ঢাকা ০৪:০৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শ্রীমঙ্গলে চা-বোর্ড নির্ধারিত দরে শেষ হলো মৌসুমের প্রথম নিলাম

নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ০৭:৪৪:৪০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২ মে ২০২৪
  • / ১১৮৩ বার পড়া হয়েছে

শ্রীমঙ্গল প্রতিনিধি: মৌলভীবাজার শ্রীমঙ্গল চা নিলাম কেন্দ্রে দেশের বড় বড় বায়ার এবং ব্লেন্ডারদের অংশগ্রহণ ছাড়াই অনুষ্ঠিত হয়েছে মৌসুমের প্রথম চা নিলাম। চা বোর্ড নির্ধারিত সর্বনিম্ন মূল্যে এই চা নিলাম অনুষ্ঠিত হয়। সর্বোচ্চ ৬১০ টাকা কেজিতে লোহানী চা বাগানের চা পাতা বিক্রি হয় এবং একই বাগানের গ্রীন টি বিক্রি হয়েছে ১২ শত টাকা কেজিতে।

 

বৃহস্পতিবার (২ মে) সকালে শ্রীমঙ্গল জেলা পরিষদ অডিটোরিয়ামে শ্রীমঙ্গল চা নিলাম কেন্দ্রের এ মৌসুমের প্রথম চা নিলাম হয়। মৌসুমের প্রথম চা নিলামের উদ্বোধন করেছেন বাংলাদেশ চা বোর্ডের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মোঃ আশরাফুল ইসলাম এনডিসি, পিএসসি। তিনি চা নিলাম কার্যক্রমও পর্যবেক্ষণ করেন। এসময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিটিআরআই এর  পরিচালক মোহাম্মদ ইসমাইল হোসেন, প্রকল্প উন্নয়ন ইউনিটের পরিচালক ড. রফিকুল ইসলামসহ টি বোর্ডের অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ, টিপিটিএবির সহসভাপতি সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী হারুনসহ অন্যান্য পরিচালকবৃন্দ এবং এলাকার চা ব্যবসায়ীরা। এসময় চা বোর্ডের চেয়ারম্যানকে সম্মাননা স্মারক তুলে দেয়া হয়।

 

শ্রীমঙ্গলের এই নিলামে আজও অনুপস্থিত থাকেন দেশের বড় বড় বায়ার ও ব্লেন্ডাররা। এছাড়া প্রথম শ্রেণির ব্রোকার্সরাও পূর্বে থেকেই শ্রীমঙ্গলের নিলাম কেন্দ্র থেকে তাদের সরিয়ে নিয়েছে। তাদের এই অব্যাহত অনুপস্থিতিতে নিলামের আয়োজকরা ক্ষোভ প্রকাশ করেন। ফলে শ্রীমঙ্গলের এই নিলাম কেন্দ্রটি কাগজে কলমে আন্তর্জাতিক নিলাম কেন্দ্র হলেও বড় বড় বায়ার, ব্লেন্ডারদের ও ব্রোকার্সদের অনুপস্থিতির কারণে এটি একটি আঞ্চলিক নিলাম কেন্দ্রে পরিনত হয়েছে বলে চা সংশ্লিষ্ট অনেকেই মনে করেন।

 

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বাংলাদেশ চা বোর্ডের চেয়ারম্যান বলেন, বায়াররা যেখানেই তাদের চাহিদা মোতাবেক চা পাতা পাবেন সেখানেই নিলামে অংশগ্রহণ করবেন। তারা তাদের লাভ লোকসান হিসাব করেই নিলামে অংশগ্রহণ করবে। সেটা শ্রীমঙ্গলেই হোক, পঞ্চগড়েই হোক বা চট্টগ্রামেই হোক। এজন্য নিলাম আয়োজকদের আরও সক্ষমতা অর্জন করতে হবে, বিশেষ করে স্থানীয় ব্রোকার্সদের আরও কার্যকর ভূমিকা রাখতে হবে। এব্যাপারে আমাদের আদেশ, নির্দেশনা ও পরামর্শ রয়েছে। আমরা আমাদের সর্বাত্মক সহযোগিতা অব্যাহত রাখবো।

 

