ঢাকা ০৫:৪০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আমার জ্যেষ্ঠ ভাই জেলবন্দি, জামিন নাই কেন?

নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ১০:২৪:৪৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৩
  • / ৪২৭ বার পড়া হয়েছে

হাফিজ সাব্বির আহমদ:  আমার বড় ভাই আজ জেলখানায় বন্দী। যাকে আমরা বড় ভাইসাব বলে ডাকি। তাকে নিয়ে এভাবে লিখতে হবে এর আগে তা কখনো মনে আসেনি। কিন্তু আজ এমন এক সময়ের দ্বারপ্রান্তে এসে উপনীত হয়েছি যখন মনের ভেতর হাজারও জিজ্ঞাসা, ক্ষোভ ও ঘৃণা। গত ৭ নভেম্বর রাত সাড়ে ১০টার দিকে তাকে ডিবি পুলিশ আমাদের বাড়ি থেকে বিনা নোটিশে আটক করে নিয়ে যায়। না তার বিরুদ্ধে কোন গ্রেফতারি পরোয়ানা ছিল না। তিনি এদেশের আইনে কোন দাগী আসামীও নন। তারপরও তাকে গ্রেফতার দেখিয়ে জেলহাজতে পাঠানো হয়। নিতান্তই রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হয়ে মাসাধিককাল ধরে চারদেয়ালের ভেতর তার দিন কাটছে। শারীরিকভাবে তিনি গুরুতর অসুস্থ। হার্টে রিং লাগানো। নিয়ম করে তিনবেলা তাকে ঔষধ খেতে হয়। ৮ ভাই ২ বোনের মধ্যে তিনি সবার বড়। আমিসহ আমার অন্যান্য ভাইবোনেরা তাকে বাবার মতই সম্মান করি। তাঁর স্নেহ-মমতা আদর শাসনে আমরা বড় হয়েছি। বাবার বড় সন্তান ও একজন বড় ভাই হিসাবে তিনি আমাদের কাছে সর্বোচ্চ সম্মানীত ব্যক্তি। তার বর্তমানে নিজেকে বড় অসহায় বোধ করছি।

প্রায় ৩ বছর আগে আমার মেঝভাই মাওলানা নাসির উদ্দিন সাহেব ইন্তেকাল করেন। তাঁর মৃত্যুতে আমাদের ৮ ভাইয়ের জোড়া ভেঙে যায়। সেই শোক কাটাতে আমাদের পরিবারের অনেক দিন লেগেছে। তারপর পারিবারিক সকল সিদ্ধান্ত ও কর্মকান্ড একাই বড় ভাইসাব সামলে নিতেন। ঘুম থেকে উঠেই প্রায় প্রতিদিন ভাইসাবের সাথে ফোনে কথা বলতাম। আজ মনে হয় অনেক বছর তাঁর সাথে কথা হয় না। মা-বাবা নেই। আমরা ভাইবোনেরাই একে অন্যের সাথে সুখদুঃখ ভাগাভাগি করি। আজ মনের ভেতর ক্ষোভ আর দুঃখবোধ বারবার জাগরিত হয়। এই সমাজ-সংসার, সম্পর্কের বেড়াজাল সবকিছুই বড় পর লাগে।

মৌলভীবাজার জেলা শহরের একজন সৎ, ভদ্র ও সজ্জ্বন ব্যক্তি হিসাবে আমার ভাই মো. ফখরুল ইসলামকে সবাই জানেন ও চেনেন। ব্যক্তি জীবনে বিএনপির রাজনীতির সাথে জড়িত থাকলেও সকল দলমতের মানুষের সাথে তার সৎভাব ও সুন্দর চলাফেরা রয়েছে। মৌলভীবাজার সদর উপজেলার শমসেরগঞ্জের দৌলতপুর গ্রামে আমাদের বাড়ি। ছোটবেলা থেকেই আশপাশের গ্রামের মানুষের সাথে আ

