ঢাকা ০২:০৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩১ জানুয়ারী ২০২৫, ১৮ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
ব্রেকিং নিউজ
শনিবার সেতু রক্ষাসহ বিভিন্ন দাবিতে মানববন্ধন ১১নং মোস্তফাপুর বিএনপি আহবায়ক মান্নু রাজনৈতিক দল গঠন ও পদত্যাগের ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি- নাহিদ ইসলাম স্বৈরাচার হাসিনা দেশের অর্থনীতি লুটপাট করে পালিয়ে গেছে- শ্রীমঙ্গলে এম নাসের রহমান পবিত্র শবে বরাত ১৪ ফেব্রুয়ারি রাজনগর উপজেলার বিএনপির ৮টি ইউনিয়নের আহবায়ক কমিটি বাতিল ওমরাহ পালনে যাচ্ছেন মৌলভীবাজার জেলা বিএনপি সদস্য সচিব রিপন মৌলভীবাজার প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে জমি দখলের চেষ্টা বাংলাদেশ স্কাউটস ত্রৈ বার্ষিক কাউন্সিল অনুষ্ঠিত শ্রীমঙ্গল পৌরসভার মশক নিধন কর্মসূচি উদ্বোধন

হঠাৎ আলোচনায় খালেদা জিয়ার রাজনীতি-নির্বাচন

নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ০৬:১২:৪১ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৩
  • / ৩৫৪ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ সাজা স্থগিত করে মুক্তি দেওয়ার পর থেকে রাজধানীর গুলশানের বাসভবন ফিরোজায় অবস্থান করছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। তিনি লিভার সিরোসিস, হার্ট, ডায়াবেটিস, আর্থ্রাইটিসসহ নানা জটিল রোগে ভুগছেন। তাকে বেশ কয়েকবার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অন্যদিকে আগাামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের এক বছরের কম সময় বাকি থাকায় রাজনৈতিক অঙ্গনে বইছে নির্বাচনি হাওয়া।

এ অবস্থায় হঠাৎ করে সম্প্রতি আলোচনা শুরু হয়েছে খালেদা জিয়া দণ্ডিত অবস্থায় রাজনীতি করতে পারবেন কিনা, তা নিয়ে। এ ইস্যুতে বেশ কয়েকদিন ধরে রাজনৈতিক ময়দান এখন সরগরম।

তবে এ বিষয়ে বিএনপি নেতাদের ভাষ্য হচ্ছে, ‘খালেদা জিয়ার সাজা বাতিল করে তাকে মুক্তি দিতে হবে এবং নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার ছাড়া বিএনপি নির্বাচনে যাবে না।’

অন্যদিকে এ ইস্যু নিয়ে কয়েকদিন ধরে বিভিন্ন সভা সমাবেশে ও সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বিভিন্ন কথা বলছেন আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা।

গতকাল আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, ‘খালেদা জিয়ার রাজনীতিতে বাধা নেই, তবে দণ্ডিত হওয়ায় নির্বাচন করতে পারবেন না। আর কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, খালেদা জিয়ার রাজনীতি করতে কোনো বাধা নেই।’

তবে তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বললেন, ‘শর্ত অনুযায়ী খালেদা জিয়া রাজনীতি করতে পারেন না। আর নির্বাচনের তো প্রশ্নই আসে না।’

২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় পাঁচ বছরের সাজা নিয়ে কারাগারে যান খালেদা জিয়া। রায়ের বিরুদ্ধে আপিল শুনানি শেষে ওই বছরের অক্টোবরে সাজা বেড়ে দ্বিগুণ হয়। একই মাসে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় আরও ৭ বছরের সাজা হয় তার। ২০২০ সালের মার্চে দেশে করোনার সংক্রমণ ধরা পড়ার সময় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসন। তার জামিনের আবেদন বারবার নাকচ হওয়ার মধ্যে স্বজনরা প্রধানমন্ত্রীর কাছে মুক্তির আবেদন নিয়ে যান। আর সরকারপ্রধানের নির্বাহী আদেশে ওই বছরের ২৫ মার্চ ছয় মাসের জন্য মুক্তি পান তিনি।

গত বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর আইনমন্ত্রী জানান, ২০২৩ সালের ২৫ মার্চ পর্যন্ত দেশের ভেতরে নিজের মতো করে থাকতে পারবেন খালেদা জিয়া। জাতীয় সংসদ নির্বাচন এগিয়ে আসার প্রেক্ষাপটে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা এরই মধ্যে নির্বাচনি প্রচার শুরু করেছেন। আর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি জানিয়ে নানা কর্মসূচি দিয়ে আসছেন বিএনপি নেতারা।

এ অবস্থায় সম্প্রতি আলোচনায় আসে খালেদা জিয়ার রাজনীতি ও নির্বাচনের লড়ার প্রসঙ্গ।

