ঢাকা ০৫:৪৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী দরিদ্র কৃষকের কন্যা জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পেয়ে চমক

নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ০৩:২২:৫৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৯ অক্টোবর ২০২২
  • / ৪৯৫ বার পড়া হয়েছে

মৌলভীবাজার২৪ ডেস্ক: সুনামগঞ্জের মধ্যনগর উপজেলার ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী দরিদ্র কৃষক হিরেন্দ্র হাজংয়ের কন্যা জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক (সম্মান) প্রথমবর্ষের বিজ্ঞান অনুষদভুক্ত ‘ডি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ হয়েছ।

ওই ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন উপজেলার বংশীকুন্ডা দক্ষিণ ইউনিয়নের লক্ষীপুর গ্রামের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী দরিদ্র কৃষক হিরেন্দ্র হাজংয়ের কন্যা প্রিয়া দেবী হাজং। বৃহস্পতিবার (২৭ অক্টোবর) পরীক্ষা ফল প্রকাশ হয়। এখানকার হাজং সম্প্রদায় থেকে এর আগে কেউ এমন চমক দেখাতে পারেননি। তাই প্রিয়ার এ অর্জনে এলাকাবাসীদের মাঝে খুশির জোয়ার বইছে।

প্রিয়া দেবী হাজং ২০১৯ সালে এসএসসি পরীক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগে মহিষখলা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে জিপিএ ৪.২৮ ও ২০২১ সালে এইচএসসি পরীক্ষায় নেত্রকোণা সরকারি কলেজ থেকে একই বিভাগে জিপিএ ৪.৮৩ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছেন।

প্রিয়া দেবী হাজং বলেন, আমার বাবা একজন দরিদ্র কৃষক। আমাদের জমি বেশি নেই। বাবা অন্যের জমিতে কাজ করে আমাকে ও আমার বোনকে লেখাপড়া করাচ্ছেন। আমি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে বিজ্ঞান বিভাগের ‘ডি’ ইউনিটের উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগে চান্স পাওয়াতে পরিবারের সবাই খুশি হয়েছেন। আমি পড়াশোনা শেষ করে বিবিএস পরীক্ষা দিয়ে একজন সরকারি কর্মকর্তা হতে চাই। পাশাপাশি বাবা-মায়ের দুঃখ মুছে দিতে চাই।

আদিবাসী ট্রাইবাল অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক চেয়ারম্যান আশুতোষ হাজং বলেন, আমাদের উপজেলার হাজং জনগোষ্ঠীর মধ্যে প্রিয়া দেবী হাজং এই প্রথম জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো একটা জায়গায় নিজের জায়গা করে নিয়েছে। এর পূর্বে কেউ চান্স পায়নি। প্রিয়া সেখানে চান্স পাওয়াতে আমরা সবাই আনন্দিত। আমাদের এখানে হাজং সম্প্রদায়ের ৫শ পরিবারে প্রায় দুই হাজার মানুষের বাস। প্রিয়ার মতো আমাদের সমাজের পিছিয়ে পড়া মেয়েরাও এগিয়ে আসবে এই প্রত্যাশা করছি।

মধ্যনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাহিদ হাসান খান বলেন, বংশীকুন্ডা উত্তর ইউনিয়ন একটি দুর্গম অঞ্চল। এই অঞ্চলের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী সদস্যরা দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করেন। দুর্গম অঞ্চল থেকে প্রিয়া দেবী হাজং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি ভালো সাবজেক্টে চান্স পাওয়াতে আমরা তাকে সাধুবাদ জানাই। পিছিয়ে পড়া অঞ্চল থেকে তার মতো অন্য মেয়েরাও এগিয়ে আসবে এই প্রত্যাশা করছি।

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী দরিদ্র কৃষকের কন্যা জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পেয়ে চমক

আপডেট সময় ০৩:২২:৫৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৯ অক্টোবর ২০২২

মৌলভীবাজার২৪ ডেস্ক: সুনামগঞ্জের মধ্যনগর উপজেলার ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী দরিদ্র কৃষক হিরেন্দ্র হাজংয়ের কন্যা জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক (সম্মান) প্রথমবর্ষের বিজ্ঞান অনুষদভুক্ত ‘ডি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ হয়েছ।

ওই ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন উপজেলার বংশীকুন্ডা দক্ষিণ ইউনিয়নের লক্ষীপুর গ্রামের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী দরিদ্র কৃষক হিরেন্দ্র হাজংয়ের কন্যা প্রিয়া দেবী হাজং। বৃহস্পতিবার (২৭ অক্টোবর) পরীক্ষা ফল প্রকাশ হয়। এখানকার হাজং সম্প্রদায় থেকে এর আগে কেউ এমন চমক দেখাতে পারেননি। তাই প্রিয়ার এ অর্জনে এলাকাবাসীদের মাঝে খুশির জোয়ার বইছে।

প্রিয়া দেবী হাজং ২০১৯ সালে এসএসসি পরীক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগে মহিষখলা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে জিপিএ ৪.২৮ ও ২০২১ সালে এইচএসসি পরীক্ষায় নেত্রকোণা সরকারি কলেজ থেকে একই বিভাগে জিপিএ ৪.৮৩ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছেন।

প্রিয়া দেবী হাজং বলেন, আমার বাবা একজন দরিদ্র কৃষক। আমাদের জমি বেশি নেই। বাবা অন্যের জমিতে কাজ করে আমাকে ও আমার বোনকে লেখাপড়া করাচ্ছেন। আমি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে বিজ্ঞান বিভাগের ‘ডি’ ইউনিটের উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগে চান্স পাওয়াতে পরিবারের সবাই খুশি হয়েছেন। আমি পড়াশোনা শেষ করে বিবিএস পরীক্ষা দিয়ে একজন সরকারি কর্মকর্তা হতে চাই। পাশাপাশি বাবা-মায়ের দুঃখ মুছে দিতে চাই।

আদিবাসী ট্রাইবাল অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক চেয়ারম্যান আশুতোষ হাজং বলেন, আমাদের উপজেলার হাজং জনগোষ্ঠীর মধ্যে প্রিয়া দেবী হাজং এই প্রথম জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো একটা জায়গায় নিজের জায়গা করে নিয়েছে। এর পূর্বে কেউ চান্স পায়নি। প্রিয়া সেখানে চান্স পাওয়াতে আমরা সবাই আনন্দিত। আমাদের এখানে হাজং সম্প্রদায়ের ৫শ পরিবারে প্রায় দুই হাজার মানুষের বাস। প্রিয়ার মতো আমাদের সমাজের পিছিয়ে পড়া মেয়েরাও এগিয়ে আসবে এই প্রত্যাশা করছি।

মধ্যনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাহিদ হাসান খান বলেন, বংশীকুন্ডা উত্তর ইউনিয়ন একটি দুর্গম অঞ্চল। এই অঞ্চলের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী সদস্যরা দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করেন। দুর্গম অঞ্চল থেকে প্রিয়া দেবী হাজং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি ভালো সাবজেক্টে চান্স পাওয়াতে আমরা তাকে সাধুবাদ জানাই। পিছিয়ে পড়া অঞ্চল থেকে তার মতো অন্য মেয়েরাও এগিয়ে আসবে এই প্রত্যাশা করছি।