লাখাইয়ে যান্ত্রিক মেশিনে বোরো ধান কাটা শুরু, ধান ঘরে তুলতে ব্যস্ত কৃষক
- আপডেট সময় ০৫:৩১:১৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪
- / ১৫২ বার পড়া হয়েছে
এম এ ওয়াহেদ লাখাইঃ লাখাইয়ে যান্ত্রিক মেশিনে বোরো ধান কাটা শুরু । লাখাই, মোড়াকরি,মুড়িয়াউক, বামৈ, করাব ও বুল্লা ইউনিয়নে প্রতিটি ফসলী মাঠ সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে কৃষকগন যান্ত্রিক হাড়ভেষ্টার মেশিন দিয়ে বোরোধান কর্তন করতে দেখা গেছে। এক সময় লাখাই বুল্লা, করাব ও বামৈ ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল জমিতে বোরোধান ফসলের আবাদ হতো কিন্তু বর্তমানে যান্ত্রিক যুগে ও বাংলাদেশ সরকারের প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষনা প্রতি ইঞ্চি জমি যেন পতিত না থাকে এই শ্লোগান কে সামনে রেখে স্থানীয় কৃষি অধিদপ্তর কর্মকর্তা ও ইউনিয়ন কৃষি উপ-সহকারী কর্মকর্তাগন মাঠ পর্যায়ে অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলে বর্তমানে লাখাই উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নে এখন ইরি বোরোধান চাষে আগ্রহী হয়ে পরছেন কৃষকগন। বর্তমান সরকার কৃষি বান্ধব সরকার তাই এ বছর উপজেলার প্রায় ৬ হাজার প্রান্তিক কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে সার বীজ ও কীটনাশক ও বিভিন্ন কৃষি উপকরণ সহ নানা সুযোগ সুবিধা পাওয়ায় উপজেলার কৃষকগন খাস জমি ব্যতিত সব জমিতে বোরোধান আবাদের আওতায় আনা সম্ভব হয়েছে। এ ছাড়া ও বোরোধান চাষাবাদে আগ্রহ বেড়েছে ধান কাটা, ধানের জমিতে নিড়ানি সহ যান্ত্রিক সুবিধা সৃষ্টি হওয়ায়। বর্তমান সরকার কৃষকদের কে ভর্তুকি মূল্যে হাড়ভেষ্টার মেশিন সেচ পাম্প সহ বিভিন্ন যন্ত্রাংশ কৃষি অধিদপ্তর প্রদান করায় দিন দিন কৃষকদের মাঝে কৃষি কাজে আগ্রহ বাড়ছে। এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি অধিদপ্তরের কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোঃ মাহমুদুল হাসান মিজান এর সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, এ উপজেলায় বর্তমানে ৬০ টি হাড়ভেষ্টার মেশিন বোরোধান কর্তন করে যাচ্ছে এবং প্রতি বিঘা জমির ধান কাটার জন্য ১৫ শত টাকা নির্ধারণ করে দিয়েছি। এ বিষয়ে স্থানীয় কৃষকদের সাথে আলাপ কালে তারা জানান, যান্ত্রিক মেশিন দ্বারা বোরোধান কাটতে পারায় আমাদের খরচ ও সময় উভয় দিক থেকে লাভবান হচ্ছি। এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোঃ মাহমুদুল হাসান মিজান এর সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, এ বছর লাখাই উপজেলার বোরোধান আবাদে চাষের আওতায় আনা হয়েছে ১১২০৮ হেক্টর জম। আবাদকৃত বোরোধানের উল্লেখযোগ্য জাত সমুহ ব্রিধান ৮৮,৮৯,৯২,৯৬ ও বঙ্গবন্ধু ধান ১০০ বিনা ২৪,২৫ এ ছাড়াও হাইব্রিড ধানের মধ্যে হীরা এসএল ৮ সুরভী ০১ ইত্যাদি। তিনি আরো জানান এ বছর লাখাই উপজেলায় বঙ্গবন্ধু ১০০ ধান পরীক্ষা মূলক ভাবে বীজ সংরক্ষণ করার জন্য একশত হেক্টর জমিতে বোরোধান চাষাবাদ করা হয়েছে।কৃষকদের কে কি কি ধরনের পরামর্শ দিয়ে থাকেন জানতে চাইলে তিনি জানান, আমরা কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে কৃষক ভাইদের বোরোধান আবাদে করনীয় সম্পর্কে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি বিশেষ করে বীজ বপনের পূর্বে বীজ শোধন, আদর্শ বীজতলা, লাইনে রোপন ১০ লাইন পর পর এক লাইন ফাঁকা, পার্চিং। এ ছাড়াও এ বছর ব্রিধান ২৮,২৯ চাষে কৃষক ভাইদের নিরুৎসাহিত করেছি এর কারন এই দুইটি জাতের ব্লাষ্ট রোগের প্রাদুর্ভাব বেশী।এই দুইটি জাতের পরিবর্তে আমরা বিকল্প জাত হিসেবে ব্রিধান ৮৮৷ ৮৯ ৯২, ও বিনা ২৫ আবাদের পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি। এ বিষয়ে উপজেলা ভাদিকারা গ্রামের বঙ্গবন্ধু একশ ধান সংরক্ষণ কৃষক গ্রুপের কৃষক আলাউদ্দিন এর সাথে আলাপ কালে তিনি এ প্রতিনিধি কে জানান বঙ্গবন্ধু একশ ধান চাষ করেছি এখন পর্যন্ত জমির ফসল ধানের শীষ বের হচ্ছ, অন্যান্য জাতের ধানের তুলনায় বঙ্গবন্ধু একশ ধানটি খুব ভাল ফলন হয়েছে। এ ব্যাপারে লাখাই কৃষি অফিসের কৃষি উপ-সহকারী প্রশান্ত বাবু আমাদের গ্রুপের সবাইকে নিয়মিত পরামর্শ দিয়েছেন। কৃষিবিদ মোঃ মাহমুদুল হাসান মিজান আরো জানান, এ বছর উপজেলায় বোরোধান আবাদে লক্ষ্য মাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৫০৪৩৬ মেঃ টন ধান। উপজেলার চাহিদা মিটিয়ে ১৮ হাজার মেঃ টন ধান উদ্বৃত্ত থাকবে বলে আমি আশাবাদী। গত বছর আমাদের লক্ষ্য মাত্রা ছিল ১০ হাজার ১শত ৩৯ হেক্টর কিন্তু গত বছর থেকে এ বছর ১১ শ হেক্টর জমিতে চাষাবাদের আওতায় আনতে পেরেছি। বর্তমানে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় বোরোধান ভাল ফলন হওয়ায় এ বছর লক্ষ্য মাত্রা থেকে বেশী বোরোধান উৎপাদন হবে বলে আমি আশাবাদী। তিনি আরো জানান এখন পর্যন্ত নিম্নাঞ্চল বোরোধান প্রায় ৬০ ভাগ ধান কাটা হয়েছে।