ঢাকা ০৫:৪২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ শেভরনের ২২ কর্মী বিনা নোটিশে চাকরিচ্যুত

নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ০৪:০৩:১৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১১ জুলাই ২০২৩
  • / ২৯৩ বার পড়া হয়েছে

আদালতের নির্দেশ অমান্য এবং শ্রম আইনের তোয়াক্কা না করে কালাপুর শেভরন গ্যাসপ্লান্টের ২২ জন কর্মীকে বিনা নোটিশে চাকরিচ্যুত করার অভিযোগ উঠেছে।
মঙ্গলবার (১১ জুলাই) দুপুরে শ্রীমঙ্গল প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে শেভরনের চাকরিচ্যুত কর্মীরা লিখিত বক্তব্যে এ অভিযোগ করেন।

শেভরনের চাকুরিচ্যুত ২২ কর্মচারীদের পক্ষে লিখিত বক্তব্যে  মো. জাকির হোসেন বলেন, আমরা ২২ জন কর্মচারী মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গল উপজেলার কালাপুর গ্রামের বাসিন্দা।
২০০৪ সাল থেকে উপজেলার কালাপুর শেভরন গ্যাসপ্লান্টে অত্যন্ত সততা ও নিষ্টার সাথে আমরা বিভিন্ন পদে চাকরি করে আসছি। কিন্তু গত ১৩ জুন ২০২৩ তারিখে আমরা ২২জনকে বিনা নোটিশে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে।
গত ১২ জুন আমরা যথারীতি ডিউটি শেষ করে বাড়ি ফেরার প্রাক্কালে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের একজন কর্মকর্তা মোবাইল ফোনে আমাদের ২২ জনকে চাকরি থেকে অব্যাহতির কথা জানান এবং পরবর্তি নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত যেন আমরা কর্মস্থলে নাযাই এ নির্দেশ দেন। কি কারণে আমাদের চাকরি থেকে অব্যাহতি দেয়া হলোতার কোন স্পষ্ট দলিলপত্র দেখাতে তারা অস্বীকৃতিজানায়। আমরা কেউ কেউ শেভরণে ১২ বছর থেকে ১৯ বছর যাবত চাকরি করে আসছিলাম। কিন্তু আমাদের নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান শ্রমআইন, বিধিবিধান তোয়াক্কা না করে কেবল একটি ফোনকলের মাধ্যমে ২২ জন শ্রমিককে চাকরিচ্যুত করায়  দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির বাজারে আমরা পরিবারপরিজন নিয়ে দুঃখ কষ্টে পড়েছি।

তিনি আরও বলেন, এ বিষয়ে নিয়ে আমরা ২২ জন কর্মচারী সম্মিলিত স্বাক্ষরে বিভিন্ন সময় স্থানীয় সংসদ সদস্য, মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক মৌলভীবাজার গ্যাসপ্লান্টের সুপারিনটেন্ডেট, শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বরাবরে প্রতিকার চেয়ে পৃথক পত্রদিয়ে অবহিত করেছি। কিন্তু এ পর্যন্ত কোন পক্ষ থেকে কোন সাড়া পাইনি।

চাকরিচ্যুত শ্রমিক জাকির হোসেন আরও বলেন, শ্রমআইন ২০০৬ অনুযায়ী ২ বছরের মধ্যে কর্মচারীকে স্থায়ীকরণের বিধান রয়েছে। কিন্তু চাকরিদাতা প্রতিষ্ঠান সরকারি বিধিবদ্ধ এসব আইন কখনও সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করেনি। কোম্পানি ২০০৬ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত প্রায় ৪৫জন শ্রমিকের মধ্যে মাত্র ১০ জনকে স্থায়ীকরণ করে। ২০০৮ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত আর কোন শ্রমিকের চাকরি স্থায়ীকরণ ও বেতনবৃদ্ধি করা হয়নি।
এ ব্যাপারে শেভরন গ্যাসপ্লান্টের সুপারিনটেন্ডেটের মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। এ বিষয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সমতা এন্টারপ্রাইজের সত্ত্¡াধিকারী জমশেদুর রহমান জমশেদ জানান, চাকরিচ্যুত এই শ্রমিকদের দৈনিক মজুরি ভিত্তিতে কাজে নেয়া হয়েছে। তাদের কাউকে স্থায়ীভাবে তাদের নেয়া হয়নি।

শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আলী রাজিব মাহমুদ মিঠুনের সাথে  যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, শেভরন কর্তৃপক্ষ আজ আমার সাথে বসতে চেয়েছিল, কি বিষয়ে তা জানিনা। আমার ব্যস্ততায় তাদের সাথে বসার সময় হয়ে উঠেনি।
শেভরনের বিরুদ্ধে আদালতের নির্দেশ অমান্য করার বিষয়টি জানালে ইউএনও বলেন, এটি আমার জানা নেই। আদালতের নির্দেশ যদি থাকে শ্রমিকদের চাকরিচ্যুত না করার, তাহলে করা যাবে না। বিজ্ঞ আদালতের নির্দেশ অমান্য করার ক্ষমতা কারও নেই।

