ঢাকা ০১:৫৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৫, ২৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
ব্রেকিং নিউজ
কমলগঞ্জ বিদেশি সিগারেটসহ আটক – ২ একাটুনা মেগা ৫ম ফুটবল টুর্নামেন্ট এর ফাইনাল খেলার পুরুস্কার বিতরণ সাবিয়া নাইট মিনিবার ফুটবল টুর্নামেন্ট সিজন ৬ এর শুভ উদ্বোধন মৌলভীবাজারে তিন দিনব্যাপী‘হারমোনি ফেস্টিভ্যাল’শুরু সিলেট বিমানবন্দর থেকে অভিনেত্রী আটক বাংলাদেশ স্কাউটস কমিশনার রেজুয়ান সম্পাদক আয়েশা সিদ্দিকা নির্বাচিত মৌলভীবাজারে আসছেন জাতীয় নাগরিক কমিটি মূখ্য সংগঠক সারজিস আলম মুহূর্তের মধ্যে লন্ডনের দৃশ্য ছড়িয়ে পড়ে বিশ্বময় ভোটার নিবন্ধন প্রক্রিয়ায় চ্যালেঞ্জ এবং চ্যালেঞ্জ উত্তরণের উপায়” শীর্ষক দিনব্যাপী কর্মশালা মেধাবী শিক্ষার্থী ও পথ শিশুদের মাঝে শীতবস্ত্র উপহার

শ্রীমঙ্গল আ.লীগ নেতার সংবাদ সম্মেলন, মখন মিয়ার বিরুদ্ধে ভূমিহীনদের জমি দখলের অভিযোগ

নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ১০:৩২:৪১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৫ অগাস্ট ২০২৩
  • / ৩৭৩ বার পড়া হয়েছে

শ্রীমঙ্গল প্রতিনিধিঃ শ্রীমঙ্গলে উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি মোঃ ইউছুফ আলীর সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শনিবার ৫ আগষ্ট সকাল ১১ টায় শহরের ভানুগাছ রোডস্থ জেলা পরিষদ অডিটোরিয়ামে সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামীলীগ নেতা মোঃ ইউসুফ আলী অভিযোগ করে বলেন শ্রীমঙ্গলের ব্যাবসায়ী মোঃ মখন মিয়া অবৈধভাবে নানা সম্পদ গড়ে তুলেছেন। মোঃ ইউছুফ আলী দুপুরে জেলা পরিষদ অডিটোরয়িামে এক জনাকীর্ণ সংবাদ সম্মেলনে করে শহরের মিশন রোড এলাকার মৃত নূর মিয়ার ছেলে মখন মিয়ার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করে বলেন, মখন মিয়া বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে বিতর্কীত ভূমিকার কারণে নিজ এলাকা সিলেট কুশাইন গ্রাম থেকে বিতাড়িত হয়ে শ্রীমঙ্গলে এসে আশ্রয় নেন।

এরশাদ সরকারের আমলে হবিগঞ্জ জেলার বাহুবল উপজেলার ফয়েজাবাদ হিলে সরকারী খাস ভূমিতে ভূমিহীনরা দিদারাবাদ ও সুন্দরাবাদ নামে ২টি গ্রাম তৈরী করে বসবাস করে আসছিল। মখন মিয়া ও তার লাঠিয়াল বাহিনী তাদেরকে উচ্ছেদ করে সেখানে লেবুর বাগান করেন। ১৯৯২ সালে ওই এলাকার আক্রাম উল্লাহর সুন্দরী স্ত্রী মিনারা খাতুনকে মখন মিয়া জোরপূর্বক অপহরণসহ নিখোঁজ করেন। আজ পর্যন্ত মিনারা খাতুনের কোন খোঁজ মিলেনি বলে তিনি জানান। মখন মিয়া ওই এলাকায় ফিনলে টি কোম্পানির ফয়জাবাদ চা বাগানের প্রায় ২০০ একর জমি তিনি জবর দখল করে লেবু ও আনারস বাগান গড়ে তুলেছেন। তিনি উপজেলার উত্তরসুর মৌজাতে বিসিক শিল্প নগরীর পাশে হিন্দু সম্প্রদায়ের ট্রাস্টের নিকট দানকৃত দেবোত্তর সম্পত্তির প্রায় ৩ একর ভূমি জবর দখল করে ফসল উৎপাদন করছেন বলেও লিখিত অভিযোগে জানান মোঃ ইউছুফ আলী।

তিনি আরো বলেন, হবিবপুর মৌজার ভূমিহীনদের বরাদ্ধকৃত ৩০ একর জমিতে গড়ে তুলেছেন বিশাল মাছের ফিশারী,শহরের সেন্ট্রাল রোডে এনিমি সম্পত্তি দখল করে মার্কেট নির্মাণ করে লাখ টাকা ভাড়া আদায় করছেন। এছাড়া তিনি সরকারের ৮১ লক্ষ টাকা রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে উপজেলার তিনটি ছড়া থেকে মেশিন দিয়ে প্রতি দিন লক্ষ লক্ষ টাকার বালু ও মাটি উত্তোলন করে বিক্রি করছেন বলে জানান। মখন মিয়া ও তার সহযোগি ফুল মিয়া পরিবেশ বিপর্যয় করে ছড়ার স্বাভাবিক পানি প্রবাহ ব্যাহত করে বাঁধ দিয়ে মাটি ও বালু উত্তোলন করে মানুষের ফসলি জমি,ব্রিজ,কালর্ভাট ও রাস্তা ঘাটের ক্ষতি সাধন করছেন।