গতকাল রাজধানীর ইস্কাটনে এক সেমিনার শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, ‘দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি হিসেবে নির্বাচন করতে না পারলেও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া রাজনীতি করতে পারবেন।

আইনমন্ত্রী বলেন, ‘খালেদা জিয়া অসুস্থ, তাই মানবিক কারণে তার পরিবারের আবেদনের প্রেক্ষিতে তার সাজা স্থগিত করে মুক্তি দেয়া হয়। সেখানে তিনি রাজনীতি করতে পারবেন না বলে কোনো শর্ত ছিল না। খালেদা জিয়াকে মুক্তি প্রদানবিষয়ক স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আদেশে দুটি শর্ত ছিল। এর একটি হচ্ছে- তাকে ঢাকায় বাসায় থেকে চিকিৎসা নিতে হবে। আরেক শর্ত হচ্ছে তিনি বিদেশ যেতে পারবেন না। তবে আইন অনুযায়ী দণ্ডিত কোনো ব্যক্তি নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবেন না। আর অসুস্থ ব্যক্তি রাজনীতি করতে পারেন কিনা সে প্রশ্ন আপনাদের কাছে রইল।

মন্ত্রী বলেন, ‘স্বাভাবিকভাবে জনগণ মনে করেন, একজন অসুস্থ ব্যক্তি রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতে পারেন না। বাস্তব অবস্থাও তাই। বাস্তবতা হচ্ছে- খালেদা জিয়া অসুস্থ। তাই তার মুক্তি চাওয়া হয়েছে। এরকম অসুস্থ ব্যক্তি রাজনীতি করতে পারেন কিনা, বাস্তবতা কী বলে তা জনগণই বিবেচনা করবে।’

খালেদা জিয়া তার কার্যালয়ে যেতে পারবেন কিনা, অফিস করতে পারবেন কিনা-সাংবাদিকদের এ প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘এটা তার (খালেদা জিয়া) বিষয়। আমি তাকে কী পরামর্শ দেব! আইনি পরামর্শ প্রয়োজন হলে তাদের আইনজীবীদের কাজে লাগাতে পারে। না হলে আমার কাছে চিঠি লিখুক।

অপর এক প্রশ্নের জবাবে আনিসুল হক বলেন, ‘আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে। নির্বাচন সংবিধান অনুযায়ী হবে। আওয়ামী লীগ চায় সব দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করুক। তবে কে আসবে আর কে নির্বাচনে আসবে না, তা তাদের দলীয় সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করছে। কোনো বিদেশি চাপ নেই। জনগণের কাছে আমাদের যে দায়বদ্ধতা আছে, গণতন্ত্রের প্রতি আমাদের যে কমিটমেন্ট আছে- তা থেকেই আমরা সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কাজ করছি। আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে এর আগের নির্বাচনগুলো যেমন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয়েছে, তেমনই সুষ্ঠু নির্বাচন হবে আগামীতে।

এদিকে কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক বুধবার সচিবালয়ে জাপানের রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনরির সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন খালেদা জিয়ার নির্বাচন ও রাজনীতি ইস্যু নিয়ে। তিনি বলেন, ‘কেন তিনি (খালেদা জিয়া) রাজনীতি করতে পারবেন না? তিনি জেলে থেকেও রাজনীতি করতে পারবেন, দলকে নির্দেশনা দেবেন। তবে সাজাপ্রাপ্ত আসামি হিসেবে আইন অনুযায়ী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না।’

কৃষিমন্ত্রীর বক্তব্যের পরদিন গতকাল একই প্রসঙ্গে কথা বলেন তথ্যমন্ত্রী। সচিবালয়ে এদিন দুপুরে এক অনুষ্ঠানের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী কেউ দুই বছরের বেশি শাস্তিপ্রাপ্ত হলে তিনি নির্বাচন করতে পারেন না। খালেদা জিয়া দুই বছরের অনেক বেশি সাজাপ্রাপ্ত হয়েছেন। সুতরাং নির্বাচন করার প্রশ্নই আসে না।’

হাছান মাহমুদ বলেন, ‘তার (খালেদা জিয়া) শারীরিক অবস্থা ও বয়স বিবেচনায় শর্তসাপেক্ষে কারাগারের বাইরে ঘরে থাকার অনুমতি দেয়া হয়েছে। সেই শর্ত অনুযায়ী তিনি রাজনীতিও করতে পারেন না।’

যেসব শর্তে খালেদা জিয়াকে ঘরে থাকার অনুমতি দেয়া হয়েছে, সেই শর্তের মধ্যে তিনি রাজনীতি করতে পারবেন তা বলা নেই বলে জানান তথ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘শর্তের মধ্যে বলা আছে- তিনি ঘরে থেকে চিকিৎসা নেবেন এবং অন্য কোনো কিছু করতে পারবেন না। সুতরাং তার রাজনীতি করতে পারারও কথা নয়।’

