ঢাকা ১০:০৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ২২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ১০ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
ব্রেকিং নিউজ
খেলাধুলা সামাজিক অবক্ষয় থেকে যুব সমাজকে দূরে রাখবে’ মহসিন মিয়া মধু মোস্তফাপুর ইউনিয়ন জামায়াতের ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প ও সহযোগী সদস্য সমাবেশ অনুষ্ঠিত মৌলভীবাজারে ৬৬ লক্ষ টাকা লুট,ঘটনা রহস্যজনক স্বৈরাচার হাসিনা সরকার মানুষের অধিকার এতোটাই হরণ করেছিল যে ভাষা দিবসে শহীদ মিনারে ফুল দিতে পর্যন্ত দেয়নি – এম নাসের রহমান খেলার মাঠ থেকে মসজিদ পর্যন্ত এমন কোন জায়গা ছিল না, যেখানে দলীয় করণ ছিল না – জিকে গউস বিএনপি এখন বাংলাদেশের বড় রাজনৈতিক শক্তি,তাকে চ্যালেঞ্জ করার মতো কেউ নেই – এম নাসের রহমান মৌলভীবাজারে পঞ্চকবি’র সাংস্কৃ‌তিক আয়োজন শনিবার মৌলভীবাজারে প্রথম প্রহরে ভাষা শহীদদের ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা কুলাউড়ায় সরকারি জমি উদ্ধার গ্রে ফ তা র হতে নিজেই আদালত প্রাঙ্গণে যাবেন জামায়াত আমির

মাছ আর ভেড়া চাষে বদলে গেছে জামির হোসেনের পরিবার

নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ০৮:২৯:৪৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪
  • / ১৬৭ বার পড়া হয়েছে