মাদের সৎভাব ও ভালো সম্পর্ক। একে অন্যের সাথে জড়াজড়ি করে আছি। বৃহত্তর সিলেটে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছেন আমাদের আত্মীয় স্বজন। সকলের কাছেই আমার বড় ভাই একজন নির্ভরযোগ্য মানুষ। এলাকার শালিস-বৈঠকে তিনি নিয়মিত অংশগ্রহণ করেন। পারিবারিক ও সামাজিক সকল অনুষ্ঠানে আছে তার সরব উপস্থিতি।

মৌলভীবাজারের রাজনীতিতে আওয়ামী লীগ, বিএনপিসহ সকল ঘরানার মানুষের মধ্যে একটা হামদর্দি মনোভাব ছিল। সামাজিক সকল অনুষ্ঠানাদিতে সকলে মিলেমিশে থাকতেন। কিন্তু সেই সহনশীল মনোভাব এখন আর নেই। রাজনীতির একটা অশুভ চক্র এই ঐতিহ্যকে শেষ করে দিয়েছে। দেশে দীর্ঘদিন ছাত্ররাজনীতি করেছি। তৃণমূল থেকে কাজ করে একদম কেন্দ্রের দায়িত্ব পালন করেছি। এ সময় ভিন্নমত ও ভিন্নদলের কত মানুষের সাথে মিশেছি। তাদের মধ্যে শরাফতি ছিল। আমার নিজ জেলা মৌলভীবাজার ছিল রাজনৈতিক সহাবস্থান ও শান্তির অনন্য উদাহরণ। এ জেলার দুই বরেন্য কৃতিসন্তান সাবেক অর্থমন্ত্রী এম সাইফুর রহমান ও সমাজকল্যাণমন্ত্রী সৈয়দ মহসিন আলীকে খুব কাছে থেকে দেখেছি। দেখেছি হিলালপুরের আলহাজ সৈয়দ আবু শাহাজান ও সাবেক পৌরসভার চেয়ারম্যান জনাব আলহাজ মাহমুদুর রহমান সাহেবকে। কত বড় মনের ও কত সম্মানীয় ব্যক্তি ছিলেন তারা। তাদের রাজনৈতিক শিষ্টাচার ও সৌহার্দ্য ছিল অনুকরণীয়। কিন্তু চোখের সামনে এই ক’বছরে রাজনীতির মাঠের সে চিত্র বদলে গেছে। একনায়কতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থায় এখন আর কেউই নিরাপদ নয়। রাজনীতির নতুন মুখ ও বিকেন্দ্রীকরণ ভালো কিছুর পরিবর্তে এক সর্বগ্রাসী, হীনমানসিকতার তলানীতে আমাদের ঐতিহ্য ও মূল্যবোধকে তলানীতে নিয়ে গেছে।

আমার ভাই মো. ফখরুল ইসলাম রাজনীতি করেন দেশের জন্য, মানুষের জন্য। এটা কোন কথার কথা নয় বরং চরম বাস্তবতা। রাজনীতি তার পেশা নয়। রাজনীতি করে তিনি এক পয়সারও মালিক হননি। পারিবারিকভাবে প্রতিষ্ঠিত আমাদের অনেক শিক্ষা ও সেবামূলক প্রতিষ্ঠান আছে। এগুলো তিনি পরিচালনা করেন। প্রতিবছর এর মাধ্যমে অনেক খেদমত আঞ্জাম দেওয়া হয়। মসজিদ মাদরাসার দায়িত্ব পালন করতে হয়। আলেম উলামাদের সাথে সুসম্পর্ক রেখে আমার ভাই দ্বীনি অনেক কর্মসূচি পালন করেন। আমাদের সকল ভাইবোনেরা মাশাআল্লাহ স্ব স্ব ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত। প্রত্যেকেই নিজস্বতা নিয়ে আছেন ।