এ ব্যাপারে মখন মিয়া ও ফুল মিয়ার এ অবৈধ কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে তিনি লিখিতভাবে প্রশাসনের নিকট অভিযোগ করেন। তার এসব অভিযোগের কারনে ফুল মিয়া, মখন মিয়া ও তাদের সন্ত্রাসী বাহিনী গত ৮ জুলাই সাইটুলা এলাকায় ইউসুফ আলীর আত্মীয় জালাল মিয়াকে হামলা করে আহত করে। তিনি বলেন, তাদের এসব অবৈধকর্মকান্ডের প্রতিবাদ করায় মখন মিয়া গত ১০ জুলাই তার বিরুদ্ধে মিথ্যা ও মানহানিকর সংবাদ সম্মেলন করে। তিনি ফিনলে টি কোম্পানি ও প্রশাসনের নিকট জোর দাবী জানান, মখন মিয়ার কবল থেকে সরকারি খাস জমি উদ্ধার করে ভূমিহীনদের পুনবার্সন করতে। সংবাদ সম্মেলনে শহস্রাধিক স্থানীয় লোকজন সহ এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন ফয়জাবাদ হিলের ভিকটিম মিনারা বেগমের স্বামী আক্রাম উল্লাহ, তার ছেলে লুৎফুর রহমান, মুক্তিযোদ্ধা আবু শহিদ আব্দুল্লাহ, মুক্তিযোদ্ধা এম এ মতলিব, মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার কুমুদ রঞ্জণ, মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর হাকিম, মুক্তিযোদ্ধা ফটিক মিয়া, মুক্তিযোদ্ধা লিয়াকত আলী ও ব্যবসায়ী মুসাব্বির আল মাসুদ প্রমুখ।

সংবাদ সম্মেলনের নানা অভিযোগ নিয়ে মখন মিয়ার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, এসব অভিযোগ মিথ্যা এবং এসব অভিযোগ অস্বীকার করে মোঃ ইউসুফ আলীর বিরুদ্ধে আইনের আশ্রয় নিবেন বলে জানান।

এ ব্যাপারে শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত দায়িত্বে) সহকারি কমিশনার সন্দ্বীপ কুমার তালুকদার জানান, ভূমিহীনদের নামে বরাদ্ধকৃত জায়গা কেউ দখলে রাখতে পারবে না, অভিযোগ পেলে তদন্ত পূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান।

হবিগঞ্জ জেলা প্রশাসক দেবী চন্দ্র জানান, সরকারি খাস জায়গা যদি বন্দোবস্তো না থাকে তাহলে অভিযোগ পেলে তদন্ত করে জমি উদ্ধারের ব্যবস্থা নেয়া হবে।

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

শ্রীমঙ্গল আ.লীগ নেতার সংবাদ সম্মেলন, মখন মিয়ার বিরুদ্ধে ভূমিহীনদের জমি দখলের অভিযোগ

আপডেট সময় ১০:৩২:৪১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৫ অগাস্ট ২০২৩

শ্রীমঙ্গল প্রতিনিধিঃ শ্রীমঙ্গলে উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি মোঃ ইউছুফ আলীর সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শনিবার ৫ আগষ্ট সকাল ১১ টায় শহরের ভানুগাছ রোডস্থ জেলা পরিষদ অডিটোরিয়ামে সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামীলীগ নেতা মোঃ ইউসুফ আলী অভিযোগ করে বলেন শ্রীমঙ্গলের ব্যাবসায়ী মোঃ মখন মিয়া অবৈধভাবে নানা সম্পদ গড়ে তুলেছেন। মোঃ ইউছুফ আলী দুপুরে জেলা পরিষদ অডিটোরয়িামে এক জনাকীর্ণ সংবাদ সম্মেলনে করে শহরের মিশন রোড এলাকার মৃত নূর মিয়ার ছেলে মখন মিয়ার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করে বলেন, মখন মিয়া বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে বিতর্কীত ভূমিকার কারণে নিজ এলাকা সিলেট কুশাইন গ্রাম থেকে বিতাড়িত হয়ে শ্রীমঙ্গলে এসে আশ্রয় নেন।