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ শেভরনের ২২ কর্মী বিনা নোটিশে চাকরিচ্যুত

আপডেট সময় ০৪:০৩:১৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১১ জুলাই ২০২৩

আদালতের নির্দেশ অমান্য এবং শ্রম আইনের তোয়াক্কা না করে কালাপুর শেভরন গ্যাসপ্লান্টের ২২ জন কর্মীকে বিনা নোটিশে চাকরিচ্যুত করার অভিযোগ উঠেছে।
মঙ্গলবার (১১ জুলাই) দুপুরে শ্রীমঙ্গল প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে শেভরনের চাকরিচ্যুত কর্মীরা লিখিত বক্তব্যে এ অভিযোগ করেন।

শেভরনের চাকুরিচ্যুত ২২ কর্মচারীদের পক্ষে লিখিত বক্তব্যে  মো. জাকির হোসেন বলেন, আমরা ২২ জন কর্মচারী মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গল উপজেলার কালাপুর গ্রামের বাসিন্দা।
২০০৪ সাল থেকে উপজেলার কালাপুর শেভরন গ্যাসপ্লান্টে অত্যন্ত সততা ও নিষ্টার সাথে আমরা বিভিন্ন পদে চাকরি করে আসছি। কিন্তু গত ১৩ জুন ২০২৩ তারিখে আমরা ২২জনকে বিনা নোটিশে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে।
গত ১২ জুন আমরা যথারীতি ডিউটি শেষ করে বাড়ি ফেরার প্রাক্কালে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের একজন কর্মকর্তা মোবাইল ফোনে আমাদের ২২ জনকে চাকরি থেকে অব্যাহতির কথা জানান এবং পরবর্তি নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত যেন আমরা কর্মস্থলে নাযাই এ নির্দেশ দেন। কি কারণে আমাদের চাকরি থেকে অব্যাহতি দেয়া হলোতার কোন স্পষ্ট দলিলপত্র দেখাতে তারা অস্বীকৃতিজানায়। আমরা কেউ কেউ শেভরণে ১২ বছর থেকে ১৯ বছর যাবত চাকরি করে আসছিলাম। কিন্তু আমাদের নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান শ্রমআইন, বিধিবিধান তোয়াক্কা না করে কেবল একটি ফোনকলের মাধ্যমে ২২ জন শ্রমিককে চাকরিচ্যুত করায়  দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির বাজারে আমরা পরিবারপরিজন নিয়ে দুঃখ কষ্টে পড়েছি।

তিনি আরও বলেন, এ বিষয়ে নিয়ে আমরা ২২ জন কর্মচারী সম্মিলিত স্বাক্ষরে বিভিন্ন সময় স্থানীয় সংসদ সদস্য, মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক মৌলভীবাজার গ্যাসপ্লান্টের সুপারিনটেন্ডেট, শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বরাবরে প্রতিকার চেয়ে পৃথক পত্রদিয়ে অবহিত করেছি। কিন্তু এ পর্যন্ত কোন পক্ষ থেকে কোন সাড়া পাইনি।

চাকরিচ্যুত শ্রমিক জাকির হোসেন আরও বলেন, শ্রমআইন ২০০৬ অনুযায়ী ২ বছরের মধ্যে কর্মচারীকে স্থায়ীকরণের বিধান রয়েছে। কিন্তু চাকরিদাতা প্রতিষ্ঠান সরকারি বিধিবদ্ধ এসব আইন কখনও সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করেনি। কোম্পানি ২০০৬ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত প্রায় ৪৫জন শ্রমিকের মধ্যে মাত্র ১০ জনকে স্থায়ীকরণ করে। ২০০৮ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত আর কোন শ্রমিকের চাকরি স্থায়ীকরণ ও বেতনবৃদ্ধি করা হয়নি।
এ ব্যাপারে শেভরন গ্যাসপ্লান্টের সুপারিনটেন্ডেটের মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। এ বিষয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সমতা এন্টারপ্রাইজের সত্ত্¡াধিকারী জমশেদুর রহমান জমশেদ জানান, চাকরিচ্যুত এই শ্রমিকদের দৈনিক মজুরি ভিত্তিতে কাজে নেয়া হয়েছে। তাদের কাউকে স্থায়ীভাবে তাদের নেয়া হয়নি।

শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আলী রাজিব মাহমুদ মিঠুনের সাথে  যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, শেভরন কর্তৃপক্ষ আজ আমার সাথে বসতে চেয়েছিল, কি বিষয়ে তা জানিনা। আমার ব্যস্ততায় তাদের সাথে বসার সময় হয়ে উঠেনি।
শেভরনের বিরুদ্ধে আদালতের নির্দেশ অমান্য করার বিষয়টি জানালে ইউএনও বলেন, এটি আমার জানা নেই। আদালতের নির্দেশ যদি থাকে শ্রমিকদের চাকরিচ্যুত না করার, তাহলে করা যাবে না। বিজ্ঞ আদালতের নির্দেশ অমান্য করার ক্ষমতা কারও নেই।