তিনটি ব্রোকার হাউসের মাধ্যমে সিলেট বিভাগের বিভিন্ন বাগানের প্রায় ৮৪ হাজার কেজি চা আজকের নিলামে নিলামে তোলা হয়। লিকার রেটিংয়ের ওপর ভিত্তি করে নিলামে তোলা চায়ের গ্রেড ভাগ করে সর্বনিম্ন মূল্য ১৬০ টাকা কেজি নির্ধারণ করা হয়েছে। টি বোর্ড কর্তৃক সর্বনিম্ন দর নির্ধারন করে দেয়ায় আশাবাদী ব্রোকার হাউস প্রতিনিধিরা। এতে খুশি চা বাগান ও নিলাম-সংশ্লিষ্টরা।

 

২০২৩ সালে দেশের চা বাগানগুলো উৎপাদনে রেকর্ড করলেও নিলামে ব্যাপক দরপতনে বাগান মালিকরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ শিল্পের সুরক্ষায় উৎপাদন খরচের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ করে চায়ের নিলাম দর নির্ধারণ করে দেয় চা বোর্ড। এতে বাগান মালিকরা আনন্দিত। তবে কিছু বায়ার মনে করেন দর অপেন থাকলে ভালো হতো।

 

নিলামে চায়ের দরপতন নিয়ন্ত্রণে এ পদক্ষেপ অত্যন্ত কার্যকর ভূমিকা রাখবে বলে আশাবাদী টি বোর্ড চেয়ারম্যান। এ সময় তিনি বলেন চায়ের গুনগতমান ও রপ্তানী বৃদ্ধি এবং ভাল মানের চায়ের ন্যায্য মূল্য যাতে বাগান মালিকরা পেতে পারেন সেজন্য পরীক্ষামূলক ভাবে সর্বনিন্ম মূল্য নির্ধারণ করে দেয়া হযেছে। সকলের সহযোগীতায় চায়ের অতীত গৌরব ফিরে আসবে বলে মনে করেন তিনি।

 

 চা বোর্ড ২৪-২৫ চা অর্থ বছরে পরীক্ষামূলকভাবে ২০টি নিলামে ফ্লোরপ্রাইস রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

শ্রীমঙ্গলে চা-বোর্ড নির্ধারিত দরে শেষ হলো মৌসুমের প্রথম নিলাম

আপডেট সময় ০৭:৪৪:৪০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২ মে ২০২৪

শ্রীমঙ্গল প্রতিনিধি: মৌলভীবাজার শ্রীমঙ্গল চা নিলাম কেন্দ্রে দেশের বড় বড় বায়ার এবং ব্লেন্ডারদের অংশগ্রহণ ছাড়াই অনুষ্ঠিত হয়েছে মৌসুমের প্রথম চা নিলাম। চা বোর্ড নির্ধারিত সর্বনিম্ন মূল্যে এই চা নিলাম অনুষ্ঠিত হয়। সর্বোচ্চ ৬১০ টাকা কেজিতে লোহানী চা বাগানের চা পাতা বিক্রি হয় এবং একই বাগানের গ্রীন টি বিক্রি হয়েছে ১২ শত টাকা কেজিতে।

 

বৃহস্পতিবার (২ মে) সকালে শ্রীমঙ্গল জেলা পরিষদ অডিটোরিয়ামে শ্রীমঙ্গল চা নিলাম কেন্দ্রের এ মৌসুমের প্রথম চা নিলাম হয়। মৌসুমের প্রথম চা নিলামের উদ্বোধন করেছেন বাংলাদেশ চা বোর্ডের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মোঃ আশরাফুল ইসলাম এনডিসি, পিএসসি। তিনি চা নিলাম কার্যক্রমও পর্যবেক্ষণ করেন। এসময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিটিআরআই এর  পরিচালক মোহাম্মদ ইসমাইল হোসেন, প্রকল্প উন্নয়ন ইউনিটের পরিচালক ড. রফিকুল ইসলামসহ টি বোর্ডের অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ, টিপিটিএবির সহসভাপতি সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী হারুনসহ অন্যান্য পরিচালকবৃন্দ এবং এলাকার চা ব্যবসায়ীরা। এসময় চা বোর্ডের চেয়ারম্যানকে সম্মাননা স্মারক তুলে দেয়া হয়।

