ঢাকা ০৮:১৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
ব্রেকিং নিউজ

মৌলভীবাজারের মাদক দ্রব্যের উপ পরিচালকের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ

নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ১০:১৮:১০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ মার্চ ২০২৪
  • / ৫৯৯ বার পড়া হয়েছে

স্টাফ রিপোর্টার: বর্তমান উপ পরিচালক মিজানুর রহমান শরীফ মৌলভীবাজার জেলায় যোগদান করেন ২০২৩ সালের ১৪ নভেম্বর। যোগদানের পর থেকেই লাইসেন্সসীদের কাছে মাসে ২০ থেকে ৭০ হাজার টাকা পর্যন্ত চাঁদা দাবী করে বসেন। কেহ কেহ কমবেশী করে টাকা প্রদান করলেও আস্তে আস্তে তাদের মধ্যে ক্ষোভ বাড়তে থাকে। সর্বশেষ তারা অতিষ্ঠ হয়ে ২৩ জনের স্বাক্ষরযুক্ত একটি অভিযোগ ফেব্রুয়ারী মাসে মাদক দ্রব্যের মহাপরিচালক বরাবরে প্রেরণ করেন। জেলা প্রশাসককেও কপি দেন তারা।

অভিযোগে উল্লেখ রয়েছে কিভাতে তিনি তাদের হয়রানি করছেন। মৌলভীবাজার মাদকদ্রব্য নিয়ত্রন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মিজানুর রহমান শরীফ মৌলভীবাজার যোগদানের পর থেকে সরকারী গাড়ি ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে। তিনি সরকারী কাজের চেয়ে গাড়িটি ব্যক্তিগত কাজেই ব্যবহার করছেন বেশী। তিনি এজেলায় যোগদানের পর থেকে কমে গেছে মাদক দ্রব্য অধিদপ্তরের অভিযান। বিভিন্ন জায়গায় পরিবারের সদস্যদের নিয়ে গিয়ে টাকা না দিয়ে নিচ্ছেন সেবা।

এছাড়াও জেলার সকল বাংলা মদের লাইসেন্সিদের মাসিক চাঁদা দিতে বাধ্য করছেন, না দিলে বিভিন্নভাবে হয়রানীর করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এনিয়ে লাসেন্সধারী ও তাদের কর্মচারীরা মহাপরিচালক বরাবরে অভিযোগও দায়ের করেছেন। উপ পরিচালক মিজানুর রহমান শরীফ রাঙ্গামাটি জেলায় থাকাবস্থায়ও তাঁর বিরুদ্ধে সরকারী বিধিমালা ২০১৮ এর ৩(খ) বিধিমোতাবেক অসদাচরনের অভিযোগ উঠে। সর্বশেষ তিনি রংপুর থাকাবস্থায়ও নানা অভিযোগ রয়েছে বলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান অনেকে।

তিনি মৌলভীবাজার জেলায় যোগদানের পর থেকেই সরকারী গাড়ি ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করে পরিবার নিয়ে বিভিন্ন পর্যটন স্পট. চা বাগান, সিলেটে ব্যক্তিগত কাজে ও বিভিন্ন হোটেলে যাতায়াত করেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এমনকি তিনি জেলা সদরের একটি রিসোর্টে গিয়ে প্রতি সপ্তাহে শুক্রবার বা সুবিধাজনক সময়ে পরিবারের লোকদেরসহ সুইমিংসহ বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা ফ্রিতে নিয়ে থাকেন। সর্বশেষ গত শুক্রবারেও তিনি ওই রিসোর্টে সরকারী গাড়ি ব্যবহার করে মেয়েসহ সুইমিং করেন।

এবিষয়ে ওই সিরোর্টের এক কর্মচারী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিষয়টির সত্যতা জানান। তিনি ব্যক্তিগত কাজে গাড়িটি প্রায় সময় ব্যবহার করলেও ব্যক্তিগতভাবে জ্বালানী তেল খরিদ করেননা। সরকারী জ্বালানীতেই তিনি গাড়ি ব্যবহার করেন। শুধু তাই নয় তিনি প্রতিদিন সরকারী গাড়ি করে তার মেয়েকে ফ্লাওয়ার কেজি স্কুলেও পাঠান। সন্ধ্যার পর গাড়ি নিয়ে ক্লাবে গিয়ে অধিকরাত পর্যন্ত সেখানে অবস্থান করেন।

