাপতি নাসির উদ্দীন মিঠু,আলহাজ আব্দুল মুকিত। এদিকে দীর্ঘদিন পর জুড়ী উপজেলা বিএনপির
সম্মেলনকে ঘিরে নেতাকর্মীদের মাঝে ছিল ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা। উপজেলা ছয়টি ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড থেকে সম্মেলন ও কাউন্সিলে যোগ দেয়।