 

শ্রীমঙ্গলের এই নিলামে আজও অনুপস্থিত থাকেন দেশের বড় বড় বায়ার ও ব্লেন্ডাররা। এছাড়া প্রথম শ্রেণির ব্রোকার্সরাও পূর্বে থেকেই শ্রীমঙ্গলের নিলাম কেন্দ্র থেকে তাদের সরিয়ে নিয়েছে। তাদের এই অব্যাহত অনুপস্থিতিতে নিলামের আয়োজকরা ক্ষোভ প্রকাশ করেন। ফলে শ্রীমঙ্গলের এই নিলাম কেন্দ্রটি কাগজে কলমে আন্তর্জাতিক নিলাম কেন্দ্র হলেও বড় বড় বায়ার, ব্লেন্ডারদের ও ব্রোকার্সদের অনুপস্থিতির কারণে এটি একটি আঞ্চলিক নিলাম কেন্দ্রে পরিনত হয়েছে বলে চা সংশ্লিষ্ট অনেকেই মনে করেন।

 

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বাংলাদেশ চা বোর্ডের চেয়ারম্যান বলেন, বায়াররা যেখানেই তাদের চাহিদা মোতাবেক চা পাতা পাবেন সেখানেই নিলামে অংশগ্রহণ করবেন। তারা তাদের লাভ লোকসান হিসাব করেই নিলামে অংশগ্রহণ করবে। সেটা শ্রীমঙ্গলেই হোক, পঞ্চগড়েই হোক বা চট্টগ্রামেই হোক। এজন্য নিলাম আয়োজকদের আরও সক্ষমতা অর্জন করতে হবে, বিশেষ করে স্থানীয় ব্রোকার্সদের আরও কার্যকর ভূমিকা রাখতে হবে। এব্যাপারে আমাদের আদেশ, নির্দেশনা ও পরামর্শ রয়েছে। আমরা আমাদের সর্বাত্মক সহযোগিতা অব্যাহত রাখবো।

 

তিনটি ব্রোকার হাউসের মাধ্যমে সিলেট বিভাগের বিভিন্ন বাগানের প্রায় ৮৪ হাজার কেজি চা আজকের নিলামে নিলামে তোলা হয়। লিকার রেটিংয়ের ওপর ভিত্তি করে নিলামে তোলা চায়ের গ্রেড ভাগ করে সর্বনিম্ন মূল্য ১৬০ টাকা কেজি নির্ধারণ করা হয়েছে। টি বোর্ড কর্তৃক সর্বনিম্ন দর নির্ধারন করে দেয়ায় আশাবাদী ব্রোকার হাউস প্রতিনিধিরা। এতে খুশি চা বাগান ও নিলাম-সংশ্লিষ্টরা।

 

২০২৩ সালে দেশের চা বাগানগুলো উৎপাদনে রেকর্ড করলেও নিলামে ব্যাপক দরপতনে বাগান মালিকরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ শিল্পের সুরক্ষায় উৎপাদন খরচের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ করে চায়ের নিলাম দর নির্ধারণ করে দেয় চা বোর্ড। এতে বাগান মালিকরা আনন্দিত। তবে কিছু বায়ার মনে করেন দর অপেন থাকলে ভালো হতো।

 

নিলামে চায়ের দরপতন নিয়ন্ত্রণে এ পদক্ষেপ অত্যন্ত কার্যকর ভূমিকা রাখবে বলে আশাবাদী টি বোর্ড চেয়ারম্যান। এ সময় তিনি বলেন চায়ের গুনগতমান ও রপ্তানী বৃদ্ধি এবং ভাল মানের চায়ের ন্যায্য মূল্য যাতে বাগান মালিকরা পেতে পারেন সেজন্য পরীক্ষামূলক ভাবে সর্বনিন্ম মূল্য নির্ধারণ করে দেয়া হযেছে। সকলের সহযোগীতায় চায়ের অতীত গৌরব ফিরে আসবে বলে মনে করেন তিনি।

 

 চা বোর্ড ২৪-২৫ চা অর্থ বছরে পরীক্ষামূলকভাবে ২০টি নিলামে ফ্লোরপ্রাইস রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।