ঢাকা ১২:০৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

খেলাধুলা মেয়েদের সমাজের বাঁধা অতিক্রম করতে শেখায়

নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ০৯:৫৭:০৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৪
  • / ৫১৪ বার পড়া হয়েছে

মৌলভীবাজার সদর উপজেলার দশম শ্রেনির শিক্ষার্থী তৃষা দাশ। পড়ালেখার পাশাপাশি খেলাধুলা করতেও পছন্দ করে তৃষা জানায় দেহ ও মনকে সুস্থ রাখার জন্য খেলাধুলার গুরুত্ব অপরিসীম। খেলাধুলার মাধ্যমে একজন মানুষ শারীরিক ও মানসিক সুস্থতা লাভের পাশাপাশি ভ্রাতৃত্ব, সহমর্মিতা ও নেতৃত্বের গুণ অর্জন করে।

 

কিন্তু আমাদের দেশে খেলাধুলায় করা হয় বৈষম্য ছেলেদের খেলাধুলা সহজ করে নিলেও মেয়েদের খেলাধুলা সহজ করে নেওয়া হয় না। আমাদের শিশু-কিশোর-কিশোরী, তরুণ-তরুণীদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশ এবং সামাজিকীকরণ তথা সুন্দরভাবে বেড়ে ওঠার জন্য খেলাধুলার সুযোগ ও খেলার মাঠের প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য।

আমাদের দেশে প্রায় পরিবারই ছেলে ও মেয়েকে শৈশবেই খেলনা আলাদা করে দেয়। ছেলেরা খেলবে বল দিয়ে, রিমোট নিয়ন্ত্রিত গাড়ি ছেলেদের জন্য। আর মেয়েরা খেলবে পুতুল, হাঁড়ি-পাতিল দিয়ে। এমনকি আমাদেরকে রঙটা পর্যন্ত আলাদা করে দেওয়া হয়। গোলাপি রঙ হালকা, দুর্বল, নরম এমন ইঙ্গিত প্রকাশ করে বলে সবাই বলে থাকে এটা মেয়েদের সাথে মানায়। এভাবে ছোট থেকেই পরিবার ও সমাজ ছেলে আর মেয়েদের মাঝে একটা বৈষম্য সৃষ্টি করে দেয়। বড় হলেও তার ছাপ রয়ে যায়। একটা সময় বড় হয়েও অনেক মেয়েও এটা মনে করতে শুরু করে যে, ফুটবল বা ক্রিকেট খেলা শুধু ছেলেদের জন্য। মাঠে খেলাটা মেয়েদের জন্য শোভা পায় না। আমাদের দেশে আর্থিক অনিশ্চয়তাই খেলাধুলায় মেয়েদের কম আসার প্রধান কারণ।

 

এছাড়াও মৌলিক চাহিদার জন্য অন্যের ওপরনির্ভরশীলতা,লিঙ্গবৈষম্য,পরিবারের বিরোধিতা,জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে বেড়েছে বাল্যবিবাহ এবং সমাজ ও পরিবারের খেলাধুলায় অসহযোগিতা,মেয়েদের বিশেষায়িত ক্লাব না থাকা, নিয়মিত টুর্নামেন্ট না হওয়া এবং অনুশীলনের জায়গার অভাব।

 

মেয়েদের খেলাধুলা নিয়ে কথা হলে ব্র্যাকের জেন্ডার জাস্টিস এ্যান্ড ডাইভারসিটি প্রোগ্রামের ডিস্টিক অফিসার ইস্পিতা সরকার বলেন মেয়েদের সম্ভাবনা এবং সমাজে তাদের ভূমিকা সম্পর্কে মানুষের ধারণাকে খেলাধুলা সম্পূর্ণরূপে বদলে দিতে পারে। মেয়ে এবং ছেলে উভয়ের জন্যই খেলাধুলা সমান উপকারী।

 

শারীরিক এবং মানসিক স্বাস্থ্যের সুবিধা ছাড়াও খেলাধুলা শিশুদের এবং তরুণদের আত্মসম্মানবোধ তৈরি করে, তাদেরকে আত্মবিশ্বাসী করে তোলে এবং তাদের আত্মনিয়ন্ত্রণের সক্ষমতা তৈরি করে। মেয়েদেরও ছেলেদের মতোই বেচেঁ থাকার, উন্নতির অধিকার, সুরক্ষার অধিকার। ছেলে মেয়ে সকলের রয়েছে খেলার সমান অধিকার।

 

খেলা মেয়েদের সমাজের বাধা অতিক্রম করতে শেখায়, যা জীবনের প্রতি তাদের দৃষ্টিভঙ্গি বদলে দেয় এবং আত্ববিশ্বাসী হয়ে উঠতে সাহায্য করে। তাই আপনার মেয়ে সন্তানকে খেলাধূলা করার উৎসাহ দিন আর সুযোগ করে দিন। যখন মেয়েরা খেলে, তখন সবাই জিতে! খেলা মেয়েদের সমাজের বাধা অতিক্রম করতে শেখায়, যা জীবনের প্রতি তাদের দৃষ্টিভঙ্গি বদলে দেয়!! ফিচার লেখক-সিপন দেব ফটো- সাইফুল কাজল