এরশাদ সরকারের আমলে হবিগঞ্জ জেলার বাহুবল উপজেলার ফয়েজাবাদ হিলে সরকারী খাস ভূমিতে ভূমিহীনরা দিদারাবাদ ও সুন্দরাবাদ নামে ২টি গ্রাম তৈরী করে বসবাস করে আসছিল। মখন মিয়া ও তার লাঠিয়াল বাহিনী তাদেরকে উচ্ছেদ করে সেখানে লেবুর বাগান করেন। ১৯৯২ সালে ওই এলাকার আক্রাম উল্লাহর সুন্দরী স্ত্রী মিনারা খাতুনকে মখন মিয়া জোরপূর্বক অপহরণসহ নিখোঁজ করেন। আজ পর্যন্ত মিনারা খাতুনের কোন খোঁজ মিলেনি বলে তিনি জানান। মখন মিয়া ওই এলাকায় ফিনলে টি কোম্পানির ফয়জাবাদ চা বাগানের প্রায় ২০০ একর জমি তিনি জবর দখল করে লেবু ও আনারস বাগান গড়ে তুলেছেন। তিনি উপজেলার উত্তরসুর মৌজাতে বিসিক শিল্প নগরীর পাশে হিন্দু সম্প্রদায়ের ট্রাস্টের নিকট দানকৃত দেবোত্তর সম্পত্তির প্রায় ৩ একর ভূমি জবর দখল করে ফসল উৎপাদন করছেন বলেও লিখিত অভিযোগে জানান মোঃ ইউছুফ আলী।

তিনি আরো বলেন, হবিবপুর মৌজার ভূমিহীনদের বরাদ্ধকৃত ৩০ একর জমিতে গড়ে তুলেছেন বিশাল মাছের ফিশারী,শহরের সেন্ট্রাল রোডে এনিমি সম্পত্তি দখল করে মার্কেট নির্মাণ করে লাখ টাকা ভাড়া আদায় করছেন। এছাড়া তিনি সরকারের ৮১ লক্ষ টাকা রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে উপজেলার তিনটি ছড়া থেকে মেশিন দিয়ে প্রতি দিন লক্ষ লক্ষ টাকার বালু ও মাটি উত্তোলন করে বিক্রি করছেন বলে জানান। মখন মিয়া ও তার সহযোগি ফুল মিয়া পরিবেশ বিপর্যয় করে ছড়ার স্বাভাবিক পানি প্রবাহ ব্যাহত করে বাঁধ দিয়ে মাটি ও বালু উত্তোলন করে মানুষের ফসলি জমি,ব্রিজ,কালর্ভাট ও রাস্তা ঘাটের ক্ষতি সাধন করছেন।

এ ব্যাপারে মখন মিয়া ও ফুল মিয়ার এ অবৈধ কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে তিনি লিখিতভাবে প্রশাসনের নিকট অভিযোগ করেন। তার এসব অভিযোগের কারনে ফুল মিয়া, মখন মিয়া ও তাদের সন্ত্রাসী বাহিনী গত ৮ জুলাই সাইটুলা এলাকায় ইউসুফ আলীর আত্মীয় জালাল মিয়াকে হামলা করে আহত করে। তিনি বলেন, তাদের এসব অবৈধকর্মকান্ডের প্রতিবাদ করায় মখন মিয়া গত ১০ জুলাই তার বিরুদ্ধে মিথ্যা ও মানহানিকর সংবাদ সম্মেলন করে। তিনি ফিনলে টি কোম্পানি ও প্রশাসনের নিকট জোর দাবী জানান, মখন মিয়ার কবল থেকে সরকারি খাস জমি উদ্ধার করে ভূমিহীনদের পুনবার্সন করতে। সংবাদ সম্মেলনে শহস্রাধিক স্থানীয় লোকজন সহ এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন ফয়জাবাদ হিলের ভিকটিম মিনারা বেগমের স্বামী আক্রাম উল্লাহ, তার ছেলে লুৎফুর রহমান, মুক্তিযোদ্ধা আবু শহিদ আব্দুল্লাহ, মুক্তিযোদ্ধা এম এ মতলিব, মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার কুমুদ রঞ্জণ, মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর হাকিম, মুক্তিযোদ্ধা ফটিক মিয়া, মুক্তিযোদ্ধা লিয়াকত আলী ও ব্যবসায়ী মুসাব্বির আল মাসুদ প্রমুখ।

সংবাদ সম্মেলনের নানা অভিযোগ নিয়ে মখন মিয়ার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, এসব অভিযোগ মিথ্যা এবং এসব অভিযোগ অস্বীকার করে মোঃ ইউসুফ আলীর বিরুদ্ধে আইনের আশ্রয় নিবেন বলে জানান।

এ ব্যাপারে শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত দায়িত্বে) সহকারি কমিশনার সন্দ্বীপ কুমার তালুকদার জানান, ভূমিহীনদের নামে বরাদ্ধকৃত জায়গা কেউ দখলে রাখতে পারবে না, অভিযোগ পেলে তদন্ত পূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান।

হবিগঞ্জ জেলা প্রশাসক দেবী চন্দ্র জানান, সরকারি খাস জায়গা যদি বন্দোবস্তো না থাকে তাহলে অভিযোগ পেলে তদন্ত করে জমি উদ্ধারের ব্যবস্থা নেয়া হবে।