হাছান মাহমুদ বলেন, ‘কেউ যদি বলে থাকে, বলতে পারে। তবে আমি যতদূর জানি, আইনকানুন বুঝি ও জানি এবং আমি ইতোমধ্যে খোঁজ-খবর নিয়েছি, শর্ত অনুযায়ী তিনি ঘরে থাকতে পারবেন, চিকিৎসা নিতে পারবেন কিন্তু তার রাজনীতি করতে পারার কথা নয়

 

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

হঠাৎ আলোচনায় খালেদা জিয়ার রাজনীতি-নির্বাচন

আপডেট সময় ০৬:১২:৪১ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ সাজা স্থগিত করে মুক্তি দেওয়ার পর থেকে রাজধানীর গুলশানের বাসভবন ফিরোজায় অবস্থান করছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। তিনি লিভার সিরোসিস, হার্ট, ডায়াবেটিস, আর্থ্রাইটিসসহ নানা জটিল রোগে ভুগছেন। তাকে বেশ কয়েকবার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অন্যদিকে আগাামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের এক বছরের কম সময় বাকি থাকায় রাজনৈতিক অঙ্গনে বইছে নির্বাচনি হাওয়া।

এ অবস্থায় হঠাৎ করে সম্প্রতি আলোচনা শুরু হয়েছে খালেদা জিয়া দণ্ডিত অবস্থায় রাজনীতি করতে পারবেন কিনা, তা নিয়ে। এ ইস্যুতে বেশ কয়েকদিন ধরে রাজনৈতিক ময়দান এখন সরগরম।

তবে এ বিষয়ে বিএনপি নেতাদের ভাষ্য হচ্ছে, ‘খালেদা জিয়ার সাজা বাতিল করে তাকে মুক্তি দিতে হবে এবং নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার ছাড়া বিএনপি নির্বাচনে যাবে না।’

অন্যদিকে এ ইস্যু নিয়ে কয়েকদিন ধরে বিভিন্ন সভা সমাবেশে ও সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বিভিন্ন কথা বলছেন আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা।

গতকাল আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, ‘খালেদা জিয়ার রাজনীতিতে বাধা নেই, তবে দণ্ডিত হওয়ায় নির্বাচন করতে পারবেন না। আর কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, খালেদা জিয়ার রাজনীতি করতে কোনো বাধা নেই।’

তবে তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বললেন, ‘শর্ত অনুযায়ী খালেদা জিয়া রাজনীতি করতে পারেন না। আর নির্বাচনের তো প্রশ্নই আসে না।’

২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় পাঁচ বছরের সাজা নিয়ে কারাগারে যান খালেদা জিয়া। রায়ের বিরুদ্ধে আপিল শুনানি শেষে ওই বছরের অক্টোবরে সাজা বেড়ে দ্বিগুণ হয়। একই মাসে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় আরও ৭ বছরের সাজা হয় তার। ২০২০ সালের মার্চে দেশে করোনার সংক্রমণ ধরা পড়ার সময় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসন। তার জামিনের আবেদন বারবার নাকচ হওয়ার মধ্যে স্বজনরা প্রধানমন্ত্রীর কাছে মুক্তির আবেদন নিয়ে যান। আর সরকারপ্রধানের নির্বাহী আদেশে ওই বছরের ২৫ মার্চ ছয় মাসের জন্য মুক্তি পান তিনি।

গত বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর আইনমন্ত্রী জানান, ২০২৩ সালের ২৫ মার্চ পর্যন্ত দেশের ভেতরে নিজের মতো করে থাকতে পারবেন খালেদা জিয়া। জাতীয় সংসদ নির্বাচন এগিয়ে আসার প্রেক্ষাপটে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা এরই মধ্যে নির্বাচনি প্রচার শুরু করেছেন। আর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি জানিয়ে নানা কর্মসূচি দিয়ে আসছেন বিএনপি নেতারা।

এ অবস্থায় সম্প্রতি আলোচনায় আসে খালেদা জিয়ার রাজনীতি ও নির্বাচনের লড়ার প্রসঙ্গ।

গতকাল রাজধানীর ইস্কাটনে এক সেমিনার শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, ‘দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি হিসেবে নির্বাচন করতে না পারলেও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া রাজনীতি করতে পারবেন।