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

খেলাধুলা মেয়েদের সমাজের বাঁধা অতিক্রম করতে শেখায়

আপডেট সময় ০৯:৫৭:০৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

মৌলভীবাজার সদর উপজেলার দশম শ্রেনির শিক্ষার্থী তৃষা দাশ। পড়ালেখার পাশাপাশি খেলাধুলা করতেও পছন্দ করে তৃষা জানায় দেহ ও মনকে সুস্থ রাখার জন্য খেলাধুলার গুরুত্ব অপরিসীম। খেলাধুলার মাধ্যমে একজন মানুষ শারীরিক ও মানসিক সুস্থতা লাভের পাশাপাশি ভ্রাতৃত্ব, সহমর্মিতা ও নেতৃত্বের গুণ অর্জন করে।

 

কিন্তু আমাদের দেশে খেলাধুলায় করা হয় বৈষম্য ছেলেদের খেলাধুলা সহজ করে নিলেও মেয়েদের খেলাধুলা সহজ করে নেওয়া হয় না। আমাদের শিশু-কিশোর-কিশোরী, তরুণ-তরুণীদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশ এবং সামাজিকীকরণ তথা সুন্দরভাবে বেড়ে ওঠার জন্য খেলাধুলার সুযোগ ও খেলার মাঠের প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য।

আমাদের দেশে প্রায় পরিবারই ছেলে ও মেয়েকে শৈশবেই খেলনা আলাদা করে দেয়। ছেলেরা খেলবে বল দিয়ে, রিমোট নিয়ন্ত্রিত গাড়ি ছেলেদের জন্য। আর মেয়েরা খেলবে পুতুল, হাঁড়ি-পাতিল দিয়ে। এমনকি আমাদেরকে রঙটা পর্যন্ত আলাদা করে দেওয়া হয়। গোলাপি রঙ হালকা, দুর্বল, নরম এমন ইঙ্গিত প্রকাশ করে বলে সবাই বলে থাকে এটা মেয়েদের সাথে মানায়। এভাবে ছোট থেকেই পরিবার ও সমাজ ছেলে আর মেয়েদের মাঝে একটা বৈষম্য সৃষ্টি করে দেয়। বড় হলেও তার ছাপ রয়ে যায়। একটা সময় বড় হয়েও অনেক মেয়েও এটা মনে করতে শুরু করে যে, ফুটবল বা ক্রিকেট খেলা শুধু ছেলেদের জন্য। মাঠে খেলাটা মেয়েদের জন্য শোভা পায় না। আমাদের দেশে আর্থিক অনিশ্চয়তাই খেলাধুলায় মেয়েদের কম আসার প্রধান কারণ।

 

এছাড়াও মৌলিক চাহিদার জন্য অন্যের ওপরনির্ভরশীলতা,লিঙ্গবৈষম্য,পরিবারের বিরোধিতা,জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে বেড়েছে বাল্যবিবাহ এবং সমাজ ও পরিবারের খেলাধুলায় অসহযোগিতা,মেয়েদের বিশেষায়িত ক্লাব না থাকা, নিয়মিত টুর্নামেন্ট না হওয়া এবং অনুশীলনের জায়গার অভাব।

 

মেয়েদের খেলাধুলা নিয়ে কথা হলে ব্র্যাকের জেন্ডার জাস্টিস এ্যান্ড ডাইভারসিটি প্রোগ্রামের ডিস্টিক অফিসার ইস্পিতা সরকার বলেন মেয়েদের সম্ভাবনা এবং সমাজে তাদের ভূমিকা সম্পর্কে মানুষের ধারণাকে খেলাধুলা সম্পূর্ণরূপে বদলে দিতে পারে। মেয়ে এবং ছেলে উভয়ের জন্যই খেলাধুলা সমান উপকারী।

 

শারীরিক এবং মানসিক স্বাস্থ্যের সুবিধা ছাড়াও খেলাধুলা শিশুদের এবং তরুণদের আত্মসম্মানবোধ তৈরি করে, তাদেরকে আত্মবিশ্বাসী করে তোলে এবং তাদের আত্মনিয়ন্ত্রণের সক্ষমতা তৈরি করে। মেয়েদেরও ছেলেদের মতোই বেচেঁ থাকার, উন্নতির অধিকার, সুরক্ষার অধিকার। ছেলে মেয়ে সকলের রয়েছে খেলার সমান অধিকার।

 

খেলা মেয়েদের সমাজের বাধা অতিক্রম করতে শেখায়, যা জীবনের প্রতি তাদের দৃষ্টিভঙ্গি বদলে দেয় এবং আত্ববিশ্বাসী হয়ে উঠতে সাহায্য করে। তাই আপনার মেয়ে সন্তানকে খেলাধূলা করার উৎসাহ দিন আর সুযোগ করে দিন। যখন মেয়েরা খেলে, তখন সবাই জিতে! খেলা মেয়েদের সমাজের বাধা অতিক্রম করতে শেখায়, যা জীবনের প্রতি তাদের দৃষ্টিভঙ্গি বদলে দেয়!! ফিচার লেখক-সিপন দেব ফটো- সাইফুল কাজল