আমার বড় ভাইকে যেদিন আটক করা হয় তার আগের দিন তাঁর একমাত্র ছেলে, আমাদের বড় ভাতিজা রেদওয়ান, আমার ভাতিজি ও একমাত্র মায়ার নাতনি লন্ডন থেকে দেশে ফিরেছিল। তারা এসেছিল নিজদেশে বাবা-মা ও পরিবারের সদস্যদের সাথে ভালো সময় কাটাবে বলে। কিন্তু উল্টো আমার ভাতিজাকে জেলগেট ও কোর্টের বারান্দায় সময় কাটাতে হয়েছে। ছুটি শেষে তাদের বাবাকে জেলেবন্দি রেখেই আবার ইউকেতে ফিরতে হয়ছে। দেশের কাছে এ আমাদের বড় পাওয়া!

রাজনীতি করলে জেলজুলুম সহ্য করতে হয় তা জানা কথা। এবং এটা তার নতুন হাজতবাস নয়। কিন্তু জেলবন্দি মানুষের জন্য ও তো আইন আছে। আছে জামিন। তাকে যে মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়েছে তা জামিনযোগ্য। কিন্তু বারবার জামিন আবেদন করেও তার জামিন হচ্ছে না। এটা তো জঘন্য। এ কোন ইশারা। আমরা কি এদেশের নাগরিক নই?

আজ একটা জিনিস আমাকে সবচেয়ে বেশি ভাবায়- শুধু রাজনীতির কারণে যারা বাবা ভাইকে ইতোমধ্যে হারিয়েছেন, যারা গুম-হত্যার শিকার হয়েছেন, রাজনীতির নোংরা খেলায় বছরের পর বছর জেলেবন্দী আছেন- তাদের পরিবারের অবস্থাটা তাহলে কেমন! এই সংস্কৃতি থেকে কবে আমার দেশের রাজনীতি ও রাজনীতিকরা বেরিয়ে আসবে জানি না!

হাফিয সাব্বির আহমদ

পরিচালক, সিরাজাম মুনিরা মসজিদ ও অ্যাডুকেশন সেন্টার, ইউকে।

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

আমার জ্যেষ্ঠ ভাই জেলবন্দি, জামিন নাই কেন?

আপডেট সময় ১০:২৪:৪৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৩

হাফিজ সাব্বির আহমদ:  আমার বড় ভাই আজ জেলখানায় বন্দী। যাকে আমরা বড় ভাইসাব বলে ডাকি। তাকে নিয়ে এভাবে লিখতে হবে এর আগে তা কখনো মনে আসেনি। কিন্তু আজ এমন এক সময়ের দ্বারপ্রান্তে এসে উপনীত হয়েছি যখন মনের ভেতর হাজারও জিজ্ঞাসা, ক্ষোভ ও ঘৃণা। গত ৭ নভেম্বর রাত সাড়ে ১০টার দিকে তাকে ডিবি পুলিশ আমাদের বাড়ি থেকে বিনা নোটিশে আটক করে নিয়ে যায়। না তার বিরুদ্ধে কোন গ্রেফতারি পরোয়ানা ছিল না। তিনি এদেশের আইনে কোন দাগী আসামীও নন। তারপরও তাকে গ্রেফতার দেখিয়ে জেলহাজতে পাঠানো হয়। নিতান্তই রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হয়ে মাসাধিককাল ধরে চারদেয়ালের ভেতর তার দিন কাটছে। শারীরিকভাবে তিনি গুরুতর অসুস্থ। হার্টে রিং লাগানো। নিয়ম করে তিনবেলা তাকে ঔষধ খেতে হয়। ৮ ভাই ২ বোনের মধ্যে তিনি সবার বড়। আমিসহ আমার অন্যান্য ভাইবোনেরা তাকে বাবার মতই সম্মান করি। তাঁর স্নেহ-মমতা আদর শাসনে আমরা বড় হয়েছি। বাবার বড় সন্তান ও একজন বড় ভাই হিসাবে তিনি আমাদের কাছে সর্বোচ্চ সম্মানীত ব্যক্তি। তার বর্তমানে নিজেকে বড় অসহায় বোধ করছি।