তিনি জেলায় যোগদানের পর থেকে মাদকদ্রব্য বিরোধী অভিযান অর্ধেকেরও কমে নেমে এসেছে। অভিযোগকারী কয়েকজনের সাথে কথা হলে তারা এর সত্যতা স্বীকার করে বলেন, তদন্তপূর্বক যথাযথ ব্যবস্থা না নিলে তারা ক্ষতির মুখে পড়বেন ও সরকার অনেক টাকা রাজস্ব হারাবে। এমনিতেই বাংলা (চোলাই) মদের দাম লিটার প্রতি ৮০ থেকে ১০০ টাকায় বিক্রী হতো এখন তা বেড়ে কোথাও কোথাও ১৩০ থেকে ১৭০ টাকায় লিটার বিক্রী হওয়াতে বিক্রী কমে গেছে।

 

এতে করে চা বাগানগুলোতে বেড়েছে অবৈধ মদের বিক্রী। এতে করে সরকার রাজস্ব হারাচ্ছে। এর উপর উপ- পরিচালককে তাঁর চাহিদা মতো টাকা দিতে হলে ব্যবসায়ীদের পথে বসতে হবে বলেও জানান তারা।

এবিষয়ে জানতে চেয়ে উপ-পরিচালক মিজানুর রহমান শরীফ(০১৯৭৫২২১৩০০) নাম্বারে মুঠোফোনে ফোন দিলে ফোন রিসিভ করার পর পরিচয় জানতে পেরে তিনি মিটিংয়ে আছেন বলে ফোন কেটে দেন। পরে ম্যাসেজ, হোয়াটসএপে নক করলেও তিনি আর রিসিভ করেননি বিধায় তার মতামত জানা যায়নি।

 

জেলা প্রশাসক ড. উর্মি বিনতে সালামের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিষয়টি তিনি তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহন করবেন

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

মৌলভীবাজারের মাদক দ্রব্যের উপ পরিচালকের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ

আপডেট সময় ১০:১৮:১০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ মার্চ ২০২৪

স্টাফ রিপোর্টার: বর্তমান উপ পরিচালক মিজানুর রহমান শরীফ মৌলভীবাজার জেলায় যোগদান করেন ২০২৩ সালের ১৪ নভেম্বর। যোগদানের পর থেকেই লাইসেন্সসীদের কাছে মাসে ২০ থেকে ৭০ হাজার টাকা পর্যন্ত চাঁদা দাবী করে বসেন। কেহ কেহ কমবেশী করে টাকা প্রদান করলেও আস্তে আস্তে তাদের মধ্যে ক্ষোভ বাড়তে থাকে। সর্বশেষ তারা অতিষ্ঠ হয়ে ২৩ জনের স্বাক্ষরযুক্ত একটি অভিযোগ ফেব্রুয়ারী মাসে মাদক দ্রব্যের মহাপরিচালক বরাবরে প্রেরণ করেন। জেলা প্রশাসককেও কপি দেন তারা।

অভিযোগে উল্লেখ রয়েছে কিভাতে তিনি তাদের হয়রানি করছেন। মৌলভীবাজার মাদকদ্রব্য নিয়ত্রন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মিজানুর রহমান শরীফ মৌলভীবাজার যোগদানের পর থেকে সরকারী গাড়ি ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে। তিনি সরকারী কাজের চেয়ে গাড়িটি ব্যক্তিগত কাজেই ব্যবহার করছেন বেশী। তিনি এজেলায় যোগদানের পর থেকে কমে গেছে মাদক দ্রব্য অধিদপ্তরের অভিযান। বিভিন্ন জায়গায় পরিবারের সদস্যদের নিয়ে গিয়ে টাকা না দিয়ে নিচ্ছেন সেবা।