কোটচাঁদপুর প্রতিনিধিঃ
মাছ আর ভেড়া চাষে বদলে গেছে জামির হোসেনের পরিবার। উদ্যোক্তাদের অনুকরণীয় হতে পারেন ওই পরিবারটি। প্রথমত স্বপ্ন থাকতে হবে,আর ওই স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে পারলেই সফলতা আসবেই বলে জানালেন উদ্যোক্তা জামির হোসেন । এই পরিবারটি বসবাস করেন কোটচাঁদপুর উপজেলার সংলগ্ন চুয়াডাঙ্গার বাটিকাডাঙ্গা গ্রামে।
জানা যায়,কোটচাঁদপুর উপজেলার দোড়া ইউনিয়নের ভোমরাডাঙ্গা বাজার। ওই বাজার সংলগ্ন গ্রামের বাসিন্দা জামির হোসেনের পরিবার। সে বাটিকাডাঙ্গা গ্রামের ওমর আলীর ছেলে। জামির হোসেন। বয়স ৩২ বছর।
তিন ভাই ও এক বোনের মধ্যে জামির হোসেন সবার ছোট। লেখা পড়া বেশি দুর করতে পারেনি সে। পরিবারের উপর অভিমান করে ২০০৬ সালের দিকে ঢাকা চলে যান জামির হোসেন। কাজ নেন গার্মেন্টসে। পাশাপাশি করতেন ব্যবসা। এভাবে চলে দীর্ঘ ১০ বছর।
এরপর ২০১৬ সালের দিকে বাড়িতে এসে ব্যবসার সাথে শুরু করেন মাছের চাষ। সেই থেকে আর পিছন ফিরে দেখতে হয়নি তাঁর। বর্তমানে ৯০ বিঘা পুকুরে মাছের চাষ করছেন জামির হোসেনের । এ ছাড়া  ৯০ টি ভাড়া, গরু ও ছাগল রয়েছে তাদের ফার্মে। যা দেখা শোনো করেন পিতা ওমর আলী।
এ সব নিয়ে উদ্যোক্তাতা জামির হোসেন বলেন, তিন ভাই এক বোন আর পিতা – মাতা নিয়ে আমাদের পরিবার। পিতা ছিলেন দিন মুজুর। আমরা বড় হওয়ার পর লেখা পড়ার পাশাপাশি কাজ শুরু করি।
তবে কোন এক কারনে জীবনে লেখা পড়া বেশি দুর করা হয়নি। এরপর ২০০৬ সালের দিকে পরিবারের মানুষদের উপর অভিমান করে ঢাকা চলে যায়। ওখানে গিয়ে গার্মেন্টেসে কাজ শুরু করি। পাশাপাশি ছিল ব্যবসা।
২০১৬ সালের দিকে বাড়িতে ফিরে এসে ব্যবসার পাশাপাশি শুরু করি মাছের চাষ। ব্যবসা ও মাছ চাষের বিনিয়োগ নিয়ে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, ঢাকাতে থাকতে কিছু টাকা জমিয়ে ছিলাম। সেই টাকা দিয়ে প্রথমে ৩০ বিঘা পুকুর বর্গা নিয়ে চাষ শুরু করেছিলাম। গেল ৭ বছরে তা বেড়ে হয়েছে ৯০ বিঘা জমি। বর্তমানে আমি ওই ৯০ বিঘা জমিতে মাছে চাষ করছি।
আর পিতা ওমর আলী আমাদের ছোট বেলা থেকেই ভেড়া চাষ করতেন। আমি শুনেছিলাম মাত্র ৫ টি ভেড়া পালন করতেন। এখন তাঁর খামারেও রয়েছে ছোট বড় ৯০ টি ভেড়া।
জামির হোসেন বলেন,বর্তমানে আমার আরো দুই ভাই আমির হোসেন ও জমির হোসেনও মাছ চাষের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন। তাদেরও রয়েছে পৃথক পুকুর।
ওই উদ্যোক্তা বলেন,এখন আমাদের পুরো পরিবারটি মাছ আর ভেড়া চাষ নিয়েই আছি। নতুন উদ্যোক্তাদের নিয়ে আমার কি পরামর্শ, এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, প্রথমত স্বপ্ন থাকতে হবে,আর ওই স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে পারলেই সফলতা আসবেই।
তিনি আরো বলেন, স্বপ্ন দেখে যদি কেউ মোবাইল আর চায়ের দোকানে সময় নস্ট করেন। তাহলে কোন দিন স্বপ্ন সফল হবে না। সফল হতে হলে স্বপ্ন বাস্তবায়নে কাজ করে যেতে হবে।
ওই গ্রামের পল্লী চিকিৎসক আব্দুল ওয়াদুদ হোসেন বলেন,ওমর আলী ছিলেন দিন মুজুর। তিন ছেলে আর এক মেয়ে তাঁর। প্রথম জীবনে তিনি দিন মুজুর করে জীবিকা চালাত। আর সেই সময় থেকে দুই একটা করে ভেড়ার চাষ করতেন। এখন অনেক ভেড়া রয়েছে তাঁর ঘরে।
এ ছাড়া জামির হোসেন নামের এক ছেলে ঢাকা থেকে ফিরে এসে শুরু করেন মাছের চাষ। আর সেটা দেখে অনুপ্রেনিত হয়ে আরো দুই ভাই আমির হোসেন ও জমির হোসেনও মাছ চাষ করছেন। এখন পুরো পরিবার মাছ আর ভেড়া চাষ করছেন। আর ওই চাষেই বদলে গেছে তাদের পরিবার এটা বলা যায়।
কোটচাঁদপুর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা দীন ইসলাম বলেন,আমি এই উপজেলায় নতুন যোগদান করেছি। সব জায়গায় এখনও যাওয়া হয়নি। এ ধরনের উদ্যোগকে অবশ্যই সাধুবাদ জানানো উচিত। আপনারা বিষয়টি বললেন,আমি অবশ্যই ওই এলাকায় গিয়ে খোঁজ খবর নিবো এবং আমার সাধ্যমত ওনার জন্য যা করার সেটা করবো।