প্রায় ৩ বছর আগে আমার মেঝভাই মাওলানা নাসির উদ্দিন সাহেব ইন্তেকাল করেন। তাঁর মৃত্যুতে আমাদের ৮ ভাইয়ের জোড়া ভেঙে যায়। সেই শোক কাটাতে আমাদের পরিবারের অনেক দিন লেগেছে। তারপর পারিবারিক সকল সিদ্ধান্ত ও কর্মকান্ড একাই বড় ভাইসাব সামলে নিতেন। ঘুম থেকে উঠেই প্রায় প্রতিদিন ভাইসাবের সাথে ফোনে কথা বলতাম। আজ মনে হয় অনেক বছর তাঁর সাথে কথা হয় না। মা-বাবা নেই। আমরা ভাইবোনেরাই একে অন্যের সাথে সুখদুঃখ ভাগাভাগি করি। আজ মনের ভেতর ক্ষোভ আর দুঃখবোধ বারবার জাগরিত হয়। এই সমাজ-সংসার, সম্পর্কের বেড়াজাল সবকিছুই বড় পর লাগে।

মৌলভীবাজার জেলা শহরের একজন সৎ, ভদ্র ও সজ্জ্বন ব্যক্তি হিসাবে আমার ভাই মো. ফখরুল ইসলামকে সবাই জানেন ও চেনেন। ব্যক্তি জীবনে বিএনপির রাজনীতির সাথে জড়িত থাকলেও সকল দলমতের মানুষের সাথে তার সৎভাব ও সুন্দর চলাফেরা রয়েছে। মৌলভীবাজার সদর উপজেলার শমসেরগঞ্জের দৌলতপুর গ্রামে আমাদের বাড়ি। ছোটবেলা থেকেই আশপাশের গ্রামের মানুষের সাথে আ

মাদের সৎভাব ও ভালো সম্পর্ক। একে অন্যের সাথে জড়াজড়ি করে আছি। বৃহত্তর সিলেটে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছেন আমাদের আত্মীয় স্বজন। সকলের কাছেই আমার বড় ভাই একজন নির্ভরযোগ্য মানুষ। এলাকার শালিস-বৈঠকে তিনি নিয়মিত অংশগ্রহণ করেন। পারিবারিক ও সামাজিক সকল অনুষ্ঠানে আছে তার সরব উপস্থিতি।

মৌলভীবাজারের রাজনীতিতে আওয়ামী লীগ, বিএনপিসহ সকল ঘরানার মানুষের মধ্যে একটা হামদর্দি মনোভাব ছিল। সামাজিক সকল অনুষ্ঠানাদিতে সকলে মিলেমিশে থাকতেন। কিন্তু সেই সহনশীল মনোভাব এখন আর নেই। রাজনীতির একটা অশুভ চক্র এই ঐতিহ্যকে শেষ করে দিয়েছে। দেশে দীর্ঘদিন ছাত্ররাজনীতি করেছি। তৃণমূল থেকে কাজ করে একদম কেন্দ্রের দায়িত্ব পালন করেছি। এ সময় ভিন্নমত ও ভিন্নদলের কত মানুষের সাথে মিশেছি। তাদের মধ্যে শরাফতি ছিল। আমার নিজ জেলা মৌলভীবাজার ছিল রাজনৈতিক সহাবস্থান ও শান্তির অনন্য উদাহরণ। এ জেলার দুই বরেন্য কৃতিসন্তান সাবেক অর্থমন্ত্রী এম সাইফুর রহমান ও সমাজকল্যাণমন্ত্রী সৈয়দ মহসিন আলীকে খুব কাছে থেকে দেখেছি। দেখেছি হিলালপুরের আলহাজ সৈয়দ আবু শাহাজান ও সাবেক পৌরসভার চেয়ারম্যান জনাব আলহাজ মাহমুদুর রহমান সাহেবকে। কত বড় মনের ও কত সম্মানীয় ব্যক্তি ছিলেন তারা। তাদের রাজনৈতিক শিষ্টাচার ও সৌহার্দ্য ছিল অনুকরণীয়। কিন্তু চোখের সামনে এই ক’বছরে রাজনীতির মাঠের সে চিত্র বদলে গেছে। একনায়কতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থায় এখন আর কেউই নিরাপদ নয়। রাজনীতির নতুন মুখ ও বিকেন্দ্রীকরণ ভালো কিছুর পরিবর্তে এক সর্বগ্রাসী, হীনমানসিকতার তলানীতে আমাদের ঐতিহ্য ও মূল্যবোধকে তলানীতে নিয়ে গেছে।

