ঢাকা ০৪:৪৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ০৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ২৩ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

৮ ডিসেম্বর মৌলভীবাজার মুক্ত দিবস

নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ০৯:৩৯:০৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ৭ ডিসেম্বর ২০২৪
  • / ৩০৭ বার পড়া হয়েছে

মৌলভীবাজার২৪ ডেস্ক: ৮ ডিসেম্বর মৌলভীবাজার পাকিস্তানি হানাদার মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে পাক হানাদার মুক্ত হয়ে আকাশে ওড়ে স্বাধীন বাংলার পতাকা।

২৭ মার্চ মৌলভীবাজারের শহরের পশ্চিম দিকে কনকপুর থেকে একটি প্রতিরোধ মিছিল আসে। অপর মিছিলটি আসে শহরের পূর্বদিক থেকে চাঁদনীঘাট ব্রিজ হয়ে। হাতে লাঠি, দা, গাদা বন্দুক। এটা মেনে নিতে পারেনি আগে থেকে শহরে অবস্থান করা পাক আর্মিরা। প্রতিরোধ মিছিলে নির্বিচারে গুলি চালায়।

এদিকে, মনু নদীর তীর ঘেষা সিএন্ডবি’র ইটখোলায় কাজ শেষে নিরীহ শ্রমিকরা ঘুমিয়ে ছিলো। একদিন ভোরে নরপশুরা সাত শ্রমিককে ধরে নিয়ে এসে হত্যা করে। পরে তাদের শহরের শাহ মোস্তফা সড়কের বেরি লেকের কাছে ফেলে যায়। পরে স্থানীয় লোকজন তাদের একটি কবরে সমাহিত করে।

এছাড়া শ্রীমঙ্গল উপজেলার বর্তমান বিজিবি ক্যাম্পে ছিল পাক আর্মির ক্যাম্প। সেখানে মুক্তিযোদ্ধা সুদর্শন, মুকিত, রানু, সমর, শহীদকে বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। তাদের লাশও পাওয়া যায়নি। পিটিআই টর্চার সেলে অসংখ্য মুক্তিযোদ্ধাকে হত্যা, নির্যাতন করে পাক বাহিনী। আর্মিরা ধরে নিয়ে যায় ব্যেমকেশ ঘোষ টেমা বাবুসহ অনেককে। যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ে।

২ ডিসেম্বর মিত্র বাহিনী ও মুক্তি বাহিনীর শীর্ষ পর্যায়ের বৈঠকে সারা দেশ হানাদারমুক্ত করার একটি বৃহৎপরিকল্পনা প্রণয়ন করে। ‘মারো অথবা মরো’ এই মন্ত্রে দীক্ষিত হয়ে মুক্তিযোদ্ধারা যার উপর যে দায়িত্ব পড়েছিল সে অনুযায়ী অগ্রসর হতে থাকে। ভারত থেকে চাতলাপুর সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ঢুকে পড়ে মুক্তি বাহিনী। প্রথম প্রতিরোধের সম্মুখীন হন মুক্তিযোদ্ধারা। এখানে প্রায় আড়াই’শ মুক্তিযোদ্ধা প্রাণ হারান।

 

৩ ডিসেম্বর মুক্তি বাহিনী শমসেরগর ঢুকে পড়ে এবং শমসেরনগরকে হানাদারমুক্ত করা হয়। ৪ ডিসেম্বর শমসেরনগরেই অবস্থান করে পরবর্তী কৌশল নির্ধারণ করা হয়। ৭ ডিসেম্বর মৌলভীবাজার থেকে পাক হানাদার বাহিনী পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়।

 

দিবসটি পালন উপলক্ষে মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসনসহ বিভিন্ন সংগঠন বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

৮ ডিসেম্বর মৌলভীবাজার মুক্ত দিবস

আপডেট সময় ০৯:৩৯:০৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ৭ ডিসেম্বর ২০২৪

মৌলভীবাজার২৪ ডেস্ক: ৮ ডিসেম্বর মৌলভীবাজার পাকিস্তানি হানাদার মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে পাক হানাদার মুক্ত হয়ে আকাশে ওড়ে স্বাধীন বাংলার পতাকা।

২৭ মার্চ মৌলভীবাজারের শহরের পশ্চিম দিকে কনকপুর থেকে একটি প্রতিরোধ মিছিল আসে। অপর মিছিলটি আসে শহরের পূর্বদিক থেকে চাঁদনীঘাট ব্রিজ হয়ে। হাতে লাঠি, দা, গাদা বন্দুক। এটা মেনে নিতে পারেনি আগে থেকে শহরে অবস্থান করা পাক আর্মিরা। প্রতিরোধ মিছিলে নির্বিচারে গুলি চালায়।

এদিকে, মনু নদীর তীর ঘেষা সিএন্ডবি’র ইটখোলায় কাজ শেষে নিরীহ শ্রমিকরা ঘুমিয়ে ছিলো। একদিন ভোরে নরপশুরা সাত শ্রমিককে ধরে নিয়ে এসে হত্যা করে। পরে তাদের শহরের শাহ মোস্তফা সড়কের বেরি লেকের কাছে ফেলে যায়। পরে স্থানীয় লোকজন তাদের একটি কবরে সমাহিত করে।

এছাড়া শ্রীমঙ্গল উপজেলার বর্তমান বিজিবি ক্যাম্পে ছিল পাক আর্মির ক্যাম্প। সেখানে মুক্তিযোদ্ধা সুদর্শন, মুকিত, রানু, সমর, শহীদকে বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। তাদের লাশও পাওয়া যায়নি। পিটিআই টর্চার সেলে অসংখ্য মুক্তিযোদ্ধাকে হত্যা, নির্যাতন করে পাক বাহিনী। আর্মিরা ধরে নিয়ে যায় ব্যেমকেশ ঘোষ টেমা বাবুসহ অনেককে। যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ে।

২ ডিসেম্বর মিত্র বাহিনী ও মুক্তি বাহিনীর শীর্ষ পর্যায়ের বৈঠকে সারা দেশ হানাদারমুক্ত করার একটি বৃহৎপরিকল্পনা প্রণয়ন করে। ‘মারো অথবা মরো’ এই মন্ত্রে দীক্ষিত হয়ে মুক্তিযোদ্ধারা যার উপর যে দায়িত্ব পড়েছিল সে অনুযায়ী অগ্রসর হতে থাকে। ভারত থেকে চাতলাপুর সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ঢুকে পড়ে মুক্তি বাহিনী। প্রথম প্রতিরোধের সম্মুখীন হন মুক্তিযোদ্ধারা। এখানে প্রায় আড়াই’শ মুক্তিযোদ্ধা প্রাণ হারান।

 

৩ ডিসেম্বর মুক্তি বাহিনী শমসেরগর ঢুকে পড়ে এবং শমসেরনগরকে হানাদারমুক্ত করা হয়। ৪ ডিসেম্বর শমসেরনগরেই অবস্থান করে পরবর্তী কৌশল নির্ধারণ করা হয়। ৭ ডিসেম্বর মৌলভীবাজার থেকে পাক হানাদার বাহিনী পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়।

 

দিবসটি পালন উপলক্ষে মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসনসহ বিভিন্ন সংগঠন বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।