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

মাছ আর ভেড়া চাষে বদলে গেছে জামির হোসেনের পরিবার

আপডেট সময় ০৮:২৯:৪৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪

কোটচাঁদপুর প্রতিনিধিঃ
মাছ আর ভেড়া চাষে বদলে গেছে জামির হোসেনের পরিবার। উদ্যোক্তাদের অনুকরণীয় হতে পারেন ওই পরিবারটি। প্রথমত স্বপ্ন থাকতে হবে,আর ওই স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে পারলেই সফলতা আসবেই বলে জানালেন উদ্যোক্তা জামির হোসেন । এই পরিবারটি বসবাস করেন কোটচাঁদপুর উপজেলার সংলগ্ন চুয়াডাঙ্গার বাটিকাডাঙ্গা গ্রামে।
জানা যায়,কোটচাঁদপুর উপজেলার দোড়া ইউনিয়নের ভোমরাডাঙ্গা বাজার। ওই বাজার সংলগ্ন গ্রামের বাসিন্দা জামির হোসেনের পরিবার। সে বাটিকাডাঙ্গা গ্রামের ওমর আলীর ছেলে। জামির হোসেন। বয়স ৩২ বছর।
তিন ভাই ও এক বোনের মধ্যে জামির হোসেন সবার ছোট। লেখা পড়া বেশি দুর করতে পারেনি সে। পরিবারের উপর অভিমান করে ২০০৬ সালের দিকে ঢাকা চলে যান জামির হোসেন। কাজ নেন গার্মেন্টসে। পাশাপাশি করতেন ব্যবসা। এভাবে চলে দীর্ঘ ১০ বছর।
এরপর ২০১৬ সালের দিকে বাড়িতে এসে ব্যবসার সাথে শুরু করেন মাছের চাষ। সেই থেকে আর পিছন ফিরে দেখতে হয়নি তাঁর। বর্তমানে ৯০ বিঘা পুকুরে মাছের চাষ করছেন জামির হোসেনের । এ ছাড়া  ৯০ টি ভাড়া, গরু ও ছাগল রয়েছে তাদের ফার্মে। যা দেখা শোনো করেন পিতা ওমর আলী।
এ সব নিয়ে উদ্যোক্তাতা জামির হোসেন বলেন, তিন ভাই এক বোন আর পিতা – মাতা নিয়ে আমাদের পরিবার। পিতা ছিলেন দিন মুজুর। আমরা বড় হওয়ার পর লেখা পড়ার পাশাপাশি কাজ শুরু করি।
তবে কোন এক কারনে জীবনে লেখা পড়া বেশি দুর করা হয়নি। এরপর ২০০৬ সালের দিকে পরিবারের মানুষদের উপর অভিমান করে ঢাকা চলে যায়। ওখানে গিয়ে গার্মেন্টেসে কাজ শুরু করি। পাশাপাশি ছিল ব্যবসা।
২০১৬ সালের দিকে বাড়িতে ফিরে এসে ব্যবসার পাশাপাশি শুরু করি মাছের চাষ। ব্যবসা ও মাছ চাষের বিনিয়োগ নিয়ে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, ঢাকাতে থাকতে কিছু টাকা জমিয়ে ছিলাম। সেই টাকা দিয়ে প্রথমে ৩০ বিঘা পুকুর বর্গা নিয়ে চাষ শুরু করেছিলাম। গেল ৭ বছরে তা বেড়ে হয়েছে ৯০ বিঘা জমি। বর্তমানে আমি ওই ৯০ বিঘা জমিতে মাছে চাষ করছি।
আর পিতা ওমর আলী আমাদের ছোট বেলা থেকেই ভেড়া চাষ করতেন। আমি শুনেছিলাম মাত্র ৫ টি ভেড়া পালন করতেন। এখন তাঁর খামারেও রয়েছে ছোট বড় ৯০ টি ভেড়া।
জামির হোসেন বলেন,বর্তমানে আমার আরো দুই ভাই আমির হোসেন ও জমির হোসেনও মাছ চাষের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন। তাদেরও রয়েছে পৃথক পুকুর।
ওই উদ্যোক্তা বলেন,এখন আমাদের পুরো পরিবারটি মাছ আর ভেড়া চাষ নিয়েই আছি। নতুন উদ্যোক্তাদের নিয়ে আমার কি পরামর্শ, এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, প্রথমত স্বপ্ন থাকতে হবে,আর ওই স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে পারলেই সফলতা আসবেই।
তিনি আরো বলেন, স্বপ্ন দেখে যদি কেউ মোবাইল আর চায়ের দোকানে সময় নস্ট করেন। তাহলে কোন দিন স্বপ্ন সফল হবে না। সফল হতে হলে স্বপ্ন বাস্তবায়নে কাজ করে যেতে হবে।
ওই গ্রামের পল্লী চিকিৎসক আব্দুল ওয়াদুদ হোসেন বলেন,ওমর আলী ছিলেন দিন মুজুর। তিন ছেলে আর এক মেয়ে তাঁর। প্রথম জীবনে তিনি দিন মুজুর করে জীবিকা চালাত। আর সেই সময় থেকে দুই একটা করে ভেড়ার চাষ করতেন। এখন অনেক ভেড়া রয়েছে তাঁর ঘরে।
এ ছাড়া জামির হোসেন নামের এক ছেলে ঢাকা থেকে ফিরে এসে শুরু করেন মাছের চাষ। আর সেটা দেখে অনুপ্রেনিত হয়ে আরো দুই ভাই আমির হোসেন ও জমির হোসেনও মাছ চাষ করছেন। এখন পুরো পরিবার মাছ আর ভেড়া চাষ করছেন। আর ওই চাষেই বদলে গেছে তাদের পরিবার এটা বলা যায়।
কোটচাঁদপুর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা দীন ইসলাম বলেন,আমি এই উপজেলায় নতুন যোগদান করেছি। সব জায়গায় এখনও যাওয়া হয়নি। এ ধরনের উদ্যোগকে অবশ্যই সাধুবাদ জানানো উচিত। আপনারা বিষয়টি বললেন,আমি অবশ্যই ওই এলাকায় গিয়ে খোঁজ খবর নিবো এবং আমার সাধ্যমত ওনার জন্য যা করার সেটা করবো।