আমার ভাই মো. ফখরুল ইসলাম রাজনীতি করেন দেশের জন্য, মানুষের জন্য। এটা কোন কথার কথা নয় বরং চরম বাস্তবতা। রাজনীতি তার পেশা নয়। রাজনীতি করে তিনি এক পয়সারও মালিক হননি। পারিবারিকভাবে প্রতিষ্ঠিত আমাদের অনেক শিক্ষা ও সেবামূলক প্রতিষ্ঠান আছে। এগুলো তিনি পরিচালনা করেন। প্রতিবছর এর মাধ্যমে অনেক খেদমত আঞ্জাম দেওয়া হয়। মসজিদ মাদরাসার দায়িত্ব পালন করতে হয়। আলেম উলামাদের সাথে সুসম্পর্ক রেখে আমার ভাই দ্বীনি অনেক কর্মসূচি পালন করেন। আমাদের সকল ভাইবোনেরা মাশাআল্লাহ স্ব স্ব ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত। প্রত্যেকেই নিজস্বতা নিয়ে আছেন ।

আমার বড় ভাইকে যেদিন আটক করা হয় তার আগের দিন তাঁর একমাত্র ছেলে, আমাদের বড় ভাতিজা রেদওয়ান, আমার ভাতিজি ও একমাত্র মায়ার নাতনি লন্ডন থেকে দেশে ফিরেছিল। তারা এসেছিল নিজদেশে বাবা-মা ও পরিবারের সদস্যদের সাথে ভালো সময় কাটাবে বলে। কিন্তু উল্টো আমার ভাতিজাকে জেলগেট ও কোর্টের বারান্দায় সময় কাটাতে হয়েছে। ছুটি শেষে তাদের বাবাকে জেলেবন্দি রেখেই আবার ইউকেতে ফিরতে হয়ছে। দেশের কাছে এ আমাদের বড় পাওয়া!

রাজনীতি করলে জেলজুলুম সহ্য করতে হয় তা জানা কথা। এবং এটা তার নতুন হাজতবাস নয়। কিন্তু জেলবন্দি মানুষের জন্য ও তো আইন আছে। আছে জামিন। তাকে যে মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়েছে তা জামিনযোগ্য। কিন্তু বারবার জামিন আবেদন করেও তার জামিন হচ্ছে না। এটা তো জঘন্য। এ কোন ইশারা। আমরা কি এদেশের নাগরিক নই?

আজ একটা জিনিস আমাকে সবচেয়ে বেশি ভাবায়- শুধু রাজনীতির কারণে যারা বাবা ভাইকে ইতোমধ্যে হারিয়েছেন, যারা গুম-হত্যার শিকার হয়েছেন, রাজনীতির নোংরা খেলায় বছরের পর বছর জেলেবন্দী আছেন- তাদের পরিবারের অবস্থাটা তাহলে কেমন! এই সংস্কৃতি থেকে কবে আমার দেশের রাজনীতি ও রাজনীতিকরা বেরিয়ে আসবে জানি না!

হাফিয সাব্বির আহমদ

পরিচালক, সিরাজাম মুনিরা মসজিদ ও অ্যাডুকেশন সেন্টার, ইউকে।