এছাড়াও জেলার সকল বাংলা মদের লাইসেন্সিদের মাসিক চাঁদা দিতে বাধ্য করছেন, না দিলে বিভিন্নভাবে হয়রানীর করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এনিয়ে লাসেন্সধারী ও তাদের কর্মচারীরা মহাপরিচালক বরাবরে অভিযোগও দায়ের করেছেন। উপ পরিচালক মিজানুর রহমান শরীফ রাঙ্গামাটি জেলায় থাকাবস্থায়ও তাঁর বিরুদ্ধে সরকারী বিধিমালা ২০১৮ এর ৩(খ) বিধিমোতাবেক অসদাচরনের অভিযোগ উঠে। সর্বশেষ তিনি রংপুর থাকাবস্থায়ও নানা অভিযোগ রয়েছে বলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান অনেকে।

তিনি মৌলভীবাজার জেলায় যোগদানের পর থেকেই সরকারী গাড়ি ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করে পরিবার নিয়ে বিভিন্ন পর্যটন স্পট. চা বাগান, সিলেটে ব্যক্তিগত কাজে ও বিভিন্ন হোটেলে যাতায়াত করেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এমনকি তিনি জেলা সদরের একটি রিসোর্টে গিয়ে প্রতি সপ্তাহে শুক্রবার বা সুবিধাজনক সময়ে পরিবারের লোকদেরসহ সুইমিংসহ বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা ফ্রিতে নিয়ে থাকেন। সর্বশেষ গত শুক্রবারেও তিনি ওই রিসোর্টে সরকারী গাড়ি ব্যবহার করে মেয়েসহ সুইমিং করেন।

এবিষয়ে ওই সিরোর্টের এক কর্মচারী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিষয়টির সত্যতা জানান। তিনি ব্যক্তিগত কাজে গাড়িটি প্রায় সময় ব্যবহার করলেও ব্যক্তিগতভাবে জ্বালানী তেল খরিদ করেননা। সরকারী জ্বালানীতেই তিনি গাড়ি ব্যবহার করেন। শুধু তাই নয় তিনি প্রতিদিন সরকারী গাড়ি করে তার মেয়েকে ফ্লাওয়ার কেজি স্কুলেও পাঠান। সন্ধ্যার পর গাড়ি নিয়ে ক্লাবে গিয়ে অধিকরাত পর্যন্ত সেখানে অবস্থান করেন।

তিনি জেলায় যোগদানের পর থেকে মাদকদ্রব্য বিরোধী অভিযান অর্ধেকেরও কমে নেমে এসেছে। অভিযোগকারী কয়েকজনের সাথে কথা হলে তারা এর সত্যতা স্বীকার করে বলেন, তদন্তপূর্বক যথাযথ ব্যবস্থা না নিলে তারা ক্ষতির মুখে পড়বেন ও সরকার অনেক টাকা রাজস্ব হারাবে। এমনিতেই বাংলা (চোলাই) মদের দাম লিটার প্রতি ৮০ থেকে ১০০ টাকায় বিক্রী হতো এখন তা বেড়ে কোথাও কোথাও ১৩০ থেকে ১৭০ টাকায় লিটার বিক্রী হওয়াতে বিক্রী কমে গেছে।

 

এতে করে চা বাগানগুলোতে বেড়েছে অবৈধ মদের বিক্রী। এতে করে সরকার রাজস্ব হারাচ্ছে। এর উপর উপ- পরিচালককে তাঁর চাহিদা মতো টাকা দিতে হলে ব্যবসায়ীদের পথে বসতে হবে বলেও জানান তারা।

এবিষয়ে জানতে চেয়ে উপ-পরিচালক মিজানুর রহমান শরীফ(০১৯৭৫২২১৩০০) নাম্বারে মুঠোফোনে ফোন দিলে ফোন রিসিভ করার পর পরিচয় জানতে পেরে তিনি মিটিংয়ে আছেন বলে ফোন কেটে দেন। পরে ম্যাসেজ, হোয়াটসএপে নক করলেও তিনি আর রিসিভ করেননি বিধায় তার মতামত জানা যায়নি।

 

জেলা প্রশাসক ড. উর্মি বিনতে সালামের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিষয়টি তিনি তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহন করবেন