আইনমন্ত্রী বলেন, ‘খালেদা জিয়া অসুস্থ, তাই মানবিক কারণে তার পরিবারের আবেদনের প্রেক্ষিতে তার সাজা স্থগিত করে মুক্তি দেয়া হয়। সেখানে তিনি রাজনীতি করতে পারবেন না বলে কোনো শর্ত ছিল না। খালেদা জিয়াকে মুক্তি প্রদানবিষয়ক স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আদেশে দুটি শর্ত ছিল। এর একটি হচ্ছে- তাকে ঢাকায় বাসায় থেকে চিকিৎসা নিতে হবে। আরেক শর্ত হচ্ছে তিনি বিদেশ যেতে পারবেন না। তবে আইন অনুযায়ী দণ্ডিত কোনো ব্যক্তি নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবেন না। আর অসুস্থ ব্যক্তি রাজনীতি করতে পারেন কিনা সে প্রশ্ন আপনাদের কাছে রইল।

মন্ত্রী বলেন, ‘স্বাভাবিকভাবে জনগণ মনে করেন, একজন অসুস্থ ব্যক্তি রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতে পারেন না। বাস্তব অবস্থাও তাই। বাস্তবতা হচ্ছে- খালেদা জিয়া অসুস্থ। তাই তার মুক্তি চাওয়া হয়েছে। এরকম অসুস্থ ব্যক্তি রাজনীতি করতে পারেন কিনা, বাস্তবতা কী বলে তা জনগণই বিবেচনা করবে।’

খালেদা জিয়া তার কার্যালয়ে যেতে পারবেন কিনা, অফিস করতে পারবেন কিনা-সাংবাদিকদের এ প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘এটা তার (খালেদা জিয়া) বিষয়। আমি তাকে কী পরামর্শ দেব! আইনি পরামর্শ প্রয়োজন হলে তাদের আইনজীবীদের কাজে লাগাতে পারে। না হলে আমার কাছে চিঠি লিখুক।

অপর এক প্রশ্নের জবাবে আনিসুল হক বলেন, ‘আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে। নির্বাচন সংবিধান অনুযায়ী হবে। আওয়ামী লীগ চায় সব দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করুক। তবে কে আসবে আর কে নির্বাচনে আসবে না, তা তাদের দলীয় সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করছে। কোনো বিদেশি চাপ নেই। জনগণের কাছে আমাদের যে দায়বদ্ধতা আছে, গণতন্ত্রের প্রতি আমাদের যে কমিটমেন্ট আছে- তা থেকেই আমরা সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কাজ করছি। আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে এর আগের নির্বাচনগুলো যেমন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয়েছে, তেমনই সুষ্ঠু নির্বাচন হবে আগামীতে।

এদিকে কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক বুধবার সচিবালয়ে জাপানের রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনরির সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন খালেদা জিয়ার নির্বাচন ও রাজনীতি ইস্যু নিয়ে। তিনি বলেন, ‘কেন তিনি (খালেদা জিয়া) রাজনীতি করতে পারবেন না? তিনি জেলে থেকেও রাজনীতি করতে পারবেন, দলকে নির্দেশনা দেবেন। তবে সাজাপ্রাপ্ত আসামি হিসেবে আইন অনুযায়ী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না।’

কৃষিমন্ত্রীর বক্তব্যের পরদিন গতকাল একই প্রসঙ্গে কথা বলেন তথ্যমন্ত্রী। সচিবালয়ে এদিন দুপুরে এক অনুষ্ঠানের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী কেউ দুই বছরের বেশি শাস্তিপ্রাপ্ত হলে তিনি নির্বাচন করতে পারেন না। খালেদা জিয়া দুই বছরের অনেক বেশি সাজাপ্রাপ্ত হয়েছেন। সুতরাং নির্বাচন করার প্রশ্নই আসে না।’

হাছান মাহমুদ বলেন, ‘তার (খালেদা জিয়া) শারীরিক অবস্থা ও বয়স বিবেচনায় শর্তসাপেক্ষে কারাগারের বাইরে ঘরে থাকার অনুমতি দেয়া হয়েছে। সেই শর্ত অনুযায়ী তিনি রাজনীতিও করতে পারেন না।’

যেসব শর্তে খালেদা জিয়াকে ঘরে থাকার অনুমতি দেয়া হয়েছে, সেই শর্তের মধ্যে তিনি রাজনীতি করতে পারবেন তা বলা নেই বলে জানান তথ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘শর্তের মধ্যে বলা আছে- তিনি ঘরে থেকে চিকিৎসা নেবেন এবং অন্য কোনো কিছু করতে পারবেন না। সুতরাং তার রাজনীতি করতে পারারও কথা নয়।’

হাছান মাহমুদ বলেন, ‘কেউ যদি বলে থাকে, বলতে পারে। তবে আমি যতদূর জানি, আইনকানুন বুঝি ও জানি এবং আমি ইতোমধ্যে খোঁজ-খবর নিয়েছি, শর্ত অনুযায়ী তিনি ঘরে থাকতে পারবেন, চিকিৎসা নিতে পারবেন কিন্তু তার রাজনীতি করতে পারার কথা নয়